Catastrophic impact of Remal cyclone in Dhaka city.

in Incredible India2 months ago (edited)

IMG_5009.jpeg

ঘূর্ণিঝড় রেমাল আসতেছে এটা শুনতেছিলাম সপ্তাহখানেক আগে থেকেই। কিছুটা আশংকা কাজ করলেও উপকূল অঞ্চল থেকে বেশ খানিকটা দূরে বাস করার জন্য তেমন একটা ভয় কাজ করে নাই।তারপরও বিগত বছরগুলোতে ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলার তান্ডব এর বিভিন্ন চিত্র বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে জানার কারনে একেবারে উড়িয়েও দিতে পারি নাই। আমার জীবনের সব চেয়ে ভয়াবহ রাত ছিলো ঘূর্নিঝড় সিডরের রাত।
গত পরশুদিন বিকেল থেকেই আকাশে পরিবর্তন খেয়াল করতেছিলাম।
তবে গতকালকে মেঘলা আকাশ আর কিছুটা দমকা বাতাস ছাড়া সবকিছুই স্বাভাবিকই ছিলো বলা যায়। রাতে যখন ঘুমাতে গিয়েছিলাম তখনও তেমন কিছু দেখি নাই বরং সারাদিন যে মেঘের ঘনঘটা দেখেছিলাম সেটা নেই।
আকাশ পরিস্কার হয়ে গেছে অনেটাই আর পরিস্কার আকাশে শরতের আকাশের মতো পেঁজা পেঁজা মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে।

কিন্তু সকালে চোখ মেলেই দেখলাম জানালার কাচের মাঝে বৃষ্টির পানি লেগে আছে। কিন্তু বাইরে তাকিয়ে মনে হলো যে বৃষ্টি থেমে গেছে আর আকাশও পরিস্কার লাগলো কিছুটা। ভাবলাম যে , হয়তোবা ঝড় দূর্বল হয়ে পরেছে।

IMG_5011.jpeg

কিন্তু মিনিট বিশেকে পরেই আমার চিন্তা ভাবনাকে পুরোপুরি পাল্টে দিয়ে বৃষ্টি শুরু হয় আর সেটা ক্রমশ বাড়তেই থাকে। তবে সকাল বেলা থেকে একটানা বৃষ্টি হয় নাই, বলা যায় থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে।
সকালে আমার হাসবেন্ড এর অফিস যাওয়ার সময়ই চিন্তায় পরে গেলাম যে কিভাবে যাবে চিন্তায় পরে গেলাম।কারন যদিও ছাতা থাকবে কিন্তু এই ঝড়ো বাতাস আর বৃষ্টির মাঝে আসলে ছাতা কোন কাজেই আসবে না। বড়ো ছেলের ক্লাস আছে আজকে সেও দেখলাম উঠে পরেছে আর কিছুটা বিমর্ষ মুখে ঘুরছে।

আমাকে দেখেই বললো যে, আমি অন্য জায়গায় যাওয়ার আগে ধানমন্ডি ২৭ নাম্বার কিভাবে পার হবো তাই ভাবছি। আসলে এখানে রাস্তায় পানি জমে। ওকে এখান যেতে হবে শহরের অন্য প্রান্তে আর এখান থেকে যাতায়াত বেশ কঠিনই বলা যায় ওর জন্য ।
ওকে বললাম খুব বেশি জরুরী ক্লাস কিংবা কোন পরীক্ষা না থাকলে বাদ দাও।

কিন্তু প্রাইভেট ব্যাংকে কর্মরত হাসবেন্ডকে এটা বলার কোন সুযোগই নেই। এরা বাবা -মা মারা গেলেও একদিনের বেশি ছুটি দিতে চায় না।
তাই সে বেরিয়ে গেল অন্য দিনের থেকে আগেই।আমাদের এলাকার ড্রেনেজ সিস্টেম ভালো তাই জলাবদ্ধতা হয় না কিন্তু রাস্তার ওইপাশের সোবহানবাগ গেলেই দেখা যায় যে হাটু পানি হয়ে যায় বৃষ্টি নামলে।
অবশ্য আমার হাসবেন্ডকে এই সব পানিতে পাবে না। সে বের হয়ে গেল।
বড়ো ছেলেও জানালো যে ও যাচ্ছে না।পরে অবশ্য বলতেছিলো যে, না গিয়ে ভালো করেছি, ওই দিকে বন্যা হয়ে গেছে একদম।

IMG_5012.jpeg

ঝড়ে মনে হচ্ছে যে ঘরে বাড়ি উড়িয়ে নিয়ে যাবে।কিন্তু সমস্যা হলো জানালা দরজা খোলা রাখা যাচ্ছে না কারণ পানি আসে বাইরে থেকে, যার কারনে রুমের ভেতরে বেশ গরম।

কিছুক্ষন পরে হাসনবেন্ড জানালো যে আজকে মেট্রোরেল বন্ধ থাকার কারনে আজকে ওনার কলিগদের অনেক এরই অনেক লেট হয়েছে। তার মিরপুর এর এক কলিগ মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় বাসায় যেয়ে নিজের গাড়ি নিয়ে অফিসে গিয়ে পৌছেছে ১১টার পরে। এমন অবস্থা অনেকই হয়েছে।

