সুখী ও অসুখী।।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহু।



রোজ-বুধবার।১৩ই,পৌষ।১৪২৯,বঙ্গাব্দ।হেমন্তকাল।।

হ্যালো বন্ধুরা ?

আমি আনিসুর রহমান।আমার ইউজার আই ডি @anisshamim।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি “আমার বাংলা ব্লগ” এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন।আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ আমি ও ভালো আছি।আসলে কয়েকদিন ধরে মনটা তেমন ভালো না।কারন ব্যবসার অবস্থা তেমন একটা ভালো না ।তাছাড়া সংসারের খরচ যেন দিন দিন বেড়েই চলছে।তাই মনের মধ্যে নানান রকমের চিন্তা যেন বাসা বাধেঁ।তারপরও নিজে খুবই সুখী।কারণ মনের মধ্যে তেমন কোন উচ্চ আকাংক্ষা নেই।তাছাড়া পরিবারেরও তেমন কোন বাড়তি চাহিদা নেই।যাইহোক,আজ আমি আপনাদের মাঝে সুখী ও অসুখী বিষয়ে আমার মনের কিছু কথা শেয়ার করছি।আশাকরি,আমার লিখাটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।

woman-g63d2c1c3e_1920.jpg

Source


সুখ দুই অক্ষরের একটি ছোট শব্দ হলেও এর মর্মার্থ মানবজীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যমন্ডিত।সৃষ্টির পর থেকেই মানুষ সুখের পেছনে ছুটছে।বায়বীয় এই বস্তুটি কারও হাতে ধরা দেয়,কারও আবার গোটা জীবন পার হয়ে যায় এই সোনার হরিণের পিছনে ছুটতে ছুটতে।কিন্তু সুখের দেখা আর ধরা দেয় না।সুখ আসলে কি? আর জীবনে কতটাই পেলে মানুষ নিজেকে সুখী ভাবতে পারে বা না পেলে অসুখী,এর কোন নির্দিষ্ট সঙ্গা নেই।তবে এই বিষয়ে মনোবিজ্ঞানীদের থেকে কিছুটা ধারনা পাই।

sunset-g5a6f0a880_1920.jpg

Source

মনোবিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী সুখ হচ্ছে একটি মানবিক অনুভূতি।এটা মনের একটি বিশেষ অবস্থা বা অনুভূতি,যা ভালোবাসা,তৃপ্তি,আনন্দ বা উচ্ছাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।সুখ পরিমাপের কোন ব্যরোমিটার বা নিক্তি এ পর্যন্ত আবিস্কার হয়নি।আসলে পৃথিবীতে কে সুখী আর কে অসুখী তা মূলত নিভর করে ব্যক্তির চিন্তাভাবনা ও মানসিকতার উপর।এর অনুভূতি একেক জনের একেক রকম।কেউ অল্পতেই তুষ্ট হয়ে নিজেকে সুখী মনে করে ।আবার কেউ হাজারটা পেয়েও অতৃপ্ত থাকে।আকাংক্ষা থাকে আরও পাওয়ার।আর এ আকাংক্ষা মানুষের মনকে অতৃপ্ত করে তোলে,যা তাকে সুখী হতে দেয় না।সুখ সম্পর্কে পৃথিবীর বিখ্যাত মনীষীদের যেসব উক্তি রয়েছে তার ভিক্তিতে এটা বলা যায় যে,সুখ মানুষের একান্তই নিজস্ব।কেউ কাউকে সুখী করতে পারে না,যদি না সে যা পেয়েছে তাতেই আত্মতৃপ্তবোধ করে।ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রা:) বলেছেন-


স্বাস্থ্যের চেয়ে বড় সম্পদ আর অল্পে তুষ্টির চেয়ে বড় সুখ আর নেই।


তার এই উক্তির মধ্যে মানুষের জীবনে সুখের পরিমাপ করা যায়।এটা অস্বীকার করার জো নেই যে, এ পৃথিবীতে যারা অল্পে তুষ্ট তারাই সবচেয়ে সুখী।গ্রামের একজন চাষি বা দিনমজুরের কাছে তার পৃথিবী তার সংসার।তারা ওটা নিয়েই বাঁচতে চান।সংসার নির্বাহের জন্য সারা দিন তারা কায়িক শ্রম করেন।দিনশেষে রাতে খেয়েদেয়ে দেন প্রশান্তির ঘুম।রাজনীতি,সমাজনীতি,বিশ্বপরিস্থিতি নিয়ে তাদের চিন্তা ভাবনা নেই।তাদের ভাবনা জুড়ে শুধু খেয়েপরে বেঁচে থাকা।অবশ্য এই আত্মকেন্দ্রিকতা সমাজজীবনের নিরিখে গ্রহনযোগ্য নয়।কেননা মানুষ যেহেতেু সমাজবদ্ধ জীব।তাই নিজের পাশাপাশি সমাজের জন্য রয়েছে তার দায়বদ্ধতা।আর সেই দায়বদ্ধতা থেকেই মানুষকে নিজের পাশাপাশি অন্যের সুখ-শান্তির কথা বিবেচনায় রাখতে হয়।আত্মকেন্দ্রিকতা থেকে আত্মস্বার্থপরতার জন্ম হয়।আর আত্মস্বার্থপরতাই সমাজের সকল বিভেদ-বৈষম্য,অনাচার-অবিচারের জন্ম দেয়।সুখকে কিভাবে করায়ত্ত করা যায় তা-ও একটা প্রশ্ন।তিব্বতের ধর্মীয় প্রধান দালাই লামা বলেছেনে-


