আমার স্মৃতির পাতা থেকে নেওয়া (পর্ব-৪) // ১০% পে-আউট লাজুক খ্যাঁকে 🦊

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

হ্যালো, স্টিমিটের আমার সহযোদ্ধারা, আসসালামুয়ালাইকুম, আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় আমিও ভালো আছি। আমি আজকে আপনাদের সামনে আমার জীবনের কিছু ঘটে যাওয়া ভাল ও খারাপ স্মৃতি শেয়ার করতে যাচ্ছি।

received_2998916280387254.jpeg

আমি এখন আপনাদের সামনে "আমার স্মৃতির পাতা থেকে নেওয়া" (পর্ব-৪) বর্ণনা করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

তৃতীয় পর্বের পর থেকে......

image.png
Source

এখানে আরেকটি কথা বলে রাখি আমরা এই ভ্রমণকে উদ্দেশ্য করে একটি ক্যামেরা ভাড়া ও একটি রিল কিনে এনেছিলাম ছবি তোলার জন্য যেহেতু তখন এত মোবাইলের প্রচলন ছিল না। হাতে হাতে এত ক্যামেরা ছিল না। যদিও প্রত্যেকটি ধাপে ধাপে আমরা যেতে যেতে ছবিগুলো তুলেছিলাম তখনো পর্যন্ত আমরা জানতাম যে প্রত্যেকটি ছবি তোলা হচ্ছে। তো আমরা গোলাপ বাগান পরিদর্শন শেষ করে চিন্তা করলাম সকালের নাস্তাটা সেরে নেই এবং সেখানে একটি জায়গায় বসে সবাই মিলে সকালের নাস্তা সেরে ফেললাম।

image.png
Source

মূলত আমাদের এখানে আসার মেইন উদ্দেশ্য ছিল আমরা ঝরনা দেখবো তার কারণ আমরা আগে শুনেছিলাম এখানে কয়েকটি বড় বড় ঝর্ণা রয়েছে এবং সেখানে আমরা গোসল করব সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলাম। যেহেতু শরতের শেষের দিকে এবং শীতের আগমন ঘটছে তখন ঝর্ণার পানির পরিমাণ কম ছিল তারপরও আস্তে আস্তে পড়ছিল। এবার আমরা হাঁটতে হাঁটতে অনেকটা ভিতরে চলে গেলাম এবং সেখানে একটা বিশাল বড় একটি ঝর্ণার স্রোতধারা দেখতে পেলাম আর সবাই আনন্দে আত্মহারা হয়ে সেখানে গোসল করা শুরু করলাম। সত্যিকার অর্থে আহা কী সুস্বাদু পানি হিম শীতল পানি শরীরে যখন পানি পড়ে মনে হয় যেন পুরো শরীর ঠান্ডা জুড়িয়ে যায়।

আমরা সবাই অনেকক্ষণ ধরে সেই পানিতে ভিজলাম এবং কিছুক্ষণ পরে আমরা সবাই মিলে চিন্তা করলাম যে এই পানিটা কোথা থেকে আসছে আমরা একটু দেখতে চাই। তখন সবাই গোসল শেষ করে কাপড় চোপড় চেঞ্জ করে রেডি হয়ে সেই অজানা খোঁজের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। এবার আমরা ওঠা শুরু করলাম পাহাড়ের উপরে উঁচা উঁচা পাহাড় পানির নহর কে ফলো করে আমরা উপরের দিকে যেতে থাকলাম। যেতে যেতে কোথাও এর কোন স্তর তো খুঁজে পেলাম না তারপরও আমরা যেতে থাকলাম কিছুদূর যাওয়ার পরে আমরা সেই ইকোপার্কের শেষ সীমানায় পৌঁছে গেলাম এরপরে আর যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ সেখানে অনেক বড় করে নোটিশ লাগানো ছিল। এবং নোটিশে এই বলা ছিল আপনারা এই পথ অতিক্রম করবেন না কারণ সেখানে অনেক হিংস্র প্রাণী বাস করে যা আপনাদের প্রাণনাশের সংখ্যা হতে পারে। তো আমরা আর সেই দিকে না গিয়ে আমরা আবার ব্যাক করে আরেকটি ঝর্ণার কাছে চলে গেলাম সেটা প্রথমটা চাইতেও একটু ছোট ছিল যেত আমরা একবার গোসল করেছি তাই আমরা এটাকে দেখে আমরা চলে আসলাম।

image.png
Source

সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেল যেহেতু অনেক পাহাড় অতিক্রম করেছি অনেক হেঁটেছি তাই সকলেরই ক্লান্তি এসে গেছে এবং সেইসাথে খিদা লেগে গেলো। এরপর আমরা দুপুরের লাঞ্চ শেষ করলাম সবাই মিলে। এবং সেখানে একটি গাছের ছায়ার নিচে সবাই প্রায় এক থেকে দুই ঘন্টা মতো বিশ্রাম নিয়ে ছিলাম। বিশ্রাম শেষে আমরা ইকোপার্কের আর কোথায় কি আছে সেই ইকোপার্কের একজন কর্মকর্তার সাথে দেখা করে জেনে নিলাম এবং সারা বিকেল পর্যন্ত সেখানে আমরা ছিলাম। ঠিক যখন সাড়ে পাঁচটা বেজে গেল তখনই ইকোপার্কে নিরাপত্তাবাহিনী বাঁশি বাজানো শুরু করল এবং সবাইকে হুঁশিয়ার করে বলল আপনারা সবাই বেরিয়ে যান আপনাদের সর্বোচ্চ সময় ছিল ছয়টা পর্যন্ত এভাবে আমরা ইকোপার্ক ভ্রমন শেষ করে ৬:০০ টার মধ্যে পার্ক থেকে বের হয়ে গেলাম। বের হয়ে আমরা একটি হোটেলে গিয়ে বিকেলের হালকা পাতলা একটু নাস্তা করে নিলাম তারপর সবাই মিলে বাসে করে যার যার বাসায় ফিরে গেলাম।

