একটি বাস্তব ঘটনা : এক ছেলের দুই বাবা-মা। (পর্ব- ১)
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে।
আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি বাস্তব ঘটনা শেয়ার করবো। আমার বাড়ির ভিতরে আমার এক জ্যাঠাতো ভাইয়ের ছেলেকে নিয়ে এই ঘটনাটি ঘটেছে। আমার জ্যাঠাতো ভাই একটি বেসরকারি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে এবং মসজিদে মোয়াজ্জেম হিসেবে কাজ করে। ও বিয়ে করেছে অনেক বছর হয়ে গেলো। কিন্তু তাদের কোন সন্তান নেই। বিগত ১০ থেকে ১২ বছর হয়ে গেলো। অনেক বড় বড় ডাক্তারও দেখিয়েছেন কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হলোনা।
এক পর্যায়ে তারা স্বামী-স্ত্রী আলোচনা করলো একটি বাচ্চা পালক হিসেবে লালন পালন করবে। বহু খোঁজাখুঁজির পর একটি বাচ্চা পেলেন তারা। একটি মহিলার দুটি ছেলে সন্তান একসাথে জন্মগ্রহণ করলো। মহিলাটি গরীব বিধায় একটি বাচ্চা এদেরকে দিয়ে দিলেন। তখন বাচ্চাটির বয়স একমাস হবে এমন অবস্থায়। এই বাচ্চাটি আমার জ্যাঠাতো ভাই ও তার স্ত্রী নিয়ে আসলেন। তারা অনেক খুশি হয়ে গেলে বাচ্চাটি পেয়ে। খুব সুন্দর করে অনুষ্ঠান করে তাদের বাচ্চাটির তারা নাম রেখেছে। বাচ্চাটির খুব সুন্দর করে নামটি রাখলেন রাব্বি। এরপর থেকে তারা নিজেদের সন্তানের মত করে খুব সুন্দর করে বাচ্চাটিকে লালন-পালন করতে লাগলো।
এভাবে ছেলেটি লালন পালন করতে করতে কয়েক বছর কেটে গেঊ তাদের জীবনে। এরপরে আমার জ্যাঠাতো ভাইয়ের পরিবারে আরও দুটি সন্তান জন্মগ্রহণ করলেন। এই মিলে তাদের তিনটি সন্তান হয়ে গেলো। আমার জ্যাঠাতো ভাই খুবই ধার্মিক ও তার ফ্যামিলি খুবই ধার্মিক। তারা ছেলে তিনটিকে সমান ভাবে দেখতেন। এখন ছেলেগুলো অনেক বড় হয়ে গেলেন। পালক ছেলেটি এখন পড়ালেখা করে অনেক বড় হয়ে চাকরি করতেছে। এছাড়াও খুব সুন্দর করে মা এবং বাবার জন্য আসার সময় সবকিছু নিয়ে আসে এবং খুব সুন্দর করে ছোট ভাই গুলোকে দেখাশোনা করে এবং তাদেরকে পড়ালেখা করাচ্ছে। এক পর্যায়ে তাদের ফ্যামিলিতে বড় সমস্যা এসে হাজির হলো তাদের পরিবারে।
রাব্বির নিজের আম্মা এখন দাবি করতেছে তার বাচ্চাকে তাদেরকে দিয়ে দেওয়ার জন্য। একথা কিছুতে মানতে পাচ্ছে না রাব্বির পালক বাবা এবং মা। ওরা বলতেছে খুব ছোট থেকে আমরা রাব্বি কে নিয়ে আসলাম এবং লালন পালন করলাম ও পড়ালেখা করে মানুষ করলাম। এই সন্তান তাকে কিভাবে আমরা দেবো। এই কারণে ছেলেটির সাথে তার নিজ মা ও জমজ একটি ভাই ছিল তারা প্রায় সময় দেখা করতে আসে এবং নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করতে লাগলো।
আরেকটি ঘটনা হলো তার জমজ ভাই ও তার চেহারার মতো সেম টু সেম। কোনটা রাব্বি আর কোনটা তার ভাই যে কেউ দেখলে তাদেরকে আন্দাজ করতে পারবে না। এখন রাব্বি অনেক সমস্যাতে পড়লেন। ছেলেটি এখন সব সময় চিন্তা করে সে কি করবে। একপাশে তাহার নিজের মা অন্য পাশে তার পালক বাবা এবং মা। তার পালক বাবা তার জায়গা জমি গুলো তিন ভাইয়ের নামে সমান করে ভাগ করে দিয়ে দিলেন। তার পালক মা-বাবার একটু বয়স হওয়াতে এখন সবকিছু বড় ছেলের উপর নির্ভর করে। এমত অবস্থায় রাব্বির নিজ মা তার নিজ ছেলে বলে তাকে নিয়ে যাওয়ার খুব চেষ্টা করতে লাগলো।এখন একদিকে পালক বাবা- মা, অন্যদিকে নিজের মা, কোথায় যাবে রাব্বি? এটা বলব পরের পর্বে। এপর্যন্ত সবাই ভালো এবং সুস্থ থাকুন।
আমার নাম আকলিমা আক্তার মুনিয়া। আর আমার ইউজার নাম @bdwomen। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। বাংলা ভাষা হল আমাদের মাতৃভাষা আর আমি মাতৃভাষা বলতে পারি বলেই অনেক গর্বিত। আমি বিভিন্ন ধরনের ছবি এবং পেইন্টিং আঁকতে খুবই পছন্দ করি। আমি প্রায় সময় বিভিন্ন ধরনের পেইন্টিং এঁকে থাকি। আবার রঙিন পেপার এবং বিভিন্ন রকমের জিনিস দিয়ে নানা ধরনের কারুকাজ তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। আবার নিজের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ছবি তুলতে খুবই ভালো লাগে। আমি চেষ্টা করি সব ধরনের জিনিস কখনো না কখনো একবার করে করার জন্য। আবার বিভিন্ন ধরনের আইডিয়া মাথায় আসলে সেগুলো ও করার চেষ্টা করি।