সুখ তৈরি করার মতো কিছু নয়।এটা আপনার কর্ম থেকে আসে।


আসলে তার কথার ব্যাখ্যা করলে দেখা যায় যে,মানুষের কর্মের উপরই তার জীবনে সুখস্বাচ্ছন্দ্য আসা-না-আসা নির্ভর করে।যিনি যে কর্ম করবেন তার প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিও ঘটবে সে রকম।অবশ্য এটাও ঠিক যে, কর্ম করলেই জীবনে সুখস্বাচ্ছন্দ্য আসবে এর কোন গ্যারান্টি নেই।অনেক সময় দেখা যায় যে একজন সারাজীবন পরিশ্রম করেও ঐশ্বর্যের নাগাল পায় না।আবার কেউ অল্প আয়াসেই তা হস্তগত করে ফেলে।এখানে অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো,ঐশ্বর্য মানুষকে সুখী করতে পারে কিনা?এটা তো আমরা হামেশাই দেখি,বিপুল বিত্তের অধিকারি মানুষটিও সংসারজীবনে চরম অসুখী।তার পারিবারিক জীবন,কর্মক্ষেত্র সব নিয়ে সে অতৃপ্ত।আর এ অতৃপ্তি তাকে একজন অসুখী মানুষে পরিনত করে।



worried-girl-g1f127c22a_1920.jpg

Source

আসলে সুখ ধনসম্পদে থাকে না ,সুখের অনুভূতি থাকে আত্মায় বা মনে।আর আমাদের আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, আমরা কিছুতেই তৃপ্ত হতে চাই না।যে যত পায় ততই চায়।আর এই অপরিমিত চাওয়া আমাদের জীবনে নানান ঝুট-ঝঞ্জাট সৃষ্টি করে।শান্তির জীবন করে তোলে অশান্তিময়।এ সুখকে খাঁচাবন্দি করতে মানুষের কতই না প্রচেষ্টা।কেউ চাকরি করতে গিয়ে ঘুষ-দুর্নীতির সাগরে নিজেকে ডুবিয়ে দেয়,কেউ ব্যবসা করতে গিয়ে সমস্ত নীতি-নৈতিকতা ছেঁড়া ন্যাকড়ার মতো ছুড়ে ফেলে দিতে দ্বিধাবোধ করে না।কিন্তু সুখ কি এদের জীবনে ধরা দেয়?অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা শুধু অধরাই থাকে না,তার জীবনকে বিষিয়ে তোলে।তাই তো দেখা যায় হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েও সংসার জীবনে চরম অসুখী হতে হয়।

woman-gd94aacdd7_1920.jpg

Source


C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNz8uuU7jNdUdZcqn6h7peG3CH7HW4Dj4EnjdfKn9T6S1nX92sULZRaFUhpFmzY87Rh7WVkoNuC (1).png

111.png



standard_Discord_Zip.gif


Heroism_3rd.png

আমার পরিচিতি


IMG_1123.JPG


আমি আনিসুর রহমান। আমার স্টিমিট আইডি @anisshamim।আমার জন্মস্থান মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে।আমি বাংলা ভাষার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যেবোধ করি এবং বাঙালি হিসেবে নিজেকে খুব গর্বিত মনেকরি।দেশকে খুবই ভালোবাসি।দেশের জন্য নিজের যেকোনো কিছু বির্সজন দিতে সদা সর্বদা প্রস্তুত।ভ্রমন করা আমার খুব সখ।তাছাড়া সময় পেলেই চিত্রাঙ্কন করা,কবিতা লিখা এবং মজার মজার রেসিপি তৈরি করা।গল্পের বই পড়তে ও খুব ভালো লাগে।অন্যের কষ্টে নিজেকে বিলিয়ে দিতে খুব ভালোলাগে।


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 2 years ago 
সুখ জিনিসটা আমি আসলে আপেক্ষিক মনে করি। সুখী হতে হলে কিছু ক্রাইটেরিয়া মেনে চলতে হবে ঠিক আছে কিন্তু নিজের ইচ্ছাশক্তি ও লাগবে। আপনি ঠিক বলেছেন যত বেশি চাহিদা তত বেশি অসুখী বলে আমি মনে করি। কেউ যদি অল্পতে সন্তুষ্ট থাকতে পারে তাহলে সে ই প্রকৃত সুখী কারণ তার হারানোর খুব একটা ভয় থাকে না। আপনার লেখাগুলো পড়ে খুব ভাল লেগেছে। যদিও আপনার লেখার মত আমাদের চলা খুব মুশকিল। ধন্যবাদ ভাইয়া।
 2 years ago 

এটা ঠিক এভাবে চলা অনেকের জন্য কষ্টকর।আসলে যতক্ষণ পর্যন্ত না নিজেকে অল্পতে তুষ্ট করতে পারবো।ততক্ষণ সুখ নিজের কাছে অধরাই থেকে যাবে।আর জীবন এতে অসুখী হয়ে যাবে।অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া, আমার লিখাটি পড়ে এত সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 58474.85
ETH 2500.10
USDT 1.00
SBD 2.39