স্পেশাল রেসিপি // কাঁচা কচুর ভর্তা রেসিপি। (১০% পে-আউট লাজুক খ্যাকেন জন্য)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

স্টিমিটের সহযোদ্ধারা,

"আসসালামু আলাইকুম", আশা করি আপনারা সবাই ভালোই আছেন। আমি ও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় বেশ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে "কাঁচা কচুর ভর্তা রেসিপি" নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের কাছে এটি খুবই ভালো লাগবে।

IMG-20220527-WA0016.jpg

আজকে আমি আপনাদের মাঝে নিয়ে এসেছি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম ও ইউনিক একটি রেসিপি। হয়তো আপনারা দেখিয়ে বুঝতেই পারছেন আমি আজকে আপনাদের মাঝে কাঁচা কচুর ভর্তা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি। ইতিমধ্যে অনেকে হয়তো ভাবছেন কাঁচা কচু আবার কিভাবে ভর্তা করে খাওয়া যায়? এটা কি আদৌ সম্ভব? কিভাবে সম্ভব? অনেকর মাথায় এই ধরনের চিন্তা-ভাবনা হয়তো কাজ করছে। আমি বলব এই কাঁচা কচুর ভর্তা রেসিপি এটাও সম্ভব, আর সেটাই আমি আপনাদের মাঝে আজকের উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনারা দেখে নিবেন কিভাবে আমি এই কাঁচা কচু ভর্তা রেসিপি তৈরি করেছি।

তবে এখানে অবশ্যই বলে রাখি আমি যেভাবে রেসিপি তৈরি করেছি আপনারাও সেভাবে তৈরি করার চেষ্টা করবেন। এভাবে তৈরি করলে আপনাদের কখনোই গলা চুলকানোর কোন সম্ভাবনাই থাকবে না। আর অবশ্যই যখন কচুর কাঠটি আপনারা ভর্তার জন্য নিবেন তখন অবশ্যই আপনাকে কচুর কাঠ দেখে নিতে হবে। আমি এখানে যে কচুর কাঠ ব্যবহার করেছি সেই কচুর নাম হচ্ছে মান কচু। অবশ্যই আপনারা এই কচুটা ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। যদিও যেকোনো কচুই কাঁচা খাওয়া খুবই ভয়ঙ্কর ব্যাপার কিন্তু এই ক্ষেত্রে মান কচুটা অন্যান্য কচুর চাইতে কিছুটা কম চুলকায়, তাই এই কচুটা ব্যবহার করতে পারেন। আসলে কচুর পুষ্টিগুণ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই এটা আমরা সবাই জানি কচুতে কি পরিমাণ পুষ্টি গুণ রয়েছে।

যা হোক আর দেরি না করে তাহলে চলুন বন্ধুরা কিভাবে আমি এই কাঁচা কচুর ভর্তা রেসিপি তৈরি করেছি তা আপনাদেরকে ধাপে ধাপে দেখিয়ে আসি। আশা করি আমার আজকের এই কাঁচা কচুর ভর্তা রেসিপিটা আপনাদের কাছে খুবই ভালো লাগবে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ ও পরিমাণঃ

  • মান কচুর কাঠ: পরিমান মত
  • নারিকেল: এক মালা
  • সরিষা: ১/৪ কাপ
  • শুকনা মরিচ: চার থেকে পাঁচটি
  • লবণ: পরিমানমত

IMG_20220527_102911.jpg

প্রথম ধাপঃ

  • প্রথমে আমি কচু গাছের নিচের অংশ যেটাকে আমরা কচুর কাঠ বলে থাকি সেটাকে পরিমাণ মত কেটে চামড়া ছুলে নিলাম। এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধৌত করে নিলাম।

IMG-20220527-WA0001.jpg

দ্বিতীয় ধাপঃ

  • এবার আমি একটি ম্যানুয়াল সবজি কাটার মেশিন নিয়ে কচুর কাঠগুলোকে একদম কুচি কুচি করে কেটে নিলাম।

