হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা - গল্পের প্রথম পর্ব
হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা
আমি তখন দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তখন আমাদের বাসায় ছিল টি এন টি ফোন। আর সেই ফোনে অনেক আজে বাজে ফোন আসতো, আর বেশিরভাগ ফোনগুলো আমি ধরতাম। এরই মধ্যে এক ছেলের সাথে কথা বলে আমার খুব ভালো লাগলো। সে প্রতিদিন ফোন দেয়া শুরু করল এবং নির্দিষ্ট একটা সময় ফোন দিত। কিছুদিন ফোন দেয়ার পরে আমিও বুঝে যায় সে কোন সময়টাতে ফোন দেয়। আর আমি সেই সময়ে ফোনের আশেপাশেই থাকতাম। কেমন জানি একটা রুটিন হয়ে গেল আমার প্রতিদিন তার সাথে কথা বলাটা। তার সাথে কথা বলতে বলতে সময় কিভাবে চলে যেত বুঝতেই পারতাম না। মা ওই সময়টাতে ঘুমিয়ে থাকতো তাই আমিও সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারতাম।
প্রায় তিন মাস কথা বলার পর ও বলল আমাকে দেখতে চায় আমিও চিন্তায় পড়ে গেলাম কিভাবে দেখা করা যায়, কারণ বাসা থেকে আমাকে একা বের হতে দিত না। হঠাৎ একদিন মা বলল আমরা গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যাব এবং আমাদের যাওয়া দিন ঠিক হল ১৪ ফেব্রুয়ারি। আমরা ট্রেনে যাব বলে সিদ্ধান্ত নেয় এবং ট্রেন ছাড়বে স্টেশন থেকে বিকাল চারটায়। আমি তাকে এই কথা জানাতেই সে বলল আমি তোমাকে স্টেশনে এসে দেখবো। কিন্তু তোমাকে চিনবো কিভাবে? আমি বললাম আমি লাল জামা পড়ে আসবো তুমি আমাকে চিনতে পারবে কিন্তু আমি তোমাকে চিনবো কিভাবে? তখন সে উত্তরে বললো আমি নিজেই নিজেকে তোমাকে ছিনিয়ে দিবো।
১৪ ফেব্রয়ারি ভালোবাসা দিবস। আর এই ভালোবাসা দিবসে তার সাথে আমার প্রথম দেখা হতে যাচ্ছে। যথাসময়ে আমরা স্টেশনে পৌঁছে গেলাম। আমি মা-বাবা আর ছোট বোন ছিল সাথে। ট্রেনে উঠে আমি জানালার পাশে গিয়ে বসলাম। আর আমার চোখ শুধু তাকেই খুঁজছিল, খুব অস্থির আর টেনশন হচ্ছিল যে সে হয়তো আমাকে চিনতে পারবে কিন্তু আমি তাকে কিভাবে চিনবো। ট্রেন এখনো ছাড়িনি, বাবা ট্রেন থেকে নেমে বাহিরে গিয়েছে পত্রিকা আর কিছু খাবার কিনতে। এমন সময় একটি বাচ্চা মেয়ে এসে সাহায্য চাচ্ছে আমার কাছে। আমি তাকে মানা করার পর সে আমাকে একটু দূরে দেখিয়ে বলল ওই ভাইয়াটা বলেছে লালজামা পরা আপনার কাছে টাকা চাইতে, আর তাকে দেখিয়ে দিতে বললো। সে ঠিক আমার জানালা বরাবর স্টেশনে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে।
তখন আমি বাচ্চা মেয়েটিকে কিছু টাকা দিয়ে একদৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম, কিন্তু জানিনা কতক্ষন তাকিয়ে ছিলাম। কারণ ছেলেটা অনেক বেশি সুদর্শন ও স্মার্ট ছিল। মনে ভয় কাজ করছিল এমন ছেলে আমাকে পছন্দ করবে নাকি এখানেই সবকিছু শেষ হয়ে যাবে !! এই বিষয় গুলো মা আমার পাশে থেকে সবকিছু লক্ষ করলো ও জিজ্ঞাসা করলো কি হচ্ছে আর কাহিনী কি? আমার মায়ের সাথে খুব ভালো ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পৰ্ক ছিল। কখনো কোনো কিছু গোপন রাখতাম না। যখন যা কিছুই হতো বলে দিতাম। তখন এই সকল বিষয় আমি আমার মাকে খুলে বললাম। ততক্ষনে ট্রেন ছেড়ে দিল এবং আমরা একজন আরেকজনের চোখের আড়াল হয়ে গেলাম।
(চলবে..........)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
_
আহারে আপু এখানেই শেষ করতে হয়?? খুব ভাল লাগা শুরু হয়েছিল। পড়তে পড়তে হঠাৎ থেমে গেল। পরের পর্ব খুব তাড়াতাড়ি আশাকরি পড়ব।অনেক ধন্যবাদ আপু।
হুম গল্পটা বেশ মজার। আগামী কালকেই পরের পর্ব দিবো পড়বেন।
মেয়েটির সাথে ছেলেটির দেখা হলো অবশেষে। মেয়েটির মা যেহেতু বিষয়টা জেনেছে তাহলে তারপর কি হলো?তা জানার অপেক্ষায় রইলাম।আর একটি কথা বলতেই হয়,দারুণ লিখেছেন।
তারপর কি হলো আর কি না হলো সব কিছুই জানবেন আগামী পর্বে।
যেন সিনেমার গল্পকে হার মানায়।
সিনেমার গল্পের মত রেলস্টেশনে এসে প্রথম দেখা। অনেক রোমান্টিক গল্প ছিল আপু দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আপনার এই গল্প পড়ার আগ্রহটা অনেক বেশি একটু দ্রুত শেয়ার করার চেষ্টা করবেন।