আমার সাথে ঘটে যাওয়া একটি ভয়ানক ঘটনা ( শেষ পর্ব ) [10% ʙᴇɴᴇғɪᴄɪᴀʀɪᴇs ғᴏʀ @sʜʏ-ғᴏx🦊]
আমরা তিনজন বন্ধু মিলে অপেক্ষা করতে থাকলাম কখন একটু বৃষ্টি হবে। কারণ আমাদের কাছে যেসব মোবাইল গুলো ছিল সেগুলো ওয়াটারপ্রুফ ছিল না এবং পানিতে ভিজলে নির্ঘাত সেই ফোন গুলো নষ্ট হয়ে যেত। তাই আমরা আরো ঘন্টাখানেক সেখানে অপেক্ষা করলাম কিন্তু রাত যত গভীর হচ্ছে ঝড় এবং বৃষ্টির পরিমাণ তত বাড়ছে। আমাদের আশেপাশে অনেক জনেই ছিল তারাও আটকে রয়েছে। মাঝখানে প্রায় রাত একটার দিকে একটু বৃষ্টিটা কম ছিল তখন আমরা ভাবলাম যে আমরা হাঁটা শুরু করব। আমি ইমন কে বললাম আমরা যে রাস্তা দিয়ে এসেছি সে রাস্তায় ব্যাক করি কিন্তু ইমন বলছে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া যাবে না রাস্তা টা সম্পূর্ণ কাঁচা এবং রাস্তার পানিতে ওই রাস্তায় হাঁটার মতো পরিবেশ নাই। যে রাস্তা দিয়ে যাবো যদি কোন রিকশার পাই তাহলে রিকশায় চড়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাব। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা সেখান থেকে পাঁচ মিনিট হাটার পরে আবার তুমুল ঝড় বৃষ্টি শুরু হল।
আমরা একটি বড় গাছের নিচে আশ্রয় নিলাম সেখানে আমাদের সাথে আরও কিছু লোক ছিল তাই তখন তেমন এত ভয় লাগছিল না। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছিল আবার মাঝে মাঝে কম হচ্ছিল। আমার বন্ধু বল্লো, যখন বৃষ্টি কমবে তখন একটু হাঁটা উচিত কারণ রাস্তা কম হলে আমাদের গন্তব্য ততো তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে পারবো। একসময় এভাবে করে আরও আধা ঘন্টা চলে গেল কিন্তু বৃষ্টি থামছে না। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম এবার ভিজে ভিজে বাসায় ফিরব কারণ রাত গভীর হয়ে গেছে এবং রাস্তা একদম ফাঁকা শুধুমাত্র আমরা তিনজন ছাড়া আর কেউ নেই।
আমাদের মোবাইল গুলো একটি পলিব্যাগের রেখে সেখানে একটি মোবাইলের ফ্লাশ লাইট অন করে আমরা রাস্তা দেখিয়ে এগোচ্ছিলাম কারণ গ্রামের শহরে কোন আলো থাকে না এটা তো আপনারা সবাই জানেন। এমন সময়ে অনেক ধরনের শব্দ আশপাশ থেকে আসছে, বাঁশঝাড় ছিল এক সাইডে এবং এক সাইডে ছিল শুধুমাত্র ফসলি জমি। অনেকটা ভয় লাগছিল এক সাইডে আবার বটগাছের ছিল, দেখতে অনেকটা ভূতের মতোই লাগছিল আর কি। আমরা তিনজনে অনেক ভয় পেয়ে যায় কিন্তু আমরা থামি না। আমরা আস্তে আস্তে করে এগোতে থাকি পিছন থেকে লক্ষ করলাম কোন একটি লাইট জ্বলছে হয়তো ভাবলাম যে কোন রিক্সা অটোরিক্সা আমাদের দিকে আসছে।
আমাদের অনুমান সঠিক হল, এই রিক্সা কে আমরা অনেক ভাবে থামানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু সেই রিক্সা একদম খালি ছিল এবং আমাদেরকে ওভারটেক করে চলে গেল। আমরা অনেকেই হতাশ হলাম বাসায় এখনও তিন মাইল এর মতো দূরে, রাত বাজে প্রায় দুইটা আর প্রচন্ড বৃষ্টি এবং পরিবেশটা এত ভয়ানক ছিল, আমি বোঝাতে পারবো না। যদিও তেমন কোনো কিছু সংঘটিত হয়নি আমাদের সাথে কিন্তু যে আতঙ্ক কাজ করছিল সেটা কখনোই লিখে বোঝানো সম্ভব না। আমরা কিছুক্ষণ হাঁটার পরে আমাদের পেছনে শব্দগুলো আরে অনেক বাড়তে থাকল। আমরা বুঝতে পারতেছিলাম না আসলে এই শব্দগুলো কিসের!! অনেক ভয়ানক শব্দ ও মাঝে মাঝে নুপুরের শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। আশেপাশে কোন বাসা নেই এবং রাস্তা টা একদম নিস্তব্ধ, মাঝে মাঝে খুব জোরে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে এবং বৃষ্টি পরছে।।
