আমরাই সেরা প্রজন্ম (১৯৯১-২০০৭ ইং) // পর্ব-০৪।

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ বুধবার। ২৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

IMG_20220914_122847_984.jpg



সুপ্রিয় বন্ধুগণ, নয় মাস রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের দেশে সময়ের তালে তালে এক এক প্রজন্ম এসেছে। স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত যদি একটু সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করি তাহলে সুস্পষ্ট ভাবে দেখা যাবে যে, ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এই প্রজন্মটা এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের সবথেকে সেরা প্রজন্ম। আমার দৃষ্টিতে এই প্রজন্মটা কেন সব থেকে সেরা প্রজন্ম সেই কথাগুলো আজ আমি আপনাদের নিকট উপস্থাপন করছি। আমি আশা করি, আমার লেখাগুলো পড়ে আপনাদের সামান্য পরিমাণ হলেও ভালো লাগবে।

গুণী শক্তিমান অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের মুভি দেখার পাশাপাশি আমাদের প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের আলিফ লায়লা এর মতো জনপ্রিয় অনুষ্ঠান দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। আসলেই আমরা সৌভাগ্যবান প্রজন্ম। একমাত্র আমরাই জেমস, এন্ড্রু কিশোর, রুনা লায়লা, কনকচাঁপা, সাবিনা ইয়াসমিন, খালিদ হাসান মিনু, আইয়ুব বাচ্চুর মতো শিল্পীদের জনপ্রিয় গানগুলো শোনার এবং উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছি। এখানেই শেষ নয়, আসিফ আকবরের কন্ঠে আমরাই প্রথম শুনেছিলাম "ও প্রিয়া তুমি কোথায়" এই গানটি। আমাদের প্রজন্মের এমন কোন ছেলে মেয়ে ছিল না যে তারা এই গানটি শুনেনি। আমাদের প্রজন্মের সকল ছেলে-মেয়েদের মুখে প্রায় বেশিরভাগ সময় "ও প্রিয়া তুমি কোথায়" গানটি উচ্চারিত হতো।

আমরাই সেই প্রজন্ম যারা একটি সাদা কালো টেলিভিশন দিয়ে পড়ার প্রায় সকল মানুষ একসঙ্গে একই জায়গায় বসে সিনেমা দেখেছি। আসলে সেই মুহূর্তটা যে কত আনন্দের ছিল, কত যে উপভোগ্য ছিল সেটা ভাষায় প্রকাশ করে বোঝানো যাবে না। শুধু এখানেই শেষ নয়, আমরাই সেই প্রজন্ম যারা একটি রেডিও বা ক্যাসেট দিয়ে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন মানুষ এক জায়গায় বসে গান শুনেছি, রেডিও থেকে প্রচার করা বিভিন্ন ধরনের সচেতন মূলক অনুষ্ঠান শুনেছি, নাটক শুনেছি।

শুধু তাই নয় রেডিওতে পল্লীগীতি, লালনগীতি এবং আধুনিক গান শোনার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেছি। কখনো রাস্তার ধারে জাম গাছের ছায়ায় বসে রেডিও শুনেছি, আবার কখনো বাগানের আম গাছের ছায়ায় বসে রেডিও শুনেছি। আমাদের সময় আমরা কেবল দল বেঁধে রেডিও অনুষ্ঠান বা টেলিভিশন দেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, এরকম এক জায়গায় বসে বিনোদন নেওয়ার সাথে সাথে আমাদের পরস্পরের মধ্যে সৃষ্টি হতো এক অকৃতিম ভ্রাতৃত্বের বন্ধন। আসলে আমাদের সেই উপভোগ্য সময়টুকু আর হয়তো জীবনেও ফিরে পাবো না। কিন্তু সেই স্মৃতিটুকু মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আমরা কখনোই ভুলতে পারবো না।

আমরা এতটাই সৌভাগ্য প্রজন্ম যে, আমরা কেবল আমাদের বাবা ও মায়ের দেওয়া আদর, স্নেহ ও শাসনের মধ্যে আমাদের জীবন আবদ্ধ থাকেনি। বরং আমরা পেয়েছি আমাদের দাদা-দাদীর অকৃত্রিম ভালবাসা, একগুচ্ছ চাচাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং মধুর শাসন, একগুচ্ছ ফুফুদের দেওয়া মায়ের আদর। শুধুমাত্র এখানেই শেষ নয়, আমরা হাতে হাতে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার না পেলেও আমরাই সেই প্রজন্ম যারা পেয়েছি নানা-নানীর দেওয়া অফুরন্ত স্নেহ ও ভালোবাসা এবং অনেকগুলো মামা ও খালার দেওয়া মায়ের মতো আদর, মায়ের মতো স্নেহ, মায়ের মতো শাসন। যেটা টাকা দিয়ে কেনা যাবে না, সম্পদ দিয়েও পাওয়া যাবে না, কিন্তু আমরা পেয়েছি, বুক ভরে পেয়েছি, মন ভরে পেয়েছি। তাই আমি মনে করি আমাদের প্রজন্মের ছেলে মেয়েরাই আমাদের দেশের সবচেয়ে সৌভাগ্যবান প্রজন্ম।

চলবে।



তৃতীয় পর্বটি পড়ার লিংক





১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60728.87
ETH 2661.87
USDT 1.00
SBD 2.50