প্রযুক্তির ভালো ও খারাপ দিকগুলো
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনাদের সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সকলেই অনেক ভালো আছেন। প্রযুক্তি আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি যেমন আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করে তুলেছে, ঠিক তেমনি এর কিছু নেতিবাচক বা খারাপ প্রভাবও রয়েছে যা আমাদের সামাজিক, নিরাপত্তা, মানসিক এবং দৈনন্দিন জীবনের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। আমি আমি আমার মত করে প্রযুক্তির ভালো ও খারাপ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করার চেস্টা করবো। তবে চলুন শুরু করি।
প্রযুক্তির ভালো দিকগুলো
প্রযুক্তির উন্নতি আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে বহুগুণে সহজ করেছে। নীচে কিছু ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরলাম।
যোগাযোগের ব্যবস্থা: মোবাইল, ই-মেইল, ফেসবুক, এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে আজ আমরা মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে যোগাযোগ করতে পারি যা আমাদের কাজকে আরো সহজ করে তুলেছে। এটি ব্যক্তিগত এবং পেশাগত উভয় ক্ষেত্রেই অপরিসীম গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখে।
শিক্ষা ও জ্ঞানার্জন: অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষাকে সবার জন্য সহজলভ্য করা সম্ভব হয়েছে। এখন মানুষ ঘরে বসেই বিশ্বের নামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন কোর্স সম্পন্ন করতে পারে এছারাও Google ও Youtube এর মত ওপেন সোর্স তো রয়েছেই। এখন ইন্টারনেটের সাহায্যে পৃথিবীর যেকোনো তথ্য এক ক্লিকে পাওয়া যায়।
স্বাস্থ্যসেবা: আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তি, রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন এনেছে। টেলি-মেডিসিনের মাধ্যমে দূরবর্তী অঞ্চল থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও, বিভিন্ন অ্যাপ ও ডিভাইসের মাধ্যমে নিজের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়েছে। যেমন: স্টমার্ট ওয়াচ।
দৈনন্দিন কাজের স্বয়ংক্রিয়তা: বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি, যেমন: রোবটিক্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, আমাদের জীবনকে সহজ ও প্রোডাক্টিভ করে যাচ্ছে। স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রগুলোর মাধ্যমে ফ্যাক্টরিগুলোতে কাজের গতি বেড়েছে এবং অনেক কঠিন কাজ সহজে করা সম্ভব হচ্ছে। এর মাধ্যমে অনেক কম জনবলে অনেক বেশি কাজ করানো সম্ভব।
প্রযুক্তির খারাপ দিকগুলো
প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে কিছু নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে, যা আমাদের জীবন এবং সমাজের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তেমনি কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।
মানসিক চাপ ও আসক্তি: অতিরিক্ত প্রযুক্তির ব্যবহার, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া এবং মোবাইল গেম, মানুষের মানসিক চাপ বাড়িয়ে তুলছে। এতে মানুষ একধরনের ভার্চুয়াল দুনিয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পরছে, যা মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। যা হয় তো আমরা এখন তেমন বুঝতে পারছি না।
গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার সমস্যা: প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে ডেটা সংগ্রহ এবং ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। এটা সব থেকে ভয়ানক বিষয়। হ্যাকিং, ফিশিং এবং ডেটা লিকের মতো ঘটনা প্রায়শই ঘটে। যা আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করে, আমাদের সকল তথ্য এখন হুমকির মুখে।
বেকারত্ব বৃদ্ধি: প্রযুক্তির স্বয়ংক্রিয়তার কারণে অনেক ক্ষেত্রে জনবলকে মেশিন দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে, যা বেকারত্বের হার বাড়াচ্ছে। রোবট এবং এআই দ্বারা পরিচালিত সিস্টেমের কারণে অনেক কর্মী তাদের কাজ হারাচ্ছে যা সামনে আরো ব্যাপক হতে পারে। এর ফলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং বেকারত্ব বৃদ্ধি পেতে পারে।
