আমার পরিবার নিয়ে ঘুরাঘুরি। (গাজীপুর থেকে চট্টগ্রাম) হিলভিউ পার্ক, ভাটিয়ারী পর্ব-২
প্রথম পর্বের পর থেকে
বন্ধুরা আশা করি সবাই ভাল আছেন, আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি। প্রথম পর্বে আমি আপনাদের মাঝে গাজীপুর থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার বিষয়টি এবং আমার পরিবারকে সেই সাথে আমার শালিকা ও ভায়রা ভাইকে সারপ্রাইজ দেওয়া বিষয় নিয়ে আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার পোস্টটি পড়ে খুবই অসাধারণ ও গঠনমূলক মন্তব্য করেছেন এজন্য আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ক্যানবা দিয়ে তৈরি
গত পর্বে আমি বলেছিলাম আপনাদেরকে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারী এলাকায় হিলভিউ পার্কে ঘুরতে যাওয়ার দৃশ্য এবং সেইসাথে আমি আমার অনুভূতিগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। পার্কে সময় কাটাতে কার না ভালো লাগে কারণ এখানে সবকিছুই যেন প্রকৃতির মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার এক আনন্দঘন মুহূর্ত। বলতে গেলে খুব কাছ থেকে প্রকৃতিকে দেখা যায় বা অনুভব করা যায়। তো বন্ধুরা চলুন আর দেরি না করে আমরা ঘুরে আসি সেই হিলভিউ পার্কে।
আপনাদেরকে আমি আগেই বলেছিলাম চট্টগ্রামে আমি আগে বেশ কয়েক বছর থাকার কারণে চট্টগ্রামের অনেক দর্শনীয় স্থান অনেক আগে থেকে আমার ঘুরা হয়েছিল কিন্তু ভাটিয়ারীর এই হিলভিউ পার্কটিতে আগে কখনো যাওয়া হয়নি। তো যেহেতু এবার আমার ছেলে মেয়েরা একটা বায়না ধরেছে তাই আমরা সবাই বসে সিদ্ধান্ত নিলাম এই হিলভিউ পার্ক থেকে ঘুরে আসবো। আপনাদেরকে আমি আগে বলে রাখি আমরা চট্টগ্রাম আমার শালিকার বাসায় যাওয়ার আগেই আমার আরেক শালিকা ও তার দুই বাচ্চা এবং আমার শাশুড়ি ওনারা তার আগের দিনই তার বাসায় এসেছিল। তো মোটামুটি আমাদের ঘুরতে যাওয়ার টিমটা একটু বড়ই ছিল। সেই সাথে আমার শালির ভাসুরের স্ত্রী এবং মেয়ে ও আমাদের সাথে যাওয়ার জন্য রাজি হল।
তো বন্ধুরা ছোট-বড় মিলে আমরা ১৪ জন ছিলাম। আমরা গাজীপুর থেকে গিয়ে চট্টগ্রামে উঠেছিলাম পূর্ব মাদারবাড়ী এলাকায় যেখানে আমার ছোট শালিকা বাসা। বন্ধুরা যেভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে ঠিক পরের দিন আমাদের দুপুর বারোটা থেকে একটার মধ্যে বাসা থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত হলো। সেই কারণেই পরের দিন সকালে নাস্তা করার পরেই আমার ছোট শালিকা সে হালকা পাতলা করে একটা বিরানির আয়োজন করে ফেললো। মোটামুটি সবাই রেডি হয়ে বিরানি খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা বেরিয়ে পড়লাম সেই হিলভিউ পার্কের উদ্দেশ্যে।
প্রথমে আমরা পূর্ব মাদার বাড়ি থেকে তিনটা সিএনজি ভাড়া করলাম সেখান থেকে চলে গেলাম অলংকার মোড়ে। তারপর অলংকার থেকে আমরা একটা মাইক্রো ভাড়া করে চলে গেলাম ডাইরেক্ট হিলভিউ পার্কে। পার্কে যাওয়ার পথে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথগুলো এতটা অসাধারণ লাগছিল মন চাচ্ছিল যেন সবগুলো ভিডিও করে আপনাদের মাঝে শেয়ার করি কিন্তু যেহেতু এটি একটি ক্যান্টনমেন্ট এলাকা তাই ড্রাইভার আমাদেরকে আগে থেকেই নিষেধ করে দিয়েছিল, এখানকার কোন ছবি বা ভিডিও না করতে সেজন্য আর আমি আপনাদের মাঝে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা গুলো দেখাতে পারিনি। আমরা মোটামুটি আড়াইটার মধ্যে এই হিল ভিউ পার্কে পৌঁছে গেলাম।
এবার আমি আপনাদেরকে হিলভিউ পার্কের ভিতরে নিয়ে যাব তো বন্ধুরা প্রথমে আমরা টিকেট কেটে নিয়েছিলাম জনপ্রতি বড়দের ৫০ টাকা এবং তিন বছরের নিচে বাচ্চাদের জন্য ৩০ টাকা করে আমরা সবাই টিকেট কেটে ভিতরে ঢুকে পড়লাম। আমরা যখন গিয়েছিলাম যদিও তেমন কোন লোকজনের সমাগম ছিল না কিন্তু যত সময় বাড়ছিল ততই মানুষের অনেক সমাগম হতে লাগলো। তবে ভিতরের অনেক কিছুই কৃত্রিমভাবে তৈরি করেছিল আরেকটি বিষয় হচ্ছে এখানে অনেক বড় একটি পুকুর রয়েছে সবাই এখানে এসে মাছ ধরতে পারে যারা মাছ ধরায় আগ্রহী।
এছাড়াও অনেক বড় বড় পাহাড় রয়েছে, অনেক সুন্দর একটি নার্সারিও রয়েছে। আমি এই নার্সারি থেকে অনেক ছবি তুলে নিয়েছিলাম। যদিও কিছুদিন আগে আমি কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছি সামনের দিকে আরো বেশ কিছু ফটোগ্রাফি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। তো বন্ধুরা মোটামুটি আমরা হিলভিউ পার্কের ভিতরে বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি ও অনেক ছবি তুললাম। সেইসাথে সবাই একটা একটা করে আইসক্রিম খেলাম যেহেতু কিছুটা গরম ছিল সবাইর আইসক্রিমটা একটু ভালো লেগেছিল। তবে হ্যাঁ আমি আপনাদেরকে এখানে বলে রাখি পার্কের ভিতর মূলত ছোট একটা ডোবার মত ছিল যেখানে বেশ কিছু শাপলা ফুল ছিল যেটা খুবই আকর্ষণীয় ছিল।
তার পাশাপাশি নার্সারিটার মধ্যে অনেক রকম ফুল ফুটেছিল সে কারণে অনেকটা ভালো লেগেছিল। এছাড়াও বেশ কিছু সেনাবাহিনীদের প্রতিকৃতি ও অনেক বড় একটি পরিত্যক্ত ট্যাংক ছিল। এছাড়াও বেশ কিছু খরগোশ ছিল এবং তার পাশাপাশি বেশ কিছু ঘুঘু পাখি ছিল যেগুলো দেখতে অনেকটা ভালো লেগেছে, আমার বাচ্চারাও অনেক আনন্দ পেয়েছে। গেট দিয়ে ঢুকতে প্রথম একটি ঝর্ণা ছিল যদিও তখন ঝরনাটি ছাড়িনি আমরা যখন বেরিয়ে আসছিলাম তখন ঝর্ণাটি ছেড়েছিল তাই ঝরনাটার ছবি তুলতে আমার মনে ছিল না, তাই আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পারলাম না। এছাড়াও একটা কৃত্রিম স্রোতধারা ছিল পাহাড় থেকে পানি গড়িয়ে পড়া সেটাও তখন বন্ধ ছিল। তবে আমার সব চাইতে বেশি ভালো লেগেছিল পার্কে আসতে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তাগুলো এবং রাস্তা থেকে ডানে বায়ে বেশ উপভোগ করার মত অনেক দৃশ্য ছিল।
তো বন্ধুরা আজ তাহলে এই পর্যন্তই। আশা করি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে চাইলে আপনারাও ঘুরে আসতে পারেন এরকম একটি খুব চমৎকার স্থানে। আমরা সেই হিলভিউ পার্কের ঘোরাঘুরি শেষ করে সেখানে আরেকটি দর্শনীয় স্থান ছিল সেটি হল সানসেট পয়েন্ট। আগামী পর্বে সানসেট পয়েন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর সব সময় আমার সাথে থাকবেন।
চলবে.............
ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel
আমি আলাউদ্দিন পাবেল।
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে।
তারিখঃ ০১-১১-২০২২ ইং
গত পর্বের পোস্ট আমি পড়েছিলাম। যাই হোক চট্টগ্রামে আগে বেশ কিছু বছর থাকার জন্য বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান আগ থেকেই চেনা, আপনার তাই অনেক সুবিধা হয়েছে পরিবার নিয়ে ঘুরতে। আসলেই খুব সুন্দর জায়গা। বেশ ভালো সময় কাটিয়াছেন হিলভিউ পার্কে। খরগোশ ,ঘুঘু সব মিলিয়ে দারুন।
ভালো লাগলো ,ধন্যবাদ।
আপনাদের ভালো লাগাই আমার এই পোস্টটি করার সার্থকতা। ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার পোস্টটি পড়ে এতটা গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
পরিবারের সবাইকে মিলে এভাবে ঘুরতে গেলে অনেক ভালো লাগে।আপনাদের টিম তো মাশাল্লা অনেক বড় হয়েছে ১৪ জনের একটা টিম।এত বড় একটা টিম নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার মজাই আলাদা।চট্টগ্রামের ভাটিয়ারী এলাকার হিলভিউ পার্ক দেখতে বেশ সুন্দর মনে হচ্ছে বাইরের কভার ফটো দেখে। মাঝে মাঝে ছেলে মেয়ে আবদার রক্ষার্থে এভাবে সবাইকে নিয়ে ঘুরতে হয়।তাহলে বাচ্চাদের মন মানষিকতা একটু ফ্রেশ হয়।আপনার উপস্থাপনা খুব সুন্দর ছিল এবং ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর ছিল।ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে ভাগাভাগি করার জন্য।
আপনি ঠিকই বলেছেন বাচ্চাদেরকে এভাবে নিয়ে ঘুরাঘুরি করলে ওদের মন মাইন্ড অনেকটা ফ্রেশ হয়ে যায়। আমি সবসময় চেষ্টা করি কিন্তু অনেক সময় হয়ে ওঠেনা। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে আমার পোস্টটি পড়ে এতটা উৎসাহ ও অনুপ্রেরণামূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
গত পর্ব পড়েছি।আজ হিলভিউ পার্কে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়টি পোস্ট করেছেন, সবাইকে একসাথে দেখে সত্যি খুব ভাল লাগছে।বাচ্চারা খুব আনন্দ করেছে বুঝতে পারছি। খরগোশ,ঘুঘু পাখি দেখে বাচ্চারা খুব মজা পেয়েছে নিশ্চয়ই।সবাইকে নিয়ে আনন্দে কাটুক এ কামনা করি।ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
জি আপু বাচ্চারা তো অনেক আনন্দিত হয়েছে এবং তারা তো সেখান থেকে আসতে চাচ্ছিল না। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু পোস্টটি পড়ে এতটা অসাধারণ ও গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
দাদা আপনার ছেলে এবং মেয়ে দুজনেই বেশ ভালো পোজ দিয়ে ছবি তুলেছে। কিন্তু সবার ছবি আপনি তুলে দিলেন আর আপনার ছবি কেউ তুললো না? 😃
যাক আমির ক্ষেত্রেও এটাই হয় দাদা। তবে আপনাদের ভ্রমণ বেশ জবরদস্ত হয়েছে বোঝা যাচ্ছে। অনেকে মিলে একসাথে গেলে খুব মজা হয়।পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
আসলে আপু এখন আর এরকম ইচ্ছাও হয় না নিজের ছবি তোলার শুধুমাত্র আমার বাংলা ব্লগে কাজ করার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ফটোগ্রাফি করে থাকি এই আর কি। তবে এখন বাচ্চাদের গুলো তুলতে বেশি ভালো লাগে নিজেরটা চাইতে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার পোস্টটি করার জন্য।
পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার মজাটাই আলাদা। পরিবারের সবাইকে একসাথে দেখে বোঝা যাচ্ছে সবাইকে নিয়ে খুব আনন্দে কাটিয়েছেন। জায়গাটি বেশি দারুন ছিল। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি জায়গা থেকে পরিবারে সবাইকে নিয়ে ঘুরে আসার জন্য।
আপনি ঠিকই বলেছেন জায়গাটা আসলে অনেক দারুন ছিল , পাহাড়ি জায়গা চতুর্দিকে সবুজের শ্যামলে ভরা সুন্দর একটা মনোরম পরিবেশ। অসংখ্য ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার পোস্টে পড়ার জন্য।
প্রথম পর্ব টা আমি দেখিনি তবে হিল ভিউ পার্ক সম্পর্কে মিম মেডাম এর পোস্ট থেকে জানতে পেরেছিলাম আজ আপনার পোস্ট থেকেও জানতে পারলাম আসলে অসাধারন একটি জায়গা দারুন লিখেছেন ভাই।শুভ কামনা রইলো।
আপনার জন্য শুভকামনা। আপনি আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার পোস্টটি পড়ে চমৎকার মন্তব্য করার জন্য।
ভাইয়া পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম গিয়ে বেশ মজা করেছেন ।আপনাদের পুরো টিমে মোট ১৪ জন সবাই মিলে একসাথে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার মজাই আসলে আলাদা ।একসাথে সবাই আনন্দ করা যায় একা একা ঘুরতে যাওয়ার মজা নেই। আর আপনার শালিকার বাসায় গিয়ে সবাই উঠেছেন। সবাই বিরিয়ানি খেয়ে পার্কে চলে এসেছেন আপনার মেয়ে এবং ছেলে খুব চমৎকার কিছু ছবি তুলেছে। সে সাথে আপনার ভাগিনার ছবিও খুব সুন্দর হয়েছে ।সম্পূর্ণ পার্ক টি খুবই মনোরম শিশুদের জন্য খুবই আনন্দময় মুহূর্ত ছিল।
আসলে বাচ্চার তো গিয়ে খালি ছবি তুলবে এই হল তাদের একটা টার্গেট বিভিন্ন পোজে এভাবে ওইভাবে মানে আমাকে একেবারে ঘুরতেই দেয়নি তাদের ছবি তুলতে তুলতে আমার অবস্থা খারাপ। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার পোস্টটি পড়ে যথাযথ মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার মজাটাই আলাদা। আপনি পরিবারের সাথে কিছু ভালো সময় কাটিয়েছেন। অনেকে আছেন ইচ্ছা করলেও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন না। আপনি আপনার পরিবারকে নিয়ে ঘোরাঘুরি করেছেন দোয়া করি আপনার সামনের দিনগুলো আরো সুন্দর ও ভালোভাবে কাটুক ধন্যবাদ বাইয়া।
জি ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন আমার ক্ষেত্রেও অনেক সময় আসলে সময় করে হয়ে উঠে না তাই এবার একটু সুযোগ পেয়ে হাতছাড়া করিনি, সবাইকে নিয়ে ঘুরে আসলাম ভালোই লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।