IMG-20220527-WA0000.jpg

তৃতীয় ধাপঃ

এরপর আমি এর মধ্যে বেশকিছু লবণ ছিটিয়ে দিয়ে ভালোভাবে লবনগুলো মিশিয়ে নিলাম। তারপর একটি ঢাকনা দিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট ঢেকে রাখলাম এতে করে কচুর মধ্যে থাকা রস গুলো বের হয়ে আসবে।

IMG-20220527-WA0006.jpg

IMG-20220527-WA0011.jpg

চতুর্থ ধাপঃ

  • এই দশ মিনিটের মধ্যে আমি চুলায় একটি পাইপেন বসিয়ে শুকনা মরিচগুলো ভেঁজে নিলাম।

IMG-20220527-WA0007.jpg

পঞ্চম ধাপঃ

  • এবার আমি একটা পাটা ও পুতা নিয়ে এর মধ্যে প্রথমে নারিকেল গুলো দিয়ে দিলাম তারপর এক এক করে সরিষা ও শুকনা মরিচ দিয়ে পাটায় বেঁটে নিলাম।

IMG_20220527_101430.jpg

IMG_20220527_101455.jpg

IMG_20220527_101520.jpg

ষষ্ঠ ধাপঃ

  • এবার আমি ঢেকে রাখা কচুগুলো ঢাকনা তুলে হাত দিয়ে চিবিয়ে এর রসগুলো বের করে নিলাম। চিবিয়ে নেওয়ার পর কচু থেকে যে রস গুলো বের হয়েছে সেগুলো আমি ফেলে দিয়েছি। তারপর চিবিয়ে নেওয়া কচুগুলো আমি পাটায় বেঁটে নিলাম এরপর সবগুলো এক সাথ করে মিশিয়ে আরেকবার পাটায় বেঁটে নিলাম।

IMG-20220527-WA0010.jpg

IMG-20220527-WA0005.jpg

IMG-20220527-WA0004.jpg

IMG-20220527-WA0013.jpg

IMG_20220527_104721.jpg

চূড়ান্ত ধাপঃ

  • এবার আমি বেটে নেওয়া সবগুলো মিশ্রণ একসাথ করে পাটা থেকে তুলে নিয়ে একটি বাটিতে রাখলাম। আর এতে করেই তৈরি হয়ে গেল আমার আজকের কাঁচা কচুর ভর্তা রেসিপি।

IMG-20220527-WA0012.jpg

  • বন্ধুরা এভাবেই তৈরি হয়ে গেল আমার আজকের সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম ও ইউনিক কাঁচা কচুর ভর্তা রেসিপিটি। রেসিপিটি পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। আশা করি আপনাদের আমার আজকে রেসিপিটি দেখে ভালো লাগবে। সত্যি বলছি আমি প্রথম মনে করেছিলাম খেতে তেমন একটা ভাল লাগবে না কিন্তু আসলেই অনেক সুস্বাদু হয়েছে খেতে। সেই সাথে গলায় চুলকানি এবং আমার ছেলেও খেয়ে দেখেছে যে তার গলা চুলকায় কিনা। আপনারাও রেসিপিটি প্রস্তুত করে খেয়ে দেখতে পারেন।
আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সেই সাথে এই পোষ্টে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং এই পোস্টটি কেমন লেগেছে আপনারা আপনাদের মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন।

শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel

বিভাগরেসিপি
ডিভাইসরেডমি নোট ১০এস
লোকেশনগাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩
রেসিপি মেড বাই@alauddinpabel
তারিখ২৭-০৫-২০২২ ইং
Sort:  
 2 years ago 

