কবিতা আবৃত্তি // কাজী নজরুল ইসলামের "মানুষ" কবিতাটির আবৃত্তি।
১০% পে-আউট 'লাজুক-খ্যাক' এর জন্য
স্টিমিটের সহযোদ্ধারা,
"আসসালামুয়ালাইকুম" আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমাদের প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের "মানুষ" কবিতাটি আবৃতি আকারে শোনানোর চেষ্টা করব।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমার বাংলা ব্লগের সকলের এতটা উৎসাহ ও অনুপ্রেরনার কারনে আমিও কবিতা আবৃত্তির মাঝে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আসলে কবিতা আবৃত্তি যারা সব সময় করে, কবিতা আবৃত্তির মাহাত্ম্যটা শুধু তারাই বুঝতে পারে। এখানে আমি আমার সাধ্যমত আবৃত্তি করে আপনাদেরকে বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি আমার আজকের এই কবিতা আবৃত্তিটি আপনাদের ভালো লাগবে।
এই কবিতাটি সম্পর্কে কিছু না বললেই নয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম মানুষ কবিতাটিতে একজন ক্ষুদার্থ ভিখারি সে একবার মন্দিরে একবার মসজিদে গিয়ে তার খাদ্যের জন্য হাত পেতে ছিল সহযোগিতার জন্য হাত পেতে ছিল কিন্তু মন্দিরের পুরোহিত বা মসজিদের মোল্লা কেউ তাকে সহযোগিতা করেনি বরং সবাই দূর দূর করে তাড়িয়ে দিয়েছিল। এই বিষয়টি কবিতার মাঝে কবি খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এছাড়াও ভিখারির মনের আবেগ, বেদনা ক্ষোভ গুলো খুব চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন এই কবিতার মাঝে।
আমি প্রায় সময় কবিতা আবৃত্তি শুনে থাকি ইউটিউব থেকে, কেন যেন হঠাৎ এই কবিতাটিও আমার এতটা ভালো লেগেছে বলে বোঝাতে পারবো না। তাই আমি আপনাদের মাঝে আমার ভালোলাগা থেকে কবিতা আবৃত্তি করে শোনানোর চেষ্টা করলাম। তাহলে চলুন আমার মুখে আবৃতি আকারে কবিতাটি শুনে নেবেন। আশা করি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে।
কবিতার লিরিক
🌹মানুষ🌹'
গাহি সাম্যের গান-
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান!
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্ম জাতি,
সব দেশে, সব কালে, ঘরে ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।-
পূজারী, দুয়ার খোলো,
ক্ষুধার ঠাকুর দাঁড়ায়ে দুয়ারে পূজার সময় হলো!’
স্বপন দেখিয়া আকুল পূজারী খুলিল ভজনালয়,
দেবতার বরে আজ রাজা-টাজা হ’য়ে যাবে নিশ্চয়!-
জীর্ণ-বস্ত্র শীর্ণ-গাত্র, ক্ষুধায় কন্ঠ ক্ষীণ
ডাকিল পান্থ, ‘দ্বার খোলো বাবা, খাইনিকো সাত দিন!’
সহসা বন্ধ হলো মন্দির, ভুখারী ফিরিয়া চলে,
তিমির রাত্রি, পথ জুড়ে তার ক্ষুধার মানিক জ্বলে!
ভুখারি ফুকারি কয়,
ঐ মন্দির পূজারীর, হায় দেবতা, তোমার নয়!’
মসজিদে কাল শিরনি আছিল, অঢেল গোস্ত-রুটি
বাঁচিয়া গিয়াছে, মোল্লা সাহেব হেসে তাই কুটিকুটি!
এমন সময় এলো মুসাফির গায়ে আজারির চিন,
বলে ‘বাবা, আমি ভুকা-ফাঁকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন!’
তেরিয়া হইয়া হাঁকিল মোল্লা – ‘ভ্যালা হলো দেখি লেঠা,
ভুখা আছো মরো গো-ভাগাড়ে গিয়ে! নামাজ পড়িস বেটা?’
ভুখারী কহিল, ‘না বাবা!’ মোল্লা হাঁকিল – ‘তা হলে শালা,
সোজা পথ দেখ!’ গোস্ত-রুটি নিয়া মসজিদে দিল তালা!
