সুস্বাদু ও মজাদার "ঝাঁঝুড় পিঠা "রেসিপি।।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহ।
হ্যালো বন্ধুরা
কেমন আছেন?
আশাকরি,আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে সকলেই ভাল আছেন।আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি।আসলে আস্তে আস্তে শীতের মৌসুম চলে যাচ্ছে। তাই পিঠা খাওয়ার উৎসব ও অনেকটা কমে যাচ্ছে। বিশেষকরে পৌষ মাসের শীতে পিঠা খাওয়ার যেমন ধুম পরে মাঘ মাসে আস্তে আস্তে কমতে থাকে। যাইহোক, আজ আমি আপনাদের মাঝে ঝাঁঝুড় পিঠা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি।গতকাল বাসায় আমার শাশুড়ী এসেছিল।আর উনার কাছ থেকেই এই পিঠা বানানো শিখা।কারন এই পিঠা বানাতে গেলে মেয়েদের সাহায্য ছাড়া বানানো অসম্ভব। আর আমার শাশুড়ী এই পিঠা খুবই সুন্দর ও সুস্বাদু করে বানাতে পারেন।তাই উনি বাসায় আসলে ওনার কাছ থেকে ঝাঁঝুড় পিঠা বানানো শিখে সেই পিঠার রেসিপিটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।আর আমার জানা মতে,এই পিঠাটি অনেকে শশুড় বাড়ি, নানুর বাড়ি এবং নিজের বাড়িতেও তৈরি করে খেয়ে থাকবেন।অবশ্য অন্য সব পিঠা কিনতে পাওয়া গেলেও এই পিঠাটি কিনতে পাওয়া যায় না।তাই যাঁরা এই পিঠাটি বানাতে পারেন না তাঁরা এই পোস্টটি পড়ে অতি সহজেই বানাতে পারবেন বলে আমি মনে করি।আর তাই আজ কথা না বাড়িয়ে ঝাঁঝুড় পিঠা তৈরির সম্পূর্ণ ধাপগুলি আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হল।
উপকরণের তালিকা
ক্রমিক নং | উপকরণের নাম | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | চালের গুঁড়ি | ১৫০০ গ্রাম |
২ | খেজুরের গুঁড় | ৫০০ গ্রাম |
৩ | নারিকেল | ১ টি |
৪ | দুধ | সামান্য পরিমাণ |
৫ | লবন | স্বাদমতো |
উপকরণের ছবি
রেসিপির প্রস্তুত প্রণালীর প্রতিটি ধাপ নিচে তুলে ধরা হলোঃ
প্রথম ধাপ
প্রথমে নারিকেল কোরানি দিয়ে নারিকেল কুড়িয়ে নিবো।
দ্বিতীয় ধাপ
এরপর গুড় গ্রেড করে নিবো।
তৃতীয় ধাপ
এরপর চালের গুঁড়াতে সামান্য লবণ ও দুধ দিয়ে মেখে কিছুক্ষণের জন্য রেখে দিবো।
চতুর্থ ধাপ
একটি ঝাঁজুর নিয়ে তার উপর একটি কাপড় বিছিয়ে নিবো।
পঞ্চম ধাপ
এরপর লবণ ও দুধ দিয়ে মাখিয়ে রাখা চালের গুঁড়া ঝাঁঝুড়ে দিয়ে নিবো।
ষষ্ঠ ধাপ
এরপর চালের গুড়ার উপর আগে থেকে গ্রেড করে রাখা খেজুরের গুঁড় দিয়ে নিবো।
সপ্তম ধাপ
এরপর গুঁড়ের ওপর আগে থেকে কুড়িয়ে রাখা নারিকেল দিয়ে নিবো।
অষ্টম ধাপ
এরপর পুনরায় নারিকেলের ওপর চালের গুঁড়া দিয়ে নিবো।
নবম ধাপ
এরপর আবার চালের গুঁড়ার ওপর গুঁড় দিয়ে নিবো ।
দশম ধাপ
এরপর গুঁঁড়ের ওপর নারিকেল দিয় নিবো।
একাদশ ধাপ
এরপর একইভাবে কয়েকটি লেয়ার দেওয়ার পর কাপড় দিয়ে ঢেকে নিবো।
দ্বাদশ ধাপ
এরপর চুলাতে একটি পানি ভর্তি পাতিল বসিয়ে তার উপর ঝাঁজুরটি বসিয়ে পাতিল এবং ঝাঁঝুড় এর মাঝখানে যে ফাঁকা থাকে তা আটার সাহায্যে লাগিয়ে দিতে হবে। যাতে পানির ভাপটি বের হয়ে না যায়।আর এ কাজটির জন্য মেয়েদের সাহায্যে নিলে তা পারফেক্ট হয়ে থাকে।অবশ্য গ্রামে অনেকে আটার পরিবর্তে মাটি ও ব্যবহার করে থাকে।
শেষ ধাপ
এভাবেই ঘন্টাখানেক মিডিয়াম আঁচে জ্বাল দেওয়ার পর পিঠাটি সম্পূর্ণ রুপে তৈরি হয়ে যাবে।এভাবেই তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু ও মজাদার ঝাঁঝুড় পিঠা রেসিপি।
পরিবেশন
পরিশেষে আমি চেষ্টা করেছি সুস্বাদু ও মজাদার করে ঝাঁঝুড় পিঠা রেসিপিটি তৈরি করে আপনাদের মাঝে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য। জানি না কতটুকু পেরেছি। আমার তৈরি করাঝাঁঝুড় পিঠা রেসিপিটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আপনাদের উৎসাহমূলক মন্তব্য আমাকে সুস্বাদু ও মজাদার রেসিপি তৈরি করতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।
