বিষন্নতাকে 'না' বলি।।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহু।
হ্যালো বন্ধুরা ?
আমি আনিসুর রহমান।আমার ইউজার আই ডি @anisshamim।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি “আমার বাংলা ব্লগ” এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন।আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ আমি ও ভালো আছি।আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি সাধারণ হলেও তা আমাদের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট করছি।তা হলো বিষন্নতা।আসলে এই পোস্টটি পড়ে আপনারা সেভাবে চলার অভ্যাস করলে মন থেকে বিষন্ন ভাবটা একেবারেই দূর হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।এতে নিজের জীবনে সুখময়তার পাশাপাশি সমাজ জীবনেও সুখ আর সুখ পাওয়া যাবে।নতুবা বিষন্নতা নিজেকে ধুকে ধুকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করবে।আশাকরি,পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন।
ব্যক্তিমাত্র আমরা সকলেই সুস্থ দেহ-মনের প্রত্যাশী।কিন্তু কখনও কখনও ব্যস্ত জীবনের কর্মধারা ও পরিবেশে-পরিস্থিতিতে আমাদের সুস্থ দেহ-মন বিষিয়ে জীবন করে তুলেছে ভারাক্রান্ত।তখন মনে ভর করে বিভিন্ন মানসিক সমস্যার বিষময়তা,ফলে জীবন হারিয়ে ফেলে তার স্বাভাবিক ছন্দ। মনের ছন্দপতনের তথা জীবন বিষময় করতে অন্যতম দায়ী এমন এক মনস্তাত্ত্বিক বিষ হলো বিষণ্ণতা।
সাধারণ ব্যক্তি প্রায় প্রতিদিন বেশির ভাগ সময় সময় দুঃখিত থাকে।ব্যক্তির নিজের বাস্তব কাজকর্মের প্রতি আগ্রহ ও আনন্দহীনতা দেখা দেয়। সহজে ব্যক্তির ঘুম আসে না,আর ঘুম এলেও মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে আর ঘুম আসে না।কেউ কেউ খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে পড়ে। আবার কখনও কখনও কারো ঘুম বেড়ে যায়। ব্যক্তির সক্রিয়তার মাত্রায় পরিবর্তন ঘটে। হয়তো ব্যক্তি অলস হয়ে যায় নতুবা বেশি উত্তেজিত বা কর্মক্ষম হয়ে ওঠে।
অনেক সময় ক্ষুধা কমে বা বেড়ে যায়। আবার অনেক সময় ওজন কমে বা বেড়ে যেতে পারে।দিনের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্লান্তি ও অবসন্ন বোধ হয়।এমন সময় নিজেকে দোষ দেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়,নিজেকে অপদার্থ মনে করার বদভ্যাস গড়ে ওঠে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এমন সময় সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। অনেক সময় আত্মহত্যা বা মৃত্যুচিন্তা পেয়ে বসে।সমাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়।
আসলে মানুষ যখন বিষন্নতায় ভোগে,ওষুধ ছাড়াও তখন জীবনধারার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কতিপয় ব্যবস্থাপনাকে পরিবর্তন করে বিষন্নতাকে দূর করতে পারা যায়।যেমন - সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে শারীরিক ব্যায়ামের অভ্যাস,ভোরের প্রকৃতিকে আনন্দের সাথে উপভোগ করা,মন দিয়ে সখের কাজ করা,খোলা আকাশের নিচে গিয়ে নীল মেঘের দিকে তাকিয়ে থাকা,প্রত্যেকে তাদের ধর্মকে গুরুত্বের সাথে আমল করা ইত্যাদি পদক্ষেপে মনকে ভালো করে যা বিষন্নতা দূর করতে সহায়ক।
চিন্তার অভ্যাসের পরিবর্তে মনের ভেতরের লুকায়িত কল্পনাকে লিখে প্রকাশের মাধ্যমে ও বিষন্নতা দূরীকরণে বেশ কার্যকর থেরাপি হিসেবে কাজ করে যা বিষন্নতা হ্রাসে সহায়ক হিসেবে বিবেচিত।জার্নাল বা ব্যক্তিগত জার্নাল(স্টিমিট হিসেবে আমার বাংলা ব্লগে) নিজের অনুভুতি,চিন্তা ও উদ্বেগ সততার সাথে লিপিবদ্ধ করে ও বিষন্নতাকে চ্যালেঞ্জ করা যায়। আপনারা ভেবে অবাক হবেন যে প্রতিদিন নিয়ম করে কয়েক মিনিট এক টুকরো কাগজে আপনার অনুভূতিকে লিপিবদ্ধের মাধ্যমে বিষন্নতা থেকে মুক্তির অন্যতম পথ খুঁজে পেতে পরম সহায়ক হতে পারে।
