Incredible India monthly contest of September #2| My inspiration of life!
|
---|
Hello,
Everyone,
আশাকরছি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে।
আজ আমি অংশগ্রহণ করতে চলেছি আমাদের কমিউনিটি কর্তৃক আয়োজিত সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের কনটেস্টে। ভেবেছিলাম এই সপ্তাহের বিষয়বস্তু দেখে অন্ততপক্ষে আমাদের কমিউনিটির বেশ কিছু ইউজার এই কনটেস্ট অংশগ্রহণ করবেন। তবে দুঃখের বিষয় এখনও পর্যন্ত খুব বেশি জনের পোস্ট চোখে পড়েনি।
যাইহোক নিজের জীবনের রোল মডেল হিসেবে আমি কাকে বেছে নিয়েছি এবং কেন, সেই সকল বিষয়েই কিছু কথা আজ এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আশা করছি আপনাদের পড়তে ভালো লাগবে। তবে শুরু করার আগে আমি আমার তিনজন বন্ধু @shiftitamanna, @lirvic ও @whizzbro4eva কে এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করার আমন্ত্রণ জানাই।
|
---|
নিজের জীবনের রোল মডেল হিসেবে আমি আমার মা কেই বেছে নেবো। যদিও আমাদের সমাজে এমন অনেক কৃতি মানুষ রয়েছেন, যাদের কাছ থেকে অনেক ভালো কিছু শেখার আছে। যাদের জীবনের বিভিন্ন কাহিনী আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে অনুপ্রাণিত করে, তবে সেই সকল মানুষের উর্ধ্বে গিয়েও আমার জীবনে আমার মা ই আমার রোল মডেল।
আজ প্রায় ১৩ বছর হলো মা আমাকে ছেড়ে পরলোকে চলে গেছেন। কিন্তু তবুও তার শিক্ষা, তার নীতিবোধ আমাকে সর্বক্ষণ ঘিরে থাকে। কথায় আছে ঈশ্বর আমাদের সবার কাছে পৌঁছাতে পারেন না, এই কারণে তিনি সবার জীবনে মা কে পাঠান, যাতে মায়ের মাধ্যমেই ঈশ্বরের ভালোবাসা, আদর, ও স্নেহ আমরা পেতে পারি।
তাই মায়ের চলে যাওয়ার পর মনে হয়েছিল জীবন থেকে মায়ের ভালোবাসা হারিয়ে গেল চিরতরে। তবে আমার মনে হয় আমার মা চাননি আমার জীবন থেকে তার ভালোবাসা চিরতরে মুছে যাক, সেই কারণেই বেশ কয়েক বছর পরে হলেও তিনি আর একজনকে আমার জীবনে পাঠিয়েছেন।
সে অন্য কেউ নয় আমাদের অ্যাডমিন ম্যাম। আপনারা অনেকেই জানেন, কর্মসূত্রে তার সাথে আমার পরিচয়। তবে প্রথমদিন থেকেই কাজের বাইরেও তার প্রতি আমার একটা অন্য অনুভূতি জন্মেছিলো। ঠিক যেমনটা আমি মাকে ভয় পেতাম, প্রথম দিন ম্যামকে দেখে আমার সেই ভয় অনুভূত হয়েছিল।
জীবনের বেশ কিছু শিক্ষা আমি যেমন আমি নিজের মায়ের থেকে পেয়েছি, ঠিক তেমনি অনেক শিক্ষা আমি পেয়েছি অ্যাডমিন ম্যামের কাছ থেকেও। মা থাকলে ঠিক যেভাবে আমাকে বোঝাতেন, তেমনভাবেই তিনিও বুঝিয়েছেন। অন্যায় করলে মায়ের মতনই বকেছেন এবং ভীষণ খারাপ দিনে বুকে জড়িয়ে ধরেছেন। ঠিক মাকে জড়িয়ে ধরার মতো শান্তি পাই ম্যামকে জড়িয়ে। সত্যি বলতে ওনার গায়ে মা মা গন্ধ পাই আমি।
|
---|
অবশ্যই আমি বিশ্বাস করি আমাদের জীবনকে সঠিক পথে চালিত করার জন্য একদম ছোট বয়স থেকেই কিছু শিক্ষা প্রয়োজন। পুঁথিগত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার ক্ষেত্রে আমরা স্কুল, কলেজ এই সমস্ত মাধ্যমে যেতে পারি, যেটা আমাদের জীবনেরই একটি অংশ। তবে সত্যিকার অর্থে জীবনকে পরিচালিত করতে গেলে, এই শিক্ষার বাইরেও মানুষ হিসেবে আমাদের কিছু মানবিকতার শিক্ষা অবশ্যই শেখা উচিত।
শুধুমাত্র পুঁথিগত শিক্ষা আমাদেরকে মানুষ হিসেবে উন্নত করতে পারে এ কথা আমি একেবারেই বিশ্বাস করি না। বরং পুঁথিগত শিক্ষা কিছু কম থাকলেও, যদি সঠিক অর্থে মানবিকতার শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া যায়, তাহলেও মানুষ হিসেবে গর্ব করা সম্ভব। ঠিক যেমন ভাবে আমি আমার মাকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
