কুয়াশা দেখতে একদিন ভোরে।
![]() |
---|
কুয়াশা দেখতে যাব বেশ কদিন আগেই প্ল্যান ছিলো কিন্তু গতকাল ভোর বেলা যে কি হয়েছিল, কিছুতেই ঘুম ভাঙতে চাচ্ছিলো না।ওই দিকে আমার বড় ছেলে আর ওর বাবা ডাকাডাকি করতেই ছিলো। পরে ৬টার দিকে টেনে তুলতে পেরেছে আমাকে। কতটা কুয়াশা পরছে দেখার জন্য বারান্দায় গিয়ে দেখলাম পূবের আকাশ লাল হয়ে আছে তবে কুয়াশা খুব একটা নেই। দেখে মনটাই খারাপ হয়ে গেল।
আমার ছেলেও বলতেছিলো যে, আজকে তোমার জন্যই সব কুয়াশা শেষ হয়ে গেল।আসলে বিয়ের পর থেকেই আমার কুয়াশাপ্রীতির কারনে অনেক অত্যাচারই সহ্য করেছে আমার বর বেচারা। শুরুর দিকে কুয়াশা নিয়ে তার কোন আগ্রহই ছিলো না কিন্তু এতগুলো বছর একসাথে থাকার কারনে এখন সেটা তার মাঝেও কিছুটা সংক্রমিত হয়েছে। আবার এটা আমার ছেলেরাও পেয়েছে।
জেনেটিকালিই কিছু জিনিস ছড়িয়ে যায় এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে।
যত দ্রুত সম্ভব রেডি হয়ে নিচে নেমে গেলাম।বাসা থেকে যখন বের হলাম রাস্তা একদমই ফাঁকা আর কুয়াশাও নেই। কিন্তু যতই সামনের দিকে এগুচ্ছিলাম ততই এর পরিমান বাড়তেছিলো ক্রমশ।গাবতলির কাছাকাছি যাওয়ার পরে মনে হলো হঠাৎ করেই যেন কুয়াশাকে বস্তা ভর্তি করে এনে ঢেলে দেয়া হয়েছে।
এত কুয়াশার মাঝে ছোট ছেলেটাকে মিস করতেতিলাম কারন ওকে বাসায় রেখে এসেছি ওর এক্সাম এর জন্য। সামনে কিছুই দেখা যাচ্ছিলো না বলা চলে। আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো,'
অসীম কুয়াশা আসে শূন্যতা ঘিরি'।
আমার মা চমৎকার কবিতা আবৃত্তি করতো।যার কারনে আমার মাঝে তেমন একটা কবিতা পড়ার অভ্যাস না থাকলেও টুকরো টুকরো অনেক কবিতার লাইনই মুখস্থ আছে, যদিও সেসব কবিতার বেশিরভাগ এরই লেখক কিংবা কবিতার নাম জানি না আমি।
গাড়ির সামনের গ্লাস ঘোলাটে হয়ে যাওয়ার কারনে গ্লাস খোলা ছিলো। যার কারনে এত কুয়াশার মাঝেও চোখে ধূলা ময়লা ঢূকতেছিলো।তবে কুয়াশার কোন ঘ্রাণ পাচ্ছিলাম না।।আসলে কুয়াশার একটা নিজস্ব ঘ্রান আছে যেটা একটু গ্রাম কিংবা খোলামেলা জায়গায় গেলেন বেশি পাওয়া যায়।
এই কুয়াশার ঘ্রান নিতে নিতে এর মাঝে হাঁটার অন্য রকম একটা অনুভূতি হয়।অবশ্য কুয়াশার মাঝে হাঁটা আর জীবনের পথে হাঁটা এই দুটোর মাঝে আমি বেশ মিল খুঁজে পাই।দুটোই যেন অনেকটা টুইলাইট জোন,আর কোথায় যে কখন ধাক্কা লাগবে তার কোন নির্শ্চয়তা নেই।
ঢাকায় যে আমি কখনো ঘ্রান পাই নাই এমন না সেটা মিক্সড।
এর মাঝে পেট্রোল এর গন্ধ কিংবা কখনো কখনো খোলা ড্রেইনের গন্ধও পাওয়া যায়।
কুয়াশার সবচেয়ে যে জিনিসটা ভালো লাগে সেটা হলো, পরিচিত জায়গাগুলোও কেমন জানি অচেনা হয়ে যায়। সবকিছু সাদায় সাদায় ভরে যায়।মনে হয় আমি কোন ফেইরিটেলের জগতে আছি।নিজেকে অনায়াসে কল্পনার জগতে ডুবিয়ে দেয়া যায় কিছু সময়ের জন্য।
