ভৌতিক গল্প "মৃত্যুর কাছাকাছি" // গল্পের রিভিউ (১০% পে-আউট 'লাজুক-খ্যাক' এর জন্য)

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

স্টিমিটে আমার সহযোদ্ধারা,
আসসালামুয়ালাইকুম, আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি।

received_1455617028142624.jpeg

আমি আজকে আপনাদের সামনে ভৌতিক গল্প "মৃত্যুর কাছাকাছি" এই গল্পের রিভিউ উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে আমার রিভিউটি ভালো লাগবে।
তাহলে চলুন আর দেরী না করে আমার তৈরি করা রিভিউটি আপনারা সবাই দেখে নিবেন।

⭐⭐গল্পের রিভিউ⭐⭐

গল্পের নাম: মৃত্যুর কাছাকাছি।

লেখকের নাম: Phantom.
গল্পের ক্যাটাগরি: ভৌতিক গল্প।
গল্পের চরিত্রে: দুলাল কাঞ্জিলাল এবং নিতাই।

গল্পের সারসংক্ষেপ:
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একটি অজ পাড়াগাঁ। এই গ্রামটির নাম ছিল বাগমুন্ডি। এই গ্রামে বাস করত দুলাল কাঞ্জিলাল নামের এক গরীব লোক। যে কিনা ক্ষেত মজুরের কাজ করে তার সংসার চালাত। যখন বর্ষাকাল আসতো তখন দুলাল কাঞ্জিলাল এর হাতে কোনো কাজ থাকত না। তখন সে বর্ষার সময় রাতে মাছ ধরতে এবং সেই মাস পরের দিন বাজারে বিক্রি করে তার সংসার চালাতে। প্রতিরাতে সে তার খুব প্রিয় বন্ধু নিতাই কে নিয়ে দুজনে একসাথে মাছ ধরতো। এভাবে একদিন দুলাল রাতে মাছ ধরার জন্য প্রস্তুত হয়ে বাড়ি থেকে যখন বের হচ্ছে তখন দেখতে পেল দূরে নিতাই তার জন্য দাঁড়িয়ে আছে। তখন দুলাল তাড়াতাড়ি করে তার হাতে জাল, কোমরে খালুই আর ঢাকনা দেওয়া লন্ঠন নিয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে বের হয়ে এলো। যেহেতু তখন ছিল বর্ষাকাল চতুর দিকে পানি আর পানি, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল এবং সেইসাথে এলোমেলো হাওয়া দিচ্ছিলো।

কিন্তু হঠাৎ দুলাল দেখতে পেল নিতাই খালি হাতে দাঁড়িয়ে আছে এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে উত্তরে বলল আজকে তার ভালো লাগছে না তাই সে আজকে মাছ ধরবে না। যেহেতু তুই আমার প্রানের দোস্ত তাই তোকে তো একা একা মাছ ধরতে যেতে দিতে পারি না তাই চলে আসলাম। এরপর তারা মাছ ধরার জন্য দুজনে রওনা হল। আজকে তারা মাছ ধরতে যাবে মনসাপোঁতার খালে। সেখানে নাকি অনেক মাছ পাওয়া যায়।

কিন্তু অন্যান্য দিনের মত দুলালের কাছে আজকে নিতাইকে একটু অন্যরকম মনে হচ্ছে। কিন্তু সেই দিকে পুরোপুরি খেয়াল করল না দুলাল, না করে তারা মাছ ধরতে রওনা দিয়ে দিল। পথের মধ্যে যেতে যেতে যদিও অনেক অসাভাবিক কিছু দুলাল দেখতে পেয়েছিল কিন্তু সে অতটা গুরুত্ব দেয়নি তখন। তারা যেতে যেতে বাগদী পাড়ায় এসে পৌছালো এবং বাগদী পাড়া পরে তারা শালুক বিলে তারপরে হাটখোলা হয়ে তারা মনসাপোঁতার খালে এসে পৌছালো।

আর যখন দুলাল মাছ মাছ ধরতে নামল ঠিক তখনই নিতাই তার আসল রূপে ফিরে এলো এবং দুলালকে আজকে খেয়ে নিবে বলে সেই তর্জন গর্জন শুরু করলো। তখন দুলাল নিতাইকে বললো কিরে নিতাই তোর কি হয়েছে তুই এমন করছিস কেন? তখন নিতাই বলল আজ তিন দিন হয়ে গেল আমি কলেরা রোগে মারা গিয়েছি আমার শ্বশুরবাড়িতে কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমার দাহ হয়নি তাই আমি একটি রক্তচোষা পিচাশ হয়ে গেছি। গত রাতে আমি আমার বউকে খেয়েছি আর আজকে আমি তোকে খাব এই বলে পিশাচটা হুংকার ছাড়তে শুরু করল এবং দুলালকে খাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিল।