বুয়া কল দিয়ে জানালো যে, আজকে আসবে না কারন পানি জমে আছে রাস্তায়। বস্তি এলাকার অনেক এর বাসার ভেতরে পানি ঢুকে পরেছে। সত্যি বলতে সবচেয়ে কস্টে আছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো আর পশু -পাখিগুলো।
সন্ধ্যার সময় দেখলাম আমার রুমের বাথরুম এর জানালায় এক ছোট্ট পাখি আশ্রয় নিয়েছে। ওর কারনে ওই বাথরুমে যাওয়া বন্ধ করেছি আমরা। ছবিতে দেখলাম অনেক জায়গাতেই বন্যা হয়ে গেছে পানি জমে।

এখনো ঝড় চলতেই আছে। কখন থামবে কে জানে। এইমাত্র ট্রানফরমার ব্লাস্ট হয়ে কারেন্ট বন্ধ হয়ে গেল।তাই লেখাও থামিয়ে দিলাম।



Thank You So Much For Reading My Blog

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPmPayXPfM22kXaj3xKw37oQ9tua3JfrnuMRWWqGHfhuyA1UYheY5qjiFbP3BW...JWNUaLb1UAxtVkvpEzFvrbCpiTVHr2qys8cnVHpyrfv38wVPMc1Luya71X8AzcNNuKjF1rHwqMTUWN8r39rGXHzGTLWtLUbqpNh6DHaWG6eK2zUkgnx8ShFKdg.png

Sort:  

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

Loading...
 2 months ago 

আমরাও বেশ কয়েকদিন ধরে শুনছিলাম ঘূর্ণিঝড় আসছে। আমাদের এখানে তো দুদিন ধরে আকাশ মেঘলা ছিল। আমাদের এখানে প্রচন্ড পরিমাণে বৃষ্টি আর ঝড় হয়েছে। আমাদের নিজেদেরই বাগানে বেশ কয়েকটি গাছপালা ভেঙে গেছে। আপনি ঠিকই বলেছেন ঝড় বৃষ্টির দিনে পশু ,পাখিদের খুব কষ্ট ।খেটে খাওয়া মানুষের ও খুব কষ্ট হয়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।আপনার পোস্টটি পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছে।

 2 months ago 

আপনি ঠিকই বলেছেন কয়েক দিন ধরে টিভি খুললেই ঘূর্ণিঝড় রেমালের কথা শোনা যাচ্ছে। আমাদের এলাকার দিকে তো সেরকম ভাবে ঝড় এর তীব্রতা ছিলই না। হালকা হাওয়া এবং বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু অনেক জায়গায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি দেখা গেছে।

 2 months ago 

আমরা ইতিপূর্বে সবাই ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর কথা জানতে পেরেছি। আপনারা ঢাকা শহরে থাকেন এজন্য ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবটা তেমন একটা পড়েনি। আমাদের উত্তরবঙ্গে ও তেমন একটা প্রভাব ফেলেনি। এমনি হালকা বৃষ্টি এবং বাতাস হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের কিছু জায়গা গুলোতে একদম ভয়াবহ অবস্থা হয়েছে। মোবাইলে অনেকগুলো নিউজে দেখতে পেলাম বেশ ভালোই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এই ঘূর্ণিঝড়ের সময় আপনি এবং নিজের পরিবারকে সাথে নিয়ে সতর্ক থাকুন।

সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 months ago 

ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে আমিও শুনেছিলাম। কিন্তু এতটা ভয়ংকর হবে সেটা কখনো কল্পনাও করিনি। আসলেই ঠিক আমরা উপকূল অঞ্চল থেকে অনেকটা দূরে থাকায়, আমাদের ভয়ে অনেক কম। কিন্তু যারা চট্টগ্রামে থাকে তাদের অবস্থা খুবই ভয়াবহ হয়ে গেছে। বিশেষ করে আমার ছোট কাকা ঐদিন কল করে আমাকে জানায়। উনাদের দোকানে প্রচন্ড পরিমাণে পানি জমে গেছে। যার কারণে ব্যবসা করতে অনেক বেশি সমস্যা হচ্ছে।

উপকূল অঞ্চলে যাদের বসবাস তাদের ক্ষতি হয়েছে প্রচুর পরিমাণে। তার পরেও আলহামদুলিল্লাহ অবশ্যই সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করি। আমরা ভালো আছি। ধন্যবাদ উপরোক্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

উপকূলীয় অঞ্চলে যারা বসবাস করছে তাদের আসলে দুরবস্থার সীমা নেই এই ঝড়ের কারণে। জোয়ারের পানি এসে তলিয়ে গেছে সবকিছু। ঢাকায় চালিয়ে গেছে ড্রেনেজ সিস্টেম খারাপের জন্য। সেই সাথে খাল- বিল নদী-নালা সব মানুষ দখল করে ফেলেছে পানি যাবে কোথায়।

