আত্নসন্তুষ্টি : অর্জনযোগ্য নাকি অধরা ? || ১০% সাই-ফক্স, ৫% এবিবি-স্কুল বেনিফিশিয়ারি

আসসালামু আলাইকুম , আদাব। সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালো আছেন আর বেশ সুস্থ সুন্দর ও দুশ্চিন্তামুক্ত আছেন। মানুষের জীবনে ভালো থাকতে হলে খুব বেশি কিছুর আপাত প্রয়োজন পড়ে না, তবে সবক্ষেত্রেই অদম্য মনোবল ও নিষ্ঠার সাথে এগিয়ে গেলে ভালো একটি প্রতিফল আশা করা যায়।

অনেকে খুব কঠিনভাবে জীবনের অন্বিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে ভাবেন, চড়া হিসেবের মধ্যে জীবনকে বেঁধে রাখেন, সময়ের মূল্য বেশি আর নিত্যদিনের কাজের ফাঁকে অবসর যাপনের সুযোগ সেখানে কম। দৈনন্দিন কাজকর্মের মধ্যে শুধু প্রফিট, লাভের ঘরে কত পড়লো আর নির্দিষ্ট লক্ষ্য ধরে পৌঁছাতে হলে কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে। সাংখ্যিক মনগুলো সেখানে কেবল খুঁজে বেড়ায় পরিমাণগত হিস্যা, জীবনের অলঙ্কারগুলো অবহেলিত।

তবুও অধিকাংশ মানুষের চিন্তাধারার মধ্যে ফুটে ওঠে অধ্যবসায় আর একাগ্রতাই সবকিছুর সফলতার পেছনের গল্প। ক্ষেত্রবিশেষে প্রতিটি সফলতার পেছনে যতটা না নিজস্ব দক্ষতা ও পরিশ্রমের ফসল কাজ করে, তারচেয়ে বেশি কোন না কোন অনু্প্রেরণা যা এগিয়ে নিয়ে যায় শত বাধা বিপত্তির মধ্যে দিয়েও।

আমি দেখেছি বিভিন্ন দৃশ্যপটে কোন না কোন ঘটনার আড়ালে যেখানে সাফল্যের জন্য নিবেদিত সবগুলো ফ্যাক্টরই বলবৎ থাকে, তারপরেও কিছু না কিছু পিছুটানে প্রকৃত একটি গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্ব হয়। তার কারণ শুধু চেষ্টা, পরিশ্রম কিংবা মেধার সমন্বয় ঘটালেই সাফল্য হাতে এসে ধরা দেয় না, তারচেয়ে বরং কিছু বিষয়, কোন জীবনঘনিষ্ঠ শিক্ষা আর অনুপ্রেরণা জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শেখায়। তার হাত ধরেই উত্তরণ ঘটে নানা সংকটের।

এ প্রসঙ্গে ছোট্ট একটি গল্প তুলে ধরা যাক। একটি ব্যক্তি খুব বেশি রকমের নিষ্ঠাবান ছিলেন নিজ কাজের প্রতি। তার জীবনে আর অন্য কিছু না হোক, একটি লক্ষ্যমাত্রা ছিল যেকোন উপায়ে তার নিকট প্রতিবেশীর সাথে পাল্লা দিয়ে সম্পদ অর্জনে অগ্রবর্তী হতে হবে। প্রতিযোগিতা অসম, ক্ষেত্রবিশেষে দুটি ক্ষেত্রে পারস্পরিক অবস্থানও আলাদা।

তবুও ব্যাক্তিটি চেষ্টা করে যেত যদি কোন রকমে তার নতুনভাবে নিযুক্ত ব্যবসায় শ্রম, আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও কিছু লোক নিয়োগের মাধ্যমে যদি তার লক্ষ্যে সহায়ক হয়ে প্রসার ঘটানো যায় ব্যবসার। কিন্তু তিনি ভুলে গেলেন তার আরো অন্যান্য দিক দেখতে হয়, ব্যস্ততা ঘিরে ধরেছে আর তার সাথে তার নিজেরও কোন বাড়তি সময় নেই অবসরের জন্য, সাথে পরিবার ও আত্নীয় স্বজনরা তো আছেই।

তারপরেও তিনি ভাবলেন, যে করে হোক তার সেই মনস্কামনা পূর্ণ হোক। তিনি লোভের বশবর্তী হয়ে আরো বেশি বিনিয়োগের দিকে পা বাড়ালেন, মার্কেট বা বাজারের বিষয়গুলো যে ঝুঁকি বয়ে আনে সে সম্পর্কে না জেনে। ফল যা হবার তা-ই হলো। একটা সময় এসে তিনি দেখলেন তার বিনিয়োগ শুধু কেবল দেখাশোনার অভাবে, আর অদূরদর্শী চিন্তায় ডুবে তা লোকসান গুণতে বসলো।

তিনি তারপর আখেরে বুঝলেন, এবার তবে সবকিছুই বুঝি একটি বিষয়ের জন্য দায়ী। তিনি লোভ কমিয়ে দিলেন। আর অল্পের যে সন্তুষ্টি ও খুব বেশি রকমের প্রতিযোগিতায় প্রতিবেশীকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বাসনা ত্যাগ করলেন। এভাবে তার নিজের জন্য, জীবনের কিছু অন্বিষ্ট ব্যাপারের অর্থ খুঁজে পেলেন।

আশা করি, এ গল্প আর জীবনের এ দিকটির ব্যাপারে কিছু মূল্যবান কথা প্রকাশ করতে পারলাম। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ নিজেদের সময় ব্যয় করে লেখাটি পড়ার জন্য। অনেক শুভকামনা ব্যক্ত করি। দেখা হবে পরবর্তী কোন দিন৷ সে পর্যন্ত ভালো থাকুন।