যদিও প্রথম দিক থেকে দুলাল একটু ভয় পেয়েছিলো কিন্তু সে তার পরিবারের কথা চিন্তা করে তার ভেতরে একটা শক্তি সঞ্চয় করল । দুলাল কখনো ঈশ্বরকে বিশ্বাস করতো না কিন্তু যখন সে এই বিপদে পড়লো তখন একমনে একধ্যানে ঈশ্বরকে ডাকতে শুরু করলো এবং সে ঢাকনা দেওয়া লন্ঠষটিকে ধরে দাঁড়িয়ে থাকলো। কিন্তু এমন সময় ঢাকনা দেওয়া লন্ঠনটির তেল ফুরিয়ে এল তখন নিতাইয়ের মনে একটা ভয় ঢুকে গিয়েছিল এই বুঝি তার আজকে শেষ রাত।

কিন্তু হঠাৎ দুলালের একটা কথা মনে পড়ে গেল। যখন সে হাটখোলায় এসে বিড়ি ধরাই ছিল এবং নিতাইকে ও বিড়ি টানার জন্য বলেছিল তখন নিতাই তার কাছ থেকে অনেক দূরে ছিল আগুন থাকার কারণে। ঠিক যখন দুলালের লন্ডন নিভে যায় যায় অবস্থা তখন সে তার পুরো বিড়ির বান্ডিল কে হাতে নিয়ে নিলো এবং একটা একটা করে ধরাতে লাগলো। আর এভাবে সেই একটার পর একটা ধরিয়ে আস্তে আস্তে বাড়ির দিকে রওনা হলো কিন্তু পিছনে পিছনে পিচাশটা দুলালকে খাওয়ার জন্য সেই তর্জন গর্জন করে এগিয়ে আসছিল। আর এরই মধ্যে আস্তে আস্তে দিনের সেই সূর্য উদয় হল সেই সাথে পিচাশটি বিলীন হয়ে গেল দিনের আলোয়। আর এতে করে দুলালের জীবনে এক নতুন সূর্য উদিত হল।

গল্পের পজিটিভ দিক:
এ গল্পটি পজিটিভ দিক বলতে আমি বুঝি বিপদে পড়েও দুলাল বেঁচে থাকার যে শক্তি জুগিয়ে ছিল তার উপস্থিত বুদ্ধির মাধ্যমে এবং তারই মাধ্যমে সে পরবর্তী একটি দিনের সূর্যের আলো দেখতে পেয়েছিল।
এখানে এটাই পরিষ্কার যে একটা মানুষ বিপদে পড়লে সে ভয় না পেয়ে এবং দিশেহারা না হয়ে সে যদি তার উপস্থিত বুদ্ধির মাধ্যমে কাজ করে তাহলে সে সেখান থেকে সফলতা পাবেই।

গল্পের নেগেটিভ দিক:
গল্পটি যেহেতু একটি ভৌতিক গল্প তাই আমি মনে করি এই গল্পটি ছোট বাচ্চাদের কাছ থেকে দূরে রাখতে হবে যাতে করে তারা এই গল্পটি সম্পর্কে জানতে না পারে। কারণ তারা যদি এই গল্পটি শুনে তারা ভয় পাবে এবং ভয়ের কারণে তাদের যে কোন প্রকার ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

লেখক এর উদ্দেশ্যে কিছু কথা:
আপনার আরও একটি গল্প আমি পড়েছি এবং সেই গল্পটি ও খুব অসাধারণ একটি গল্প ছিল আর এই গল্পটি নিয়ে আমি আপনার দ্বিতীয় গল্প পড়েছি। আসলে যে এরকম অসাধারন গল্প লিখতে পারে তার উদ্দেশ্যে আমার কিছু বলার নেই। আমি শুধু এটাই বলব যে আপনি এরকম আরো ভালো ভালো গল্প লিখে আমাদেরকে উপহার দিবেন এবং আমরা যাতে আপনার গল্প কে অনুসরণ করে ভবিষ্যতে আপনার মত হতে না পারলেও যাতে আমরা এই গল্প লেখার ব্যাপারে উৎসাহিত হতে পারি। অনুসরণ করতে পারি আপনাকে।

শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel
আমি আলাউদ্দিন পাবেল।
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে।

