তুমি ফ্রেশ হয়ে আসলে প্লেটে খাবার তুলে দেই। তুমি কখনো বলনি তোমার হাতের রান্না করা মালাইকারীটা খুব অসাধারণ হয়েছে বউ। কারণ তুমি জানোই না ভালবেসে কি কি করতে হয়। তরকারিতে লবণ ঠিক আছে কিনা দেখতে হয়। তোমার ভালো লাগবে কিনা ভাবতে হয়। এগুলো তুমি কখনো বুঝতেও পারোনা। এরপর রোজ রাতে নিয়ম করে আমরা বিছানায় যাই। আমার কপালে টিপ খুলে আয়নায় লাগিয়ে রাখি। আমার চোখের কাজল মুছে ফেলি। রাতের অন্ধকারে তোমার সামনে আসলেই তুমি আমার দিকে তাকাও। তোমার চোখের মুগ্ধতা আর পিপাসার চাহনি দেখে আমি হতবম্ভ হয়ে যায়। এই মানুষটা কি একটু আগের মানুষ যে এতক্ষণ আমার দিকে তাকাওনি।

তুমি বোধহয় খুব নগ্ন প্রিয় স্বামী। স্বামী হওয়ার আগে একজন প্রেমিক হতে হয়। এমন প্রেমিক যার কাছে বিছানা এবং বিছানার বাইরে সব জায়গাতেই স্ত্রীর গুরুত্ব সমান। আমারও তোমার মত চাহিদা আছে তবে যার তার সাথে আমি তা বিনিময় করি না। তোমাকে আজকাল রাস্তার মানুষ মনে হয়, যে ভালবাসতে জানেনা। ভালোবাসাহীন শরীরের বিনিময়ে নিজেকে বাজে মেয়েদের মতো লাগে অথচ আমি প্রেমিকা হতে চেয়েছিলাম। আমি চেয়েছিলাম মানুষটা দূরে গেলে আমার শূন্যতা অনুভব করুক। কাছে আসলে ভালবাসার দৃষ্টিতে একবার অন্তত তাকিয়ে থাকুক। এটা তোমার হয়নি কখনো।

আমি চলে যাচ্ছি, যে ঘরে ভালোবাসা, প্রেম, যত্নের অভাব থাকে সেখানে দমবন্ধ লাগে। তোমার খুব একটা সমস্যা হবে না। কারণ তোমার ফোনের টেক্সট পড়েছি আমি। তার নাম অনুরিমা। খুব সম্ভবত তোমার কলিগ। তুমি লিখেছিলে নীল শাড়িতে তোমাকে আজ ভীষণ সুন্দর দেখিয়েছে। আমি বুঝতে পারছিলাম তোমার চোখেও প্রেম আছে, তবে সেটা আমার জন্য না। যে মানুষ ঘরের বাইরে আমার না সে আমার পুরুষ হতে পারেনা। ব্যক্তিগত পুরুষ হতে হলে এক কোটি মাইল দূরে বসে থাকলেও সে আমার। অতটুকু নির্ভরশীলতা যার প্রতি আসে না তাকে আমি আমার বলি না। যে প্রেমিক ঘর থেকে বের হলেই অন্য মানুষ, সে ব্যক্তিগত হয়না কখনো। যার তার সাথে আমি শুধুমাত্র শরীর বিনিময়ে অংশ নিতে পারবোনা। আমার একটা ব্যক্তিগত মানুষ চাই, যে মানুষ একান্তই আমার। পৃথিবীর অন্য প্রান্তে বসে থাকার পরেও সে আমার। তুমি ভালো থাকো, অসুস্থ হলে পড়লে ওষুধগুলো ঠিক মত খেয়ো। হয়তো আগের মতো তোমাকে ওষুধ খাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিতে পারবোনা। নিজের খেয়াল রেখো।