মুখোশের আড়ালে | |10% Beneficiary To @shy-fox | |
আসসালামু আলাইকুম।
আমি আলামিন ইসলাম আছি আপনাদের সাথে। আমার ইউজার নেমঃ@alamin-islam। আমি বাঙালি, বাংলাদেশের একজন নাগরিক।আশা করি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির সকল সদস্যবৃন্দ আল্লাহর অশেষ রহমতে ভাল আছেন। আমি ও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
আমাদের সমাজে আমরা মুখোশ শব্দটি অনেকের মুখে শুনেছি এবং নিজেরাও হয়তো মুখোশ শব্দটি ব্যবহার করেছি। আজ আমি মুখোশ শব্দটিকে একটু অন্যভাবে বিশ্লেষণ করবো। মুখোশ কথাটির অর্থ হল আলাদা একটি খোলস। তবে সেটা শুধুমাত্র মুখের আলাদা খোলস কে বোঝায় না, এর রয়েছে অনেক গভীর ভাবার্থ। এই মুখোশ শব্দটিকে গভীরভাবে চিন্তা করলে এর নানা রকম অর্থ বের হয়। তবে আমি আজকে যেই মুখোশ নিয়ে কথা বলব সেটা হলো মানুষের চারিত্রিক মুখোশ। এখন আপনারা হয়তো বলতে পারেন চারিত্রিক মুখোশটা কি? আমার কাছে চারিত্রিক মুখোশ হলো "মানুষের চরিত্রের এমন একটি খোলস যা মানুষের ভেতরের মন এবং বাইরের মানসিকতাকে প্রভাবিত করে সম্পূর্ণ একে অপরের বিপরীত যুক্তিতে চলতে বাধ্য করে"।
অর্থাৎ মানুষের ভেতরের মানসিকতা এবং লোকচক্ষুর সামনে মানুষকে দেখানোর জন্য মানসিকতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। যেমন ধরুন, আপনি লোকচক্ষুর সামনে সবাইকে এটা বলে থাকেন যে আপনি সমাজের গণ্যমান্য একটি ব্যক্তি এবং আপনার কাছে প্রচুর টাকা আছে । আর এই জিনিসটা বুঝানোর জন্য আপনি মানুষের সামনে নিজেকে নানান ভাবে বড় করে তুলে ধরার চেষ্টা করেন কিন্তু সেই আপনি মনে মনে এটা জানেন যে আপনার পকেট এ ১০০ টাকার এক টাকাও বেশি নেই। আপনি সবাইকে বলছেন আমার বাবার অনেক অর্থ রয়েছে কিন্তু আপনি মনে মনে নিজে জানেন আমার বাবার নিজের জমি টুকুও নেই।
আবার দেখুন আমাদের সমাজে সেবার নামে অনেক মানুষই আসে এবং যায়। সমাজ সেবার নামে তারা সমাজের উন্নতি করবে বলে নানান ধরনের কথা বলতে থাকে। সাধারণ মানুষকে নানান ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে কিন্তু কাজের কাজ খুব কম মানুষই করে।
ঠিক এই ধরনের মুখোশধারী মানুষ আমাদের সমাজে অনেক রয়েছে। আসলে প্রতিটা মানুষই কখনো না কখনো কোনো মুখোশ ঠিকই ধারণ করেছে নিজের স্বার্থে অথবা অন্যের স্বার্থের জন্য । আমি নিজে অন্যের সামনে যেমন, ঠিক তার উল্টোটা আমি এই জিনিসটা বোঝোনোও হলো একটা মুখোশ। এই মুখোশধারী মানুষ গুলোর জন্যই আমরা সমাজে ভালো-মন্দের পার্থক্য করতে বেশ অনেকটাই হিমশিম খেয়ে যায়। আসলে মুখোশধারী মানুষ গুলোর বাইরের মানসিকতা এবং ভেতরের মন ভিন্ন হওয়ায় আমরা সমাজের ঠিক ভুলের পার্থক্য করতে পারিনা ঠিক ভাবে।
এই মুখোশটি কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন: একটি হলো ভালোমানুষির মুখোশ এবং অপরটি হল মন্দ মানসিকতার মুখোশ। তবে এই দুইটার মধ্যে সবথেকে ভয়ঙ্কর হলো ভালো মানুষের মুখোশ। ভালো মানুষের মুখোশ এইজন্যই ভয়ঙ্কর কারণ একটি খারাপ মানুষ ভালো মানুষের মুখোশ ধারণ করে সমাজে নানা রকম কুকর্ম চালিয়ে যায় কিন্তু আমরা তার ভালো মানুষের মুখোশ কে বিশ্বাস করে তার ভিতরের অন্ধকারকে দেখতে পাই না।যেমন ধরুন, একজন ব্যক্তি রাস্তায় অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। তার কাছে রয়েছে প্রচুর অর্থ এবং সোনাদানা। এখন কিছু লোক তার কাছে এগিয়ে যাবে সেই অসুস্থ ব্যক্তিকে সাহায্য করার জন্য আবার কিছু লোক তার কাছে এগিয়ে যাবে তার থেকে তার অর্থ সম্পদ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য। আবার কিছু লোক দূর থেকে দাঁড়িয়ে আসলে কি ঘটছে এটা জানার জন্য দাঁড়িয়ে থাকে।
