মানুষের একটাই পরিচয় - মনুষ্যত্ব। (Humanity is the only identity of every human)
![]() |
---|
যারা মাত্র কয়েক বছর ভারতে বসবাস করছেন তাদের কাছে ভারতবর্ষকে চেনা মোটেও সহজ নয়।
এটা কেবলমাত্র এই দেশ কেনো কোনো দেশের ক্ষেত্রেই সম্ভব নয়।
এই দেশে যারা জন্মলগ্ন থেকে আছেন এবং সময়ের হাত ধরে বড়ো হয়েছেন বংশ পরম্পরায় একমাত্র তারাই এই দেশ তথা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে সক্ষম।
অনলাইনে দুকথা পড়ে অথবা টেলিভিশনের পর্দায় রং চং মাখানো খবরের ভিত্তিতে কোনো দেশ তথা দেশবাসীর মানসিকতা বিচার তারা করেন না যারা বংশপরম্পরায় এই দেশের মাটিতে বসবাস করছেন।
কাজেই, অর্ধ সত্য যেমন ভয়ংকর তেমনি সেই মানুষগুলো যারা এক্ অর্থে কোনো দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে অক্ষম;
কারণ এদের নির্দিষ্ট কোনো ঠাঁই নেই, ঐ হিন্দি তে একটি প্রবাদের মতন যার বাংলা অর্থ ধোপার কুর্তা, না ঘরের না ঘাটের! সেই রকম খানিকটা।
![]() |
---|
যাইহোক এত কথা বলছি কারণ, ভারতবর্ষের মাটিতে জন্মে এবং মারাঠি তথা বাঙালিদের মাঝে বড়ো হয়ে শিখেছি মানুষের একটাই পরিচয় আর সেটা হলো
ব্যতিক্রম দিয়ে অথবা নিজের মানসিকতা দিয়ে কখনো দেশ বিচার চলে না।
দেশের মাটির প্রতি সততা নিষ্ঠা এবং দেশপ্রেম থাকলেই দেশের আসল চেহারা তুলে ধরা সম্ভব।
আমার মনে আছে একটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে গিয়ে আমি লিখেছিলাম কখনো যদি কাজের জন্য দেশের বাইরে যেতে হয় তাহলে সেই সুযোগকে আমি প্রত্যাখ্যান করবো।
![]() |
---|
(আমার দেশের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আমৃত্যু অমলিন থাকবে, কারণ এই দেশেতে জন্ম আমার) |
---|
কারণস্বরুপ লিখেছিলাম আমি জন্মেছি এমন রাজ্যে যাকে স্বপ্নের নগরী বলে আর বেড়ে উঠেছি এমন রাজ্যে যাকে সকলে কল্লোলিনী নামে আখ্যায়িত করে।
কাজেই, আমার লেখার শীর্ষক এর যথার্থতা তুলে ধরতে একটি গল্প আপনাদের সাথে ভাগ করে নিচ্ছি।
![]() |
---|
![]() |
---|
![]() |
---|
কলকাতা শহরে এক বিধবা মহিলা একা বসবাস করতেন, তার সঙ্গী ছিল পাশের বাড়ির একটি মেয়ে এবং বাড়িতে কর্মরত সহকারি মহিলা।
মহিলার একমাত্র ছেলে কাজের সূত্রে বাইরে থাকত। ফ্ল্যাট কালচার সবে শুরু হয়েছে, কাজেই প্রোমোটার দের বাজার গরম।
তাদের মূল লক্ষ্য ছিল কলকাতার পুরনো বাড়িগুলো, বিশেষ করে যেগুলো শহরের নামী দামী এলাকার আওতায় পড়ে।
এই মহিলার বাড়িটি ছিল এরকম একটি জায়গায় কাজেই স্থানীয় প্রোমোটার প্রতিদিন উৎপাত করতো মহিলাকে।
বিষয়টি মহিলা পুলিশকে জানালে, তারা মহিলার সুরক্ষার জন্য একটি ছেলেকে পাঠান।
বাড়িতে থাকতে থাকতে ছেলেটি একপ্রকার বাড়ির লোক হয়ে যায়, তবে মহিলা ছিলেন একটু বাতিকগ্রস্থ, এই নিয়ে বাড়ির কাজের মহিলা সহ ছেলেটির সাথে প্রতিদিন বাকবিতণ্ডা লেগেই থাকতো।
যাইহোক, এরকম একদিন মহিলা ভীষণ অসুস্থ হলেন, তাকে সেবা করে সুস্থ্য করলেন ছেলেটি, অসুস্থতার কারণে মহিলা পুজো করতে অসমর্থ ছিলেন, এবং ঠাকুর কে খেতে না দিয়ে খাবেন না!
![]() |
---|
![]() |
---|
![]() |
---|
তাই দেখে ছেলেটি স্নান করে পুজো করে মহিলাকে প্রসাদ দিয়ে খাইয়ে সুস্থ্য করলেন।
একদিন ঘরের সিলিং ফ্যান কাজ করছে না বলে, ছেলেটির ঘরে তাকে ডাকতে গিয়ে দেখে ছেলেটি নামাজ পড়ছে!
