Better life with steem || The Diary Game || 27th April, 2024 ||

in Incredible India7 months ago
IMG_20240428_013819.jpg

"আজ সারাদিনের কিছু মুহুর্ত"

Hello,

Everyone,

জানি এই গরমে আপনারা কেউ ভালো নেই, ভালো থাকা সম্ভবও নয়। সত্যি বলতে শীতকাল আমার বরাবরের অপছন্দ, কারণ আমি বড্ড বেশি শীতকাতুরে। তবে এই বছর যে পরিমাণে গরম পড়ছে, তাতে মনে হচ্ছে এর থেকে শীতকালই ভালো।

সারাদিন গরমে একদমই নাজেহাল অবস্থা। সকাল থেকে গরমের যে তীব্রতা শুরু হয়, তা যেন আর কিছুতেই কমতে চায় না। আর আমাদের বাড়িতে গরম যেন আরো বেশি, কারণ চারপাশে সকলের বাড়ি।

এত কম জায়গার মধ্যে বাড়ি যে, বাড়িতে কোনো গাছ নেই। ছাদের মধ্যেই কয়েকটি ছোট ছোট গাছ, সুতরাং ছায়া পড়ার কোনো উপায় নেই। যার ফলে গরম যেন আরো বেশি অনুভূত হয়।

যাইহোক এই গরমের মধ্যে আজকের দিনটি কিভাবে কাটালাম, সে গল্পই আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। চলুন শুরু করি, -

1672344690977_010726.jpg

"সকালবেলা"

গতকাল রাতে প্রায় তিনটে নাগাদ কমিউনিটির কাজ শেষ করে শুতে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম রাতেই পোস্ট করবো, লেখাটাও প্রায় শেষ করেছিলাম। তবে তিনটের পরে আর একটুও এনার্জি বাকি ছিল না বলে, শুয়ে পড়েছিলাম। ঘুম আসতে প্রায় চারটে বেজে গেলো। এত বেশি গরম লাগছিল যা বলে বোঝাবার নয়।

অন্যদিকে মাথায় এটাও চলছিল যে, আমাকে আবার সাতটা পরেই উঠে যেতে হবে, তাই ঘুমানোও জরুরী। যাইহোক এই সমস্ত ভাবনা চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়েছি এবং সকালে এলার্ম বাজার সাথে সাথেই ঘুম থেকে উঠে পড়লাম। তারপর ফ্রেশ হয়ে প্রতিদিনের মতন রান্না ঘরে চলে গেলাম।

শাশুড়ি মা এর মধ্যে উঠে পড়েছেন এবং পুজোর ফুলও তিনি তুলে নিয়েছেন। ফলে আমাকে আর ফুল তুলতে হয়নি।আমি রান্না করতে করতেই শাশুড়ি মাকে দুপুরের রান্নার জোগাড় করতে বলে দিলাম, কারণ একসাথে রান্না শেষ করে নিলে দুপুরে কষ্ট অনেক কম হবে।

আমি রান্না কিছুটা এগিয়ে নিলাম। তারপর শাশুড়ি মা বাকি রান্না শেষ করলেন। ততক্ষণে আমি শশুর মশাইকে ব্রেকফাস্ট দিয়ে, ইনসুলিন দিলাম। শুভকে ব্রেকফাস্ট দিয়ে ওর টিফিন রেডি করলাম। শুভ অফিসে বেরিয়ে যাওয়ার পর, ঘরের টুকটাক কাজ শেষ করতেই কমিউনিটির কাজের সময় হয়ে গেলো।

কমিউনিটিতে ঢুকে দেখলাম, আনভেরিফাইড পোস্ট নেই। তাই সবার আগে নিজের পোস্ট শেয়ার করলাম। তারপর কিছুক্ষণ কমিউনিটির পোষ্ট পর্যবেক্ষণ করে, আমি ঘরের কাজে হাত দিলাম। এই গরমে ফ্যানের তলায় বসে থাকাটাও কষ্টকর, কারণ যত বেলা বাড়ে ফ্যানের হাওয়ায় যেন ততই গরম লাগে।

1672344690977_010726.jpg

"দুপুরবেলা"

IMG_20240427_013746.jpg

ঘরের কাজ গুছিয়ে নিয়ে, আমি পিকলুকে ঠান্ডা জলে একবার স্নান করিয়ে দিলাম। প্রতিদিনই এখন তাই করছি। শ্যাম্পু ব্যবহার করি না, কিন্তু জল দিয়ে ওর পুরো শরীর ভিজিয়ে দিই। যাতে ওর একটু হলেও আরাম লাগে। এরপর আমি স্নান করতে গেলাম। অবশ্য তার আগে আমি ঠাকুরের বাসন মেজে, ঠাকুরের ঘর মুছে নিয়েছিলাম।

