মৃৎ শিল্প:- পর্ব :- ১ //\\ কাদামাটি দিয়ে পানি পান করা ঐতিহ্যবাহী মগ বা গ্লাস তৈরি।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ বুধবার। ০৭ই জুন, ২০২৩ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, মৃৎশিল্প আমাদের দেশের অন্যতম একটি ঐতিহ্য। এক সময় আমাদের দেশে মৃৎশিল্পের বিশেষ কদর ছিল। অতীত কালে প্রায় সর্ব শ্রেণীর মানুষেরা নিজের প্রয়োজন অনুসারে নিত্যদিনের কাজে মৃৎশিল্পের বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র ব্যবহার করতো। কিন্তু কালের বিবর্তনের ফলে আজ আমাদের মাঝখান থেকে মৃৎশিল্প প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের দেশের ঐতিহ্য মৃৎশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের একান্ত কর্তব্য।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, মৃৎশিল্পের বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র তৈরি করতে আমার বেশ ভালো লাগে। বিশেষ করে ছোটবেলায় কাদামাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র তৈরি করে খেলা করতাম। কিন্তু কাদামাটি দিয়ে সব থেকে ভালো মানের জিনিসপত্র তৈরি করা শিখেছিলাম চতুর্থ শ্রেণীতে লেখাপড়া করা অবস্থায়। ওই সময় আমাদের চারুকারু বিভাগের আওতায় বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল মুলক কাজ শেখানো হতো। বিশেষ করে ছবি অংকন, রঙ্গিন কাগজ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফুল ও অন্যান্য জিনিস তৈরি এবং কাদা মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরি করতে আমাদেরকে দারুন ভাবে প্রশিক্ষণ দিতো। ঠিক তখন থেকেই আমি ছবি অংকন করতে এবং বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল মুলক কাজগুলো করতে খুবই পছন্দ করতাম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, ছোটবেলায় শেখা কাদামাটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র তৈরি করার প্রক্রিয়াটি এখনো আমার মনের মাঝে দারুণভাবে জীবন্ত রয়েছে। তাই আমি মৃৎশিল্পের বিভিন্ন ধরনের জিনিস পত্র তৈরি করে আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আজ থেকে নতুন একটি সিরিজ চালু করেছি। মৃৎশিল্পের যেকোনো একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্র তৈরি করে প্রতি সপ্তাহে আপনাদের নিকট অন্ততপক্ষে একটি করে শেয়ার করবো। আমি আশা করি, আমার চালু করা সিরিজের প্রতিটি পোস্ট গুলো আপনাদের নিকট অনেক অনেক ভালো লাগবে।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আজ আমি কাদা মাটি দিয়ে পানি পান করার ঐতিহ্যবাহী একটি মগ তৈরি করেছি। অতীতকাল আমাদের দেশে মানুষেরা ভাত রান্নার হাড়ি থেকে শুরু করে ভাত খাওয়ার থালা এবং পানি পান করার জন্য মাটির তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার করতো। অতীতকালে পানি পান করার জন্য আমাদের দেশের মানুষের মাটির তৈরি মগ বা গ্লাস ছিল একমাত্র অবলম্বন। পানি পান করার জন্য মাটির তৈরি মগ বা গ্লাস আমি ছোটবেলায় আমাদের বাড়িতেই অনেকগুলো দেখেছিলাম। তাই আজ আমি আপনাদের নিকট কাদামাটি দিয়ে পানি পান করার ঐতিহ্যবাহী মগ বা গ্লাস তৈরির প্রক্রিয়া শেয়ার করেছি। আমি আশা করি, আমার আজকের মৃৎশিল্পের পোস্টটি আপনাদের নিকট অনেক অনেক ভালো লাগবে।
পানি পান করার ঐতিহ্যবাহী মগ বা গ্লাস তৈরি করতে আমার ব্যবহারিত প্রয়োজনীয় উপকরণ গুলোর নাম নিম্নে দেওয়া হলো:-
- পরিমাণ মতো কাদামাটি।
- পরিমাণ মতো পানি।
- প্রয়োজন মতো বিভিন্ন কালারের কিছু পুথি।
পানি পান করার ঐতিহ্যবাহী মগ বা গ্লাস তৈরির প্রক্রিয়াটি নিম্নে ধাপে ধাপে উপস্থাপন করা হলো:-
⬇️ ধাপ-০১:⬇️
পানি পান করার ঐতিহ্যবাহী মগ বা গ্লাস তৈরি করার জন্য প্রথমে আমি পরিমাণ মতো কাদামাটি সংগ্রহ করে নিয়েছিলাম। তারপর কাদামাটি গুলোর সাথে পরিমাণ মতো পানি মিশিয়ে ভালোভাবে ছেনে প্রস্তুত করে নিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০২:⬇️