সামাজিক সম্পর্কের অবনতি: প্রযুক্তির কারণে আমরা ভার্চুয়াল যোগাযোগে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, সরাসরি মেলামেশা কমে যাচ্ছে। আগে সসবাই মিলে আড্ডা দদিতাম। কিন্তু এখন চ্যাটিং গ্রুপে আড্ডা হয়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কোয়ালিটিফুল সময় কাটানোর পরিবর্তে আমরা মোবাইল, ল্যাপটপ বা টিভিতে সময় ব্যয় করছি। যা সম্পর্কের অবনতির কারণ হতে পারে। যা এখন সমাজের সব খানেই দেখা যাচ্ছে।
প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে অসংখ্য সুবিধা দিলেও এর কিছু খারাপ দিকও রয়েছে, যা আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না। সঠিক উপায়ে এবং নিয়ন্ত্রিতভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার করলে আমরা এর নেতিবাচক দিকগুলো এড়িয়ে চলতে পারি। তাই প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরও সচেতনভাবে এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন, যাতে প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করে এবং আমরা এর অপব্যবহার থেকে বিরত থাকতে পারি। আজকের মত এখানেই শেষ করছি, ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: প্রযুক্তির ভালো ও খারাপ দিকগুলো
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আপনি আজকের পোস্ট সাজিয়েছেন। এজাতীয় সচেতন দৃষ্টিভঙ্গির পোস্টগুলো আমি সবসময় পছন্দ করে থাকি। বর্তমান উন্নত প্রযুক্তির জন্য মানুষের যেমন কাজকর্মে সহযোগিতা সৃষ্টি হয়েছে ঠিক তেমনি বেশ কিছু খারাপ প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে যেগুলো অনেক মানুষের কর্ম নষ্ট করে দিয়েছে এমনকি মানুষের মধ্যে অলসতা সৃষ্টি করেছে আর সময় লস করার অন্যতম মাধ্যম এনে দিয়েছে। অনেকে বিবেকের তাড়নায় বুঝতে পারে তারপরেও যেন প্রযুক্তির হাত থেকে রক্ষা না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবুও বলবো আমাদের সব সময় মাথায় রাখতে হবে এই প্রযুক্তির ভালো-মন্দ দিকগুলো এবং ভালোটাকে গ্রহণ করতে হবে খারাপটাকে এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ নিজের বিবেক টাকে জাগ্রত করে চলতে পারলেই সফলতা আছে।
প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদেরকে অবশ্যই নিয়ম নীতির মধ্যেই করতে হবে তা না হলে খারাপ দিকগুলো আমাদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্যপ্রযুক্তির ভালো এবং খারাপ দিকগুলি খুব বিশদে তুলে আনলে আমাদের সামনে। খুব প্রাসঙ্গিক একটি পোস্ট লিখলে। সম্পূর্ণটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। তথ্যপ্রযুক্তির খারাপ দিকগুলির বিষয়ে মানুষের সাবধান হওয়া উচিত। যে দিকগুলো পরবর্তী সময়ে বিপন্নতা নিয়ে আসতে পারে সেগুলিকে ভালো কাজে লাগানোর শ্রেয়। সেই বিষয়গুলিই তুমি সুন্দর করে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলে।
চেষ্টা করেছি নিজের জায়গা থেকে নিজের মতো করে বিষয়গুলো উপস্থাপন করার জন্য, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলে যেকোনো জিনিসের ভালো দিক থাকার পাশাপাশি খারাপ দিক থাকবে,সেটাই স্বাভাবিক। তবে আমাদের সবার উচিত ভালো দিকগুলো গ্রহণ করা এবং খারাপ দিকগুলো বর্জন করা। যাইহোক প্রযুক্তির ভালো এবং খারাপ দিকগুলো সম্পর্কে দারুণ আলোচনা করেছেন ভাই। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন ভাই, আগেকার দিনের মত যদি মোবাইল ফোন না থাকতো তাহলে হয়তো সমাজের এমন করুন অবস্থা হতো না।
সব কিছুরই ভালো এবং খারাপ দিক রয়েছে। এটা নির্ভর করে ব্যবহারকারীর উপর যে তারা কতটুকু ইউটালাইজ করতে পারছে। আপনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট তুলে ধরেছেন। বলতে গেলে পুরোটাই ক্ষুদ্র পরিসরে তুলে ধরেছেন।
বর্তমানে মোবাইল আসক্তি পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। এর জন্য আমাদের নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে।
আমাদের অলস সময় বেশি। এজন্য এই অবস্থা।