এখনকার দিনে সবথেকে শান্তির সময় ততটুকুই যতটুকু সময় স্নান করা হয়। কারণ স্নান করে ওঠার পর গরমে আবার সেই একাকার কান্ড হয়ে যায়। যাইহোক আমি পুজো শেষ করতে করতে শাশুড়ি মা ও শ্বশুরমশাই স্নান করে এলেন। পুজোর শেষে পিকলুকে ওর লাঞ্চ দিয়ে দিলাম।

আজ সয়াবিন রান্না করেছিলাম। সেখান থেকেই কয়েক টুকরো সয়াবিন ও আলু তুলে, ভালোভাবে ধুয়ে ভাত দিয়ে মেখে দিয়েছিলাম। সয়াবিন ও বেশ পছন্দ করে। ওর খাওয়া দাওয়া শেষ হয়ে যাওয়ার পর, আমরা তিনজনেও লাঞ্চ করে নিলাম।

IMG_20240427_013659.jpg
IMG_20240427_013229.jpg

সত্যি বলতে এই গরমে কোনো কিছু খেতে ভালো লাগে না। ফ্রিজে গতকালকের আমের টক রান্না করা ছিল। আমি অল্প একটু ভাত সয়াবিন দিয়ে খেয়ে, বাকি ভাতটা টক দিয়ে খেয়েছি। যেহেতু ফ্রিজে রাখা ছিল বেশ ঠান্ডা ছিলো, ওটা খেতেই ভালো লেগেছে। তবে গলার অবস্থা এতটাই খারাপ যে ঠান্ডা খেতেও ভয় লাগে।

রাত জাগার ফলে দুপুর বেলায় একটু না ঘুমালে শরীর একদমই চলে না। কিন্তু বিশ্বাস করুন এত বেশি গরম যে, মেঝেতে শোয়ার পরেও ফ্যানের হাওয়ায় রীতিমতো গরম লাগে। তাই এপাশ ওপাশ করলাম ঠিকই কিন্তু ঘুম তেমন হলো না।

1672344690977_010726.jpg

"সন্ধ্যাবেলা"

IMG_20240427_013132.jpg

কিছুক্ষণ বাদে উঠে বারান্দায় গিয়ে বসলাম। সন্ধ্যার পর থেকে বারান্দাতেই একটু ঠান্ডা হাওয়া পাওয়া যায়। তবে মশার এত বেশি উৎপাত যে, শান্তিতে সেখানেও বসে থাকা যায় না। এরপর সন্ধ্যা হয়ে গেলে আমি এসে সন্ধ্যা দিলাম, তবে পিকলু বারান্দাতেই একটু শুয়ে রইলো।

সন্ধ্যা দেওয়া শেষ হতে হতে শুভ বাড়িতে ফিরলো। যেহেতু শনিবার, তাই আজকে সময়ের একটু আগেই এসেছে। ও ফ্রেশ হয়ে নিলে ওকে শরবত বানিয়ে দিলাম। গরমকালে বাড়িতে থাকা যতটা কষ্টের, বাইরে বেরোনো তার থেকেও বেশি কষ্টের। কিন্তু কাজের জায়গা ঠিক রাখতে অফিসে যাওয়াটাও জরুরী। বাইরে থেকে ফিরলে সবার অবস্থাই খুব খারাপ হয়ে যায় এই গরমে।

IMG_20240427_013254.jpg

যাইহোক এরপর কিছু সময় পিকলুর সাথে কাটিয়ে শুভ ফ্রেশ হতে গেল। গত পরশুদিন শাশুড়ি মা পায়েস রান্না করেছিলেন। তবে গরমের কারণে কেউ তেমন খাইনি বলে ফ্রিজেই রাখা ছিলো। শুভ ফ্রেশ হয়ে যাওয়ার পর ওকে একবাটি পায়েস দিলাম। পায়েসের বাটি দেখে পিকলুর দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে গেলো। কিন্তু ওকে পায়ের দেওয়া যাবে না, তাই শুভ ওকে একটা বিস্কুট দিল।

