আমার সাথে ঘটে যাওয়া একটি ভয়ানক ঘটনা ( ১ম পর্ব ) [10% ʙᴇɴᴇғɪᴄɪᴀʀɪᴇs ғᴏʀ @sʜʏ-ғᴏx🦊]

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আমার সাথে ঘটে যাওয়া একটি ভয়ানক ঘটনা ( ১ম পর্ব )

২০১৭ সালের ঘটনা ঢাকায় এসেছে মাত্র দু'বছর হলো, তখন একটি ছোটখাটো পার্ট টাইম জব করছিলামম। এমন অবস্থায় যেখানে আমি জব করতাম সেখান থেকে খুব বেশি দিনের ছুটি আমাকে দেওয়া হতো না। শুধু মাত্র ৩-৪ দিনের ছুটি দেওয়া হতো যে কোন ঈদ বা পূজার ক্ষেত্রেও। আমার বাসা ঢাকা থেকে অনেকটা দূরে যেতে প্রায় ১২ ঘন্টা সময় লাগে অর্থাৎ যেতে একদিন এবং ফিরতে একদিন। মাঝখানে মাত্র দুইদিন সময় পাই বাসায় কাটানোর জন্য। এবারের দুর্গা পুজোর সময় আমার বন্ধু ইমন বলল চল আমাদের বাসায় যাই। তাদের বাসা ঢাকা থেকে খুব কাছে ছিল মাত্র ২ ঘন্টা সময় লাগে ট্রেনে করে। আমিও বাসায় কথা বলে ওই বিষয়টা ফাইনাল করলাম। এবার বাসায় যাওয়া হচ্ছেনা তাহলে পুজো এবার বন্ধুর বাসায় উদযাপন করব।

night-3129908_1920.jpg

Image Source

siam,.png

আমার বন্ধুর বাসা ছিল টাঙ্গাইলে। বন্ধুর বাবা দেশের বাইরে থাকেন এবং তার বাসায় শুধুমাত্র তার মা এবং ছোট একটি বোন থাকে। আমার বন্ধু আমার সাথে পার্ট টাইম জব করতো এবং আমার সাথেই পড়াশোনা করতো। তার বাসার অনেকাংশ খরচ আমার বন্ধু কে তখন বহন করতে হত। যাইহোক এই বিষয়গুলো জানা দরকার ছিল তাই বললাম। আমাদের সেই কাঙ্খিত সময়টি চলে আসলো। আমাদের অফিস ছুটি দিলো ওই দিনেই আমরা সন্ধ্যায় বেরিয়ে পরি টাঙ্গাইলের উদ্দেশে। আমাদের দুজনের একটি কমন বন্ধু ছিল। যেহেতু আমরা যাব দুজনেই তেমন একটা মজা হবে না তাই সে বন্ধুকেও ইমন ইনভাইট করলো এবং বাসায় আসার জন্য রাজি করল। আমরা তিনজনেই একই সময়ে রওনা দিলাম। যদিও আমরা দুজন ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছি এবং সে তার নিজ বাসা থেকে রওনা দিয়েছে। গন্তব্য টাঙ্গাইলে স্টেশন। আমাদের দুজনের ট্রেন এক ঘণ্টার ব্যবধানে টাঙ্গাইল স্টেশনে থামবে, এমনটাই কথা ছিল।

ruins-563629.jpg

Image Source

siam,.png

আমার বন্ধুটি যথাসময়ে টাঙ্গাইলে স্টেশনে পৌঁছে যায় এবং পূজার ছুটি থাকায় আমাদের ট্রেন কিছুক্ষণ পরে টাঙ্গাইলে স্টেশনে এসে পৌঁছায়। আমরা তিনজন একসাথে হওয়ার পরে ইমনের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। একটি কথা বলে রাখি, এই ইমনের বাসা টাঙ্গাইল শহর থেকে বেশ খানিকটা দূরে। সেখান থেকে তার বাসায় যেতে প্রায় ৪০ মিনিটের মত সময় লেগেছিলো এবং জায়গাটা অনেকটা নীরব ও শান্ত এলাকা। তবে গ্রামে এরকম পরিবেশ হবে তা একদম স্বাভাবিক বিষয়। সেদিন রাতে আর আমরা বের হলাম না। সেদিন রাতে খাওয়া দাওয়ার পরে আমরা শুয়ে পরলাম। পরদিন ছিল দূর্গা পূজার নবমীর দিন। সেই দিন এই ঘটেছিলো আসল ঘটনা।