ক্রমশ পিছন থেকে শব্দ টা খুব দ্রুত আমাদের কাছে এগিয়ে আসতেছে এটা আমরা বুঝতে পারতাছি। একসময় কিছু না ভেবে আমরা তিনজনে একটা দৌড় দিলাম। প্রায় ৫ মিনিট ধরে দৌরানোর পরে আমাদের সামনে হুট করে একটি রিকশা দারালো এবং সে বলল যে তাড়াতাড়ি উঠে পরো, তোমাদের বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসি কিন্তু ওই রিকশাওয়ালাকে আমরা কিছুই বললাম না। রিক্সাওয়ালা ছিল অনেকটা হুজুর টাইপ সাদা রঙের পাঞ্জাবি পড়েছিলো।
৫ মিনিট রিক্সা চলার পরে দেখিতে সামনে আরো দুটো রিক্সা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে দেখে একটু অবাক হলাম। যখন কাছাকাছি গেলাম গেলাম তখন বুঝতে পারলাম রাস্তায় একটি গাছের মুরী পরে আছে কিন্তু রিক্সাওয়ালা গুলো সাহস পাচ্ছিল না সেগুলো কে রাস্তা থেকে সরানোর। তখন আমরা তিনজনে সিদ্ধান্ত নিলাম সেই গাছের মূরী টিকে আমরা সরিয়ে দেবো। যেমন কথা তেমন কাজ, রাস্তায় থাকা গাছের মূরীটি সরিয়ে দিলাম এবং পরপর তিনটি রিস্কা বেরিয়ে গেল। আমরাও মিনিট দশেক পরে আমাদের বাসায় পৌছে গেলাম বাসায় গিয়ে যখন আমরা টাকা দেবো তখন দেখি সেই রিকশাওয়ালা টি টাকা না নিয়ে চলে গেল। বিষয়টা অনেকটা কেমন লাগলো জানি। আমাদের আমরা বাসায় গিয়ে দেখি তার মা পথ চেয়ে বসে আছে। এখনো তিনি ঘুমায়নি, বাসায় গিয়ে একটু বকা খেলাম সবাই মিলে তার পরে বকা খাওয়ার পর ভাত খেয়ে শুয়ে পড়লাম।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: আমার সাথে ঘটে যাওয়া একটি ভয়ানক ঘটনা ( শেষ পর্ব )
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.........
ভয় পেলে আমি একটা জিনিষ খেয়াল করেছি সব কিছুকে অবয়ব মনে হয়।রাতে গাছের চায়া দেখালেও মনে হয় কেউ যেনো দাড়িয়ে আছে।এই জন্যে আমি রাতে বাইরে বের হলে কানের মধ্যে হেড ফোন গুঁজে সেই হারে রক মেটাল দু চারটা গান লাগিয়ে পকেটে হাত ঢুকিয়ে চোখ বন্ধ করে হাটি 😉🤣।যাইহোক তারপরেও ভালো আপনাদের সাথে বেশি কিছু ঘটে নি সহি সালামতে পৌঁছেন ব্যাপার টা আরো বেশি জটিল হতে পারতো,,,কারণ লোক গুলোর আচরণ খুব একটা সাভাবিক মনে হয় নি আমার।আর ধন্যবাদ দ্বিতীয় পাট তাড়াতাড়ি দেওয়ার জন্য😎।পারলে আরো এরকম দু চারটা গল্প দিয়েন ভালই লাগলো পড়ে😍
আমার সাথে এমন ঘটনা অনেক ঘটেছিলো। সুযোগ হলে তারাতারি প্রকাশ করবো। আপনাকে ধন্যবাদ।
ভেবেছিলাম আজ শুধু শীতকালীন ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের পোস্টেই কমেন্টস করব কিন্তু আপনার প্রথম পর্বের পর কি ঘটলো জানার আগ্রহ দমন করতে না পারাতেই পড়ে ফেললাম আপনার পোস্টটি। সবশেষে আমার যেটা মনে হল হয়তো এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে নয়তো এটি একটি ব্যাখ্যার অতীত ভৌতিক ব্যাপার। যাই হোক আপনারা যে সুস্থ শরীরে পৌঁছাতে পেরেছিলেন এটা জেনে খুব ভাল লাগছে। শুভকামনা রইল
আমিও ব্যাখ্যা পাই নি ভাই, কেন এমনটা হল?.. ধন্যবাদ আপনাকে।।।
সত্যি অবাক হলাম এমন ঘটনাও ঘটে আজকাল হঠাৎ করে একটি রিকশা আপনাদের সাহায্য করল টাকাও নিল না, কথা না বলে চলে গেল বিষয়টা সত্যি অবাক করার মত। তবে যাই হোক অনেক বিপদ কে পাশ কাটিয়ে সুস্থভাবে আপনি বাসায় ফিরেছেন বিষয়টা ভালো লেগেছে। আর দেরি করে বাসায় ফিরলে বাবা-মা একটু টেনশন করে এটাই স্বাভাবিক। ধন্যবাদ আপনি খুব সুন্দর ভাবে আপনার সত্যি ঘটনা গুলো আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন।