ওরা দুজন খুনসুটিতে ব্যস্ত ছিল, কিন্তু আমার যেহেতু কমিউনিটির কাজ ছিলো, তাই আমি আলাদা রুমে এসে নিজের কাজ নিয়ে বসলাম। শ্বশুরমশাইয়ের শরীর গত দুদিন যাবৎ অনেক বেশি খারাপ।

কিছুক্ষণ বাদে ননদ ফোন করলে সেই বিষয়ে ওনার সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বললাম। আগামীকাল ওনাকে নিয়ে আবার টেস্ট করাতে যেতে হবে। তবে এই গরমে ওনাকে নিয়ে বাইরে বের হতে সত্যি বলতে আমার একটু ভয়ই করছে। কিন্তু কিছু উপায় নেই। তবে ভালো হয়েছে কাল শুভর অফিস ছুটি আছে, তাই আমার একটু হেল্প হয়ে যাবে।

1672344690977_010726.jpg

"রাত্রিবেলা"

এইসব কাজ করতে করতে অনেকক্ষণ সময় পেরিয়ে গেলো। শশুর মশাই রাতে কেউই কিছু খেতে চায় না। ওনাকে অল্প করে ওটস্ দিয়ে দিলাম। আমি ফ্রিজ থেকে ভাত বের করে জল ঢেলে দিলাম। রাতে সকলেই পান্তা ভাত খেয়ে নেবো। কারণ এই গরমে আলাদা করে সত্যিই আর কিছু খেতে ইচ্ছে করে না।

আজ রুটি করার ঝামেলা ছিলো না। আর এটা আমার জন্য একটা ভালো লাগা, কারণ রাতের বেলা রান্না ঘরে গেলে প্রচন্ড কষ্ট হয়। শুভ আইপিএল খেলা দেখছিলো। খেলা শেষ হলে নিচে ডিনার করতে আসল। সকলে একসাথে ডিনার করলাম।

IMG_20240427_013153.jpg

পিকলু আজকে টকদই দিয়ে চিড়ে খেয়েছে। ডিনার শেষ করে যে যার মতন সময় কাটাতে লাগলো, যেহেতু আগামী কাল রবিবার তাই শুভ আজ বেশ কিছুক্ষণ মোবাইলের সময় কাটালে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

কিন্তু আমার কমিউনিটির প্রচুর কাজ বাকি। তাই ডিনার শেষ করার পর, বাকি কাজ করে আমি কমিউনিডের কাজ নিয়ে বসলাম। পোস্ট ভেরিফাই করে, তারপর আমি নিজের লেখা শেষ করতে বসেছি।

সন্ধ্যার দিকে কিছুটা লেখা এগিয়ে রেখেছিলাম বলে, এখন লেখাটা তাড়াতাড়ি শেষ করে, পোস্ট করে দিতে পারবো। তারপর শুতে যাবো। আগামীকাল হয়তো এর থেকে বেশি গরম থাকবে, সেই অবস্থায় বাইরে বেরোতে হবে ভেবে এখন থেকেই আমার যেন শরীর খারাপ লাগছে।

যাইহোক এই গরমে খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বেড়োবেন না। সকলেই সচেতনতা অবলম্বন করে চলুন, কারণ এই আবহাওয়ার সুস্থ থাকা জন্য সচেতনতা অবশ্যই জরুরী। ভালো থাকবেন সকলে। শুভ রাত্রি।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328TqCvhjhspw5NBPbWMShaDD4yjYoZFwyWS9XH9YcrMyqTMGHiWpaGrwDGkXYMbDHgxptYZq3ueRpXapEAPkAuu3vPaZSXJ2USdTC.png

Sort:  
Loading...
 7 months ago 

সত্যি কথা বলতে কি আর বলব বর্তমানে গরমে একদম সবারই নাজেহালা অবস্থা। কিন্তু আপনার কয়েকদিন থেকে বিগত পোস্ট গুলো পরে বুঝতে পারলাম আপনি বরাবর দেখি রাত তিনটা থেকে চারটার দিকে ঘুমান। এত রাতে ঘুমানোর পরে আবার এত সকালবেলা কেমন করে ঘুম থেকে উঠেন আপনি ভাল জানেন। এরমধ্যে ঠিকমতো ঘুম না হওয়ার পরেও এই গরমে সংসারের কাজ করে যাচ্ছেন।

আসলেই মনে হয়, মেয়ে মানুষদের সংসারের কাজের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কোনো ছুটি নেই।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.20
JST 0.034
BTC 98914.40
ETH 3374.27
USDT 1.00
SBD 3.08