ডিভোর্স লেটার (প্রথম পর্ব)
ডিভোর্স লেটার
ডিভোর্স লেটার এর সাথে হলুদ খামে করে একটা চিঠি পাঠিয়েছি।
প্রিয় এবং অপ্রিয়ের মাঝামাঝিতে যে মানুষ থাকে চিঠির শুরুতে তাকে কি বলে সম্বোধন করতে হয় আমি শিখিনি কোথাও। এতক্ষণে নিশ্চয়ই ডিভোর্স লেটারটা তোমার হাতে পৌঁছে গিয়েছে। হুট করে ডিভোর্স লেটার পেলে যে কেউ একটু ধাক্কা খাবে। তুমি ঠিক কতটুকো ধাক্কা খেয়েছ আমি অনুমান করতে পারছি না অথবা তোমার কোন ধাক্কায় নাও লাগতে পারে। আমাদের সম্পর্কের আজ চার বছর পূর্ণ হল। এই দিনে ডিভোর্স লেটারের জায়গায় হয়তো প্রেমপত্র থাকার কথা ছিলো অথচ এই পৃথিবী সব সময় তার কথা রাখতে পারে না। যেমন কথা রাখতে পারোনি তুমি।
আমরা চার বছর একসাথে ছিলাম। একই ছাদের নিচে, পাশাপাশি বালিশে, একই ঘরে, একটাই শরীর মোছার তোয়ালে ব্যবহার করেছি, পাশাপাশি চেয়ারে বসে খেয়েছি প্রতিদিন অথচ আমরা মনের দিক থেকে কখনো কাছে আসতে পারিনি। আমাদের ভেতরে একটা দূরত্ব ছিল গোপনে। আমি তোমার কাছের মানুষ হয়েছি শুধু তোমার একান্ত সময়ে এবং এই চাহিদার বাহিরে তুমি এক অন্য মানুষ। আমি তোমার কাছের মানুষ ছিলাম যতক্ষননা তোমার চাহিদা সম্পন্ন হয়েছে। তোমার চাহিদা পূরণের পর তোমাকে অপরিচিত লাগে। এই মানুষটা তখন আর একটু আগের মানুষ থাকে না। আমার নিজেকে খুব একা একা মনে হয় অথচ সবকিছুর বাহিরেও আমার একটা ভালবাসার মানুষ প্রয়োজন হয়। যত্নের অভাব বোধ হয়। মুগ্ধতার একজোড়া চোখের চাহনি প্রয়োজন হয়।
তুমি রোজ সন্ধ্যায় অফিস থেকে ঘরে ফিরবে বলে আমি চোখে কাজল দিয়ে বসে থাকি। কপালে তোমার প্রিয় রঙের টিপ পরি। তুমি ঘরে ফেরার আগে আমি বারবার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখি। তুমি ঘরে ফেরার পর প্রথম যে কথাটা বলব সেটা অন্তত একশতবার ট্রাইল দেই। কথা বলার সময় আমার মুখের এক্সপ্রেশন টা দেখি। তোমার চোখে আমাকে কেমন লাগবে এই ভয়টা কাজ করে সব সময়। তারপর তুমি ঘরে ফিরে আসলে আমি দরজা খুলে জিজ্ঞাসা করি খুব ক্লান্ত হয়ে গেছো তাই না ? তুমি তাকাও না কখনো আমার দিকে। তখন আমার খুৱ কান্না পায়। আমি প্রত্যাশা করি সারাদিন মানুষটা কাজ করে ঘরে ফিরে আমাকে একটু দেখুক, আমি প্রত্যাশা করি কেউ ঘরে ফিরে একবার জিজ্ঞেস করুক সারাদিন খুব একা একা লাগে তাইনা ?? এরকমটা হয়না কখনো।
(চলবে..........)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
_
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
আপু খুব সুন্দর করে লিখেছেন,আমার খুব ভাল লাগলো। আসলে একজন মানুষ তার পাশের মানুষটির থেকে বেশি কিছু চায় না। কিন্তু সেই অল্পটুকুও যখন পূরন হয়না তখন সত্যি খুব খারাপ লাগারই কথা। এভাবে দিনের পর দিন চললেই একজনের উপর অন্য জনের আগ্রহ কমে বই বাড়ে না।অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আমার মনে হয় একটা মেয়ের সংসার জীবনে তার চাওয়া, তার স্বামী তাকে যেন
ভালবাসে ও প্রশংসা করে ভালো-মন্দের খোঁজ খবর নেয়। বিশেষ বিশেষ দিনগুলো নিজেদের একটু চাওয়া পাওয়া।
এর ব্যতিক্রম যদি হয় তাহলে সেই জীবন আসলেই কষ্টের এবং সম্পর্ক এখান থেকেই ভেঙ্গে যাওয়ার সূচনা হয়। অনেক সুন্দর লিখেছেন আপু পরের পর্বের আশায় থাকলাম।