ভালো অভ্যাস এবং বদভ্যাসের মধ্যে তারতম্য।(Distinction between good habits and bad habits)

in Incredible India5 months ago (edited)
1000020460.png

পরিচিত মানুষদের সাথে দেখা হলেই প্রথম কুশল বিনিময় স্বরূপ যে কথটি সর্বাগ্রে আমাদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে,

সেটা হলো কেমন আছেন?

এই প্রশ্নের আড়ালেই লুকিয়ে থাকে আরো কিছু প্রশ্ন, যেমন ব্যাক্তিটি শারীরিক তথা মানসিক ভাবে কেমন আছেন!

আমাদের জীবনে ভালো থাকার জন্য অর্থের পাশাপশি শারীরিক এবং মানসিক ভাবে ভালো থাকার সমান প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয়।

আমাদের মধ্যে অনেকেই ভাবেন অর্থ থাকলেই বোধহয় নিশ্চিন্তে বাকিটা জীবন অতিবাহিত করা সম্ভব!

এই প্রশ্নের উত্তর সেই মানুষটি সবচাইতে ভালো দিতে পারবেন যিনি কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত। আমার একান্ত ব্যাক্তিগত অভিমত আমাদের শারীরিক ভাবে সুস্থ্য থাকাটা বোধহয় সর্বাগ্রে বেশি প্রয়োজন।

একমাত্র সুস্থ্য শরীর, সুস্থ চিন্তাধারা বহন করতে সক্ষম। একজন অসুস্থ্য ব্যাক্তির মানসিকতা কখনোই উন্নত হতে পারে না।

এখন এই সুস্থতা এবং অসুস্থতা নির্ভরশীল আমাদের দৈনিক কিছু ভালো অভ্যাস এবং বদভ্যাসের উপরে।

অভ্যেস যদি ভালো হয়, তাহলে সেই মানুষগুলোর চিন্তাধারায় তার ছাপ স্পষ্ট।
সেটা হতে পারে ব্যাক্তি জীবনে তথা কর্ম জীবনে।

এই ভালো অভ্যেসের আওতায় পড়ে খাদ্যাভাস, সহ পুরোটা দিন আমরা কিভাবে অতিবাহিত করছি তার উপরে।

কথায় আছে, শূন্য মস্তিষ্ক শয়তানের আড্ডা!
আবার প্রবাদেও কথিত আছে,

যে নদী হারায় স্রোত চলিতে না পারে, অজস্র শৈবাল ধাম বাঁধে আসি তারে!

যারা সৃজনশীল কাজের পাশাপশি সুস্থ্য পরিবেশে বেড়ে ওঠে তাদের অধিকাংশ মানুষের তালিকায় ভালো অভ্যেসের একটি সহজাত প্রবৃত্তি চোখে পড়ে।

ভালো বিষয়গুলোকে রপ্ত করতে সময় নিলেও, বদভ্যাস রপ্ত করতে বেশিরভাগ মানুষ সিদ্ধহস্ত।

আরো একটি বিষয় হলো, এই বদভ্যাস একবার দৈনন্দিন জীবনে ঢুকে গেলে তাকে পরিত্যাগ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়।
কারণ, এরা মানুষের অজান্তেই তাদের জীবনে প্রবেশ করে শখের বসে, কিন্তু নিজেদের অজান্তেই এরা শিকড় গেড়ে বসে যায়!

যেটি এমন সময় নজরে আসে যখন হয় আমরা আর্থিক নয়তো শারীরিক ভাবে অক্ষম হয়ে যাই এদের কারণে!

ফলস্বরূপ মানসিক বিপর্যয় অবধারিত।

প্রতিদিনের নির্ধারিত সময় আমরা কিভাবে অতিবাহিত করছি, সেটার উপরে আমাদের অভ্যাস গুলো নির্ভরশীল।

1000020467.webp

Pixabay

যারা কাজের মধ্যে দিনযাপন করেন, পাশাপশি খোলা আকাশের নিচে বাস্তবিক শিক্ষা নিয়ে থাকেন প্রতিনিয়ত;
তাদেরকে বেশিরভাগ সময় বদভ্যাস থাবা বসাতে পারে না।
কারণ তাদের হাতে সময়ের অভাব তাদেরকে অন্য কিছু ভাবার অবকাশ দেয় না।

অপরপক্ষে নিজেকে গৃহবন্দি করে যারা কেবলমাত্র চাওয়া পাওয়ার হিসেব কষে, এবং মানব ধর্ম বা স্বভাব অনুযায়ী নিজেকে সবচাইতে দুর্ভাগা মনে করে সময় অতিবাহিত করেন; তাদের ক্ষেত্রে, তথা যারা আত্মকেন্দ্রিক তাদের ক্ষেত্রেও, সময় বদভ্যাস ছাড়া কিছুই বয়ে নিয়ে আসে না।

জীবনের লড়াইয়ে অনেক সময় অর্থ কাজে আসে না, কাজে আসে আমাদের ব্যবহার এবং আমাদের ভালো অভ্যেস।

যে ছাত্র ছাত্রী সারা বছর ভালো পড়াশুনা করেও ভালো ফল করতে পারে না, তাদের কাছে নিজেকে দেবার মত সদুত্তর থাকে এবং এরা কখনো নিজের চোখে ছোটো হয় না।

তাদের মধ্যে প্রয়াস এবং প্রচেষ্টার পুনরাবৃত্তি দেখা যায়, কারণ তারা বিফলতার পিছনের কারণ খুঁজে নিজেকে উন্নত করতে বিশ্বাসী।