আমার কাছে মনে হয় মানুষ যত বড়োই হোক না কেন তার একটা নিজস্ব জগৎ থাকা উচিত, তার কল্পনার জগত।যেখানে সে যা খুশি ইচ্ছে করতে পারবে। যা সে পায় নাই সেটা সেই জগতে কিছু সময়ের পেলে ক্ষতি কি। যদিও এমন কিছুই সম্ভব হচ্ছিলো না আমার ছেলে আর তার বাবার বকবকানিতে।
আবারও কই থেকে যেন কবিতার লাইন ভেসে বেড়াচ্ছিলো ওদের কথার ফুলঝুরির মাঝেই,কুয়াশায় মেঘ ছড়িয়ে আছে তেপান্তরের মাঠে। আমি সেই মেঘের মাঝে ভাসতে ভাসতেই যেন এগিয়ে যাচ্ছিলাম দূর থেকে আরো দূরে।
◦•●◉✿ Thanks Everyone ✿◉●•◦
Posted using SteemPro Mobile
◦•●◉✿ Thanks Everyone ✿◉●•◦
সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীটাকে সুন্দর করে সাজিয়েছে বৃষ্টি কখনো, মেঘ কখনো, রোদ কখনো। এই শীতের কুয়াশা ঢাকার চার দেয়ালে বসে এই কুয়াশা দেখার সম্ভব না। তাইতো আপনি, ভাইয়া ও বড় ছেলেকে নিয়ে কুয়াশা দেখতে বের হয়েছেন। এত সুন্দর ভাবে সৃষ্টিকর্তা আমাদের জন্য সাজিয়েছেন আমরা তার কাছে সবসময় কৃতজ্ঞ থাকব। সাদা কুয়াশার চাদর প্রকৃতিকে ঢেকে রেখেছে যত সময় বাড়ছে সূর্য ওঠে আস্তে আস্তে সে আবার বিলীন হয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে মনে হয় বয়সের কথা চিন্তা না করে সেই মনটাকে ছোটবেলার মতো আবার সবকিছু দেখতে। নিজের ভিতর একটা মন থাকে সেটা কখনো বয়স্ক হয় না। সে চিরন্তর একই রকম থেকে যায় তাই বলতেছে আমাদের বয়স হলেও আমাদের মনটা কিন্তু একই রকম থেকে যায়। আপনাদের ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে । আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আপনার মন্তব্য সত্যি আমার খুব পছন্দ হয়েছে। এত চমৎকার করে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
আপনার কুয়াশা দেখার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। আসলে শহরের মধ্যে বসবাস করলে তেমন একটা কুয়াশার দেখার মেলে না। যারা গ্রাম অঞ্চলে বসবাস করে তারাও ভোরবেলা উঠলে অনেক কুয়াশার দেখা পায়।কারণ শহরের থেকে গ্রাম অঞ্চলে শীত কুয়াশাটা বেশি পড়ে। আপনার এরকম পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলে যে যেখানে থাকে তার কাছে ওই জায়গার তেমন কোন গুরুত্ব থাকে না।যারা শহরে থাকে তাদের কাছে গ্রাম খুব ভালো লাগে আবার গ্রাম এর মানুষ শহরে আসলে অনেক কিছুই পছন্দ করে।
ধন্যবাদ আপনাকে এত চমৎকার করে মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