এই পরিস্থিতিতে আমরা তিন ধরনের মানুষ লক্ষ্য করতে পারি। এখানে যারা সাহায্য করার মন মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসে তাদেরকে আমরা প্রকৃত অর্থে ভালো মানুষ বলতে পারি তবে এখানে যারা সেই অসুস্থ লোকটির অর্থ সম্পদ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য আসবে তারাও কিন্তু সে অসুস্থ লোকটির কাছে ভালোমানুষির মুখোশ ধারণ করেই আসবে এবং সেই অসুস্থ লোকটির বিশ্বাস অর্জন করার চেষ্টা করবে। তাই বর্তমানে ভালো এবং খারাপের পার্থক্য করা খুবই কঠিন বিশেষ করে মানুষের ক্ষেত্রে। এরপর আসি মন্দ মানসিকতার মুখোশে। মন্দ মানসিকতার মুখোশে মাঝে মাঝে ভালো মানুষও তার ভালো মানসিকতাকে আড়াল করে রাখে তবে সেটা তার অবস্থা এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী। তবে মন্দ মানসিকতার মানুষকে আমরা খুব সহজেই চিনতে পারি। কারণ সে তার কর্মকাণ্ড দ্বারা তার বাহিরের রূপ টা কে খুব সহজে আমাদের সামনে প্রকাশ করে ফেলে। আসলে আমরা সবসময়ই মানুষের বাইরের দিকটা দেখে প্রভাবিত হই এবং সে ভালো কি মন্দ তা তার বাইরের রূপটা দেখে আমরা বিচার করে ফেলি। তাই আমাদের সকলের উচিত নতুন কোন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার আগে সেই মানুষটাকে ভালো করে যাচাই করে নেওয়া। কারণ মুখোশের আড়ালে মানুষগুলো তার মনুষ্যত্ব বেঁচে দিচ্ছে।
আজ আমি এই বিষয়টা নিয়ে সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেছি। যদি কোথাও কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আমি@Al-Amin ইসলাম , আমি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, আমার ইচ্ছা আমি দেশ ও দশের জন্য ভবিষ্যতে কিছু করতে চাই, আমার গর্ব হয় নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিতে। আমি গর্বিত বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ, বাংলাদেশের মানুষ মাছে ভাতে বাঙালি, প্রকৃতির রূপ, রস ,গন্ধ সবকিছুই আমার অহংকার।
প্রয়োজনে পাশে আছি আমার সাথে যোগাযোগ করুন:-
ফেসবুক || টুইটার || ইউটিউব || ডিস্কোড
আপনি সুন্দর একটি বিষয় আলোকপাত করেছে। মুখোশ শব্দটির সাথে আমরা বেশ পরিচিত কারণ আমাদের চলার পথে মুখোশধারী লোকের সংখ্যা নেহাত কম নয় ।আপনার সাথে এমন ভাবে মিশে এমন ভাবে চলাফেরা করবে আপনি বুঝতেই পারবেন না তাদের মনের ভিতরে কি চলছে ।তারা সব সময় আপনার সাথে স্বার্থের জন্য মিশবে এমনভাবে যেন আপনার রক্তের কেউ কিন্তু পরবর্তীতে যখন স্বার্থ উদ্ধার হবে তখন তাকে আপনি চিনতে পারবেন। তখন বুঝতে পারবেন যে সে ছিল মুখোশধারী শয়তান। আমাদের সমাজে এমন লোকের অভাব নেই আপনি যে উদাহরণগুলো আমাদের দিয়েছেন তা একদম সঠিক তারা নিজেকে এমন ভাবে উপস্থাপন করে যে তাদের এতকিছু আছে তারা এত কিছু জানে করতে পারে কিন্তু ভিতরে সবকিছুই ফাঁকা। বিষয়টির জেনেও তারা জনসম্মুখে নিজেকে ভিন্ন ভাবে প্রকাশ করে যা আমার কাছে অন্যায় বলে মনে হয়। এত সুন্দর একটি বিষয়ে দারুণভাবে ঘুরে আমাদের মাঝে মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, আপনার সুন্দরতম মন্তব্য পেয়ে আমি অনেক অনেক খুশি আনন্দিত হলাম, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল আপু আপনার জন্য।
