Better Life With Steem | The Diary game | April 14, 2024 |বাংলা নববর্ষ উদযাপন।
সকাল |
---|
শুভ নববর্ষ ।
অ্যালার্ম দিয়ে রেখেছিলাম কিন্তু ঘুম ভেঙেছে ফোনের রিংটোন শোনে। আমার ভাগ্নে ফোন করেছে ও মিঠামইন যাচ্ছে আলপনা দেখতে। সেখানে ১৪ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে আলপনা আঁকা হয়েছে। আমি ওর সাথে যাবো কিনা সেটা জানার জন্য কল দিয়েছিল।কারণ ও জানে আমরা প্রায় প্রতিবছরই পয়লা বৈশাখের আগের রাতে আলপনা দেয়া দেখতে বের হই ।
যদিও এ বছর সারাদিন জার্নি করার কারণে আর বের হওয়া হয়নি বের হওয়া হয়নি। কিন্তু ওকে মানা করে দিতে হয় দুটো কারনে একেতো প্রচন্ড গরম আর আমাদের আজকে পান্তা ইলিশ এর দাওয়াত আছে জয়পাড়াতে।সেখানে আমার হাসবেন্ড এর বন্ধু কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধবকে নিয়ে নববর্ষ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নববর্ষের দিনে ঘুম ভেঙ্গে প্রতি বছরই আমি কিছুটা স্মৃতি কাতর হয়ে পড়ি। আমার ছোটবেলার নববর্ষ মানেই ছিল ঢোলের শব্দ। সারা রাত সারারাত শ্মশানে কালী পুজো হতো আর সেখান থেকে বিভিন্ন দল মুখোশ পরে বিশাল বিশাল দা জাতীয় জিনিস নিয়ে বার বার আমাদের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে নাচতে নাচতে আসা-যাওয়া করতো আর তাদের সাথে থাকতো মৃত মানুষের মাথা। ধূপের গন্ধে চারপাশ ভরে যেত। এটা দেখার জন্য ভোর থেকে দাঁড়িয়ে থাকতাম।
বিয়ের পরে আর একবারের জন্যও বাবার বাড়িতে নববর্ষের সময় থাকা হয়নি আমার। প্রতি বছর এই নববর্ষের দিন এই গল্প শোনাতে শোনাতে আমি সবাইকে বিরক্ত করে ফেলেছি।যদিও কেউ কিছু বলে না, চুপচাপই শোনে। অবশ্য মাঝে মাঝে ফোড়ন কাটে।
ঘুম ভেঙে যাওয়ার পরেও আমি অবশ্য বিছানা ছেড়ে উঠি নাই বরং ঘাপটি মেরে চোখ বন্ধ করে শুয়েছিলাম আর শুয়ে শুয়ে মাঝে মাঝে চোখ খুলে আমার হাসবেন্ড এর সবাইকে উঠানোর চেষ্টা দেখতেছিলাম। এই ভদ্রলোক এর কোথাও যাওয়ার ব্যাপারে সবচাইতে বেশি এনার্জি। ঈদের আগের দিন থেকে প্রতিদিনই জার্নি করতেছি তারপরও এতো এনার্জি।
যা-ই হোক, শেষ পর্যন্ত উঠে সবাই রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হতে হতে প্রায় সাড়ে সাতটা বেজে গেল। রাস্তা-ঘাট একদমই ফাঁকা। নববর্ষেরর দিন এমন দৃশ্য বিরল। কিন্তু এবার ঈদের পরের দিন হওয়ার কারনে এই অবস্থা। মানুষ গ্রামে চলে গেছে পরিবার এর সাথে ঈদ করার জন্য।
ঈদের দিন সকালে অনেক কুয়াশা ছিলো কিন্তু আজকে সেরকম কুয়াশা দেখতে পেলাম না, আছে কিন্তু সেটা অনেক কম। জয়পাড়াতে পৌছে দেখি আমরাই প্রথমে এসেছি। ভাবি আর এক ভাই দুজনে মিলে ইলিশ মাছ ভাজতেছে আর উচ্ছে ভাজি, ডাল ভর্তা, পটল ভাজি রাখা। ভাবি জানালো আরো ভর্তা নিয়ে নিয়ে আসতেছে।এছাড়াও সাথে বিভিন্ন ধরণের জুস্ ,তরমুজ ,বাঙ্গি ,মিষ্টি ,পায়েস ,পুডিং ইত্যাদি ছিলো।
একে একে সবাই চলে আসলো। অবশ্য খুব একটা মানুষও না। সবাই মিলে মজা করে বিভিন্ন ধরনের ভর্তা আর ইলিশ মাছ ভাজা দিয়ে পান্তা খেয়ে নিলো।
এরপর আমরা সবাই মিলে সব ভাইদের কাছ থেকে ঈদের সালামি আদায় করলাম। তারা দিবে না আর আমরা নিবোই।
দুপুর |
---|
আমাদের দুপুরে আবার পাশেই আরেক জায়গাতে দাওয়াত ছিলো তাই আমরা দুপুরে সেখানে চলে যাই। এরপরই শুরু হলো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, কিছুক্ষনের মাঝেই সেটা ঝড়ে পরিনত হলো। প্রচন্ডরকম গরম এর মাঝে এই ঝড় যেন আশীর্বাদস্বরূপ হয়ে আসলো।চারপাশটা মূহুর্তের মাঝে ঠান্ডা হয়ে গেলো।
রাত |
---|
আমরা সন্ধ্যার পরে বের হয়ে পরলাম ঢাকার উদ্দেশ্য। প্রচুর পরিমানে বাতাস আর বজ্রবৃষ্টির মাঝে আমরা আড়িয়াল বিল পার হয়ে আসলাম। কিন্তু আরো খানিকটা আসার পরে দেখলাম শুকনো খটখটে রাস্তা। ঢাকাতেও দেখলাম কোন বৃষ্টি হয় নাই আর প্রচুর গরম। রাতে আর কিছু রান্না করি নাই। আমাদের সাথে দই আর তরমুজ ছিলো। তরমুজ কেটে দিলাম আর সাথে লাচ্ছি বানিয়ে দিলাম।
রাতে ডিসকর্ডে ঢুকে দেখলাম দিদি মেনশন দিয়েছিলেন কিন্তু আমি না থাকার কারনে দেখতে পাই নাই। পরে ডিসকর্ডে কথা বলি দিদিদের সাথে।
আর এভাবেই নববর্ষের দিনটা কেটে যায় আমার।