যাদের বিষন্নতার অভিজ্ঞতা বিদ্যমান,তারা নিন্মমাত্রার আত্মমর্যাদাবোধ করে যে কারনে তারা কোন কাজে আনন্দ না পাওয়ার দরুন সাধারণত সমাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে একাকী সময় কাটাতে বেশি স্বচ্ছন্দ্য বোধ করেন।এ ক্ষেত্রে তাদের বন্ধুবৎসল হওয়া সময়ের দাবি। বন্ধুদের সাথে নিয়মিত সময় কাটানো,তাদের সঙ্গে ঘুরতে বের হওয়া, হাঁটতে বের হওয়া, গল্পে এক সঙ্গে মেতে উঠা।মোটকথা ব্যস্তজীবনের মূল্যবান সময়কে কাজ ও আনন্দের সাথে অতিবাহিত করা।তবেই দেখবেন বিষন্নতা কোন প্রকার ওষুধ ছাড়াই এমনিতেই দূর হয়ে যাবে।
রাতের পর্যাপ্ত ঘুম সুন্দর মেজাজ বজায় রাখতে অন্যতম সহায়ক হিসেবে কাজ করে।বিষন্ন ব্যক্তিরা ঘুমের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় সমস্যায় ভুগে থাকেন। যদিও অনেক সময় তারা বেশি সময় ঘুমায় তথাপি তা অনেক ক্ষেত্রে অদক্ষ ঘুম হিসেবে বিবেচিত হয়। নিয়মিত কমপক্ষে সাত আট ঘন্টা দক্ষ ঘুমের শিডিউল বজায় রাখতে প্রতিদিন নির্দিষ্ট রুটিন অনুযায়ী বিছানায় ঘুমাতে যাওয়া ও তাড়াতাড়ি ঘুমানো এবং সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠানোর অভ্যাসের মাধ্যমে বিষন্নতা অনেকটা দূর হয়ে যাবে।
আবার অনেক সময় সুন্দর মেজাজ তথা সুন্দর জীবনযাপনে খাদ্য ও পুষ্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।খাবারে যত দূর সম্ভব বিশুদ্ধ সাদা চিনি ও ভাজা জাতীয় খাবার, ক্যাফেইন বা সোডাসমৃদ্ধ খাবার নিজেদের খাদ্য তালিকা থেকে পরিহার করা উচিত।কারন এসব খাবার আমাদের নার্ভাস সিস্টেমকে দুর্বল করে।
আজ এ পযর্ন্তই।অন্যদিন অন্য কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হবো।বিষন্নতা নিয়ে আমার লিখাটি কেমন হয়েছে।যদি ভালো লেগে থাকে, তবে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আর উপরের নিয়মগুলো যথাযথভাবে পালন করতে পারলে মন থেকে বিষন্নতা অনেকটা দূর হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
আমার পরিচিতি
আমি আনিসুর রহমান। আমার স্টিমিট আইডি @anisshamim।আমার জন্মস্থান মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে।আমি বাংলা ভাষার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যেবোধ করি এবং বাঙালি হিসেবে নিজেকে খুব গর্বিত মনেকরি।দেশকে খুবই ভালোবাসি।দেশের জন্য নিজের যেকোনো কিছু বির্সজন দিতে সদা সর্বদা প্রস্তুত।ভ্রমন করা আমার খুব সখ।তাছাড়া সময় পেলেই চিত্রাঙ্কন করা,কবিতা লিখা এবং মজার মজার রেসিপি তৈরি করা।গল্পের বই পড়তে ও খুব ভালো লাগে।অন্যের কষ্টে নিজেকে বিলিয়ে দিতে খুব ভালোলাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
আপনি আজকে যে টপিক নিয়ে এই পোস্ট করেছেন যা পড়ে কিন্তু বেশ ভালোই লেগেছে। আপনি কিন্তু যে কথাগুলো বলেছেন সেগুলো কিন্তু একেবারে বাস্তবিক এবং সত্যি কথা। আসলে আপনি ঠিকই বলেছেন আমরা যদি বন্ধু বান্ধবের সাথে এভাবে সময় কাটাই এবং তাদের সাথে ঘোরাফেরা, আনন্দ সহকারে কাজ করা এসব কিছু করলে বিষন্নতা ওষুধ ছাড়াই এমনিতেই চলে যাবেন। লেখার টপিক কিন্তু খুবই ভালো ছিল।
হা আপু,পরিবেশকে সতেজ রাখার জন্য গাছপালা যেমন দরকার তেমনি মানুষের মনকে প্রফুল্ল রাখার জন্য,মনের বিষন্নতাকে দূর করার জন্য বন্ধু-বান্ধবের সাথে সময় কাটানো কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু,এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপনি ঠিকই বলেছেন এই কথাটি বিষন্ন ব্যক্তিরা ঘুমের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় সমস্যায় ভুগে থাকেন। আসলেই তারা অনেক সমস্যার মাধ্যমে জীবন পার করে থাকে। আমরা যদি এভাবে বন্ধু-বান্ধবের সাথে ঘুরাঘুরি করি এবং বিভিন্নভাবে সময় কাটাই তাহলে কিন্তু আমাদের মনটা ফ্রেশ থাকবে এবং বিষন্নতা থেকে দূরে থাকতে পারবো আমরা। যা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একেবারেই বাস্তবিক কথা বললেন আপনি। এরকম পোস্ট থেকে কিন্তু আমরা অনেক শিক্ষা নিতে পারি এবং অনেক বিষয়ে ধারণা নিতে পারে। আমার কাছে কিন্তু বেশ ভালো লেগেছে আপনার পোস্ট পড়ে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু, পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু।