আমার স্মৃতির পাতা থেকে নেওয়া (পর্ব-৬) ভৌতিক পর্ব // ১০% পে-আউট লাজুক খ্যাঁকে 🦊
হ্যালো, স্টিমিটের আমার সহযোদ্ধারা, আসসালামুয়ালাইকুম, আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আপনাদের দোয়ায় আমিও ভালো আছি। আমি আজকে আপনাদের সামনে আমার জীবনের কিছু ঘটে যাওয়া ভাল ও খারাপ স্মৃতি শেয়ার করতে যাচ্ছি।
আমি এখন আপনাদের সামনে "আমার স্মৃতির পাতা থেকে নেওয়া" (পর্ব-৬) ভৌতিক পর্ব বর্ণনা করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আর একটা কথা আমার গল্প পড়ে কেউ যদি ভয় পেয়ে থাকেন এর জন্য কিন্তু আমি দায়ী নই।
৫ম পর্বের পর থেকে......
এর কিছুদিন পর আমার সাথে আরও একটি ঘটনা ঘটল। এই ঘটনাটা শুনলে আপনারা সত্যিই অবাক হয়ে যাবেন। আমি এর আগে বলেছিলাম যে আমার এক বন্ধু ছিল তার নাম ফারুক। এবং তার বড় ভাই তার নাম সোহাগ। তো একদিন রাতে কারেন্ট চলে গিয়েছিল এবং সেদিন প্রায় বলে দিয়েছিল সারাদিন সারারাত কারেন্ট আসবে না। আমরা এই তিনজন প্রায় সময়ই কারেন্ট না থাকলে আমাদের যে কোয়াটার(ঘর) ছিল সেই কোয়াটারের ছাদে গিয়ে আমরা রাতে ঘুমাতাম, সেভাবেই ব্যবস্থা করা ছিল আমাদের। তো ঐদিন কারেন্ট না থাকার কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম রাতে আমরা আমাদের কোয়াটারের ছাদে শোবো, যেই কথা সেই কাজ রাতে আমরা তিনজনেই শুয়েছিলাম।
হঠাৎ করে রাত প্রায় আনুমানিক তিনটার সময় আমার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল, কিন্তু তারা দুই ভাই দিব্যি ভালোভাবে ঘুমিয়ে আছে। আমি উঠে দেখলাম রাতে কারেন্ট চলে এসেছে এবং চতুর্দিকে মোটামুটি রাস্তার লাইটের আলোতে মোটামুটি আলোকিত ছিল। আমি যখন শোয়া থেকে উঠে বসলাম আমি যা দেখলাম নিজের চোখকে আসলে এখনও বিশ্বাস করাতে পারছিনা। আমি দেখলাম আশেপাশে কেউ নেই, রাস্তায় একটা কুকুর পর্যন্ত জেগে নেই। হঠাৎ আমি দেখলাম একটু দূরে রাস্তার মাঝে একজন অনেক বয়স্ক বুড়ি যার সম্পূর্ণ গায়ে ছিল সাদা কাপড় এবং চুলগুলো সাদা। তিনি আমাকে দুর থেকে হাত দিয়ে ইশারা করে ডাকছেন। প্রথমে আমি ভয় পাইনি, পরে আমি হঠাৎ করে চিন্তা করলাম যে এত রাত্রে রাস্তায় কেউ নেই উনি আমাকে কেন ডাকছেন। এরপর হঠাৎ করে তিনি একটু দূর থেকে আরেকটু কাছে চলে আসলেন চোখের পলকে। তখন আমি খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম। এবং তিনি আমাকে এখন জোরে ডাকতেছেন এটা বলে "বাবা আমার পান শেষ হয়ে গেছে আমাকে ১০ টাকার পান এনে দিবে" আমি তো তখন ভয়ে থরথর করে কাঁপা শুরু করলাম।
তখন আমি আমার পাশে শুয়ে থাকা ওদের দুই ভাইকে ডেকে উঠালাম এবং তাদেরকে বললাম যে দেখ এই মহিলাটি কি বলছে। তখন তারা দুইজন ঘুম থেকে উঠলো এবং আমার বন্ধু ফারুক হঠাৎ করে সে কেমন যেন আচরণ শুরু করল। এরপর সে আমাকে বলল তুই শুয়ে থাক আমি যাচ্ছি। আমি বললাম তুই কোথায় যাবি আমাকে জোরে একটা ধমক দিল এবং এমনভাবে তাকাল আমি এমনিতেও ভয়ে তো আমার অবস্থা খারাপ, তার উপর ওর চোখের দিকে তাকাতে আমার অবস্থা আরো খারাপ হতে লাগল। তার চোখগুলো কেমন যেন লাল হয়ে গেল, আর অনেক বড় বড় দেখা গেল।
তখন ওর বড় ভাই ওকে ধরতে গেলে ওর বড় ভাইকে ধরে এমন একটা ধাক্কা মারলো যে সে দুই তিন হাত দূরে গিয়ে পড়ল। এখন সে আমাদের বিছানা থেকে উঠে চলে যাচ্ছে। যাওয়ার সময় যেহেতু আমরা ছাদে শুয়ে ছিলাম সেখান থেকে নামতে গিয়ে সে পা পিছলে পড়ে যায় নিচে। এবং পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। যদিও সেটি এক তলার ছাদ ছিল। এরপর আমরা আর ওই বুড়ি ভূতটাকে আর দেখতে পাইনি, সেও তখন এখান থেকে চলে গিয়েছিল যদিও আমার এই বন্ধুর উপরে শোয়ার হয়েছিল।
আমার এই বন্ধুটি প্রায় ৪-৫ ঘণ্টা পর তার জ্ঞান ফিরে আসে এবং প্রায় এক সপ্তাহ বিছানায় পরে ছিলো অনেক ব্যথা পেয়েছিল। আর আমি দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত ভয়ে বাসা থেকে বের হইনি, খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল প্রায়। এতটা ভয় পেয়েছিলাম সেই রাতে। আর আমার ওই বন্ধুটির বড় ভাই সেও ভয় একরকম তার মুখের কথাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অনেকদিন সে বাইরে তো বের হয়নি কারো সাথে কথা ও বলে নি।
এখানে একটি বিষয় আপনাদেরকে বলে রাখি এই ঘটনার পর থেকে আমি এই বিষয়টা সম্পর্কে আমার ওই বন্ধুটির মা-বাবার কাছ থেকে জানতে পারলাম যে তাদের এই ছেলের উপর নাকি আলগা ভূত-প্রেতের একটা আঁচর ছিল। ওরে বাবা শুনলেই গাঁ কেমন ঝিমঝিম করে উঠে এখনো। সেই কথাগুলো মনে হলে দমবন্ধ হয়ে আসে।
আরেকটি বিষয় হলো আমরা যে বুড়িটাকে সেদিন রাতে দেখেছিলাম তাকে আমরা চিনতাম। তিনি ছিলেন হিন্দু পরিবারের একজন সদস্য, আমাদের কলোনিতে থাকতেন এবং তিনি বেশ কিছুদিন আগে মারা গিয়েছিলেন। যখন আমরা তাকে চিনতে পারলাম তখন আরও বেশী ভয় পেয়েছিলাম এবং তখনই জানতে পারলাম যে এটা অন্য কিছু ছিল। তার প্রেতাত্মা হতে পারে।
চলবে....….......
শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel
আমি আলাউদ্দিন পাবেল।
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে।
সম্পূর্ণ গল্পের মধ্যে উপরের এই লাইনটি ছিলো সবচেয়ে ভয়ংকর। পুরো পোস্টটি পড়ার সময় একদম ই ভয় লাগেনি তবে এই লাইনটা পড়েই গা টা শিউরে উঠলো।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে আমার এই পোস্টটি সম্পূর্ণটা পড়ে একটি গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।
এই মুহূর্তটি আমার মনে হয়েছে খুবই ভয়ঙ্কর কারণ নির্জন রাতে একটা বয়স্ক মহিলা সাদা কাপড় পড়ে রাস্তা একদম ফাঁকা তখন পান চাচ্ছে আপনারা বন্ধুরা মিলে কথোপকতন করে একজনের এনে দিতে চাইলেন। আসলে গা শিউরে ওঠার মতো। এককথায় খুবই ভয় লাগলো পড়ে এবং খুবই রহস্যময় লাগলো
আপনার জন্য শুভকামনা। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার অসাধারণ মন্তব্যের জন্য।
বাহ ভাই এ কী কাহিনি পড়লাম। সত্যি আমার শরীর শিউরে উঠেছে। কিছুটা ভয় পেয়েছি। গ্রামের দিকেই ভূত পেঁতের আছড়ের কথা শোনা যায়। এবং এটা নাকী আপনার বন্ধুরও ছিল। গল্পটা অসাধারণ লিখেছেন ভাই। পড়ে ভালো বিনোদন পেয়েছি।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। আপনার মন্তব্য পড়ে আমি খুবই মুগ্ধ। শুভকামনা রইল।
😊