মৃৎশিল্প:- পর্ব :- ০২ //\\ কাদামাটি দিয়ে ভাত রান্নার হাঁড়ি তৈরি তৈরি।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ মঙ্গলবার। ১৩ই জুন, ২০২৩ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, মৃৎশিল্প আমাদের দেশের অন্যতম একটি ঐতিহ্য। এক সময় আমাদের দেশে মৃৎশিল্পের বিশেষ কদর ছিল। অতীত কালে প্রায় সর্ব শ্রেণীর মানুষেরা নিজের প্রয়োজন অনুসারে নিত্যদিনের কাজে মৃৎশিল্পের বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র ব্যবহার করতো। কিন্তু কালের বিবর্তনের ফলে আজ আমাদের মাঝখান থেকে মৃৎশিল্প প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের দেশের ঐতিহ্য মৃৎশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের একান্ত কর্তব্য।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, অতীতকালে আমাদের দেশের সকল শ্রেণীর মানুষেরা ভাত রান্নার জন্য মাটির হাড়ি ব্যবহার করতো। সে সময় ভাত রান্নার কাজে মাটির হাঁটির ব্যবহার ছাড়া বিকল্প কোন ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আজ আমাদের মধ্য থেকে মাটির হাড়ি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন আর কারো ভাত রান্না করার জন্য মাটির হাঁড়ি ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। মাটির হাড়ি আমাদের দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের একটি বিরাট অংশ। তাই আমাদের আগামী প্রজন্মের নিকট আমাদের দেশের ঐতিহ্য উপস্থাপন করার জন্য মৃৎশিল্পের মাটির হাড়িগুলো সংরক্ষণ করা আমাদের একান্তই দায়িত্ব। সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আজ আমি আপনাদের নিকট কাদামাটি দিয়ে মাটির হাড়ি তৈরি করার সুন্দর প্রক্রিয়া উপস্থাপন করছি। আমি আশা করি, আমার আজকের মৃৎশিল্পের কাজটি আপনাদের নিকট অনেক অনেক ভালো লাগবে।
ভাত রান্নার ঐতিহ্যবাহী মাটির হাড়ি তৈরি করতে আমার ব্যবহারিত প্রয়োজনীয় উপকরণ গুলোর নাম নিম্নে দেওয়া হলো:-
- পরিমাণ মতো কাদামাটি।
- পরিমাণ মতো পানি।
ভাত রান্নার ঐতিহ্যবাহী মাটির হাড়ি তৈরির প্রক্রিয়াটি নিম্নে ধাপে ধাপে উপস্থাপন করা হলো:-
⬇️ ধাপ-০১:⬇️
ভাত রান্নার ঐতিহ্যবাহী মাটির হাঁড়ি তৈরি করার জন্য প্রথমেই আমি পরিমাণ মতো নরম কাদামাটি সংগ্রহ করে নিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০২:⬇️
প্রথমে আমি কাদামাটি গুলো সামান্য পানি দিয়ে খুবই সুন্দর ভাবে ছেনে প্রস্তুত করে নিয়েছিলাম ঐতিহ্যবাহী মাটির হাড়ি তৈরি করার জন্য।
⬇️ ধাপ-০৩:⬇️
তারপর ছেনে নেওয়া কাদামাটি গুলো দুই হাতের তালুর সাহায্যে সুন্দরভাবে গোলাকার ফুটবলের মতো করে নিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০৪:⬇️
তারপর গোলাকার কাদা মাটি গুলোর ঠিক মাঝখান দিয়ে সুন্দর একটি গর্ত করে নিয়েছিলাম। যাতে চমৎকার একটি মাটির হাঁড়ি তৈরি করা যায়।
⬇️ ধাপ-০৫:⬇️
