কুঁড়ি থেকে ফুলের ফুটে উঠতে সল্প সময় লাগে, তেমনি একটি মুহূর্তই যথেষ্ট বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে।
প্রিয় বন্ধুরা,
সকলকে সাপ্তাহিক প্রারম্ভের শুভেচ্ছা এবং সকলকে আমার লেখায় স্বাগত জানিয়ে আমার আজকের লেখা শুরু করছি।
জীবনে আমাদের শারিরীক গঠনের পরিবর্তন হয়তো সময়ের সাথে সাথে হয় কিন্তু মানসিক বৃদ্ধির জন্য একটি বাস্তব মুহূর্তই যথেষ্ট বলে আমার মনে হয়।
আমার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতার দৃষ্টিকোণ থেকে আমার এই লেখা, এবং অনেক পারস্পরিক অভিজ্ঞতার নিরিখে আজ আমার লেখার শিরোনাম নির্ধারণ।
(কুঁড়ি থেকে ফুলের বেড়ে ওঠা) |
---|
আমরা যতক্ষন মা, বাবার ছত্র ছায়ায় থাকি ততক্ষণ শারিরীক ভাবে বেড়ে উঠলেও, মানসিক দিক থেকে আমরা কিন্তু নির্ভরশীল থাকি নিজেদের পিতা মাতার উপরেই।
কখনো কোনো বিপদে পড়লে, কোনো কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাবার সময়, কোনো বাস্তব সিদ্ধান্ত নেবার সময় আমরা নিজেদের অভিভাকদের সাহায্য নিয়ে থাকি।
এটা একটা মানসিক শান্তি, কারণ কোথাও না কোথাও আমরা জানি আমাদের অভিভাবক আমাদের চাইতে অনেক বেশি অভিজ্ঞ এবং আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী কাজেই সঠিক পরামর্শই দেবেন।
একটা বয়েসের পরে সেটা অভ্যেসে পরিণত হয়ে যায়, বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় বলে বেরোনো, বাড়ির ঢোকার মুখে মাকে ডাকতে ডাকতে বাড়িতে প্রবেশ ইত্যাদি।
তবে আজকাল কতটা কেউ নিজেদের পিতা, মাতাকে নিজেদের জীবনের যেকোনো সিদ্ধান্তে সামিল করেন সেটা নিয়ে আমি বেশ সন্ধিহান।
যাইহোক, আমার আজকের লেখার বিষয় সেটি নয়, আজকে আমি যে কথা বলতে এসেছি সেটা হলো, দাঁত থাকতে আমরা কেউ দাঁতের মর্ম বুঝি না।
(মানসিক বৃদ্ধির জন্য একটি মুহূর্তই যথেষ্ট) |
---|
ঠিক তেমনি অসময় যারা জীবনের মূল্যবান সম্পর্ক হারিয়েছেন তারাই বুঝবেন সম্পর্কের প্রকৃত মূল্য।
একটা বাস্তব ঘটনাই যথেষ্ট রাতারাতি মানসিক বৃদ্ধির জন্য।
আমি সেটা নিজের জীবনে উপলব্ধি করেছি এবং শিখেছি সময়, সম্পর্ক এবং সঠিক সুযোগ এগুলো একবার হারিয়ে ফেললে আর আসে না।
আপনারা অনেকেই দেখেছেন সন্ধ্যেয় যে জবা কুঁড়ি রূপে বিরাজ করছিল গাছের ডালে, পরদিন সকালেই সেটা ফুলের আকারে পরিবর্তিত হয়েছে।
এই যে, একটা রাতের মধ্যেই একটি কুঁড়ি তার যাত্রা সম্পূর্ণ করলো; ঠিক তেমনি একটি স্বজনহারা মুহুর্ত আপনাকে এক রাতেই অনেকখানি বড়ো এবং অভিজ্ঞ করে তোলে মানসিক ভাবে।
শারিরীক না হোক কিন্তু মানসিকভাবে আমরা বেড়ে উঠি সেই মুহূর্তের মধ্যে দিয়ে, বুঝতে পারি কোনটা করা উচিত ছিল, কোনটা নয়!
