গল্প :- সম্মান // পর্ব:-১৫(শেষ পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ সোমবার। ০৬ ইং মে, ২০২৪ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

religion-2689453_1280.jpg

Source



বাঘের মুখের সামনে বসে রানা ও সবুজ মনে মনে তওবা করতে লাগলো যে জীবনে যদি তারা বেঁচে থাকে তাহলে আর কখনোই ধার্মিক লোক সম্পর্কে বাজে কথা বলবে না। কিন্তু বাঘের মতো হিংস্র প্রাণীর সামনে থেকে বেঁচে যাওয়াটা নিঃসন্দেহে অসম্ভব। তারপরও রানা ও সবুজ তাদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য সৃষ্টিকর্তার নিকট মনে মনে আকুতি মিনতি করতে লাগলো। এদিকে বাঘটি হঠাৎ করেই দাঁড়িয়ে পড়লো। তারপর রানা ও সবুজের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে বাঘটি তার পুরো শরীর ঝাড়া দিয়ে উঠলো। বাঘের এরকম অঙ্গভঙ্গি দেখে রানা ও সবুজ থর থর করে কাঁপতে লাগলো।



রানা ও সবুজের শরীর এতটাই কেপেছিল যে, তাদের বসে থাকা মাচা পর্যন্ত কাঁপতে লাগলো। তারপর বাঘটি এক লাফ দিয়ে ধার্মিক লোকের কবরের পাশে এসে দাঁড়ালো। বাঘের এক লাফ দিয়ে আশা দেখে সঙ্গে সঙ্গে সবুজ ও রানা মাচা থেকে উল্টে পড়ে গেল। তখন বাঘ থেকে মাত্র কয়েক ফুট দূরে রানা ও সবুজের অবস্থান। এতটা কাছাকাছি হিংস্র বাঘ দেখে রানাও সবুজ দুজনই পুরো পাথরের মত জড় পদার্থে পরিণত হয়ে গেল। তারপর বাঘটি ধার্মিক লোকের কবরের দিকে তাকালো, এরপর রানা ও সবুজের দিকে তাকিয়ে বাঘটি পুনরায় মুখ হাঁ করে লম্বা জিহবা বের করলো। বাঘের হিংস্র চেহারা এবং ভয়ংকর আচরণ দেখে রানা ও সবুজ নিশ্চিত হয়ে গেল যে, তাদের মৃত্যু অবধারিত।



রানা ও সবুজ ভাবতে লাগলো যে, তারা জীবনে এতটাই পাপ করেছে যে তাদের এই মহাবিপদ মৃত্যুর সময় তাদের কোন আত্মীয়-স্বজন কিংবা বন্ধু-বান্ধব কেউ তাদের পাশে নেই। অত্যন্ত দুঃখে এবং নিজেদের উপর রাগ করেই রানা ও সবুজ কিছুটা উচ্চস্বরেই কেঁদে উঠলো। রানা ও সবুজের কান্নার শব্দ শুনে বাঘ একেবারেই তাদের কাছাকাছি এসে দাঁড়ালো। তারপর বাঘটি ধার্মিক লোকের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অত্যন্ত জোরে হুংকার দিয়ে উঠলো। তারপর বাঘটি তার সামনের ডান দিকের পা কিছুটা উচু করলো। তারপর বাঘটি পুনরায় অত্যন্ত জোরে এবং ভয়ংকর ভাবে হুংকার দিয়ে ধার্মিক লোকের কবরের পাশ থেকে অত্যন্ত তীব্র গতিতে দৌড়াতে শুরু করলো।



বাঘটি যেই পথ দিয়ে এসেছিল ঠিক সেই পথ দিয়েই দৌড়াতে দৌড়াতে ধার্মিক লোকের লোকালয় থেকে অনেক দূরে চলে গেল। বাঘের মতো হিংস্র প্রাণীর এভাবে চলে যাওয়াটা রানা ও সবুজ দুচোখ দিয়ে দেখলেও তাদের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। কিন্তু বাঘটি ধার্মিক লোকের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে সেখান থেকে দৌড়ে চলে গেল সেটা রানা‌ ও সবুজ পুরোপুরি বুঝতে পারলো। তারপর রানা ও সবুজ সেই রাত্রেই দ্রুত বাড়িতে চলে গেল। আসলে তারা যেভাবে বাঘের হাত থেকে বেঁচে যাবে এটা কখনোই তারা চিন্তাও করেনি। পরের দিন সকালবেলায় রানা ও সবুজ খুব দ্রুত তাদের ইমাম সাহেবের নিকট আশ্রয় নিল এবং রাতের বাস্তব কথা গুলো ইমাম সাহেবের নিকট উপস্থাপন করলো।



রানা ও সবুজের মুখে রাতের ঘটনাটি শুনে ইমাম সাহেব বললেন, ধার্মিক লোকটি যে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর নিকট থেকে সম্মানিত ছিলেন, সেটার বাস্তব প্রমাণ আরো একবার মহান সৃষ্টিকর্তা তোমাদের দুজনার মাধ্যমে আমাদের সবাইকে জানিয়ে দিলেন। ইমাম সাহেব আরো বললেন, যে ব্যক্তি মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট থেকে সম্মানিত হয় পৃথিবীর সবকিছুই তাকে সম্মান করতে বাধ্য হয়। তারপর থেকে রানা ও সবুজ অত্যন্ত ধার্মিক মানুষে পরিণত হয়ে গেল। এবং সকলেই বিশ্বাস করতে লাগলো যে, ধার্মিক লোকটি প্রকৃতপক্ষেই মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট থেকে সম্মানিত ছিলেন।



এরপর থেকে ধার্মিক লোকের লোকালয়ে কোনদিন কোন প্রকারের হিংস্র জীবজন্তুর আক্রমণ ঘটেনি। এমনকি বিভিন্ন প্রকারের মহামারী রোগের আবির্ভাব ধার্মিক লোকের লোকালয় পর্যন্ত আসেনি। আসলে মহান সৃষ্টিকর্তা যাকে সম্মানিত করেন তার সম্মান রক্ষার জন্য পুনরায় মহান সৃষ্টিকর্তা সব সময় সজাগ থাকেন। তাই আমাদের সকলের উচিত মহান সৃষ্টিকর্তার সকল আদেশ, নির্দেশ ও নিষেধগুলো যথাযথভাবে পালন করে একজন সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা।



গল্পটির ১৪তম পর্বটি পড়ার লিঙ্ক





আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।

১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 56934.21
ETH 3091.02
USDT 1.00
SBD 2.38