প্রতিদিন যোগাসন যেমন মনকে শান্ত করতে সহায়তা করে, তেমনি খাদ্যাভাস শরীরকে।
উপরিউক্ত দুটি বিষয় অবশিষ্ট তৃতীয় বিষয় অর্থ উপার্জন করতে সেই মানুষকে এমনিতেই উদ্বুদ্ধ করে।

এরপর আমার মনে হয় ভালো অভ্যেসের মধ্যে পড়ে আমাদের বাচন ভঙ্গি এবং অপরকে সম্মান করার অভ্যেস।

1000020471.jpg

Pixabay

(অপরিবর্তিত সত্য পৃথিবী জুড়ে)

আমরা অনেকেই একটা কথা বলে থাকি, সেটা হলো,

সম্মান দিলেই সম্মান পাওয়া যায়।

তাই কারোর থেকে কিছু পাওয়ার আশা করলে সর্বাগ্রে নিজেকে উন্নত করা আবশ্যকীয়।
পরিশেষে একটি বার্তা দিয়ে যেতে চাই, আর সেটা হলো, ভালো অভ্যেস রপ্ত করা কঠিন কিন্তু একবার রপ্ত করতে পারলে সেটি আজীবনের পাথেয়।

অপরটি, মানে বদভ্যাস রপ্ত করা সহজ তথা সেই অভ্যেসের হাত ধরে সবকিছু হারিয়ে ফেলা আরও বেশি সহজ।

উপরিউক্ত কথাগুলো একান্তভাবেই আমার ব্যাক্তিগত অভিমত, কাজেই সহমত পোষণ এর আশা না রেখেই আজকের লেখাটি উপস্থাপন করলাম।

নিজেকে প্রতিনিয়ত প্রশ্ন করা উচিত কোন বিষয়গুলো আমাদের গ্রহণ এবং কোন বিষয়গুলো আমাদের বর্জন করা উচিত।

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  

Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.

Loading...

আমি যে কবে আমার বদভ্যাসগুলো পরিত্যাগ করতে পারবো ভগবান জানেন। আমি হয়তো অনেকটা আত্মকেন্দ্রিক বলেই এই সমস্যা।

 5 months ago (edited)

কাজের জায়গায় কোন ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে যেমন কারোর কিছু বলার অধিকার নেই, তেমনি কাজের জায়গায় ব্যাক্তি স্বাধীনতা দেখানোর জায়গা নয়।

ব্যক্তিগত জীবনে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি, কি খাবো? কখন খাবো? কোনটা খাবো? কোন্ কাজটা করবো আর কোনটা করবো না!
তবে কাজে একবার নিয়োগ হবার পরে কর্মস্থানে উপরিউক্ত বিষয়গুলো একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ ব্যক্তিস্বাধীনতা ব্যাক্তিগত জীবনে বলবৎ হয়, কর্ম জীবনে নয়। কাজটা আমরা নেবো কি নেবো না সেটা ব্যাক্তি স্বাধীনতা অবশ্যই তবে একবার কর্ম জীবনে প্রবেশ করলে ব্যক্তিস্বাধীনতা গেটের বাইরে রেখে আসতে হয়।
কারণ, কর্মস্থান শৃঙ্খলার জায়গা, খামখেয়ালীর নয়।
ধন্যবাদ।

 5 months ago 

দিদি সব ক্ষেত্রেই কিন্তু আমরা আমাদের বিবকে কে কাজে লাগাতে পারি। কোন কাজ সঠিক আর কোন কাজ বেঠিক সেটি কিন্তু আমাদের বিবেকই বলে দেয়। কিন্তু কেন জানি আমরা বিবেকের কথা শুনি না। আর এই বদ অভ্যাসটা আমাদের মাঝে আছে বলেই আমরা আজ বদ অভ্যাসের দাস হয়ে গেছি। যাই হোক নির্দিষ্ট কর্মপন্থা অবলম্বন করলে হয়তো এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

দিদি আপনার কথাগুলো বাস্তবিক জীবনে প্রয়োগের চেষ্টা করবো। আশীর্বাদ করবেন।

 5 months ago 

অতিরিক্ত টাকা থাকলে যে আমরা ভালো থাকবো এই কথা চিন্তা করে একেবারেই বোকামি। আমাদের সমাজেই আছে এমন অনেক মানুষ, যাদের অতিরিক্ত টাকা আছে কিন্তু শারীরিকভাবে তারা একেবারেই সুস্থ নেই, তাহলে তারা কিভাবে ভাল আছেন।

অল্প অর্থ নিয়েও সন্তুষ্ট থাকা যায়, যদি শারীরিকভাবে ভালো থাকা যায়। মানসিকভাবে একটা মানুষ ভালো থাকলে, সে তার পরিবার সমাজ এবং দেশের জন্য ভালো কিছু চিন্তা করে।

ভালো ব্যবহার দিলে অবশ্যই ভালো ব্যবহার পাওয়া যায়, এই কথাটা আমি ১০০ বার বিশ্বাস করি। একদমই ঠিক বলেছেন, ভালো অভ্যাস রপ্ত করা অনেক কঠিন। তবে অবশ্যই আমাদেরকে ভালো অভ্যাস রপ্ত করতে হবে। এতে করে আমরা অন্ততপক্ষে বাকি জীবনটা ভালো থাকতে পারবো। ধন্যবাদ চমৎকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 67873.49
ETH 3528.53
USDT 1.00
SBD 2.80