কচুর ভর্তা আমি কখনো খাইনি। দেখে বোঝা যাচ্ছে আপনি নারকেল দিয়ে খুব সুন্দর একটি ভর্তা তৈরি করেছেন। নারকেল , সরিষা এবং শুকনো মরিচের সমন্বয় অসাধারণ একটি কচুর ভর্তা রেসিপি তৈরি করেছেন ভাইয়া। আমার তো দেখেই জিভে জল চলে এসেছে। আপনার কাছ থেকে নতুন একটা রেসিপি শিখে নিয়েছে। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ কচুর ভর্তা রেসিপি টা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

যেহেতু কখনো খাননি অবশ্য এই রেসিপিটি তৈরি করে খেয়ে দেখবেন সম্পূর্ণ নির্ভয়ে গলা চুলকানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। অসংখ্য ধন্যবাদ অসাধারণ ও গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 years ago 

আপনি খুবই চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে কাঁচা কচু ভর্তা রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনার এই কাঁচা কচু ভর্তা রেসিপি দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক বেশি সুস্বাদু। এই কাঁচা কচুর যদি চিংড়ি মাছ দিয়ে ভর্তা করে হয় তাহলে খেতে অনেক বেশি সুস্বাদু লাগে বেশ অনেকদিন আগে আমি খেয়েছিলাম। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আসলে ভাই চিংড়ি মাছ দিয়ে করলে এক রকম স্বাদ, আর আমি যেভাবে করেছি এটা অন্যরকম একটি স্বাদ, দুইটা সম্পূর্ন আলাদা জিনিস স্বাদের ক্ষেত্রে। আর হ্যাঁ অবশ্যই অনেক সুস্বাদু হয়েছে খেতে যদিও আমিও প্রথমে একটু ভয় পেয়েছিলাম গলা চুলকানো নিয়ে কিন্তু সেরকম কোনো কিছু হয়নি। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর করে কাঁচা কচুর ভর্তা রেসিপি শেয়ার করেছেন, সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে আপনি বলে এবং সুন্দর করে দেখিয়েন কিভাবে গলা না ধরে, কাঁচা কচুর ভর্তা তৈরি করা যায়, আমি অবশ্যই আপনার পদ্ধতি অবলম্বন করে এই মজাদার কাঁচা কচুর ভর্তা তৈরি করবো, আর এতো সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ, সেই সাথে অনেক অনেক শুভকামনা রইলো ভাইয়া।

 2 years ago 

অবশ্যই কাঁচা কচুর ভর্তাটি বাসায় তৈরি করে খেয়ে দেখবেন আমার বিশ্বাস খেতে অনেক ভালো লাগবে। সম্পূর্ণ নির্ভয়ে খেতে পারেন আমি যেভাবে ধাপে ধাপে ভর্তা করেছি সেভাবে করলে গলা চুলকানোর কোন সম্ভাবনা নেই।

 2 years ago 

প্রথমে দেখে ভেবেছিলাম কোন ফরেন খাবার। পরে দেখতে পাই কাঁচা কচুর স্পেশাল ভর্তা রেসিপি। আপনি এত সুন্দর ভাবে পরিবেশন করেছেন দেখে সত্যিই স্পেশাল মনে হচ্ছে এবং খেতে তো অবশ্যই সুস্বাদু হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

সত্যি ভাই খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। আমিও প্রথম ভেবেছিলাম তেমন একটা মজা হবে না মনে হয় কিন্তু না অনেক ভালো লেগেছে খেতে, অবশ্যই বাসায় তৈরি করে খেয়ে দেখবেন। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই কেমন তার মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 years ago 

কচু তো কাঁচাই থাকে পাঁকা কচু আছে নাকি তাতো জানতাম না। কচু আমি খাই না তাই কচু কাঁচা না পাকা খায় তাই জানিনা। তবে আপনি কচুর দারুন একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন এ ধরনের রেসিপি আগে কখনো দেখিনি ।নারিকেল দিয়ে এভাবে কচু খেলে গলা চুলকাবে না আমার তো দেখে মনে হচ্ছে গলা চুলকায় ।তবে দেখতে অনেক ভালো লাগছে ভর্তাটি।