প্রস্তুত করে নেওয়া কাদামাটি গুলো একটু লম্বা গোলাকৃতি করে নিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০৩:⬇️
লম্বা গোলাকৃতির কাদামাটি গুলোর ভিতরে গর্ত করে নিয়েছিলাম। পানি পান করার ঐতিহ্যবাহী মগ বা গ্লাসের প্রাথমিক গঠনটি তৈরি করে নিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০৪:⬇️
পানি পান করার ঐতিহ্যবাহী মগ বা গ্লাসের ভিতরের অংশটুকু খুবই সুন্দর ভাবে তৈরি করে নিয়েছিলাম। তারপর ভিতরের অংশটুকু হালকা পানি দিয়ে এবং হাতের দুই আঙ্গুল ব্যবহার করে নেপে মসৃণ করে দিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০৫:⬇️
মগ বা গ্লাসের বাইরের অংশটুকু নেপে মসৃণ করে দিয়েছিলাম। যাতে মগ বা গ্লাসটি দেখতে অসাধারণ সুন্দর লাগে।
⬇️ ধাপ-০৬:⬇️
<bগ্লাস বা মগটির জন্য সুন্দর একটি হাতল বা ডান্টি তৈরি করে নিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০৭:⬇️
মগ বা গ্লাসটির এক পাশে হাতলটি সুন্দরভাবে লাগিয়ে দিয়েছিলাম। হাতলটি লাগানোর পরে পানি পান করার ঐতিহ্যবাহী মগ বা গ্লাসটি দেখতে অসাধারণ সুন্দর লেগেছিল।
⬇️ ধাপ-০৮:⬇️
বিভিন্ন কালারের পুথি সংগ্রহ করে নিয়েছিলাম। তারপর কাদামাটি দিয়ে তৈরি ঐতিহ্যবাহী মগ বা গ্লাসের হাতলের উপর রঙ্গিন পুথি লাগিয়ে দিয়েছিলাম। যাতে মগ বা গ্লাসটি দেখতে আরো বেশি সুন্দর লাগে।
⬇️ শেষ ধাপ⬇️
পানি পান করার ঐতিহ্যবাহী মগ বা গ্লাসের হাতলের উপর রঙ্গিন পুথি লাগানোর শেষে পুনরায় মগ বা গ্লাসে পুরো বডি নেপে মসৃণ করে দিয়েছিলাম। আর এভাবেই আমি কাদা মাটি দিয়ে পানি পান করার ঐতিহ্যবাহী মগ বা গ্লাস তৈরি করেছিলাম। আমি আশা করি আমার আজকের মৃৎশিল্পের পোস্টটি আপনাদের নিকট অনেক অনেক ভালো লেগেছে।
Twitter link
ওয়াও ভাইয়া প্রথমে আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট উপহার দেওয়ার জন্য।কাদামাটি দিয়ে পানি পান করা ঐতিহ্যবাহী মগ বা গ্লাস তৈরি। আজ আপনার পোস্টটি একদম ইউনিক ছিল। কাদামাটি দিয়ে অনেক সুন্দর মগ তৈরি করেছেন। এই ধরনের মুখ তৈরি করতে হলে অনেক ধৈর্য এবং অভিজ্ঞতা প্রয়োজন দুটোই আপনার মধ্যে বিরাজমান রয়েছে।
কাদা মাটি দিয়ে অনেক সুন্দর করে পানি পান করার মগ তৈরি করেছেন। এটা দেখতে অসাধারণ লাগছে। এটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটা তৈরি করতে আপনার অনেক সময় প্রয়োজন হয়েছে। আপনি অনেক সুন্দর করে ধাপগুলো গুছিয়ে লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
ঠিক বলেছেন কাদামাটি দিয়ে জিনিসপত্রগুলো আগেরকার মানুষ ব্যবহার করতেন। সময়ের কারণে এখন মাটির জিনিস গুলো বিলিন হয়ে গেছে। তবে কাদা মাটির জিনিস গুলোর মধ্যে কোন পদার্থ বা ভেজাল ছিল না। তবে আজকে আপনি খুব সুন্দর একটি মাটির গ্লাস তৈরি করেছেন। এই মাটির কাজগুলা আপনি চতুর্থ শ্রেণী থাকা অবস্থা শিখেছেন। সত্যি আপনার গ্লাস তৈরি দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। অনেক সুন্দর করে মাটির তৈরি গেলাস শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
মৃৎ শিল্প এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। মৃৎ শিল্প আমাদের ঐতিহ্য। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো ধীরে ধীরে আমাদের থেকে এই ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। চারপাশ প্লাস্টিক এবং অ্যালুমিনিয়ামের ছড়াছড়ি। আপনি খুব সুন্দর করে মাটির তৈরি গ্লাস তৈরি করেছেন । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আজ আপনি আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে একটি মৃৎশিল্প উপস্থাপন করেছেন। আপনার এত সুন্দর মৃৎ শিল্প দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। কাদামাটি দিয়ে আপনি এত সুন্দর একটি গ্লাস তৈরি করে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করবেন এটা আমি কখনোই ভাবেন। তবে আশা করব এরপরে আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর সুন্দর কিছু মৃৎশিল্প উপস্থাপন করবেন আপনি।