দায়িত্ত্ব এবং দায়িত্ববোধের মধ্যে পার্থক্য কি?
![]() |
---|
প্রিয় বন্ধুরা,
এখন ভারতীয় সময় অনুযায়ী ঘড়ির কাঁটায় রাত ১২ টা বেজে ২৭ মিনিট, অর্থাৎ মধ্যরাত, যখন নিজের লেখা লিখবার সময় পেলাম।
এত রাতে বেশিরভাগ মানুষ হলেই হয়তো ভাবতেন, যাক আজ আর লিখে কাজ নেই, আগামী কাল দেখা যাবে। এমনও দিন গেছে আমি ভোর চারটে পর্যন্ত কাজ করে তবেই বিশ্রামের কথা ভেবেছি।
বন্ধুরা ভেবে দেখবেন আদপেও কাল বলে কিন্তু কিছু হয় না, আজকে যাকে কাল বলছি, সেই কাল, রাত পোহালে আজ হয়ে যায়।
এবার আপনাদের মনে হতে পারে এত রাতে বসে এই কথাগুলো লেখার পিছনে কি উদ্দেশ্য হতে পারে?
উদ্দেশ্য শুধুমাত্র একটাই সেটা হলো নিজের কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা।
আজকে তাই নিজের লেখার শীর্ষক হিসেবে সেটাই বেছে নিয়েছি। আমরা উপরিউক্ত শির্ষকের দুটি শব্দ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।
একটি হলো দায়িত্ব এবং অপরটি হলো দায়িত্ববোধ।
দুটি শব্দের মধ্যে দায়িত্ত্ব কথাটি থাকলেও অর্থ সম্পূর্ণ পৃথক, আসুন তাহলে আজকে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সেই পার্থক্য যাচাইয়ের চেষ্টা করা যাক।
দায়িত্ত্ব:- |
---|
যেকোনো ক্ষেত্রেই, সেটা পরিবার , পরিজন, কাজের জায়গা, পরিবেশ সবক্ষেত্রেই আমাদের নির্দিষ্ট কিছু দায়িত্ত্ব আছে।
তবে সবচাইতে আমরা কোন দায়িত্বে খুশি হই?
কাজের জায়গায় আমরা উন্নতি করতে পারলে বেশি খুশি হই, কারণ সেই উন্নতি আমাদের পরিচয়ের পাশাপাশি আর্থিক উন্নতির একটা বাড়তি দরজা খুলতে সহায়ক।
কিছু মানুষ পরিবারের ক্ষেত্রেও দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
আবার কর্মজীবনে নিঃস্বার্থ ভাবে অনেক মানুষকে সমাজের প্রতিও দায়িত্ত্ব পালন আমি করতে দেখেছি।
![]() |
---|
|
---|
- সমস্যা দায়িত্ত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে, বা নেওয়ার ক্ষেত্রে নয়, সমস্যা সেই অর্জিত দায়িত্ত্ব সমান আগ্রহ নিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই ভাবে পালনের ক্ষেত্রে।
১.একটি ছাত্র একবার ক্লাসে প্রথম স্থান অধিকার করে প্রমাণ করলো সে দায়িত্ত্ব পালনে সক্ষম, কিন্তু যে ছাত্রটি প্রতি বছর ক্লাসে প্রথম স্থান অধিকার করে দেখাতে পারে, সে প্রমাণ করে সে দায়িত্ববোধ পালনে সক্ষম।
২.কর্মস্থানে প্রথম যখন উন্নতি পাওয়া যায়, সাথে মোটা অঙ্কের রোজগার আসে মাসের শেষে সেই দিনটি সবার কাছে বেশ আনন্দের।
কারণ সবাইকে পিছনে ঠেলে এগিয়ে গিয়ে সঠিক দায়িত্বের মধ্যে দিয়ে তার এই প্রাপ্তি।
কিন্তু বেশ কিছু মাস যাবত পরে দেখা যায় সেই ব্যাক্তি বুঝতে পারেন দায়িত্ত্ববোধ না থাকলে সঠিক কাজ সমানভাবে করে যাওয়া সম্ভব নয়, কারণ পদোন্নতির সাথে জড়িয়ে থাকে বাড়তি দায়িত্ব।
![]() |
---|
৩.দায়িত্ব গ্রহণের আগে নিজেকে যাচাই করে নেওয়া উচিত সেটা পালনে আমরা কতটা সক্ষম।
ধরুন অনেকের মা, বাবা চান তাদের সন্তান ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার অথবা এমন কোনো বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করুক, যে পড়াশোনার শেষে তাদের সন্তান নামচিন ব্যক্তির পাশাপশি মাসের শেষে মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হবে।
তবে সেই সন্তান যদি আদেও সেই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক না থাকে, এবং যদি জোর করে তাকে সেই বিষয় নিয়ে পড়ানো হয়, তাহলে সে কি দায়িত্ববোধের সাথে সেই বিষয়গুলো উত্তীর্ণ করতে সক্ষম হবে?
