পদ্ম ফুলের কথা। By @sayeedasultana
যে শতদল পদ্ম রাজে
তারি মধু পান করেছি
ধন্য আমি তাই
রবিঠাকুরের লেখা লাইনগুলো মাথার মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের বিশাল লেকের জলরাশিতে লালপদ্ম দেখতে দেখতে।শুধু রবি ঠাকুরই না কবি জীবনানন্দ দাশও মুগ্ধ হয়ে লিখেছিলেন,
তোমায় আমি দেখেছিলাম বলে
তুমি আমার পদ্মপাতা হলে
শিশির কনার মতোন শূন্য ঘরে
শুনেছিলাম পদ্মপএ আছে অনেক দূরে
খুঁজে খুঁজে পেলাম তাকে শেষে।
আবার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখাতেও পাওয়া যায় পদ্মের নাম।
শুধু কবিদের কবিতায় না বিভিন্নভাবে পদ্মের নাম এসেছে বাংলা সাহিত্যে। গোবরে পদ্মফুল’ বাংলা ভাষায় বাগধারা হিসেবে বহুল প্রচলিত। আবার পদ্মাসন যেমন জনপ্রিয় একটা যোগাসন, তেমনি পবিত্রতা বা সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবেও পদ্মের নাম আসে কিংবা কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন। এককথায় বলা চলে পদ্ম নামটা এসেছে নানাভাবে।নানা ফুলের মধ্যে এখন প্রকৃতির বর্ষার আগমনে ফুটছে পদ্মফুল। অনেক জলাশয়ে এখন দেখা মিলছে পদ্মফুলের। এই ফুলের রং মূলত লাল সাদা ও গোলাপীর মিশ্রণ যুক্ত। এছাড়াও নানা প্রজাতির পদ্ম ফুল দেখতে পাওয়া যায়। এর মাঝে রয়েছে লাল, সাদা ও নীল রঙের ফুল। আগে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি প্রাকৃতিক জলাধার হাওর-বাঁওড়, খালে-বিলে ও ঝিলের জলে পদ্ম ফুল ফুটতে দেখা যেত। সাধারণত বর্ষা মৌসুমেই ফুল ফোটা শুরু হয়। তবে শরতকালে অধিক পরিমাণে ফুল ফোটে এবং হেমন্তকাল অবধি এর ব্যপ্তি থাকে । ফুটন্ত ফুলের বাহারি রূপ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। যদিও বই কিংবা ক্যালেন্ডারের পাতায় ছাপা ছবির বাইরে এই ইট-কাঠের নগরে বেড়ে ওঠা বাসিন্দাদের স্বচক্ষে বিলে ঝিলে ফোটা পদ্মের শোভা দেখার সুযোগ খুবই সীমিত। পদ্ম ফুল পানিতে ভাসমান এক জলজ উদ্ভিদ। অনেকে এই ফুলকে আবার জলজ ফুলের রানীও বলে থাকেন।অনেকের মতে এই ফুল পুনর্জন্ম ও নতুন দিনের সূচনা নির্দেশ করে। এর একটি চমৎকার জীবনচক্র রয়েছে।
এর শিকড় কাদায় আটকে থাকে আর এই কারনে এটি প্রতি রাতে জলে নিমজ্জিত হয় এবং পরের দিন অলৌকিকভাবে পুনরায় প্রস্ফুটিত হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে অনেক সংস্কৃতিতে পুনর্জন্ম এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানের সাথে যুক্ত করে থাকে।একে জীবন, মৃত্যুর সাথে তুলনা করে।আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে আমরা সাধারণত তিন ধরনের পদ্ম ফুল দেখতে পাই- লাল পদ্ম, শ্বেত পদ্ম ও নীল পদ্ম। নীল পদ্ম যদিও দেখা যায় না বললেই চলে।এটা সাধারণত আমরা গল্প উপন্যাসেই দেখা পেয়ে থাকি।পদ্ম ফুল পুনর্জন্ম এবং নতুন সূচনা নির্দেশ করে। কারণ জলাবদ্ধ এলাকায় কাদা থেকে ফুল জন্মে। প্রতি রাতে, তারা ধীরে ধীরে বন্ধ হয় এবং কাদায় ফিরে আসে, এবং প্রতিটি সকালে তারা আবার প্রস্ফুটিত হয়, ঠিক আগের মতই সুন্দর।পদ্মের সত্যিই একটি অনন্য জীবনচক্র রয়েছে। এর শিকড় কাদায় আটকে থাকার কারণে, এটি প্রতি রাতে নদীর জলে নিমজ্জিত হয় এবং পরের দিন অলৌকিকভাবে পুনরায় প্রস্ফুটিত হয়, ঝকঝকে পরিষ্কার। এই প্রক্রিয়াটি অনেক সংস্কৃতিতে ফুলকে পুনর্জন্ম এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানের সাথে যুক্ত করে। জীবন, মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের প্রতিদিনের চক্রের সাথে।অনেক ধর্মের মানুষের কাছেই এটা একট পবিত্র ফুল। পদ্ম হিন্দু সনাতনীদের কাছে অতি প্রিয় ও পবিত্র একটা ফুল বলে বিবেচিত হয়ে থাকে। বিশেষ করে দুর্গাপূজাতে পদ্মফুলের বেশ চাহিদা রয়েছে । দেবতারা পদ্মের সিংহাসনে বসে থাকেন। আবার বৌদ্ধ ধর্মের গল্প বলে যে বুদ্ধ একটি ভাসমান পদ্মের উপরে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং পৃথিবীতে তাঁর প্রথম পদ্মফুল ফুটেছিল।
আবার প্রাচীন মিশরীয়দের মতে এই ফুলটি মহাবিশ্বের প্রতিনিধিত্ব করে থাকে।পুরো পৃথিবী জুড়েই ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে পদ্ম ফুল সংগ্রহ ও বিক্রয় অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এি পদ্ম ফুল ভেষজগুণ সমৃদ্ধ ফুল গাছ। একে অনেক দেশেই খাবার হিসেবে খাওয়া হয়।আমাদের দেশেওএর ডাটা সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। এই ফুল মানব দেহে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে অতুলনীয় ভুমিকা পালন করে। এটা চুলকানি ও রক্ত আমাশয় নিরাময়ে বেশ উপকারী।
10% of this payout for @meraindia
◦•●◉✿ Thank Everyone ✿◉●•◦
◦•●◉✿ Thank Everyone ✿◉●•◦