image.png
Source

পরের দিন যে ক্যামেরাটি আমরা নিয়ে গিয়েছিলাম ছবি তোলার জন্য সেই ক্যামেরার রিলটি আমরা স্টুডিওতে দিয়ে দিলাম ডেভলপ করার জন্য। কারণ সেগুলো ডেভেলপ করার পরে গিয়ে আমরা এর নেগেটিভ টা হাতে পাব আর তখনই আমরা আমাদের সেই ভালো লাগার মুহূর্ত গুলোর ছবি হাতে পেয়ে যাবে। কিন্তু এখানে দুঃখের বিষয় হলো এটাই যে আমরা যে ক্যামেরাটা নিয়ে গিয়েছিলাম এবং যে রিলটি ক্যামেরার মধ্যে সেট করেছিলাম সেটি স্টুডিওর লোকটি ভালোভাবে সেট করতে পারে নাই বলে কোন ছবি আমাদের উঠলো না।

এতে করে আমরা খুবই মর্মাহত হয়ে পড়ি এবং আমাদের কাছে খুবই খারাপ লাগলো। আর আমরা সেই লোকটার সাথে এ ব্যাপারটা নিয়ে সবাই একটু রাগারাগি করি। এবং লোকটি আমাদের বিষয়টা বুঝতে পারে এবং সে আমাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে আর বলে যে আপনারা যখন আবার কোথাও যাবেন আমি আপনাদের তখন একটি রিল দিয়ে দিব বিনামূল্যে আপনারা সেটা আবার করে নিবেন। আপনারাই বলেন যেটা চলে যায় সেটা কি আর ফেরত পাওয়া যায়। যাই হোক আমাদের যেহেতু এটা ভাগ্যে ছিল না তাই আমরা এটা নিয়ে আর বাড়াবাড়ি না করে স্টুডিওর লোকটাকে দেওয়া আরেকটি নতুন রিল নিয়ে আমরা বাসায় ফিরে আসলাম এবং পরবর্তীতে আরও একটি জায়গা যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিলাম। যদিও আমরা বিষয়টা নিয়ে খুবই হতাশ ছিলাম।

যাইহোক এই বিষয়টি আজকে এইখানে শেষ করলাম। তবে এই শেষ কিন্তু একেবারে শেষ নয়।

আমি আপনাদের সামনে পরবর্তী পর্বে আমার সাথে ঘটে যাওয়া কিছু ভৌতিক ঘটনা নিয়ে আসছি খুব শীগ্রই।

..…...…......…

শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel
আমি আলাউদ্দিন পাবেল।
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে।

Cc :
@shuvo35
@infovore

আমার পরিচয়
আমি আলাউদ্দিন পাবেল। আমার জন্ম ১৯৮৩ সালের পয়লা জানুয়ারি নোয়াখালী জেলা অন্তর্গত সোনাইমুড়ি থানার আওতাধীন বারগাঁও গ্রামে। বর্তমানে আমি গাজীপুরে আমার পরিবার নিয়ে বাস করছি। আমি পেশায় একজন ফার্মাসিস্ট তার পাশাপাশি পার্টটাইম হিসেবে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কাজ করছি। আমার সবচেয়ে প্রিয় খেলাটি হলো ক্রিকেট খেলা। আমি ক্রিকেট খেলা দেখতে ও খেলতে খুব ভালোবাসি। সেই সাথে আমি আর্ট করতেও খুব ভালোবাসি। আমি সুস্বাদু রেসিপি তৈরি করতে ভালোবাসি এবং মাঝে মাঝে তৈরি করে আমার পরিবারের সাথে শেয়ার করে তারা খুব আনন্দিত হয়। আমি নিয়মিত লিখি না তবে স্টিমিট এ যোগ দেওয়ার পর থেকে মোটামুটি নিজে থেকে কিছু লেখার চেষ্টা করি।

Sort:  
 3 years ago 

আপনি পুরোনো দিনের কথা গুলো সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন সাথে প্রতিটি ছবির সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। আপনার লেখার মান ও অনেক ভালো। ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে অনেক আগের হিসাবে।

 3 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আমার পোস্টটি পুরোপুরিভাবে পড়ে একটি গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা অবিরাম।

বাস্তব যারা লেখনীর মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে পারে। তাদের কাছে সেটিই কাব্য।

 3 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

সেই পুরোনো দিনের মুহুর্তগুলা অনেক অসাধারন ভাবে উপস্থাপন করেন। খুবই ভাল লাগে।

 3 years ago 

আপনার ভাললাগা আমাকে উৎসাহ যোগায়। ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64118.79
ETH 3390.14
USDT 1.00
SBD 2.51