বুঝতে পারি কারা আপন, কারা পর, বুঝতে শিখি সময়ের, সম্পর্কের মূল্য।
অনেকেই জীবনকে একটা সময় পর্য্যন্ত খুব সহজভাবে নেয় এবং যে কাজগুলো করা উচিত নয়, সেগুলো জেনে শুনেই করে থাকে।
তারমধ্যে নিজের মা, বাবার সাথে দুর্ব্যবহার, তাদের না মেটাতে পারা নিজের সখ - আহ্লাদ, তাদেরকে লুকিয়ে চুরিয়ে বিভিন্ন গর্হিত কর্ম করা ইত্যাদি।
|
---|
তবে এদের মধ্যেও ব্যতিক্রম আছে, যারা সময়, সম্পর্ককে সঠিকভাবে সম্মানের সাথে ধরে রেখে এগিয়ে যান, এবং জীবনের অনেকদূর পর্যন্ত তারা মানসিকভাবে সমান সন্মান প্রদান করেন নিজের অভিভাবকদের।
যেনে রাখুন অধিকাংশ এই ধরনের মানুষেরাই চলার পথে সফলার মুখ দেখতে পান।
আজকে আমি তাদের উদ্দেশ্যে এই লেখাটি লিখছি, যারা সব সম্পর্ক নিয়ে চলছেন কিন্তু তাদের মূল্য না দিয়ে সময়ের অপচয় করছেন।
জানবেন, জীবনের চাইতে কঠোর শিক্ষক দ্বিতীয়টি কেউ নেই, আজকে আপনার কর্ম নির্ধারণ করবে আগামীতে আপনার সাথে কি থাকবে আর কি থাকবে না।
আপনি কোনটা পাবার যোগ্য আর কোনটি পাবার যোগ্য নন, সবটাই নির্ভর করে আপনার আজকের মুহূর্তকে আপনি কিভাবে ব্যবহার করছেন তার উপরে।
আজকে তাই কিছু ফুলের ছবির দ্বারা নিজের লেখার যথার্থতা বোঝানোর চেষ্টা করেছি।
আজকের ভালো মুহুর্ত, সময় এবং সুযোগের পাশাপশি নিজের মাথার উপরে থাকে বট গাছ রূপি পিতা এবং মাতাকে সম্মান করুন।
জীবন নামক শিক্ষকের নজর আমাদের প্রতিটি কর্মের উপরে রয়েছে, কাজেই নিজের অজান্তেই কখন সেই ছাওয়া তুলে নেবে আপনি বুঝতেও পারবেন না।
পরিশেষে বলব, ভাগ্যকে নয়, নিজের কর্ম সঠিক রাখুন, বেড়ে উঠুন সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে।
আজ এই পর্যন্ত এসে বিদায় নিলাম, আপনাদের উপস্থিতি, সমর্থন এবং মন্তব্যের আশা নিয়ে।
ভালো কাটুক সারাটা সপ্তাহ আপনাদের এই কামনা করি।
Congratulations!
Your post has been rewarded by the Seven Team.
Support partner witnesses
We are the hope!
খুব দামী কথা লিখেছো, সত্যি জীবনের মানে বোঝা যায় যখন মাথার উপর থেকে বড়দের হাত সরে যায়, আর অসময় গেলে তো কোনো কথাই নেই।
আমরা দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দিই না, কথাটা একদম বাস্তব, আসে ঠিক সেই কারণেই হয়তো আমাদের জীবনের আফসোস এত বেশি।
তোমার লেখার সাথে ছবিগুলোর মিল খুকে পেলাম, ভালো থেকো সবসময়।
দেরি করে আপনার মন্তব্যের উত্তর দেবার জন্য দুঃখিত, একদম সঠিক কথা বলেছেন দাঁত থাকতে আমরা কেউ দাঁতের মর্যাদা দিই না।
@sduttaskitchenএকদম ঠিক বলেছেন দিদি মাথার উপরে বড়োদের হাত না থাকলে আমরা জিবনে কখনো এগোতে পারবোনা। তাদের অভিঞ্জতা আমাদের থেকে অনেক গুন বেশি হয়।
একদম সঠিক, তাই আমাদের উচিত তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করা।
সত্যিই আমরা দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম দিই না। আর যখন মর্ম দিতে হয় এটা বুঝি তখন অনেকটা দেরি হয়ে যায়। আর বাবা মা না থাকলে পুরো পৃথিবীটাই হয়তো ফাঁকা লাগে,ভগবানের আর্শীবাদে আমার বাবা এখনও মাথার উপরে আছে বলেই, জীবনের সব ঝড় ঝঞ্ঝা থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখতে পারি। সবার মা মায়ের দীর্ঘায়ু কামনা করি।
আপনি বুঝতে পেরেছেন সময় থাকতে এটাই বড়ো কথা, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্যে।
@sduttaskitchen আমরা সব সময় ভাবি যে তারা আছে তো আমাদের সাথে, হয় তো তাই ভেবে তাদের সঠিক মর্যাদা দিতে পারি না।
তাই আমরা দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দিই না। মা বাবা না থাকলে কোনো অস্তিত্ব নেই আমাদের এই পৃথিবীতে। ভালো থাকুন সকল মা বাবা এটা কামনা করি।