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 0/4) Get profit votes with @tipU :)
প্রথমেই আপনাকে বাংলা নববর্ষের অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। আপনার পোস্ট পরিদর্শন করে বুঝতে পারলাম। আজকের দিনটা আপনার অনেক বেশি ব্যস্ততা এবং আনন্দের মধ্যেই কাটিয়েছেন। আসলে ভাই বোনের মধ্যে এই সম্পর্কটা থাকে অটুট। আমরা বোনেদের অনেক বেশি ভাইয়ের প্রতি অধিকার থাকে। আমিও আমার ভাইয়ের কাছ থেকে ঈদ সালামি আদায় করে নিয়েছিলাম। ধন্যবাদ পরিবারের সাথে কাটানো আনন্দঘন মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।
আপনার প্রতিও নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইলো। আসলে প্রতিবছরই পহেলা বৈশাখে কিছু না কিছু থাকেই।ইচ্ছে থাক ব ানা থাক যেতেই হয়।
ভাই বলতে আসলে আমি আমার নিজের ভাইদের কথা বলি নাই। আমরা হাসবেন্ড এর বন্ধুদের কথা বলেছি।তাদের কাছ থেকে সালামি নিয়েছিলাম আমরা।
আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো।
এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন সবসময় এই শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
ম্যাম প্রথমেই আপনাকে জানাই নববর্ষের শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ। আপনি নববর্ষের দিনটি দারুণভাবে পার করেছেন। ভাইয়াকে নিয়ে এবং বিভিন্ন বন্ধু বান্ধবিদের নিয়ে পান্তা ইলিশ খাওয়ার আয়োজন করেছেন। এমন আনন্দের মহুর্তগুলোতে উপস্থিত থাকা সত্যি সবাই কামনা করে।
যাইহোক পহেলা বৈশাখ উদযাপন আমাদের বাঙ্গালি জাতির ঐতিহ্যকে বিশেষভাবে উপস্থাপন করে। জাতি হিসেবে আমাদেরও যে কিছু সংস্কৃতি আছে সেই সমন্ধিত বার্তা প্রদান করে।
ভালো থাকবেন ম্যাম। আপনার আগামী দিনগুলো সুখের হোক।
আপনার প্রতিও নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইলো। আসলে এধরণের প্রোগ্রামগুলোতে যেতেই হয়।আর এতে আমার হাসবেন্ড এরই বেশি আগ্রহ। সে বেড়াতে আর সবার সাথে সময় কাটাতে খুব পছন্দ করে।
অবশ্য আমারও খারাপ লাগে না।
একদমই ঠিক বলেছেন যে,
পহেলা বৈশাখ উদযাপন আমাদের বাঙ্গালি জাতির ঐতিহ্যকে বিশেষভাবে উপস্থাপন করে।
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে। এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন সবসময় এই শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
প্রথমে আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে জানাই পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ। আমাদের বাংলাদেশে এই সর্বপ্রথম ১৪ কিলোমিটার আলপনা রাস্তায় এঁকেছে। এর আগে কোথাও কখনো এরকম লম্বা রাস্তা আলপনা তৈরি করেনি।
আপনাদের এক গেস্টের বাসায় পান্তা ইলিশের দাওয়াত ছিল। ঢাকায় পহেলা বৈশাখের দিন বৃষ্টি বজ্রপাত হয়েছে। আর আমাদের এদিকে বৃষ্টির কোন নাম গন্ধ নেই।
পহেলা বৈশাখের সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার এবং আপনার পরিবারের প্রতিও নতুন বছরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল। একদম ঠিক বলেছেন মিঠা মইনের ১৪ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে আলপনা আঁকা হচ্ছে আর এত বড় আল্পনা আগে আমাদের দেশের অন্য কোথাও হয় নাই।
সংসদ ভবনের সামনের রাস্তা মানিক মিয়া এভিনিউতেও বড় আলপনা আঁকা হতো কিন্তু সেটা মিঠা মইনের এর ধারে কাছেও না।
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে। এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো এবং সুস্থ থাকুন এই শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
বাংলা নববর্ষ মানেই তো জীবনের পুরাতন সকল মলিনতা দুর করে নতুনভাবে শুরু করা। নববর্ষে পান্তা ভাত আর ইলিশ মাছ তো বাঙালির প্রিয় খাবার। যখন স্কুলে পড়তাম তখন প্রতি বছরই সকলে মিলে নববর্ষে এসবের ব্যবস্থা করতাম।
ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে।
পহেলা বৈশাখের বেশ আয়োজন করেছিলেন সেগুলো সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া করে নিলেন তারপর দেখলাম আকাশের বৃষ্টি হয়েছে যাই হোক আজকের দিনটি আপনার বেশ ভালোই কেটেছে ৷
ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