আর পুরো শহর ডেকে বলেছে কংক্রিটের যার কারনে পানি যাওয়ার জায়গা পায় না।গতকাল নারায়ণগঞ্জের বাসার বাড়ির সামনে দেখলাম হাটু পানি জমে গেছে। অথচ বাড়ি রাস্তা থেকে অনেক উপরে।
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে। ভালো থাকবেন সবসময়ই।

 2 months ago 

আসলে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের কাছ থেকে খবর নিলে জানা যায়। তাদের অবস্থা কিরকম, আমি মনে করি তাদের চাইতে আমরা অনেক ভালো আছি। সেজন্য অবশ্যই শুকরিয়া আদায় করা উচিত সৃষ্টিকর্তার কাছে। কেননা তাদের সবকিছুই পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাদের চাষ করা ফসল এভাবে যদি প্রতিবছর তলিয়ে যায়। তাহলে আমাদের দেশের কত পরিমান ক্ষতি হচ্ছে। সেটা আমরা একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

 2 months ago 

ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলার তান্ডব আমি দেখেছিলাম যখন দেশে ছিলাম তবে ঘূর্ণিঝড় রিমাল তান্ডব শুধু ফেসবুকের মাধ্যমেই দেখতে পাচ্ছি। বিভিন্ন গণমাধ্যম তুলে ধরছে ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্যগুলো।

বিশেষ করে নদী উপকূল গ্রামাঞ্চল গুলোতে পানিও ঝড় একসাথে হওয়ার কারণে পশুপাখি ও মানুষের ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ঘূর্ণিঝড় রিমাল সম্পর্কে জানানোর জন্য।

 2 months ago 

আসলে ঝড় বৃষ্টি আমার কাছে খুবি বিরক্তিকর লাগে।কারণ এখনে আছে এখনি নাই।কি এক বাজে অবস্থা। আপনি সিডর আর আইলার কথা বলেছেন।আসলে এই ঝড়গুলো ইতিহাস করে দিয়ে গেছে।সবার জন্য সব সময় দোয়া করি যেন সবাই এবসব মোকাবেলা করে সাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।

 2 months ago 

ঝড় প্রকৃতির নিয়ম তাই বিরক্তিকর লাগলো কিছু করার নাই, চুপচাপ সহ্য করা ছাড়া।
একদম ঠিক বলেছেন সিডর আর আইলা ইতিহাস তৈরি করে দিয়ে গেছে। আইলার কারণে যে লবণাক্ত পানি এসেছিল সেগুলোর ক্ষয়ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়নি।

আমাদের অর্থনীতিতে মারাত্মক ধাক্কা দিয়ে গিয়েছিল এই ঝড় দুটো।ভবিষ্যতে এমন ঝড় আর না হোক এই কামনা করি। আর রেমালের ক্ষয়ক্ষতিও মানুষজন দ্রুত কাটিয়ে উঠুক এই দোয়াও করি।
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে। ভালো এবং সুস্থ থাকবেন সব সময় এই শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 months ago 

ঘুর্ণিঝড় রেমালের দাপট হয়ত দেশের অধিকাংশ মানুষই টের পেয়েছে। ঘুর্ণিঝড় আগমনের কথা জানলে সবার মনই ভয়ে কেপে ওঠে। আপনার জীবনের সব থেকে ভয়াবহ রাত হলো সিডরের রাত।হ্যা ওটা রেমালের থেকেও অনেক বেশি ভয়ংকর ছিলো।

ঝড়ের সময় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করাটা অনেক বেশি কঠিন ও ঝুকিপূর্ণ আর এসময় ছাতা কোনো কাজেই আসে না। একটু বৃষ্টি হলেও শহরের রাস্তায় জল ভরে যায় যেটার কারনে যাতায়াত করা কষ্টসাধ্য একটা কাজ। ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

সত্যি বলতে আমরা ঘূর্ণিঝড় এর প্রভাব টের পেলেও আপনাদের এলাকার মানুষদের মতো করে কখনোই টের পাই না আর পাবোও না কারন ঝড়ের মূল চোটপাট দক্ষিনাঞ্চল এর উপরই পরে।
তবে শহরের মূল সমস্যা হয় জলাবদ্ধতা। কোথাও কোথাও গাছ পরে যাওয়া, কারেন্ট এর তার ছেড়া এর মাঝে যোগ হয়।
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে। ভালোই থাকবেন সবসময়।

 2 months ago 

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব আমাদের উপর দিয়ে গিয়েছে বেশির ভাগ। আর তাছাড়া বাসার ভিতরে দরজা জানালা বন্দ করে রাখলে ঝড়ের প্রভাব বোঝা যায় না তবে গ্রামে ঝড়কে খুব কাছ থেকে দেকা যায় তাই এর প্রভাবও হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায়। হয়া গাছ পড়ে অনেক মানুষের ক্ষতি হয়, ঘর বাড়ি পর্যন্ত ভেঙে যায়। ধন্যবাদ আপনাকে আমার মতামতের উওর দেওয়ার জন্য। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65733.39
ETH 3506.40
USDT 1.00
SBD 2.51