ঠিক এমনটাই হয়েছিলো আপু, যদিও ২০১৭ সালের ঘটনা এটি।
আমি একটা জিনিস বুঝিনা,যে আপনার সাথে এমনটা কেন হয়। তবে আজকে কিন্তু আমি অনেক বেশি ভয় পেলাম। খুবই মারাত্মক একটা কাহিনী। আপনি সাবধানে থাকার চেষ্টা করবেন। খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাই।
আপু এটা ২০১৭ সালের একটি ঘটনা। এমন অনেক ঘটনা রয়েছে আমার। আস্তে আস্তে সব শেয়ার করবো।
আসলেই এটা খুব অবাক লাগলো আমার কাছে। যে রিক্সাওয়ালা কোন টাকা না নিয়ে চুপচাপ চলে গেল। আমার তো মনে হয় রিকশাওয়ালাটা ভূত ছিল 👻👻👻 আবার রাস্তার মধ্যে যদি বিভিন্ন রকম আওয়াজ অথবা নুপুরের আওয়াজ হয় নিশ্চয়ই ভুতেরা কিচিরমিচির করতে ছিল। আপনারা সবাই সুস্থভাবে বাড়িতে ফিরে আসলেন ওইটা শুনে খুবই ভালো লাগলো। আপনার গল্পটা আমার কাছে খুব ভয়ঙ্কর মনে হয়েছে আসলেই। জীবনের ভয়ানক একটা মুহূর্ত আমাদের সাথে ভাগ করে নিলেন আজকে।
আরে না আপু, এমন ভালো মানুষ এখনও বেচে আছে জন্য পৃথীবি এখনও টিকে আছে।
গ্রামের শহর গুলো ঠিক এখনো এমনি আছে বৃষ্টির দিনে কোন গাড়ি থাকে সন্ধ্যা হলেই গাড়ি গুলো গেরেজে রেখে দেয়।সব থেকে এখানেই খারাপ লাগলো যখন বিপদ আসে মানুষ দেখেও যদি চলে যায় এর থেকে খারাপ লাগার কিছুই হতে পারে না।পরবর্তী রিক্সা ওলা না জেনে শুনে নিয়ে এলো এবং ভাড়া না নিয়ে গেলো এটা ভালো লাগলো।
ভালো মানুষ এখনও আছে, এটাই প্রমান করে, ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যিই একটা ভয়ঙ্কর রাত পেরিয়ে এসেছেন। এটা মনে হচ্ছে যেন কোন ভুতের ছবির রাতের কাহিনী। আসলে এভাবে কারো সাথে ঘটেছে শুনলে নিজের গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়। ভালোভাবে বাসায় ফিরতে পেরেছেন এটা ভেবে ভালো লাগতেছে। তবে আমারও সেই সন্দেহ এই রিক্সাওয়ালা কে ছিল।২ পর্ব পড়ে সব ক্লিয়ার হলাম ভাইয়া।আসলে ভয়ংকর হলেও পড়ে খুব ভালো লেগেছে,একদম একটি গল্পের মত।
আমার জীবনে এমন অনেক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। সুযোগ হলে শেয়ার করবো। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
অনেক ভয়ে ভয়ে গল্পটা পড়ছিলাম। ভাবছিলাম এই বুঝি আপনাদেরকে কিছু একটা ধরবে। এ ধরণের গল্প ছোট বেলায় কারেন্ট চলে গেলে আব্বুর কাছে অনেক শুনেছি। আপনার গল্পটা পড়ার সময় ছোট বেলার ওই মুহূর্তে চলে গিয়েছিলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া শৈশবের কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।
আর সব কিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ। আপনারা সবাই সুস্থভাবে বাসায় পৌঁছাতে পেরেছেন।
তবে এটা আমার সাথে ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনা।
ভাই,আমার গা শিউরে উঠল আপনার এই রাতের কথা পড়ে। তবে শহরাঞ্চল থেকে গ্রামাঞ্চলে রাতের বেলা অন্ধকারে হাটা কিছুটা ভীতিকর। আর তার সাথে এরকম পরিবেশ হলে তো ভয় পাওয়ারই কথা।আমি আগের পোস্ট পড়তে পারি নি,তাই মাত্রই পড়ে নিলাম।
মূল কথা আতঙ্ক আমাদের গ্রাস করেছিলো, আর ঔ ঘটনার ব্যাখ্যা আসি আজ ও পাইনি।।।
যদি কারো মন দুর্বল থাকে তাহলে বিভিন্ন ধরনের আওয়াজ কানে আসে।প্রথম পর্ব পড়ে এলাম,সত্যিই একটু ভাবনার বিষয়।তবে এইরকম ভৌতিক ঘটনা ঘটে কম-বেশি সকলের ক্ষেত্রে।আপনারা বাড়িতে ভালোভাবে পৌঁছে গিয়েছিলেন এটা জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়া।