![]() |
---|
pixabay |
---|
এমন ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে এই সমাজে যেখানে চোখ ঘোরালেই বোঝা যাবে, আশি ভাগ মানুষ হয় লোভে, আর নয় চাপে দায়িত্ত্ব গ্রহণ করলেও সেটা সঠিকভাবে পালনে সক্ষম নন।
আর ঠিক সেই কারণে আমার মনে হয়, একটা মানুষের সর্বাগ্রে নিজের নিজেকে প্রশ্ন করা উচিত, তারমধ্যে সঠিক দায়িত্ববোধ পালনের স্পৃহা আছে কিনা, যেকোনো দায়িত্ব নেওয়ার আগে।
কারণ দায়িত্ব কোনো বস্ত্র নয়, যেটা কয়েকদিন শখ করে পরা হয়ে গেলে আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া যায় বা বিলিয়ে দেওয়া যায়।
কাজেই যেকোনো কাজের ক্ষেত্রেই নিজের একাগ্রতা না থাকলে প্রতিবছর ক্লাসে প্রথম হওয়া যায় না।
আজ এত রাতে বসে লেখার উদ্দেশ্য, কাজটার প্রতি ভালোবাসা আর সাথে আমার কাজটার প্রতি দায়িত্ববোধ। উন্নতির জন্য পরিশ্রম যথেষ্ট কিন্তু সঠিক দায়িত্ত্ববোধ পালনের পিছনে থাকতে হয় সেই কাজের প্রতি ভালোবাসা।
উপরিউক্ত কথাগুলো নিজেদের ক্ষেত্রে একবার অবশ্যই যাচাই করে দেখবেন, আর পরিশেষে বলবো ততটাই খাওয়া উচিত, যতটা হজম করতে আমরা সক্ষম।
![]() |
---|
অনেক প্রয়োজনীয় কথা বলেছেন দিদি প্রতিবারের মতো আশা করি আপনার কাছে কিছু শিক্ষা নেওয়ার এবং কি কিছু শিক্ষা নিয়ে মোবাইলটি অফ করি।
আমরা মানব জাতি যখন দায়িত্ববোধ পালন করার পর অর্থ হাতে নিতে পারি তখন সব কষ্ট ভুলে ওই দিনটাকে অনেক উপভোগ করি, কিন্তু পদোন্নতির সাথে সাথে আমাদের কাঁধে বাড়তি কাজ চলে আসে তখন আমরা কাজটিকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করি এবং নিজেদের মনুষ্যত্বের দায়িত্ববোধকে ভুলে যেতে শুরু করি।
সবশেষে আপনার কাছে আরেকটি শিক্ষা পেলাম দিদি আমাদের মানবজাতির ততটুকুই খাওয়া উচিত যতটুকু আমরা হজম করতে পারি।
ধন্যবাদ দিদি আমাদের মাঝে এত সুন্দর একটি শিক্ষানীয় পোস্ট ভাগ করে নেওয়ার জন্য ভালো থাকবেন।
প্রিয় ভাই এই মূল্যবান পোষ্ট অধ্যায়ন করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানাই। পড়ার পাশাপাশি সুন্দর একটি মন্তব্য উপস্থাপন করেছ এজন্য আবারো ধন্যবাদ।
মানুষ যখন বড় হতে থাকে তার দায়িত্ব বাড়ে ঠিক তেমনি যখন সে কর্মজীবনে পদার্পণ করে সে ক্ষেত্রেও তার একই অবস্থায় ঘটে সচরাচর।
কেননা যখন কোন শিক্ষার্থী তার পছন্দের সাবজেক্ট নিয়ে পড়তে ইচ্ছা করে কিন্তু পরিবার থেকে তার ইচ্ছাকে অবমূল্যায়ন করে তাদের ইচ্ছাকে প্রায়োরিটি দিয়ে বড় করতে চায় এটা আমাদের একটা ন্যাচার হয়ে গিয়েছে। এগুলো থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে তবেই ভালো কিছু করা সম্ভব।
পদ উন্নতির পাশাপাশি সেই উন্নতি কে ধরে রাখা এটাও একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটি পোস্টের মধ্যে মন্তব্য করার জন্য।(ধন্যবাদ)
ধন্যবাদ আপনাকেও🌹
Your post has been rewarded by the Seven Team.
Support partner witnesses
We are the hope!
দায়িত্বের সাথে শিক্ষামূলক পোস্টটি সবাই পড়ে ,সবার দায়িত্ববোধের জন্ম দেক এই কামনাই করছি। ধন্যবাদ সবাইকে
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি,, আপনি আমাদের সবার জন্য আশীর্বাদ শুরুপ কেননা আপনার প্রত্যেকটি পোস্টে এবং প্রত্যেকটি শব্দ আমাদের সবার জন্য অতি শিখনীয় একটি বিষয়।
আমাদের মাঝে দায়িত্ববোধ নিয়ে অনেক মুল্যবান তথ্য দিয়েছেন কেননা দায়িত্ব কথাটি অতি ছোট হলে ও কিন্তু এর গুরুত্ব অপরিসীম। দায়িত্ব আমাদের সবার জন্য যে কোনো বিষয় নিয়ে হতে পারে,,,কেউ পরিবারের দায়িত্ব কেউ একটি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব ইত্যাদি ইত্যাদি হতে পারে,,,, তেমনি আমাদের প্রতি আপনার দায়িত্ব রয়েছে এবং সেই দায়িত্ব গুলো আপনি আমাদের মাঝে সঠিক ভাবে পালন করে যাচ্ছেন। আপনি সব সময় ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই আশা করি।