সারাদিন বাসার আশেপাশে ঘোরাফেরা করছিলাম অনেক এনজয় করছিলাম তিনজন বন্ধু মিলে। সন্ধ্যার পরেই ইমন বলল চল দুর্গা পুজোর মন্ডপে যাই। ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনোই দুর্গা মন্ডপে যায়নি এবং সেভাবে কখনো দেখা হয়নি আমার সাথে দুই বন্ধু খুব জোরাজুরি করছি বিধায় তাদের সাথে যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে যাই। মনে হয় আনুমানিক সময় আটটা বাজে তখন আমরা বাসা থেকে বের হলাম। প্রথমে যেখানে গিয়েছিলাম সেখানে তেমন কিছুই ছিল না। অনেক ছোট করে আয়োজন করা হয়েছিল। আমার সাথে যে বন্ধু ছিল তারা অনেক এক্সাইটেড ছিল এই বিষয়গুলো নিয়ে। ইমন বলে উঠল আমাদের এখান থেকে বেশ কিছুটা দূরে আরো একটি মন্ডপ রয়েছে। সেটা টাঙ্গাইলের সবচেয়ে বড় এবং সেখানে অনেক জমজমাট ভাবে পূজা উদযাপন হয়। দুজন বন্ধু রাজি হয়ে গেল কিন্তু আমি কোন ভাবে যেতে চাচ্ছিলাম না। ইমন বলল আমি একটি শর্টকাট রাস্তা চিনি, গ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয় আনুমানিক 30 মিনিটের মত সময় লাগবে।। আমি ভাবলাম যেহেতু আজকের আকাশটা অনেক সুন্দর হতো এবং চাঁদ উঠেছে এ মাঝে মাঝে একটু গল্প করতে করতে যাওয়া যাবে।

dark-park-3461023_1920.jpg

Image Source

siam,.png

যে রাস্তার কথা বলছিল সেই রাস্তায় একটু পরেই আমরা পৌছে গেলাম। সে রাস্তায় খুব সুন্দর একটি ব্রীজ ছিল এবং নদীর মাঝখানে ব্রীজ অনেক সুন্দর সুন্দর লাগছিলো সাথে বাতাস ছিল এবং রাতের চাঁদটি জ্বলজ্বল করছিল। আমি ওদেরকে বললাম কিছুক্ষণ এখানে বসে গল্প করি। সেখানে বসে গল্প করতে করতে কখন যে ঘণ্টা খানেক চলে গেল আমরা বুঝতে পারলাম না। ঘড়ির কাটায় তখন বাজে রাত দশটা। আমি ওদেরকে বললাম যে এখন আর ওদিকে যাওয়ার দরকার নেই। আমরা বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেই কিন্তু তারা কোনোভাবেই মানতে নারাজ, তারা যাবেই। আবার আমরা হাঁটা শুরু করলাম।

হাঁটার ৫ মিনিট পর থেকেই আকাশে অনেক কালো মেঘ চলে আসলো এবং নিমেষেই জ্বলজ্বল চাঁদটিকে খেয়ে ফেলল। রাস্তায় প্রচুর বাতাস এবং চারদিকের গাছপালা মনে হচ্ছে এখনই আমাদের উপর আছড়ে পড়বে এমন একটি অবস্থা। অনেক মেঘ করেছে, বুঝা যাচ্ছে যে কোন সময় বৃষ্টি আসবে। রাস্তা একদম নিস্তব্ধ এবং আশেপাশে কেউ নেই। আমাদের সাথে শুধুমাত্র আমাদের মোবাইল ফোন গুলো রয়েছে। আমার খুব ভয় হচ্ছিল কারণ আমি আগে থেকে একটু ভিতু ছিলাম কিন্তু বাকি দুইজন অনেক সাহসী ছিল। তারা কোনোভাবেই পিছপা হবে না তাদের গন্তব্যে তারা যেকোন ভাবে পৌঁছাতে চায়। আমরা খুব দ্রুত হাঁটা শুরু করলাম একসময় আমরা গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম কিন্তু সেখানে ঝড় বৃষ্টি শুরু হলো।

magician-1646795_1920.jpg

Image Source

siam,.png

তারা সেখানে গিয়ে একটু ঘুরাঘুরি করতে থাকলো তাদের সাথে আমিও ছিলাম। আমরা অপেক্ষা করছিলাম বৃষ্টি কখন শেষ হবে। ঘড়িতে আনুমানিক বাজে বারোটা কিন্তু তখনও বৃষ্টি থামার কোনো পথ দেখছি না। আসল ঘটনা কিন্তু এরপর থেকেই শুরু.......

চলবে...............



Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

photo_2021-06-28_11-13-39.jpg

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



বিষয়: আমার সাথে ঘটে যাওয়া একটি ভয়ানক ঘটনা ( ১ম পর্ব )

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.........

Sort:  
 2 years ago 

এইটা কোন কথা ভাইয়া এমন জায়গায় কেউ গল্প শেষ করে। অধীর আগ্রহে পড়ছিলাম যে কি ঘটনা ঘটলো আপনার সঙ্গে। কিন্তু পড়তে পড়তে কখন শেষ হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
আর আরেকটি কথা আপনি তো খুব ভীতু মানুষ।

 2 years ago 

একটি পর্বে শেষ করার কথা ছিলো কিন্তু গল্পটি অনেক বড় হয়ে যাচ্ছিলো। তাই ভাবলাম ২ টি পর্বে লিখবো। হবে পরের ঘটনা একটু ভয়াবহ।

 2 years ago 

ভয়াবহ হলেও সমস্যা নেই ভাইয়া। আপনি লিখতে পারবেন তো? দিনের বেলায় লেইখেন তাহলে ভয় কম পাবেন।

 2 years ago 

লিখতে কেন পারবো না? এতো টা ও ভিতু নই। হাহাহা।

 2 years ago 

আপনার লেখা পুরো পোস্টটা পড়তে আমার কাছেও একটু ভয় ভয় লাগতে ছিল। 😟😟 তিন বন্ধু মিলে এক বন্ধুর বাড়িতে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন ওটা পড়ে ভেবেছিলাম হয়তো মজার কিছু হবে। কিন্তু ধীরে ধীরে যতটা পড়তেছিলাম ততই ভয় লাগতে ছিল। কিন্তু তাও সম্পূর্ণটা পড়ে নিলাম। মাঝরাস্তায় ব্রীজের উপরে গল্পের কথা শুনে আমি তো ভেবেছিলাম হয়তো ভূত চলে এসেছে👻👻👻👻 এমনিতেই পুরোটা পড়ে আমার কাছে খুব ভয় লাগলো। আশা করব পরবর্তীতে বাকিটাও জানতে পারবো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ভয় এর তেমন কিছুই লিখিনি এখন, ভয়াবহ অনেক কিছু বাকি রয়েছে এখনও।

 2 years ago 

ভাইয়া,এক পর্ব পড়ে যা বুঝলাম কিছুটা ভয়ংকর মনে হচ্ছে। কারণ যতই সাহসী হোক না কেন,এমন অবস্থায় রাতের বেলা যে কেউই কিছুটা ভীত হয়ে যাবে।ভাইয়া পুরোটা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম কিন্তু।

 2 years ago 

নিজেই অনুধাবন করেছি ঘটনাটি। এখনও মনে পরলে গা এ লোম দ্বারায় যায়। ভয়াবহ তো ২য় পর্বে বুঝতে পারবেন।

 2 years ago 

ভাইয়া,আমি নিজে ভয় কম পাই,তবে এরকম অন্ধকার রাতে আমি নিজেও খুব ভয় পাবো।তবে ২য় পর্ব পড়বই।

 2 years ago 

ভাইয়া,দিলেন তো একটা মজার মুহূর্তে গল্পটা বন্ধ করে। এটা কিছু হইলো।আমি বেশ মজা করে পরতেছিলাম।

 2 years ago 

হাহাহা, আমি ভাবছিলাম একটি পোস্ট এ শেষ করবো, কিন্তু অনেক বড় হয়ে যাচ্ছিলো, তাই পর্ব আকারে দিলাম। আগামীকাল ২য় পর্বটি পোস্ট করবো।

প্রথম থেকেই থ্রিলার মনোযোগ নিয়ে পড়া শুরু করেছি। আমি পড়তেছি আর ভাবতেছি যে কখন সেই থ্রিলার মূহুর্তটা চোখের সামনে আসবে! অন্যদিকে ছবিগুলোও মনের মাঝে নিমিশেই হাজার প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিলো। তবে একটা ছোট ঝড় বৃষ্টির মাঝে দিয়েই বিপদ পার হয়ে গেছে। যাইহোক ভাই সময়টা অনেক ভালোই কাটিয়েছেন মনে হয়। ২য় পর্ব পড়লে ক্লিয়ার বোঝা যাবে। ধন্যবাদ ভাই আপনার জীবনের খাতা থেকে একটা মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।❤️

 2 years ago (edited)

ভাইয়া আরেটু পড়ার ইচ্ছে ছিলো,,পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া, একটু তাড়াতাড়ি করবেন 🙂
মনে হয় খুব বড় বিপদ আছে সামনে🥺

ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া, জীবন থেকে একটি ঘটনা শেয়ার করার জন্য

 2 years ago 

হু, আগামীকাল ২য় পর্ব প্রকাশ করবো।

 2 years ago 

সিয়াম ভাই আপনিও প্রফেশনাল রাইটার দের মত হয়ে গেছেন। একদম মোক্ষম জায়গাতেই শেষ করে দিলেন।এখন কি আর করার পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া। বাস্তব জীবনের ঘটনা পড়তে আমার ভালই লাগে। আর আপনাদের ঘটনাটা মনে হচ্ছে যেন কোন রোমাঞ্চ উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য

 2 years ago 

সিয়াম ভাই আপনিও প্রফেশনাল রাইটার দের মত হয়ে গেছেন

আরে ভাই কি বলেন?? আমি তো লিখতে পারি না তেমন, তবুও চেস্টা করে যাই। সম্পুন্ন ঘটনাটি আমার সাথে ঘটে গিয়েছিলো।

 2 years ago 

আহা দিলেন তো মজা টা নষ্ট করে। কিরম লাগে বলেনতো মুভির মত সিকুয়েল বানায় সাসপেন্স জমায় রাখলেন গল্পটা।আর এদিকে কেবল মজা আসতেছে গল্পটায় আমি সেই এক্সাইটেড,,অতি সত্ত্বর পরবর্তী শিকুয়েল দেন 😩

 2 years ago 

হু হু, মুভি দেখে দেখে বিষয় গুলো শিখছি। তবে পরবর্তী শিকুয়েল টা আগামীকাল পাবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 59737.47
ETH 3186.24
USDT 1.00
SBD 2.43