তৎক্ষণাৎ মহিলা তাকে ঘরের বাইরে বের করে দিতে দরজা বন্ধ করে দেন।
এরপর তিন দিন ঘরের বাইরেই ছেলেটি কাটিয়ে দেয়, তবুও মহিলাকে একা ছেড়ে চলে যাচ্ছে না দেখে একদিন মহিলা দরজা খুলে বললেন, তোমাকে তো আমি বাড়ির বাইরে বের করে দিয়েছি তবুও তুমি কেনো চলে যাচ্ছ না?
উত্তরে ছেলেটি বলল আপনার কাছ থেকে ক্ষমা না পেলে আমি তো যেতে পারি না, আমি মুসলিম সেটা আমার আপনাকে জানানো উচিৎ ছিল।
তোমাকে আমি তোমার জাতের কারণে নয়, আমাকে মিথ্যে বলার কারণে বের করে দিয়েছিলাম, নাও এখন ঘরে এসো অনেক হয়েছে!
গল্পটা থেকে আপনারা কি বুঝলেন? সকলের মানসিকতা একরকম নয়, বিশেষ করে যারা দেশ এবং দেশ বাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা বোধ রাখেন, তাদের কাছেও মানুষের একটাই পরিচয়।
আমরা জগৎটা দেখি নিজেস্ব মানসিকতার ভিত্তিতে এবং আমাদের আচরণ তথা কথায় তার প্রভাব স্পষ্ট বোঝা যায়।
![1000010907.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmXWAyVb1Cc1XAWU6HFRVVZopNCk2VhWTCH1VVxJdBwBJD/1000010907.gif)
![1000010906.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmc8yviUiSxfyoxr2Hiq7W5HcV2ytbSck6fdFkomrJ2PfH/1000010906.gif)
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.
Your post has been successfully curated by @kouba01 at 35%.
Thanks for setting your post to 25% for @null.
We invite you to continue publishing quality content. In this way you could have the option of being selected in the weekly Top of our curation team.
কোন নির্দিষ্ট একটা জায়গা দিয়ে যেমন পুরো দেশকে বিচার করা ঠিক না আবার তেমনি ভাবে কেন একজন মানুষ দিয়েও পুরো দেশের মানুষ সম্পর্কে বলাটা ঠিক না।
একটা জায়গা যেমন বাজে হতে পারে তেমনি একজন মানুষও নিকৃষ্ট হতে পারে এর মানে এই না যে, পুরো দেশ খারাপ বা পুরো দেশবাসী খারাপ। সেটা ভারতবর্ষই হোক বা পৃথিবীর অন্য দেশ।
অভিজাত পরিবারের অতি উচ্চ শিক্ষিতকেও দেখেছি সামান্য স্বার্থে আঘাত লাগলে কিভাবে তার হিংস্র চেহারা বের হয়ে আসে আবার রাস্তার অপরিচিত রিকশাওলার মাঝে মানবতা দেখে মুগ্ধ হয়েছি।কিন্তু তার মানো এই না যে, সব অভিজাত পরিবারের কিংবা সব রিকশাওলা ভালো।
আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি যে, মানুষের প্রধান পরিচয় সে একজন মানুষ।ধর্ম যার যার বিষয়।সবার আগে মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখা উচিত। না হলে সুন্দর একটা পৃথিবীর সপ্ন সপ্নই থেকে যাবে।
জ্বি দিদি ঠিক বলেছেন। সবার মানসিকতা এক নয়। আমরা বাস্তবে যা দেখি বা বুঝি সেটা নাও হতে পারে। আসলে পুরোপুরি না জেনে কিংবা না শুনে কোন মন্তব্য করা উচিত নয়। যার মধ্যে মনুষত্ব আছে সে কখনোই কারোর ক্ষতি করতে পারে না। মনুষত্ব মানুষের সবথেকে বড় পরিচয়। আর যারা মানুষ হয়েও পশুর মতন আচরণ করে তাদের আর যাই হোক মানুষ বলা চলে না।
ভালো থাকবেন দিদি। শুভকামনা রইলো।
দেশ কিংবা দেশের মানুষদের নিয়ে কথা বলার আগে, সেই দেশ এবং মানুষগুলো সম্পর্কে অবশ্যই ভালোভাবে জেনে নেয়া উচিত। আপনি যে গল্পটা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন, সেটা সত্যিই অসাধারণ। কেননা সত্যিটা প্রকাশ করলে হয়তো বা সামান্য কষ্ট হয়। এরপর সবকিছু ঠিক হয়ে যায়, কিন্তু আমরা সত্যি লুকিয়ে রেখে যদি মিথ্যাটা প্রকাশ করি, তার জন্য কিন্তু সারা জীবন কষ্ট পেতে হয়। ধন্যবাদ চমৎকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।