আত্মনিয়ন্ত্রণ আপনার ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ

in Incredible India2 months ago

1.jpg

Edited by Canva

আসসালামু আলাইকুম

মানুষের বিবেক,বুদ্ধি, আচার-আচরণ সবকিছু অন্য প্রাণীর চেয়ে আলাদা। ভালো খারাপের ভেদাভেদটা মানুষ ভালোই বোঝে। কিন্তু তারপরেও কিছু মানুষ নিজের দোষে নিজের জীবনটাকে নষ্ট করে দেয়। তাদের মাঝে যে জিনিসটার সবচেয়ে বড় অভাব তা হচ্ছে আত্মনিয়ন্ত্রণ। খারাপ বিষয়গুলো মানুষকে সবসময় টানে। খারাপ কোন কাজ করলে মানুষ তৎক্ষনাত শান্তি পায়। কিন্তু এর ফলাফল হয় ভয়াবহ। অন্যদিকে ভালো কাজের ফলাফল হয় মধুর কিন্তু তা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই মানুষের সহজেই খারাপ কাজে আসক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে।

আপনি যদি কোন সিঁড়ি ব্যবহার করে উপরে উঠেন তাহলে খেয়াল করবেন, উপরে উঠতে অনেক কষ্ট হয় কিন্তু নামার সময় তেমন কষ্ট হয় না। জীবনটাও এমন উপরে উঠতে আপনার অনেক কাঠ খড় পোড়াতে হবে কিন্তু নিচের দিকে নামতে আপনার ভালোই লাগবে। আর এই ভালো লাগাটাই এক সময় কাল হয়ে দাঁড়াবে।

যেমন উদাহরণস্বরুপ বলা যায়, আপনি পড়াশোনা করে একজন ভালো মানুষ হয়ে দেশ ও জাতির সেবা করতে চান। তাহলে এটাতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। পড়াশোনা করবেন, পরীক্ষা দিবেন, ফলাফল আসবে অনেক কাজ। অন্যদিকে আপনি নেশা করে খারাপ সঙ্গে মিশে জীবনটাকে ধ্বংস করে দিবেন। তাহলে আর এত কষ্ট করা লাগবে না। নেশা করার ফলে সাথে সাথে আনন্দও পাবেন। কিন্তু একটা পর্যায়ে গিয়ে দেখবেন আপনার সবকিছু হারিয়েছেন। এই যে সাময়িক সময়ের আনন্দটকে আপনি উপেক্ষা করে কষ্ট হলেও ভালো জিনিসটা গ্রহণ করলেন, এটিই আত্মনিয়ন্ত্রণ।

জোড়ালো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ না হলে আত্মনিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। প্রতিনিয়ত আমাদের সামনে মূল্যবান সময় নষ্ট করার হাজারো জিনিস আসে। বর্তমানে খুবই প্রচলিত একটি জিনিস হচ্ছে রিলস। ১০ থেকে ৩০সেকেন্ড এর মধ্যে ছোট ছোট ভিডিও। একবার এসবের ভেতরে ঢুকলে এটি কীভাবে যে আপনাকে গ্রাস করে ফেলবে আপনি টেরই পাবেন না। আমার ক্ষেত্রে এমনও হয়েছে, ভেবেছি ৫ মিনিট রিলস দেখে ঘুমিয়ে যাবো কিন্তু প্রায় ১ঘন্টা পেরিয়ে গেছে আমার কোন খেয়ালই নেই সেদিকে। প্রতিনিয়িত মূল্যবান সময়ের কতটা যে এই রিলস খেয়ে ফেলছে তার কোন হিসাব নেই। এখন আপনি এর মোহ থেকে নিজেকে মুক্ত করে প্রোডাক্টটিভ কোন কাজে সময় ব্যয় করতে পারলেই সফলতার দিকে এগিয়ে যাবেন।

pexels-olly-3824771.jpg

Source

মানুষ জন্মগত লোভী। কেউ যদি বলে আমি নির্লোভ তাহলে সে মিথ্যা কথা বলছে। কিন্তু এই লোভটাকে যে সংযত রাখতে পারে, আত্মসংযমের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে থাকা সকল খারাপ জিনিসকে যে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে তার কাছেই জীবন সহজ হয়ে যায়। ভালো কাজে কষ্ট বেশী এটি চিরিন্তন সত্য।কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি সবসময় আমাদের খারাপ কাজের প্রোলভন দেখায়। তবে মনে রাখতে হবে নিজের ভালো মন্দ নিজের বুঝতে হবে। নিজেকেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। তাই আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে খারাপ কাজ থেকে সর্বদা দূরে থাকতে হবে।