ভুখারি ফিরিয়া চলে,
চলিতে চলিতে বলে-
‘আশিটা বছর কেটে গেল, আমি ডাকিনি তোমায় কভু,
আমার ক্ষুধার অন্ন তা’বলে বন্ধ করনি প্রভু!
তব মসজিদ-মন্দিরে প্রভু নাই মানুষের দাবি,
মোল্লা-পুরুত লাগায়েছে তার সকল দুয়ারে চাবি!’
কোথা চেঙ্গিস, গজনি-মামুদ, কোথায় কালাপাহাড়?
ভেঙে ফেল ঐ ভজনালয়ের যত তালা-দেওয়া-দ্বার!
খোদার ঘরে কে কপাট লাগায়, কে দেয় সেখানে তালা?
সব দ্বার এর খোলা রবে, চালা হাতুড়ি-শাবল চালা!
হায় রে ভজনালয়,
তোমার মিনারে চড়িয়া ভন্ড গাহে স্বার্থের জয়!
মানুষেরে ঘৃণা করি
ও কারা কোরান, বেদ, বাইবেল চুম্বিছে মরি মরি
ও মুখ হইতে কেতাব-গ্রন্থ নাও জোর করে কেড়ে,
যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে,
পূজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল! -মূর্খরা সব শোনো,
মানুষ এনেছে গ্রন্থ; -গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো।
আদম দাউদ ঈসা মুসা ইব্রাহিম মোহাম্মাদ
কৃষ্ণ বুদ্ধ নানক কবীর, -বিশ্বের সম্পদ,
আমাদেরি এঁরা পিতা-পিতামহ, এই আমাদের মাঝে
তাঁদেরি রক্ত কম-বেশি করে প্রতি ধমনীতে রাজে!
আমরা তাঁদেরি সন্তান, জ্ঞাতি, তাঁদেরি মতন দেহ,
কে জানে কখন মোরাও অমনি হয়ে যেতে পারি কেহ।
হেসো না বন্ধু! আমার আমি সে কত অতল অসীম,
আমিই কি জানি কে জানে কে আছে আমাতে মহামহিম।
হয়ত আমাতে আসিছে কল্কি, তোমাতে মেহেদী ঈসা,
কে জানে কাহার অন্ত ও আদি, কে পায় কাহার দিশা?
কাহারে করিছ ঘৃণা তুমি ভাই, কাহারে মারিছ লাথি?
হয়ত উহারই বুকে ভগবান্ জাগিছেন দিবারাতি!
অথবা হয়ত কিছুই নহে সে, মহান উচ্চ নহে,
আছে ক্লেদাক্ত ক্ষত-বিক্ষত পড়িয়া দুঃখ-দহে,
তবু জগতের যত পবিত্র গ্রন্থ ভজনালয়
ঐ একখানি ক্ষুদ্র দেহের সম পবিত্র নয়!
হয়তো ইহারি ঔরসে ভাই ইহারই কুটির-বাসে
জন্মিছে কেহ- জোড়া নাই যার জগতের ইতিহাসে!
যে বাণী আজিও শোনেনি জগৎ, যে মহাশক্তিধরে
আজিও বিশ্ব দেখনি,-হয়ত আসিছে সে এরই ঘরে!
ও কে? চন্ডাল? চম্কাও কেন? নহে ও ঘৃণ্য জীব!
ওই হতে পারে হরিশচন্দ্র, ওই শ্মশানের শিব।
আজ চন্ডাল, কাল হ’তে পারে মহাযোগী-সম্রাট,
তুমি কাল তারে অর্ঘ্য দানিবে, করিবে নান্দীপাঠ।
রাখাল বলিয়া কারে করো হেলা, ও-হেলা কাহারে বাজে!
হয়ত গোপনে ব্রজের গোপাল এসেছে রাখাল সাজে!
চাষা বলে কর ঘৃণা!
দেখো চাষা-রূপে লুকায়ে জনক বলরাম এলো কি না!
