Anarchy (poetry) - সংক্রমণ (কবিতা)।
এটা যেমন আমরা সকলেই জানি, এবং কিছু সংক্রমণের চিকিৎসা সম্ভব অত্যাধুনিক চিকিৎসার কারণে।
তবে, যদি সংক্রমণ বাসা বাঁধে মনে? তার কি আদেও কোনো চিকিৎসা আছে?
আমরা কখনও কি এই মনে আক্রান্ত সংক্রমণ নিয়ে ভাবিত হই?
মানসিক সংক্রমণ কিন্তু শারীরিক সংক্রমণের মতই একটা ব্যাধি, যেটা দেখা যায় শৈশব থেকেই একটু একটু করে শরীরের হাত ধরে মনে প্রবেশ করে!
অসুস্থ পারিবারিক পরিবেশ, অসুস্থ জিনগত কারণেও এই সংক্রমণ মানব দেহে নিজেদের অজান্তেই প্রবেশ করে।
অত্যাধিক হিংসা, অত্যাধিক লোভ, অত্যাধিক প্রত্যাশা এগুলো কিন্তু এই মানসিক সংক্রমণের প্রতিক্রিয়া।
অন্যের ভালো হোক, কিন্তু আমার চাইতে কম!
অন্যের কাছে এত ঐশ্বর্য, ভালো থাকা, সুখে বাঁচার অধিকার আছে, আমার জীবনে কেনো নেই?কোনো সুন্দর চেহারাকে অথবা দৈহিক গঠনকে বাঁকা নজরে দেখা, এটাও মানসিক সংক্রমণ এর কারণেই ঘটে।
একটু তলিয়ে দেখলে বোঝা যায়, শুরুটা হয়েছে ঘর থেকেই, কি অবাক হচ্ছেন?
একদম বাস্তব কথাই বলছি। একটি শিশু সেটাই রপ্ত করে, যেটা সে শৈশব থেকে দেখে বড়ো হয়।
ঘরে বড়দের আলোচনা অথবা সমালোচনা হয়তো তারা পাশে বসে শোনে না, তবে তাদের খেলার মাঝেও মা, বাবার উপস্থিত উপলব্ধি করতে সবটাই কানে পৌঁছোয়।
অনেকেই দেখবেন কথায় কথায় বলে থাকেন, ও ছোটো কিছু বুঝবে না অথবা বোঝে না!
সম্পূর্ণ ভুল কথা, আপনার এবং আমার চাইতে তারা বরং অনেক বেশি বোঝে।
সেই বৃহস্পতি বার থেকে শরীর একটু একটু করে খারাপ হতে হতে গতকাল রাত থেকে বেশি খারাপ লাগা শুরু হয়েছে।
সন্ধ্যার সময় পশ্চিমের জানালা বন্ধ করতে গিয়ে, আকাশের জমাট বাঁধা কালো মেঘপুঞ্জদের দেখে আমার মনে হলো, পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যে অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে, সেটার বিরুদ্ধে জমাট সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে প্রকৃতির মনে!
|
---|
আচ্ছা! সংক্রমণ কি শুধু
জমাট বেঁধেছে আকাশের কোণে?
নাকি, এরা দানা বাঁধতে
শুরু করেছে বহু মানুষের মনে!
অতলে তলিয়েছে, সম্মানের অর্থ,
দেশ হোক, বা দেশবাসী
সবটাই আজ ব্যর্থ!
প্রকৃতি আজ আক্রান্ত,
সামাজিক সংক্রমণে;
জমিয়ে রেখেছে সবটাই
সমগ্র গগনের কোণে!
শান্তির বার্তা কেউ আর দেয় না আজ;
প্রতিশোধ, লালসা পূরণ,
এই সংক্রমণের কাজ!
ভাঙছে শরীর, ভাঙছে মন,
ভাঙছে ইতিহাস;
দমবন্ধ প্রকৃতির তাই,
করছে হাসফাঁস!
নগ্নতা আজ অবক্ষয়ের রূপ নিয়েছে;
নিয়েছে কেড়ে সভ্যতা,
আনন্দ আজ পায় সকলে করে অসভ্যতা!
উলঙ্গ আজ সমাজ,
কেউ নেই তার লজ্জা ঢাকার
ঘরে বসে সব বুদ্ধিজীবীরা,
বলেছেন ন্যক্কারজনক ব্যাপার!
ওরে, সমালোচক!