Thank You

Sort:  
 2 months ago 

একদম ঠিক কথা বলেছেন যে, মানুষ জন্মগতভাবেই লোভী।এটা সে তার পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকে জেনেটিক্যালিই পেয়েছে।
তার জন্য নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করাটা বেশ কঠিন একটা কাজ।
কিন্তু তারপরও তার চারপাশের খারাপ ও ভালো জিনিসগুলে চিহ্নিত করে তাকে খারাপকে বর্জন করতে হবে।
আপনার লেখা পড়ে খুব ভালো লাগলো। এত চমৎকার একটা লেখা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন সবসময়।

Loading...
 2 months ago 

জীবনে উপরে ওঠার সিঁড়ি একেবারেই কঠিন। যেখানে উঠতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। কিন্তু আমরা যখন নিচে নামার চেষ্টা করি। তখন খুব দ্রুত সেটা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু ওঠার সময় মনে হয় এ যেন অনন্তকাল সিঁড়িতে পার করার পরেও, আমরা সেটাতে উঠতে পারবো না।

আত্মার নিয়ন্ত্রণ আমরা ঠিক ততক্ষণ পর্যন্ত করতে পারবো না। যতক্ষণ না আমরা নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো। আসলে বর্তমান সময়ে ইউটিউব এবং ফেইসবুক এর মধ্যে রিলিস খুবই মারাত্মক একটা ভাইরাসের মতো।

একবার যদি এর ভেতর আমরা ঢুকে যাই। তখন বাহির হতে অনেকটা সময় লেগে যায়। বিশেষ করে আমি যদি কালকে রাতের কথা বলি। আমি দশটার সময় হঠাৎ করে ফেসবুকে আমার একটা ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছিলাম। তারপরে ফেসবুক ঘাঁটাঘাঁটি করতে করতে আমি একটু নিচে গেলাম।

একটু পরে আমি ছোট ছোট কিছু ভিডিও দেখা শুরু করলাম। দেখতে দেখতে কখন যে বারোটা বেজে গেল, আমি নিজেও বুঝতে পারলাম না। আর ওখান থেকেই বুঝতে পারলাম এটা একেবারেই মারাত্মক ভাইরাসের মতো। এটা আমাদের মূল্যবান সময়টাকে নষ্ট করে দেয়। ধন্যবাদ উপরোক্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

আসলে আপনি সুন্দর একটা কথা বলেছেন।সিড়ি দিয়ে উঠতে অনেক কষ্ট করতে হয় কিন্তু নামার সময় কষ্ট হয় না।তেমনি আমাদের সম্মান মর্যাদা গড়াতে অনেক কাঠখড়ি পোড়াতে হয় কিন্তু অপমানিত হতে কোনো সময় লাগে না।তাই আমাদের সবখানে ভেবেচিন্তে কথা বলা প্রয়োজন। যেন নিজের আআত্মমর্যাদা ঠিক থাকে।

 2 months ago 

সর্বপ্রথম কথা হলো এই মানুষ রূপের মানব জাতিকে চেনা খুব বড়ই মুশকিল। কারণ এই মানুষজাতির চাহিদার কোন শেষ নেই। ভালো-মন্দ সবকিছুই ভেদাভেদ বুঝে। তারপরও দেখা যায় তারা অসৎ পথে কাজ করে।
ঠিকই বলেছেন অসৎ পথে কাজ করার পর যদিও তৎক্ষণার শান্তি পাওয়া যায় কিন্তু পরবর্তীতে এই কাজেই কাল হয়ে দাঁড়ায়।

বাস্তব বিষয় নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.031
BTC 63619.61
ETH 2698.75
USDT 1.00
SBD 2.59