অনুপ্রেরণা (পর্ব ২)
[ছবিটি Canva App দিয়ে সম্পাদন করা হয়েছে]
অনুপ্রেরণা শিরোনামে এটি আমার দ্বিতীয় পোস্ট। আমি প্রথমেই অনুরোধ করছি আমার গত পোস্ট যারা এখনো পড়েননি তারা নিচে দেওয়া লিংকে প্রবেশ করে পড়ে আসুন। তাহলে আজকের পোস্ট বুঝতে আপনাদের জন্য সহজ হবে।
পোস্ট লিংকঃ অনুপ্রেরণা (পর্ব ১)
(YouTube screenshot)
জনাব গৌরাঙ্গ স্যার, এইচএসসি পরীক্ষায় প্রথমবারে ফেল করার পর অনেক কষ্টের সাথে জীবন যাপন করেও দ্বিতীয়বার আবার পরীক্ষা দিলেন।দিনশেষে আবারো ফেল। ঐ একই সাবজেক্ট গণিতে। দ্বিতীয়বারে ফেল করার পর তার পড়াশোনা একদম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তার কাছে এবার আর কোন উপায় নেই। সে লজ্জায় গ্রামেও যেতে পারে না।পরিবার, পাড়ার মুরব্বি এবং বন্ধু-বান্ধবদের তিরস্কারের ভয়ে। তার এমন কর্মকাণ্ডে তার পরিবার তার উপর থেকে একদম আশা ছেড়েই দিয়েছে। তিনি কোথায় থাকলো, কি খেলো সেরকম খোঁজটাও পর্যন্ত নেয়নি, তার পরিবার।
তবুও তিনি হাল ছেড়ে দেননি। নানান অরাজগতা পেরিয়ে তিনি আবার ইচ্ছে পোষণ করলেন পরীক্ষা দেবার। তবে এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে নয় কমার্স বিভাগ থেকে। ব্যাপারটা আশ্চর্যজনক হলেও সত্য। বয়োবৃদ্ধ কিছু শিক্ষকদের পরামর্শে তিনি বিজ্ঞান বিভাগ ত্যাগ করে কমার্স বিভাগে এসেছিলেন। এটাই তার শেষ ভরসা, এখানে ভালো কিছু করতেই হবে তাকে। তিনি এলাকায় ফিরে এলেন কিন্তু বাড়িতে নয়। তিনি তার গ্রাম ছেড়ে তার গ্রামের দুই তিন গ্রাম পরের গ্রামের একটি কলেজে ভর্তি হলেন। ভর্তিও হয়েছে অনেক কষ্টেই, কোন টাকা ছিলোনা তার কাছে। এক বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে সেখানে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। ভর্তি তো হলেন। এখন থাকবেন কোথায় ..?খাবেনই বা কি...?
(YouTube screenshot)
এমতাবস্থায় তার পাশে দাঁড়ালেন তার এক শিক্ষক। তিনি তাকে এক বাড়িতে লজিং ঠিক করে দিয়েছিলেন। শর্ত ছিল ওই বাড়ির এক ছেলেকে প্রাইভেট পড়াতে হবে বিনিময়ে থাকা খাওয়া।এভাবেই কিছুদিন চলতে থাকলো। কিন্তু কিছুদিন পর দেখা দিল সমস্যা। তিনি যে বাড়িতে লজিং থাকতেন সেই পরিবারেও অনেক অভাব, বাড়তি একটি লোকের ভরণ পোষণ দেয়া ঐ পরিবারের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠছিল না। তাই তাকে সেখান থেকেও প্রস্থান করতে হলো। এবার উপায়...? আগেই বলেছিলাম, তিনি ছিলেন প্রচন্ড মেধাবী।এই একটি মাত্র কারণেই তিনি সুযোগ পেলেন কলেজ হোস্টেলে থাকার। থাকার ব্যবস্থা তো হলো, খাওয়ার জন্য টাকা পাবেন কোথায়...?
এজন্য শুরু করলেন টিউশনি।টিউশনি থেকে যা টাকা পান, তিনি তা থেকেই সারা মাসের খাবারের খরচ চালিয়ে নেন। এত এত কষ্টের মধ্যেও তিনি কিন্তু পড়াশোনায় দুর্দান্ত।তার পড়াশুনায় এমন চাঞ্চল্যতা দেখে তার পাশে দাঁড়ালো সকল শিক্ষকগণ,যে করেই হোক তাকে দিয়ে ভালো রেজাল্ট করাতেই হবে এবার। কিন্তু এবার কি তিনি পারবেন....! নাকি আগের মত আবারো ফেল করবেন..? সেটা জানতে অবশ্যই চোখ রাখতে হবে অনুপ্রেরণা শিরোনামক গল্পের তৃতীয় পর্বে।
আজ এপর্যন্তই।
গৌরাঙ্গ স্যারের জীবনটা অনেক বেশি কষ্ট করছিল। যেটা আপনার পোস্ট পরিদর্শন করার মাধ্যমে বুঝতে পারলাম। আসলে জীবনের কিছু সময় অনেক বেশি কষ্ট ময় হয়ে থাকে। আর সেই কষ্টের দিনগুলোকে আমরা যদি সঠিকভাবে দিন যাপন করতে পারি। এবং নিজেদেরকে এগিয়ে নিতে পারি। তাহলে হয়তোবা শেষের দিকটা অনেক বেশি সহজ হয়।
স্যার অনেক মেধাবী হওয়ার কারণে কলেজের হোস্টেলে থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু খাওয়ার ব্যবস্থার জন্য উনি টিউশনি শুরু করেন। আমি ঠিক জানিনা পরবর্তীতে কি হয়েছে, তবে আমার মনে হয় খুব ভালো কিছুই হয়েছে। পরবর্তী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম ভালো থাকবেন।
১ম পর্বের মত ২য় পর্ব টিও অনেক গুছানো ছিল। এখন অপেক্ষা ৩য় পর্বের। আশা করি সেখানে আমরা ফাইনাল স্যারকে দেখতে পাবো। অনেক কিছু জানতে পারবো। কিভাবে তিনি এই পথ অতক্রম করলেন সেটাও জানবো।
অপেক্ষায় থাকার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার আগের পর্বও পড়েছি।আসলে আমাদের চারপাশে এরকম অনেক নাম না জানা না শুনা কত অনুপ্রেরণা মূলক গল্প রয়েছে। কত মানুষ তার জীবন যুদ্ধে বিজয়ী রয়েছে তার কোন হিসেব নেই। যেমন এই গৌরাঙ্গ স্যার সত্যি তার গল্পে অনেক অনুপ্রেরণা রয়েছে। বারবার ব্যর্থ হয়েও তিনি থেমে যাওয়ার পাত্র নন। তিনি যেন প্রতিজ্ঞা বদ্ধ তিনি বিজয়ী হবেনি।ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা অনুপ্রেরণা মূলক গল্প আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।