Cc :
@shuvo35
@rme

আমার পরিচয়
আমি আলাউদ্দিন পাবেল। আমার জন্ম ১৯৮৩ সালের পয়লা জানুয়ারি নোয়াখালী জেলা অন্তর্গত সোনাইমুড়ি থানার আওতাধীন বারগাঁও গ্রামে। বর্তমানে আমি গাজীপুরে আমার পরিবার নিয়ে বাস করছি। আমি পেশায় একজন ফার্মাসিস্ট তার পাশাপাশি পার্টটাইম হিসেবে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কাজ করছি। আমার সবচেয়ে প্রিয় খেলাটি হলো ক্রিকেট খেলা। আমি ক্রিকেট খেলা দেখতে ও খেলতে খুব ভালোবাসি। সেই সাথে আমি আর্ট করতেও খুব ভালোবাসি। আমি সুস্বাদু রেসিপি তৈরি করতে ভালোবাসি এবং মাঝে মাঝে তৈরি করে আমার পরিবারের সাথে শেয়ার করে তারা খুব আনন্দিত হয়। আমি নিয়মিত লিখি না তবে স্টিমিট এ যোগ দেওয়ার পর থেকে মোটামুটি নিজে থেকে কিছু লেখার চেষ্টা করি।

Sort:  

You have been upvoted by @sm-shagor A Country Representative, we are voting with the Steemit Community Curator @steemcurator07 account to support the newcomers coming into steemit.


Follow @steemitblog for the latest update. You can also check out this link which provides the name of the existing community according to specialized subject

There are also various contest is going on in steemit, You just have to enter in this link and then you will find all the contest link, I hope you will also get some interest,

For general information about what is happening on Steem follow @steemitblog.

 3 years ago 

ভাইয়া গল্পটি নেগেটিভ এবং পজিটিভ দিক এবং লেখক এর পরিচয় নিয়ে খুব সুন্দর ভাবে আলোচনা করেছেন। অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো প্রিয় ভাই।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে আমার রিভিউটি ভালোভাবে পড়ে এর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।

 3 years ago 

গল্পটি পরে পুরোপুরি বুঝতে পারলাম, ধন্যবাদ ভাইয়া গল্পটা সুন্দর করে রিভিউ করার জন্য, শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

 3 years ago (edited)

আমাদের রিভিউ টি পরে আপনি গল্পটি পুরোপুরি বুঝতে পেরেছেন এই জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। শুভেচ্ছা আপনার জন্য অবিরাম।

 3 years ago 

গল্পটি আমি পড়েছি। আপনি অসাধারণ রিভিউ দিয়েছেন ভাইয়া। ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করেছেন ভিবিন্ন দিক গুলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
শুভ কামনা রইল।

 3 years ago 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু শুভ কামনা আপনার জন্য অবিরাম।

 3 years ago 

অসাধারণ একটি রিভিউ উপস্থাপন করেছেন আপনি। গল্পটির ভালো মন্দ দুটো প্রাথর্ক খুব সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন। এরং আপনার রিভিউ থেকে স্পষ্টতা খুজে পেয়েছি। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাই

 3 years ago 

আমার এই রিভিউটি পড়ে এবং এর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। শুভকামনা আপনার জন্য।

 3 years ago 

ভৌতিক গল্প "মৃত্যুর কাছাকাছি" গল্পের রিভিউটি আপনি চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছেন। আপনি আপনার রিভিউটিতে পজেটিভ এবং নেগেটিভ দুই দিক নিয়েই আলোচনা করেছেন। খুব সুন্দর হয়েছে আপনার রিভিউটি। আপনার জন্য রইলো শুভকামনা।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা অবিরাম।

 3 years ago 

মৃত্যুর কাছাকাছি গল্পটি নিয়ে অনেক সুন্দর জন্য দিয়েছেন। যদিও গল্পটি আমি এখনো পড়িনি। তবে আপনার রিভিউ দেখে পরতে ইচ্ছে করছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago (edited)

আপনার খুবই দুর্ভাগ্য যে আপনি এখনো গল্পটি পড়তে পারেনি। আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না আপনি কি মিস করে ফেললেন। আমার পরামর্শ আপনার প্রতি গল্পটি আপনি ভালভাবে পড়ুন দেখবেন আপনার কাছে অনেক ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য।

 3 years ago 

আপনাকে ধন্যবাদ খুব চমৎকারভাবে পুরো গল্পটি রিভিউ করার জন্য

 3 years ago 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা আপনার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57062.81
ETH 3068.42
USDT 1.00
SBD 2.43