তিনি পুঁথিগত শিক্ষায় একেবারেই শিক্ষিত ছিলেন না ঠিকই, কিন্তু মানুষ হিসেবে তিনি এতটাই ভালো ছিলেন যে, আজ ১৩ বছর বাদেও আমাদের গ্রামের সেই সকল মানুষ তার কথা বলেন যারা মাকে চিনতেন।
আমার মনে হয় এখানেই মানুষ হিসেবে আমার মায়ের জীবন সার্থক হয়েছে। সন্তান হিসেবে আমরা তাকে কতখানি গর্বিত করতে পেরেছি জানি না, তবে আমাদের মা হিসেবে তিনি আমাদের গর্বিত করেছেন সর্বদা। এই কারণে আজও যখন আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে, চোখের কোণে জল নিয়ে কেউ মায়ের কথা বলে, মনে মনে গর্ববোধ করি মায়ের সন্তান হিসেবে।
|
---|
আমার জীবনে যা কিছু ভালো সবটাই মায়ের অবদান। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে বাবারা সন্তানদেরকে খুব বেশি সময় দিতে পারেন না, কারণ তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকে কিভাবে পরিশ্রম করে পরিবারের সকলের সকল প্রয়োজনীয়তা মেটাবেন।
তাই ছোটবেলা থেকে বাবাকে দেখেছি অক্লান্ত পরিশ্রম করতে। আর মাকে দেখেছি খুব কম আয়ে, সুন্দর ভাবে দক্ষতার সাথে সংসার সামলাতে। মায়ের থেকে এত কিছু শিখেছে যা হয়তো একটা পোস্টে বলে শেষ করা যাবে না। তবে কিছু কথা অবশ্যই আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
➡️ছোটবেলা থেকে খুব সাধারণ ভাবে কিভাবে জীবন যাপন করা যায়, সেটা আমার মায়ের থেকে শেখা। জীবনধারণ সব সময় আর্থিক পরিস্থিতির নিরিখে মূল্যায়ন করা হয় না, একথা মা খুব ছোটবেলাতেই আমাদের শিখিয়েছিলেন। তিনি সবসময় বলতেন, - "আর্থিক পরিস্থিতি যেন কখনোই চরিত্র গঠনে কখনো বাধা না হয়। এই কারণে শত অভাবেও কিভাবে সততার সাথে জীবন কাটানো যায়, সেটা ছোটবেলা থেকে মাকে দেখেই শিখেছি।"
➡️ মিথ্যেকে কখনোই কোনো কিছু দিয়ে চেপে রাখা যায় না, এ কথা সর্বপ্রথম মায়ের কাছ থেকে শেখা। তাই জীবনে যদি কোনো অন্যায় হয়ে যায়, সেটাকে সর্বসম্মুখে স্বীকার করার শিক্ষা তিনি দিয়েছেন।এই কারণে অকারণ মিথ্যে কথা বলা থেকে সব সময় আমাদের বিরত থাকতে বলেছেন, যেটা আজও আমি মেনে চলি। মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে সত্যিই বেশি দূর এগোনো যায় না। কারণ একটা মিথ্যে ঢাকতে গিয়ে হাজার মিথ্যে বললেও, কোনো এক সময় সমস্ত মিথ্যেকে ঝাঁপিয়ে সত্য উদঘাটিত হয়।
➡️ শত কষ্টের মাঝেও নিজের সাধ্যের মধ্যে যতটুকু সম্ভব অন্যকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে দেখেছি মাকে। তাই মায়ের সেই গুণ নিজের মধ্যেও কখন তৈরি হয়েছে জানিনা। আজ যখন পিছন ফিরে তাকাই, তখন মনে হয় মায়ের শিক্ষা ছাড়া বোধহয় আমি কখনোই অন্যকে সাহায্য করতে এগিয়ে যেতে পারতাম না। কারণ যাদেরকে আজ আমি সাহায্য করি, তাদের কাছ থেকে প্রাপ্তি আমার শূন্য। সবটা জেনেও মায়ের শিক্ষার অবমাননা করতে পারি না আজও।
জীবনে প্রতিটি পদক্ষেপে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়, সে কথা বিয়ের পর খুব ভালোভাবে বুঝেছি। তবে সেই সময় কি করা উচিত, কিভাবে চলা উচিত, সেটা শেখানোর জন্য মা পৃথিবীতে ছিলেন না। তবে এই যে বললাম সঠিক সময়ে, সঠিক মানুষকে, তিনি নিজের জায়গায় আমার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
➡️যাকে দেখে আমি শিখেছি শুধু অন্যের জন্য নয় নিজের জন্যেও বাঁচতে হয়। নিজের দুর্বলতা সব সময় সবার কাছে প্রকাশ করাটা আসলে বোকামি, একথাও আমাকে অ্যাডমিন ম্যাম শিখিয়েছেন।