ফটোগ্রাফির বিবরণ
Photographer | @anisshamim |
---|---|
Device | Google Pixel 4a |
আমার পরিচিতি
আমি আনিসুর রহমান। আমার স্টিমিট আইডি @anisshamim।আমার জন্মস্থান মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে।আমি বাংলা ভাষার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যেবোধ করি এবং বাঙালি হিসেবে নিজেকে খুব গর্বিত মনেকরি।দেশকে খুবই ভালোবাসি।দেশের জন্য নিজের যেকোনো কিছু বির্সজন দিতে সদা সর্বদা প্রস্তুত।ভ্রমন করা আমার খুব সখ।তাছাড়া সময় পেলেই চিত্রাঙ্কন করা,কবিতা লিখা এবং মজার মজার রেসিপি তৈরি করা।গল্পের বই পড়তে ও খুব ভালো লাগে।অন্যের কষ্টে নিজেকে বিলিয়ে দিতে খুব ভালোলাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
ঝাঁঝুড় পিঠা "নামটি প্রথম শুনলাম। আপনার শাশুড়ি এসে তো চমৎকার পিঠা তৈরি করেছেন। আমরা এটাকে ভাপা পিঠা বলে থাকি। এভাবে তৈরি করে খেতে অনেক মজা লাগে। চমৎকার উপস্থাপনা করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
আমাদের এখানে সবাই এটাকে ঝাঁঝুড় পিঠা বলে।আর বিভিন্ন জায়গায় এটার ভিন্ন নাম হতে পারে ভাই।আর হা শাশুড়ী বাসায় আসাতে এই পিঠা বানানো ও শিখে গেলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনার এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
বাহ ভাই আপনার দৌলতে নতুন একটি পিঠার কথা জানতে পারলাম।পিঠাটি অনেকটা কেকের মত। নারিকেল আর গুড়ের কারনে পিঠাটি খেতে যে অসাধারণ হবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।ধন্যবাদ ভাই অসাধারণ সুস্বাদু ও ইউনিক রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া, ঝাঁঝুড় পিঠার রেসিপি দেখে এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
শীতকালে এই পিঠা গুলো খেতে অনেক মজা লাগে ভাইয়া। তবে আমাদের এদিকে এই পিঠা গুলো কে ভাপা পিঠা বলে। নারিকেল দিয়ে ভাপা পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। আপনি আপনার শাশুড়ির কাছ থেকে মজাদার একটি পিঠা তৈরি শিখে নিলেন। ধন্যবাদ আপনাকে
আপু,আমাদের এখানে যেটা ছোট এবং বাটি দিয়ে বানানো হয় সেটাকে ভাপা পিঠা। আর যেটা অনেক বড় এবং ঝাঁঝুড় ছাড়া বানানো সম্ভব নয়। সেটাকে ঝাঁঝুড় পিঠা বলে।অবশ্য বিভিন্ন জায়গায় আবার একই জিনিসের ভিন্ন নাম হতে পারে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু, এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
এটাতো দেখে বোঝা যাচ্ছে যে অনেক বড় একটি ভাপা পিঠা মনে হচ্ছে।কারণ এই পিঠা আমি রাইস কুকারে দিয়ে বড় ভাপা পিঠা তৈরি করেছিলাম ঠিক এইভাবে।খেতে কিন্তু অনেক মজাদার হয়।যাক আপনার শাশুড়ির থেকে বেশ মজার একটি পিঠা রেসিপি শিখে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।তবে পিঠা একই হলেও নামটা ভিন্ন দেখে অনেক ভালো লেগেছে।মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া কি পিঠার নাম দিলেন ঝাঁঝুড় পিঠা। জীবেনে এই পিঠার নামও শুনি নাই। তবে পিঠারটা দেখে তো খুব খেতে ইচ্ছা করতেছে। দেখে তো পিঠা মনে হচ্ছে না বরং কেকের মত লাগছে। আর স্বাদের তো তুলনা নাই। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়া এটা বড় ভাপা পিঠা। আমিও করি খেতে বেশ মজার হয়। আপনি রেসিপিটি ধাপে ধাপে তুলে ধরেছেন যে কেউ দেখে চাইলে করে নিতে পারবে।মজার এই বড় ভাপা পিঠার রেসিপি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার আজকের এই রেসিপিটা আমার কাছে একদম ইউনিক মনে হয়েছে। ইত পূর্বে কখনো মনে হয় এমন পিঠা রেসিপি আমি দেখি নাই।খুবই ভালো লেগেছে আপনার অসাধারণ রেসিপি টা দেখে। সমস্ত উপাদান গুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন আমাদের সামনে।