যত নবী ছিল মেষের রাখাল, তারাও ধরিল হাল,
তারাই আনিল অমর বাণী-যা আছে রবে চিরকাল।
দ্বারে গালি খেয়ে ফিরে যায় নিতি ভিখারী ও ভিখারিনী,
তারি মাঝে কবে এলো ভোলা-নাথ গিরিজায়া, তা কি চিনি!
তোমার ভোগের হ্রাস হয় পাছে ভিক্ষা-মুষ্টি দিলে,
দ্বারী দিয়ে তাই মার দিয়ে তুমি দেবতারে খেদাইলে।
সে মার রহিল জমা-
কে জানে তোমায় লাঞ্ছিতা দেবী করিয়াছে কিনা ক্ষমা!
বন্ধু, তোমার বুক-ভরা লোভ, দু’চোখে স্বার্থ-ঠুলি,
নতুবা দেখিতে, তোমারে সেবিতে দেবতা হ’য়েছে কুলি।
মানুষের বুকে যেটুকু দেবতা, বেদনা-মথিত-সুধা,
তাই লুটে তুমি খাবে পশু? তুমি তা দিয়ে মিটাবে ক্ষুধা?
তোমার ক্ষুধার আহার তোমার মন্দোদরীই জানে
তোমার মৃত্যু-বাণ আছে তব প্রাসাদের কোনোখানে!
তোমারি কামনা-রানি
যুগে যুগে, পশু, ফেলেছে তোমায় মৃত্যু-বিবরে টানি।
শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel
আমি আলাউদ্দিন পাবেল।
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে।
তারিখঃ ২৬-০৬-২০২২ ইং
কাজী নজরুল ইসলামের মানুষ কবিতাটি সুন্দর করে আবৃতি করেছেন। বেশ ভাল আবৃতি করেন আপনি। ভাল ছিল
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
খুবই দারুণ লেগেসে কাজী নজরুল ইসলামের মানুষ কবিতা টি শুনতে। আর বিশেষ করে আপনার কন্ঠ শুনে অনেক ভালো লেগেছে। মাঝে মাঝে আবৃত্তি করা কবিতা পোস্টগুলো শেয়ার করেন । ভীষণ ভালো লেগেছে আমার কাছে।
আপনাদের কাছে ভাল লাগাই আমার কবিতা আবৃত্তি করার সার্থকতা। আসলে ভাই আপনাদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় চেষ্টা করছি কিছুটা বিনোদন দেওয়ার। ধন্যবাদ গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
কাজী নজরুল ইসলামের মানুষ কবিতা টি আপনি অনেক সুন্দর করে আবৃত্তি করেছেন। মাঝেমধ্যে আপনি কবিতা আবৃত্তি আমাদের মাঝে শেয়ার করেন। শুনতে বেশ ভালই লাগে। আপনার কবিতা আবৃত্তির কন্ঠ অসাধারণ। আশা করি আপনি সামনের দিকে আরো সুন্দর সুন্দর কবিতা আবৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার কবিতা আবৃত্তি মাঝে মাঝে শোনেন এবং সেটা আপনার ভালো লাগে জেনে খুব খুশি হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ খুবই গঠনমূলক মন্তব্য করে এতটা উৎসাহ প্রদান করার জন্য।
কাজী নজরুল ইসলামের 'মানুষ' কবিতাটি আবৃত্তি অনেক সুন্দর হয়েছে। কবিতাটির সত্যিই অনেক অর্থবহ আর আপনি খুব সুন্দর করে সেটিকে আবৃত্তি করেছেন। শুভকামনা আপনার জন্য।
আপনি একদম ঠিক বলেছেন কবিতাটি অনেক অনেক অর্থবহ যা একটা মানুষের পুরো বাস্তব চিত্র এই কবিতায় ফুটে তুলেছেন কবি। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই শুভকামনাও আপনার জন্য অবিরাম।
আপনি অনেক চমৎকার ভাবে কাজী নজরুল ইসলামের একটি কবিতা আমাদের মাঝে আবৃত্তি করে শুনিয়েছেন। এ কবিতাটি খুবই জনপ্রিয় একটি কবিতা। কবিতার মর্মার্থ আসলে তুলে ধরা কঠিন। আর এত চমৎকার এই কবিতাটি আপনার কন্ঠ অনেক ভালো মানিয়েছে।