তুইও তো, এই সমাজেরই অঙ্গ;
উলঙ্গ যে তুই নিজেও,
দেখ তাকিয়ে! করে তোর সমালোচনা ভঙ্গ।
জানিনা কবে ঘুচবে
এই সংক্রমণের কালিমা,
সম্মানের হাত ধরে নিশ্বাস নেবে পৃথিবী
ফিরবে প্রকৃতির লালিমা।
সংক্রমিত তুমি, আমি,
সংক্রমিত প্রকৃতি ও সমাজ;
সুস্থ্য করতে এই সংক্রমণ
একটি বিবেকানন্দের এই সমাজে
বড্ডো প্রয়োজন আজ!
বেশ কিছুদিন আগে, একটু সময় পেয়ে বারাক ওবামার একটি ভাষণ শুনছিলাম। যেখানে তিনি বলছিলেন, বহু বছর আগে এই শহর শিকাগোতে একজন ব্যাক্তি যার নাম স্বামী বিবেকানন্দ, তিনি শান্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলেন এবং তার ভাষণ শুরু হয়েছিল,
এই একটি লাইন হয়েছিল বিশ্বখ্যাত, কারণ এই একটি বাক্যে ছিলনা কোনো জাতি ভেদের গন্ধ, কোনো সুপ্ত উদ্দেশ্য, কোনো লালসা কিংবা কোনো লোভ।
এই বার্তায় ছিল, স্নেহ যে নজরে কারোর দিকে চাইলে, কামনা বাসনা কাজ করে না।
আজকে, পণ্যের মত মানুষের মানসিকতায় পচন ধরতে শুরু করেছে, জানিনা কতজন বুঝতে পারি, তবে বিশ্বের দিকে চাইলে আমি তো দুর্গন্ধ অনুভব করি!
(Screenshot taken from YouTube - ইউটিউব থেকে নেওয়া স্ক্রীনশট!) |
---|
চিন্তাধারায় পচন ধরেছে, তাই অনেকেই সুরক্ষার অভাববোধ করেন আজকাল!
তবে ভালো লাগলো দেখে মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি আজও অক্ষত ইউক্রেনের (Kiev) রাজধানীতে!
যেখানে যুদ্ধের দাবানল এখনও ছুঁতে পারেনি তার মূর্তিকে, বিরোধী দলনেতা(বর্তমান ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী) যার পদতলে ফুল অর্পিত করে, প্রণাম জানাতে ভোলেন নি।
এগুলোকে বলে শিক্ষা, সম্মান, যা পছন্দ অপছন্দের ঊর্ধ্বে! কিছু স্ক্রীনশট রেখেছি নিজের কথার সত্যতা নিশ্চিত করবার জন্য।
এই সংক্রণকে রক্ষা করবার প্রয়োজন এসেছে আরো একবার! শান্তির বার্তা ছড়ানো বোধহয় এই মুহূর্তে আরো একবার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
আবারো সমাজে একজন বিবেকানন্দের আবির্ভাব হোক, এই আশা নিয়ে আজকে বিদায় নিলাম। আগেও আমার লেখায় উল্লেখ করেছিলাম, যদি একটি মানুষের সৃষ্টির ক্ষমতা না থাকে, তাহলে ধ্বংস করার কোনো অধিকার তার নেই।
অনেকদিন পরে আপনার লেখা কবিতা চোখে পড়ার পর চোখ ফেরাতে পারলাম না শেষ পর্যন্ত পড়েই থামতে হল।
তবে মাঝের এই লাইন কয়টা পড়ে কৌতুকের দুটো লাইন মনে পড়ে গেল।
মনে শান্তি নাই গো পাচুদা মনে শান্তি নাই,
শান্তির মা বাড়িতে আছো নাকি,
হ্যাঁগো শান্তির মো তো অনেক আগেই মারা গিয়েছে,
এখন এই সমাজে শান্তির বার্তা দেওয়ার মানুষের খুবই অভাব সবাই নিজের শান্তির কথা চিন্তা করে অন্যের শান্তি নিয়ে কারোর মাথা ব্যথা নাই।
দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে খুব সুন্দর একটি কবিতা সহ আপনার লেখা উপস্থাপনা করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ আমার মত একজন অজ্ঞ লেখকের লেখাকে আপনার মন্তব্যের মাধ্যমে সমাদৃত করার জন্য।
বেশ বলেছেন বটে! শান্তির মা মারা গেছে, মজার ছলে হলেও বর্তমান পরিস্থিতি সেটাই বলছে।
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে, কারণ আজকাল তো মন্তব্যই চোখে পড়ে না, ভালো আর মন্দ তো পরের কথা!
ভালো থাকুন সবসময়, ও আর একটা কথা আপনার পরিবেশ সচেতনতার ফাঁকে বিভিন্ন অঙ্গ ভঙ্গির ছবিগুলো কিন্তু বেশ আকর্ষণীয় ছিল।
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.
Thnak you my dear friend @enamul17 for this heart-melting support! 😎👌