কুয়াশার সবথেকে ভালো লাগা এটাই, যখন চেনা জায়গাও অনেচা লাগে। ১০ হাত দূরের জিনিস ও দেখার উপায় থাকে না, বা কোনটা রাস্তার মোড়, সেটাও বুঝতে না পারার যে ব্যাপারটা থাকে। কুয়াশার ঘ্রাণ টা ভয়ে নেয়া হয় না, কারণ নাক দিয়ে ঢুক্লেই পানি পড়া শুরু হয়ে যায়, একদম ই সহ্য হয় না।
ধন্যবাদ কুয়াশা ও ভ্রমণ নিয়ে সুন্দর লেখনীর জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
আপনি ঠিক বলেছেন কুয়াশার একটি ঘ্রান রয়েছে যেটা আমারা কুয়াশার মধ্যে থেকে অনুভব করলেই বুঝতে পারবো ৷ আপনারা আজকে কুয়াশা দেখার জন্য খুব সকালে বের হয়েছিলেন আর সবাই মিলে শীতের সকালে কুয়াশা ভরা দৃশ্য গুলো উপভোগ করলেন ৷
আপনার তোলা প্রত্যেক টি ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে ৷
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
জেনেটিক্যালি শেষ পর্যন্ত কুয়াশা রোগ সংক্রামিত হলো। তাও ভালো। সৃষ্টিকর্তা যা করেন তা আমাদের সকলের মঙ্গলের জন্যই করেন। আপনার পোস্ট করা লাইনটার পরে আমি যদি এই লাইনটা যোগ করি তাহলে কিরকম বিতিকিচ্ছিরি হয়ে যাবে পরিবেশটা, ”তার মধ্যিখানে আমি যদি ধরাই একটি বিড়ি।” জাস্ট ইয়ার্কি করলাম, সিরিয়াসলি নেবেন না। আপনার কুয়াশাপ্রীতি দেখতে দেখতে আমি সত্যি অবাক হয়ে যাচ্ছি।
হা হা হা..ঠিকই বলেছেন এটা একধরনের রোগই বোধকরি।আপনি বিড়ি ধরালে তেমন কিছু হতো না শুধু কুয়াশার মাঝে বিড়ির সুগন্ধি ছড়িয়ে যেত আর আমি লিখতাম এই যুগান্তকারী সুগন্ধি সৃষ্টিকারী ব্যাক্তির নাম পীযুষ মিএ😑
আপনারা কুয়াশা দেখার জন্য বাসা থেকে বের হয়েছেন। খুব সকালে কিন্তু আমাদেরকে কুয়াশা দেখার জন্য কোথাও যেতে হয় না। বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন চারপাশে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে দেখি প্রচুর পরিমাণে কুয়াশা, তখন এমনিতেই মন ভালো হয়ে যায়।
ঢাকা শহরে এই এক সমস্যা, সকাল হোক বিকেল কিংবা রাত, আবর্জনার গন্ধ ডাস্টবিনের পানির গন্ধ। সেই সাথে পেট্রোলের গন্ধ অবস্থায় একেবারেই খারাপ হয়ে যায়। যেটা একেবারেই আমি সহ্য করতে পারি না। ধন্যবাদ আপনাকে পরিবারের সবাই মিলে কুয়াশা দেখতে যাওয়ার মুহূর্তটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।
শহরে পেট্রোল এর গন্ধ থাকবে এটাই সাভাবিক তবে আমাদের নাকে লাগে না কারন এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি আমরা। এখন আবর্জনা ও পাবেন না খুব একটা , তবে কিছু কিছু এলাকায় আছে। পানির গন্ধও অনেকটাই কমেছে আগের থেকে। আর আমি যেখানে থাকি সেখানে একদমই নেই তবে কয়েকবছর আগে ছিলো।
তবে যাই বলি না কেন ফ্রেশ হাওয়া পেতে হলে গ্রামে যেতে হবে।
চমৎকার মন্তব্য এর জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন সবসময়।