 2 years ago 

আসলে আপু কচু কাঁচা তো কাঁচাই আর পাকা বলতে রান্না করে খাওয়া তো সেখানে আমি কচু রান্না বা সেদ্ধ না করে করেছি এজন্য কাঁচা বলা হয়েছে। জ্বি আপু আমি যেভাবে ধাপে ধাপে দেখিয়েছি সেভাবে ভর্তাটি তৈরি করে খেলে গলা চুলকানোর কোন সম্ভাবনা নেই, নির্ভয়ে আপনি ভর্তাটি তৈরি করে খেয়ে দেখতে পারেন।

 2 years ago 

টাইটেল দেখেই তো গলা ধরচ্ছে,কাচা কচু🤪।বেশ ঝামেলার কাজ মনে হচ্ছে। ঝামেলা যত বেশি,মজা ও তত বেশি মজা।প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর করে দেখিয়েছেন। ধন্যবাদ

 2 years ago 

আপু নির্ভয় ভর্তা করে খেয়ে দেখতে পারেন গলা চুলকানোর কোন সম্ভাবনা নেই। আর ঝামেলা বলছেন সব কাজেই ঝামেলা রয়েছে তবে এখানে ঝামেলা শুধু পাটায় পিষে নিতে হবে এতটুকই। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 years ago 

অনেক সুন্দর ভাবে কাঁচা কচুর ভর্তা টি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন যদিও এভাবে কখনো প্রস্তুত করে খাওয়া হয়নি তবে আপনার প্রস্তুত প্রণালি দেখেই বুঝতে পারলাম খেতে খুব মজা হয়েছিল

 2 years ago 

ভাই আসলে আমি নিজেও এই প্রথম করেছি বা খেয়েছি। আমিও প্রথম একটু ভয়ে ছিলাম খেতে জানি কেমন হয় কিন্তু না খেতে অনেক মজা হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে গঠনমূলক মন্তব্য করে উৎসাহ প্রদানের জন্য।

 2 years ago 

আসলে ভাই আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে যে একটা অসাধারণ ভাবে তৈরি করেছেন আপনি কচু ভর্তা রেসিপি। যদিও এভাবে কাঁচা কচুর ভর্তা আমি কখনো খাইনি। তবে আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে যে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। এ রকম ভর্তা গুলো গরম ভাত দিয়ে খেতে অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ ভাই এরকম সুন্দর একটি কচু ভর্তা রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন ভাই গরম ভাতের সাথে খেলে এর মজাই অন্যরকম সাথে যদি এক টুকরো লেবু থাকে। এই কাঁচা কচুর ভর্তাটি নির্ভয়ে খেয়ে দেখতে পারেন গলা ধরার কোন সম্ভাবনাই নেই। অসংখ্য ধন্যবাদ গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 years ago 

নুতন একটি রেসিপি সাথে পরিচিত হলাম, আসলে এরকম রেসিপি কখনোই খাওয়া হয়নি। সব সময় মাছের সাথে ভাজি করে খাওয়া হয়েছে। কখনোই ভর্তা খাওয়া হয়নি আপনার রেসেপি দেখে খুব ভালো লাগলো একদিন ট্রাই করে দেখবো।

 2 years ago 

অবশ্যই ভাই একদিন ট্রাই করে দেখবেন যদিও আমি নিজেও প্রথমবার খেয়েছি বা করেছি। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 years ago 

আপনি কাঁচা কচুর ভর্তা রেসিপিটা অসাধারণ ভাবে তৈরি করেছেন।দেখে আমার লোভ লেগে গেল। আপনি চমৎকার ভাবে এটা উপস্থাপন করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ধরনের রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আমার রেসিপিটি আপনার ভালো লেগেছে এটা আমার সার্থকতা। অবশ্যই বাসায় তৈরি করে খেয়ে দেখবেন আশা করি ভালো লাগবে খেতে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74