গল্প :- সম্মান // পর্ব:-১৪

in আমার বাংলা ব্লগlast month



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ রবিবার। ২৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

religion-2689453_1280.jpg

Source



রাতের বেলায় রানা ও সবুজ পাশাপাশি বসে আছে। সেদিন হঠাৎ করেই সবুজের মনের মধ্যে ভয় অনুভব হতে লাগলো। কারণ এমনিতেই রাতের বেলা, তারপরে ফাঁকা মাঠ, আশপাশে কোন জনবসতি নেই। একই সাথে তারা দু'জন বসে আছে ধার্মিক লোকের কবরের পাশে। প্রতিদিন রাতের বেলায় ছোলা ফসল পাহারা করতে এসে রানা ও সবুজ বেশ হাসি-ঠাট্টা করে আর গাঞ্জা টানে। কিন্তু সেদিন রানা সিগারেট ধরিয়ে যখন সবুজকে দিলো তখন সবুজ বললো, আজকে আমার ভালো লাগছে না, তাছাড়া প্রতিদিন ধার্মিক লোকের কবরের পাশে এসে সিগারেট ও গাঞ্জা টানতে আমার আর ভালো লাগেনা। সবুজের কথা শুনে রানা বলে উঠলো, এসব তোর মনের ভয়, এসব কথা রেখে সিগারেট টানা শুরু করে দাও।



ফাল্গুন মাসের চাঁদনী রাত, চারপাশের এলাকা পুরো নিঝুম, বিশাল বড় ফাঁকা মাঠ, আর এই ফাঁকা মাঠের মাঝখানে রাত দুপুরে বসে আছে দুটি প্রাণী। তারা হলো রানা ও সবুজ। সবুজ বলে উঠলো, কাল থেকে আর ছোলা ফসল পাহারা করতে সে মাঠে আসবে না। ঠিক এমন মুহূর্তে একটু দূরে দুইটি আলোর ছটা সবুজ লক্ষ্য করলো। তখন সবুজ বললো, দেখ রানা মনে হচ্ছে ছোলা ফসলের জমিতে কারা যেন এসেছে। এরপর আলো দুইটি কিছুটা নীল রঙের আলোতে পরিণত হলো। মুহূর্তের মধ্যে আলোর রং পরিবর্তন দেখে রানা সবুজ বেশ হতভম্ব হয়ে পড়লো। তারপর তারা লক্ষ্য করলো যে, আলো দুটি জ্বলন্ত অবস্থায় আস্তে আস্তে তাদের দিকেই আসছে। এরপর রানা ও সবুজ আলো দুটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো। কয়েক মিনিট পরে সবুজ রানাকে বললো, এটা প্রকৃতপক্ষে কোন লাইটের আলো নয়, মনে হচ্ছে বড় বড় দুটি চোখ।



রানা বলে উঠলো, মনে হচ্ছে কোন দৈত্য আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। রানার কথা শুনে সবুজ বলে উঠলো, আমাদের এলাকায় কোন দৈত্য নেই, আজগুবি কথা বাদ দাও। এরপর আলো দুটি রানা ও সবুজদের দিকে আসতে আসতে হঠাৎ করে থেমে গেল। কিন্তু আলো জ্বলে থাকা বন্ধ হলো না। কিছুক্ষণ দেখার পর সবুজ স্পষ্টভাবে বুঝতে পারলো যে, এটা হয়তো কোন জন্তুর চোখের আলো। সবুজ ভাবতে লাগলো যে, মাঠের আশপাশে জন্তু বলতে শিয়াল ছাড়া তেমন কোন জন্তু নেই। সবুজ মনে মনে আরো ভাবলো যে, শিয়ালের দুটি চোখ দিয়ে এরকমই আলো বের হয় রাত্রের বেলায় কিন্তু শিয়ালের চোখ তো এতটা মোটা বা বড় নয়। তখন সবুজ মনে মনে নিশ্চিত হয়ে রানাকে বললো যে, আমাদের সামনে ভয়ঙ্কর কোন একটি জন্তু আসছে। সবুজের কথা শুনে রানা কিছুটা ভয় পেয়ে গেল।



তখন রানা বললো, জন্তুটি আমাদের সামনে আসার আগেই আমাদের এখান থেকে আস্তে আস্তে সরে যাওয়া উচিত। রানার কথায় সম্মত দিয়ে সবুজ ও রানা যখন মাচা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলো ঠিক তখনই জন্তুটি কয়েক লাফ দিয়েই তাদের সামনে চলে আসলো। তখন রানা ও সবুজ নীরব হয়ে দেখলো যে, তাদের সামনে বিশাল বড় আকৃতির একটি বাঘ এসেছে। বিশাল আকৃতির বাঘ দেখে রানা ও সবুজ ভয়ে জড়ো হয়ে গেল। তারা দুজন এখন কি করবে, কোন বুদ্ধি তাদের মাথায় আসছে না। রানা তখন সবুজের কানে ফিসফিস করে বললো, চলো আমরা এখান থেকে দৌড়ায়। কিন্তু সবুজ বললো, চুপ থাকো, বাঘ এখন আমাদের দিকে তাকায়নি, তবে আমরা দুজনেই মৃত্যুর একেবারেই দ্বার প্রান্তে দাঁড়িয়ে।



এরপর বাঘটি কয়েকটা লাফ দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে আসলো এবং রানা ও সবুজের মাচার দিকে তাকালো। তারপর মাচার উপরে জ্যান্ত দু'জন মানুষ দেখে বাঘের চোখ দুটি যেন আরো বড় হয়ে গেল। বড় বড় দুটি চোখ দিয়ে বাঘটি রানা ও সবুজের দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর কয়েক মিনিট পরে বাঘটি তার সামনের দুটি পায়ের উপর ভর দিয়ে বসলো এবং বাঘটি তার শিকারি দৃষ্টি দিয়ে রানা ও সবুজের দিকে তাকিয়ে রইল। এদিকে রানা ও সবুজ বাঘের মুখের সামনে বসে প্রাণ হারানোর ভয়ে থরথর করে কাঁপতে লাগলো। প্রচন্ড ভয়ে রানা কখন যে প্রসাব করে ফেলেছে সেটাও সে বুঝতে পারেনি। এদিকে বাঘের ভয়ে সবুজের দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়ে যাচ্ছে। দুজনের গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে, দুটি ঠোঁট শুকিয়ে জড়ো হয়ে গেছে, দুজনের মুখের ভেতরের অংশ এতটাই শুকিয়ে গেছে যে, তাদের কথা বলার আর কোন শক্তি নেই। ঠিক এরকম মুহূর্তে বাঘটি যখন তার জিহ্বা বের করে মুখের বাইরের অংশ চেটে নিলো তখন বাঘের এরকম আচরণ দেখে রানা ও সবুজ নিশ্চিত হয়ে গেল যে, তারা দুজনই আজ বাঘের পেটের মধ্যে যাবে।



গল্পটির ১৩তম পর্বটি পড়ার লিঙ্ক





গল্পটি চলমান থাকবে। গল্পটির ১৫তম পর্বটি আগামী সপ্তাহে শেয়ার করা হবে।




আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।

১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 68518.46
ETH 3760.02
USDT 1.00
SBD 3.66