ভাই আপনি একজন ভেরিফাইড ও পুরাতন ইউজার, লেখা উপস্থাপনের ক্ষেত্রে কোন বিষয়ে পরামর্শ দিতে নিজের কাছেও খারাপ লাগে। পোষ্ট প্রকাশ করার পূর্বে একটু প্রিভিউ দেখে নেবেন কেমন লাগে তা দেখতে? আজকের পোষ্টে শেষের প্যারাগ্রাফটা কমপক্ষে তিনটি প্যারাগ্রাফ হতো, যেখানে আপনি একটা প্যারাগ্রাফ করেছেন, দেখতেও অনেক খারাপ লাগছে।
জি ভাই দেখতে অনেক খারাপ লাগছিল নিজের কাছে, আপনার মন্তব্য পেয়ে আমি পোস্টটিকে সুন্দরভাবে সাজিয়েছি, কেমন হয়েছে জানাবেন ভাই, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
আপনি বাস্তব বেশকিছু ভালো খারাপের মুখোশ নিয়ে খুবই দুর্দান্ত ও চমৎকার আলোচনা করেছেন। আপনার আজকের পোস্ট পুরোটাই পড়েছি আপনি খুবই সাজিয়ে-গুছিয়ে এত সুন্দর ভাবে পুরো মুখোশের আড়ালে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন যা পড়ে সত্যিই মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আপনি ঠিকই বলেছেন খারাপ মানুষগুলো ভালো মানুষের মুখোশ পরে মানুষের অনেক ক্ষতি করে থাকে, এটা আমরা কেউ বুঝতে পারিনা। তবে আমাদের বর্তমানে চলতে গেলে প্রত্যেকটা মানুষকে ভালো করে যাচাই করে যে কোন কাজ করা উচিত। অসংখ্য ধন্যবাদ আমার ভাই আপনাকে খুব চমৎকারভাবে বিষয়টিকে আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন।
আপনার ব্যক্তিগত মতামত পেয়ে আমি অনেক অনেক খুশি ও আনন্দ, সুন্দর মূল্যায়নের মাধ্যমে আমাকে অনেক উৎসাহ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আমি আপনি আমাদের চারপাশে যারা আছে সবাই কিন্তু মুখোশধারী। কেউ ভালো থাকার অভিনয় করে কেউ বা খারাপ থাকার অভিনয় করে। আবার কেউ বা ভেতরে যেমন বাইরে তার সম্পূর্ণ বিপরীত আচরণ করে। এরা সবাই কিন্তু মূখোশধারী। মুখোশ যেন এই সমাজের সবার শরীরে। অনেক সুন্দর একটি বিষয়ে আলোচনা করেছেন ভাই এবং সাজিয়ে লিখেছেন।।
জ্বি ভাই আপনি ঠিক বলেছেন আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ সহমত পোষণ করছি, আপনার সুন্দর ও গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।
যেহেতু মানুষের চরিত্রের মুখোশ নিয়ে আপনি কথা বলেছেন, তাই আমি একটা কথা না বলে থাকতে পারলাম না। কথাটা হচ্ছে যতদিন যাবে মানুষ ততো ধান্দাবাজ ও আড্ডাবাজ হয়ে যাবে। সুযোগ সাপেক্ষে তারা এমনি ধান্দার চলে কুকর্ম করে চলবে। বর্তমান যে তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটাই তার বাস্তব প্রমান।
ভাই আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের সাথে আমি একমত, আপনার সুন্দর ও গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।
চারিত্রিক মুখোশ বড় ই ভয়ঙ্কর আমাদের সমাজ এবং পৃথিবীর জন্য। মানুষের চারিত্রিক মুখোশ নিয়ে আপনি খুব সুন্দর ভাবে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন এবং খুব সুন্দর ভাবে উদাহরণ দিয়ে আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। খুব সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আপনি আলোচনা করেছেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আপনার সুন্দর ও গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।