➡️তিনি আরও শিখিয়েছেন জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কখনোই শর্টকাট রাস্তায় হাঁটা উচিত নয়, তাতে সফলতা হয়তো আসে, তবে তা সীমিত সময়ের জন্য। বরং কঠিন পথকেই অবলম্বন করে, পরিশ্রম করে, লক্ষ্য পূরণের মধ্যে বেশি আনন্দ।
➡️আবেগ আমাদের প্রতিটি মানুষের মধ্যে রয়েছে। তবে আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করাটা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ বা ভুল জায়গায় নিজের আবেগ প্রকাশ করা কতখানি অনুচিত, সেটা আমি ম্যামের থেকেই শিখেছি। আর এই সকল কিছু শিক্ষা তিনি আমাকে নিজের জীবনের অর্জিত অভিজ্ঞতা থেকেই দিয়েছেন।
এই সবকিছুর পাশাপাশি আমার মায়ের মতন করেই জীবনের সবথেকে বড় যে শিক্ষা তিনি আমাকে দিয়েছেন সেটা হলো, -নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করা প্রতিটি মেয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণেই হয়তো ছোটবেলা থেকে মা আমাদের তিনজনের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছে। তবে অসময়ে তিনি চলে যাওয়ার জন্য আমার জীবনের গতিপথ অনেকটা পরিবর্তন হলেও, অ্যাডমিন ম্যাম আমাকে আজও প্রতি মুহূর্তে উৎসাহিত করে আর্থিক দিক থেকে স্বনির্ভর হতে।
"Conclusions"
সবশেষে এটুকু বলতে পারি, আজ মানুষ হিসেবে আমি যেমন বা আমার মধ্যে যতটুকু ভালো আছে, সেই সবটুকুই আমার এই দুই মায়ের অবদান। বাকি প্রতিটি মানুষের মধ্যে কিছু গুণ অবশ্যই খারাপ থাকবে, সেটা আমার মধ্যেও আছে। তবে সেগুলোর কোনোটাই আমার দুই মায়ের থেকে প্রাপ্তি নয় এ কথা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি।
তবে হ্যাঁ নিজের অজান্তে কোনো অন্যায় করে ফেললে, তা স্বীকার করার মত সৎ সাহস দুজনেই আমাকে দিয়েছেন। তাই ঈশ্বরকে ধন্যবাদ তিনি আমার জীবনে এই দুইজন মানুষকে পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি এই প্রার্থনাও করি একজনকে অসময়ে কেড়ে নিলেও, আরেক জনকে যেন তিনি সুস্থ রাখেন। তার সুস্থতা ও আমার জীবনে তার উপস্থিতি আমার জন্য ভীষণ দরকারী। কারণ ঐ মায়ের জন্য কিছুই করার সুযোগ পাইনি, তবে এই মায়ের জন্য কিছু করার সুযোগ যেন তিনি দেন।
আজকের লেখা এখানেই শেষ করলাম। ভালো থাকবেন সকলে। শুভরাত্রি।
Your post has been rewarded by the Seven Team.
Support partner witnesses
We are the hope!
সত্যি বলতে ভুলের উর্ধ্বে আমরা কেউই না। কিন্তু সেই ভুলটা স্বীকার করার সৎ সাহসিকতার মানুষের বড্ড অভাব। বরং আমরা এইসব ক্ষেত্রে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিতেই অভ্যাস। এমনি এটাও সত্য যে এই ভুল স্বীকার করা গুণাবলির মানুষ গুলো জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেকে সঠিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম। হয়তো অন্যদের মতো গতিটা বেশি থাকবে না তবে গতি মন্থর হলেও সফলতা আসবেই। এটাও ঈশ্বরের একটা পরীক্ষা।
আমাদের জন্মই হয়েছে মৃত্যুর জন্য। এটা চিরন্তন সত্য। এই কথাটা আমি অনেক জায়গায় দেখেছি। তবে ঈশ্বর তাঁর সৃষ্ট জীব মানুষের প্রতি দয়াশীল। তাই বোধহয় দিদির মতো কাউকে আপনার লাইফে পাওয়ার সুযোগটাও করে দিয়েছেন। আমার তো মনে হয় আপনি সত্যিই লাকি যে দিদির মতো কেউ আপনার লাইফে আছেন।
ঈশ্বর সর্বদাই আপনাদের সাথে রয়েছেন দিদি। আপনার সম্পূর্ণ লেখাটি অসাধারণ ছিল দিদি। ধন্যবাদ দিদি। আপনার পরবর্তী লেখা পরিদর্শনের অপেক্ষায় রইলাম।