জেনে খুব খুশি হলাম আমার কন্ঠে কবিতাটি মানিয়েছে ভালো। সত্যি বলতে আপনাদের এতটা উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা চেষ্টা করি আপনাদের মাঝে কিছু বিনোদন দেওয়ার। অসংখ্য ধন্যবাদ শুভকামনা অবিরাম আপনার জন্য।
গাহি সাম্যের গান—- নজরুল ইসলামের অসাধারণ একটি কবিতা। কবিতাটি আমি যখন আবৃত্তি করি নিজের মন মানুষিকতা এক অন্য ধরনের অনুভূতি কাজ করে। কবিতাটি আপনি অনেক সুন্দর আবৃত্তি করেছেন। আসলে কবিতার শব্দগুলো মন ভরিয়ে দিল। ধন্যবাদ ভাই আপনার পরবর্তী কবিতা আবৃত্তি শোনার অপেক্ষায় রইলাম।
ভাই আপনার একটি লেখা কবিতা আমি আবৃত্তি করেছিলাম কবিতাটির নাম "ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে" কিন্তু কবিতাটি আবৃত্তি সম্পর্কে আপনার কোন মন্তব্য এখনও পর্যন্ত পাইনি, সম্ভব হলে আমার আবৃত্তি শুনে কেমন হয়েছে জানাতে ভুলবেন না। আর আপনি ঠিকই বলেছেন কবিতাটি আবৃত্তি করার সময় আসলে মন মানসিকতা এবং অন্য ধরনের অনুভূতি কাজ করে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই কবিতাটি সম্পর্কে চমৎকার ভাবে বুঝিয়ে বলার জন্য।
হ্যাঁ ভাইয়া আপনি আমার কবিতাটি আবৃত্তি করেছেন তা আমি শুনেছি খুব ভাল লেগেছে আমার কাছে। এবং আমি মন্তব্যও করেছি। কিন্তু আজকে আপনার কমেন্ট পড়ে বুঝতে পারলাম যে মন্তব্যটি আপলোড হয়নি্। আমি পুনরায় আপনার আবৃত্তির পোস্টে যাই এবং মন্তব্যটি আপলোড করি। সরি ভাই অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য।
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের উৎসাহ আপনি কবিতা আবৃত্তি করেছেন। আপনার কন্ঠে দারুণ লাগে যা বলে বোঝানো অসম্ভব। মানুষ" সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই কবিতাটি আবৃত্তি আপনার অনুভূতি শুনে মুগ্ধ হয়ে গেছি। অসাধারণ ছিলো, আবারও আমাদের মাঝে এত সুন্দর "মানুষ"কবিতাটি আবৃত্তি করে শুনিয়েছেন শুনে মুগ্ধ হয়ে গেছি। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইল ভালোবাসো অবিরাম।
আপনার প্রতিও ভালোবাসা অবিরাম। সেই সাথে এতটা গঠনমূলক মন্তব্য করে আমার কবিতা আবৃত্তিটি নিয়ে এতটা উৎসাহ প্রদান করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাই পুরোই মুগ্ধ হলাম আপনার কবিতা আবৃত্তি শুনে। আপনার কবিতা আবৃত্তি আমার খুব ভালো লাগে। আর বিশেষ করে আপনি আমার প্রিয় একটি কবিতার আবৃত্তি করেছেন এজন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনেক চমৎকার একটি কবিতা আবৃত্তি করি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার আবৃতি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে এভাবেই প্রতিনিয়ত সুন্দর সুন্দর কবিতা আবৃতি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করে যাবেন আশা করি।
কাজী নজরুল ইসলাম এর মানুষ কবিতাটি খুবই চমৎকার ভাবে আবৃতি করে আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন ভাইয়া। এর আগেও আমি অনেকগুলো কবিতা আবৃতি আপনার কাছ থেকে শুনেছি খুবই ভালো কবিতা আবৃতি করেন আপনি। আসলে আপনার কন্ঠে কবিতা আবৃতি গুলো অনেক ভাল হয়। আজকের আবৃত্তি করা মানুষ কবিতাটি ও আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।