হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা - গল্পের দ্বিতীয় পর্ব

তিনদিন পর গ্রাম থেকে ফিরে আসলাম শহরের বাসায়। এরমধ্যে তার সাথে আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি। যথাসময়ে তার ফোন চলে আসে আমার টি এন টি ফোনে। প্রথম কথাতেই সে বলল আমাকে তার খুব ভালো লেগেছে। আর এই কথা শুনে আমি লজ্জায় আর কিছুই বলতে পারিনি তাকে। কেমন জানি আমাদের ভালোলাগা থেকে আস্তে আস্তে ভালোবাসার গভীরতা আরো বাড়তে লাগলো। আসলে ওই বয়সে এটা ভালোবাসা ছিল কিনা জানিনা তবে আবেগ ছিল অনেক বেশি। তার সাথে নিজেকে জড়িয়ে অনেক স্বপ্ন দেখা শুরু করলাম।

একদিন আমি আর মা মার্কেটে যাবো বলে তাকে জানালাম। সে বলল ঠিক আছে আমিও আসবো মার্কেটে। সময় ও ঠিকানা দেয়াতে সে সঠিক সময়ে মার্কেটে এসে হাজির হয়। আসার পর আমি আমার মায়ের সাথে তার পরিচয় করিয়ে দিলাম ও মা তাকে একদিন বাসায় আসতে বলল। আমি এতটা বোকা ছিলাম যে তার নাম ছাড়া তার সম্পর্কে আর কিছুই জানতাম না। আসলে জানার কখনো দরকার হয়নি, আর সে নিজেই আমাকে সবসময় ফোন দিতো তাই বলে তার নাম্বারটাও কখনো রাখা হয়নি। তখনকার টি এন টি ফোন গুলোতে নাম্বার দেখা যেতনা।

মায়ের কথা রাখতে সে কিছুদিন পর আমাদের বাসায় আসলো ও সবার সাথে পরিচিত হলো। মা তাকে জিজ্ঞাসা করল তোমার বাবা-মা কোথায় থাকে? তুমি কি করো?কোথায় থাকো? ভাই বোন কতজন ? সে উত্তরে বলল -আন্টি আমার বাবা-মা দেশের বাহিরে থাকে। আমি শহরে একটি হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করছি, এখনো আমার পড়াশোনা শেষ হয়নি তবে দেশের পড়াশুনা শেষ হলে আমিও আমার বাবা-মায়ের কাছে চলে যাব। আর আমি চাই আমি যখন আমার বাবা- মায়ের কাছে যাবো তখন সাথে করে আপনার মেয়েকেও নিয়ে যাব। আমি এই বিষয় নিয়ে আমার বাবা- মায়ের সাথে কিছু বলে রেখেছি। আপনারা চাইলে তাদের সাথে কথা বলতে পারেন। আমি আমার বাবা মায়ের সকল নাম্বার আপনাদের দিয়ে যাবো।

এরপর আবারো মায়ের কথা শুরু হলো। মা বলল- বাবা আমার মেয়েতো এখনো অনেক ছোট, আর বললেই তো আমি তোমার সাথে মেয়েকে দিয়ে দিতে পারি না। আমি মেয়ের বাবার সাথে কথা বলে তারপর তোমার বাবা মায়ের সাথে কথা বলব। আর তুমি কোথায় থাকো, তোমার ঠিকানা ও ফোন নাম্বার আমাদের দিয়ে যেও। এই ছিল আমার মায়ের সাথে তার কথোপকথন। সে আমাকে তার বাবা-মায়ের নাম্বার এবং তার ঠিকানা ফোন নাম্বার সবকিছু লিখে দিয়ে যায়। আসলে আমার কখনও তাকে ফোন করার দরকার হয়নি কারণ সেই সবসময় আমাকে ফোন দিতো।