একদিকে নিজের বাবা-মা অন্যদিকে তার পালক বাবা-মা আসলেই রাব্বি অনেক সমস্যার মধ্যে আছে।। রাব্বি তো ছোটবেলা থেকে তার পালক বাবা-মায়ের কাছেই বড় হয়েছে তারা তো তাকে নিজের সন্তানের মতই বড় করেছে।। সে এখন কি করবে এটাই তো সমস্যা।। নিজের আপন বাবা মাকে সে যদি দূরে ঠেলে দেয় তাহলে সে অপরাধী বলে গণ্য হবে আর পালক বাবা-মা কেউ সে যদি দূরে ঠেলে দেয় তবুও সে অপরাধী বলে গণ্য হবে।। এক্ষেত্রে আমার মাথায় যে বুদ্ধিটা আসছে সেটা হল দুই পক্ষকেই সে সমানভাবে দেখবে এবং দুদিকেই তাকে কথা বলতে হবে দুজনার কাছেই থাকতে হবে তাহলে দুই পরিবারের ভালবাসা পাবে এবং দুই পরিবারের শান্তি ফিরে আসবে আবারো।।
আপনি খুব সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সেরকম করে কেউ রাব্বিকে চাইতেছে না। ইনশাআল্লাহ সামনের পর্বে ক্লিয়ার হবে।
খুব অসাধারণ মন্তব্য করেছেন আপনি আপনার মন্তব্য শুনে আমার খুব ভালো লাগলো। বাকিটা আগামী পর্বে আমি কিলিয়ার করবো।
এত বছর পর এরকম সমস্যা দেখা দেবে সত্যি ভেবে খারাপ লাগলো। একদিকে রাব্বির নিজের মা অন্যদিকে তার পালক বাবা মা। পালক বাবা-মা ছোট থেকে তাকে নিজের ছেলের মতই মানুষ করেছে। আর অন্যদিকে নিজের মা এসে সন্তান দাবি করছে। রাব্বি তাহলে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়েছে। রাব্বির জন্য শুভকামনা রইল। ও যেন সঠিক পথ বেছে নেই। পরবর্তী ঘটনা শোনার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম আপু।
খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন আপনি। আর রাব্বি শিক্ষিত ছেলে সেই ভালো করতে পারবে। ইনশাআল্লাহ সামনের পর্বে দেখা যাবে।
আসলে রাব্বির বাবা মা প্রথমে রাব্বিকে পালন করতে পারবে না এজন্য অন্যের কাছে দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু যখন অন্যরা রাব্বিকে লালন পালন করে বড় করলো শিক্ষিত করে তুলল তখন আবারো ছেলের দাবি নিয়ে আসলো । আমি মনে করি নিজের বাবা মায়ের থেকে পালক বাবা মা অনেক বেশি ভালো ছিল। শেষ পর্যন্ত রাব্বি কি করবে এটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
আপনি খুব সাজিয়ে অসাধারণ মন্তব্য করেছেন। পরের পর্বের অপেক্ষায় আছেন দেখা হবে আগামী পর্বে বাকি ঘটনা আমি শেয়ার করবো।
সত্যি আপু রাব্বির জন্য ব্যাপারটা অনেক খারাপ। সত্যিই তোএকদিকে তার নিজের মাও জমজ ভাই আর অন্য দিকে তা পালক বাবা - মা।কনোটাই কম নয়।তবে পালক বাবা-মা তাকে নিজের সন্তানের চেয়ে কোন অংশে কম করেনি।তাদেরই দুটি সন্তান হওয়ার পরেও তারা রাব্বিসহ তিন জনকে সকল সম্পদ সমান ভাবে ভাগ করে দিয়েছেন ও অন্য দিকে তার জন্মদাতা মা আর জমজ ভাই এটা ও কম নয়।এখন দেখা যাক রাব্বি কি সিদ্ধান্ত নেয়,পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
আগামী পর্বে আরো সুন্দর করে ঘটনাগুলো আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো। অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে মন্তব্য করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলেই ছেলেটা এখন বিপদে পড়েছে কারণ যতই হোক নিজের বাবা-মা বলে কথা, একটা সময় তার বাবা মা তাকে ছেড়ে গেলেও এখন ফিরে এসে মায়া টা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে দিল। একদিকে যারা তাকে বড় করার জন্য এত কষ্ট করল অপরদিকে তার আসল বাবা মা সত্যিই দোটানার মধ্যে পড়ে গেল ছেলেটা।
ছেলেটির উপর আল্লাহ সহায় হোক। এবং সে ভালোভাবে তার মেধাটি যাচাই করুক। মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার মতে পালক বাবা মা কেই দেখা উচিত। কারণ ওনারা ওকে মানুষ করছেন এবং বড় করেছেন আর তারচেয়ে বড় কথা এত বছর পর নিজেদের সন্তান হওয়ার পরও সৎ ছেলের মত আচরণ করেন নি ওনারা। অপেক্ষায় রইলাম পরের পর্বের।
মন্তব্যর জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ইনশাআল্লাহ পরের পর্বে শেয়ার করবো।