অতিরিক্ত কাদামাটি গুলো সরিয়ে দিয়েছিলাম। তারপরে হাঁড়ির ভিতরের অংশের কাজটি সুসম্পন্ন করে নিয়েছিলাম। বিশেষ করে ভিতরে অংশটি সুন্দরভাবে নেপে মসৃণ করে দিয়েছিলাম। তারপর হাঁড়ির বাইরের অংশটুকু আলতো ভাবে নেপে মসৃণ করে দিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০৬:⬇️
এবার হাড়িটির কান্দার অংশটি সুন্দরভাবে তৈরি করে নিয়েছিলাম। হাড়ির কাধের নিচের অংশটি সুন্দরভাবে তৈরি করে দিয়েছিলাম। যাতে কাদামাটি দিয়ে তৈরি ভাত রান্নার ঐতিহ্যবাহী হাঁড়িটি দেখতে প্রকৃত হাড়ির মতোই লাগে।
⬇️ ধাপ-০৭:⬇️
হাড়িটির পুরো অংশ পুনরায় হালকা পানি দিয়ে আলতো ভাবে নেপে মসৃণ করে দিয়েছিলাম। তারপর হাঁড়ির উপরে কান্দার অংশটি ভালোভাবে চারিদিকে বাঁকা করে দিয়েছিলাম। যাতে আমার তৈরি এই মাটির হাঁড়িটি সকলের নিকট অনেক অনেক সুন্দর লাগে।
⬇️ ধাপ-০৮:⬇️
এবার মাটির হাঁড়ির কান্দার বাড়তি অংশটুকু সরিয়ে দিয়েছিলাম। তারপর ঐতিহ্যবাহী মাটির হাড়ির প্রকৃত রূপ ফুটে উঠতে লাগলো।
⬇️ ধাপ-০৯:⬇️
মাটির হাড়ির কাঁন্দাটি সুন্দরভাবে তৈরি করে দিয়েছিলাম। তারপরে মাটির হাড়ি পুরো অংশটি পুনরায় হালকা পানি দিয়ে আলতো ভাবে নেপে মসৃণ করে দিয়েছিলাম। আর এভাবেই তৈরি করেছিলাম ভাত রান্না করার ঐতিহ্যবাহী মাটির হাড়ি।আমি আশা করি, আমার আজকের মৃৎশিল্পের পোস্টটি আপনাদের নিকট অনেক অনেক ভালো লেগেছে।
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এই মাটি দিয়ে হাড়ি পাতিল গুলো তৈরি করা। আগে তো আমরা দেখেছি আমাদের মায়েরা এই মাটির তৈরি হাড়ি পাতিল দিয়ে সবকিছু রান্না করত। কিন্তু যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে সেই হাড়ি পাতিল গুলো আজকাল হারিয়ে যাচ্ছে। তবে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আপনি মাটি দিয়ে খুব সুন্দর করে একটি রান্নার পাতিল তৈরি করলেন অসাধারণ লেগেছে।
আমার পোস্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
https://twitter.com/bidyut01/status/1668670475638284288?t=E3RL42a_uus1e3U2CsPWaA&s=19
কাঁদা মাটি দিয়ে খুব সুন্দর একটি ভাতের হাঁড়ি বানালেন ভাইয়া।দারুন হয়েছে দেখতে। ছেলেবেলা অনেক বানাতাম। আজ আপনার পোস্ট দেখে সেই দিন গুলো মনে পরে গেলো। আপনি সময় নিয়ে,ধৈর্য ধরে কাজটি সম্পন্ন করলেন।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মৃৎশিল্প হলো বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্পগুলোর অন্যতম।মৃৎশিল্প শুধু শিল্প নয়, গ্রামবাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য। ছোটবেলায় কাদামাটি দিয়ে অনেক ছোট ছোট হাড়ি পাতিল বানিয়ে খেলা করতাম।আর মেলায় গেলে অবশ্যই মাটির হাড়ি পাতিল কিনে আনতাম।মাটির হাড়ি পাতিল গুলো দেখতে খুবই ভালো লাগে।মেরা আপনি আজকে কাদামাটি দিয়ে অনেক সুন্দর করে একটি ভাত রান্নার পাতিল তৈরি করে ফেলেছেন যা দেখতে বাজারের কেনা পাতিল গুলোর মতই মনে হচ্ছে।সবমিলিয়ে অসাধারণ একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন তার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।
গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার মনে আছে ছোটবেলায় মাটি দিয়ে এরকম ছোট ছোট হাড়ি পাতিল তৈরি করতাম।।
অনেকদিন পরে আপনার এমন মৃৎশিল্পের কারু কাজ কাজ দেখে খুবই ভালো লাগছে।।
আপনার প্রস্তুত করা ভাতের হাড়ি কিন্তু অসাধারণ দেখাচ্ছে।।
খুবই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
ছেলেবেলায় কত যে কাদামাটি দিয়ে মাটির হাড়ি বানিয়েছি তার হিসাব নেই। আজ আপনার পোস্ট দেখে সেই ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে গেল। আপনার হাতের হাড়ি দেখতে কিন্তু ঠিক সত্যিকারের মাটি মনে হচ্ছে। অসাধারণ ছিল আপনার বানানো মাটির হাড়িটি।
সাবলীল মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি তো দেখি খুবই অভিজ্ঞ মৃৎশিল্পে। আমাদের এখানে মৃৎশিল্পে নেই বললেই চলে। আপনি খুবই চমৎকারভাবে একটি ভাত রান্না করার পাতিল তৈরি করেছেন। বর্তমানে আমাদের দেশে মৃৎশিল্প বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার পথে। আমার জন্য কয়েকটি পাতিল রেডি করেন? কয়েকটি পুতুল তৈরি করিয়েন?
গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ওয়াও অসাধারণ আপনি খুব চমৎকারভাবে কাদা মাটি দিয়ে ভাত রান্নার হাঁড়ি তৈরি করেছেন। ঠিক বলেছেন অতীত কালে মানুষেরা সব রান্নাবান্নার কাজে মাটির পাত্র ব্যবহার করত। তবে সময়ের সাথে সাথে এগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেল। তবে আপনার আইডিয়ার প্রশংসা করতে হয়। কারণ কাদামাটি দিয়ে খুব সুন্দর করে একটি হাঁড়ি তৈরি করেছেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের মাঝে চমৎকারভাবে উপস্থাপনা করেছেন।
খুবই চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
কাঁদা মাটি দিয়ে আপনি খুব চমৎকার ভাবে ভাত রান্না করার হাঁড়ি তৈরি করেছেন। মাটির জিনিস গুলো আগেরকার মানুষ ব্যবহার করত। তারা বিভিন্ন কাজে মাটির জিনিস ব্যবহার করতেন। সময়ের সাথে সাথে এখন অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। মাটির পাতিলা গুলোর মধ্যে আগেরকার মানুষ যখন ব্যবহার করতেন তাদের কোন অসুখ-বিসুখ হতো না। তবে আপনার হাঁড়ি তৈরি দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন হাঁড়ি তৈয়ারী তাই আপনাকে ধন্যবাদ।
খুবই সুন্দরভাবে হাঁড়িটি তৈরি করার চেষ্টা করেছি ভাইয়া।
যদিও অতীতে এদেশের মানুষ মাটির হাঁড়ি ব্যবহার করে ভাত রান্না করত শুধুমাত্র ভাত রান্নাই নয় সকল ধরনের কাজকর্ম মাটির হাঁড়িতেই করা হতো। যদিও এখন তেমন একটা মাটির হাড়ি পাতিল ব্যবহার করা হয় না তবে আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে নতুন করে আবার অতীত সামনে নিয়ে এসেছেন জেনে ভালো লাগলো। অনেকদিন পরে এরকম একটি মাটির হাড়ি দেখতে পারলাম। মৃৎশিল্পটাকে আপনি আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে নতুন ভাবে জাগ্রত করেছেন, ধন্যবাদ আপনাকে।
খুবই সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।