গরমের মধ্যে দিদি বাড়িতে কাটানো একটি দিনের গল্প
সন্ধ্যার পরে দিদিদের ফ্ল্যাটের ছাদের থেকে তোলা ছবি |
---|
Hello,
Everyone,
কেমন আছেন সকলে?
দিন দিন যে হারে গরম বাড়ছে তাতে ভালো থাকার উপায় নেই জানি, কিন্তু তবুও সকলের কাছে অনুরোধ রইল আপনারা সকলে সবরকম সাবধানতা অবলম্বন করে চলবেন, যাতে কিছুটা হলেও সুস্থ থাকা যায়।
যাইহোক, আজকে আমি অনেকদিন বাদে বাড়ি থেকে বেড়োলাম দিদি বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে। দিদিদের সাথে সেই ঠাকুর মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের সময় দেখা হয়েছিল। তারপর আর দেখা হয়নি।
আর আজকাল যে পরিমাণ গরম পরছে তাতে বাড়ি থেকে বেড়োতে একদমই ইচ্ছা করে না। কিন্তু আজকে। একটু বিশেষ কারনেই যেতে হলো।
আসলে দিদিরা পরিবারের সকলে মিলে পুরীতে বেড়াতে গিয়েছিল। ওখানে জগন্নাথ মন্দিরে দিদির মেয়ের নামে পুজো দেওয়ার কথা ছিলো। সেই পুজো দিতেই ওদের ওখানে যাওয়া। সেখান থেকে পরশুদিন বাড়িতে ফিরেছে। আর ঐ পুজোর প্রসাদ নিতেই আজকে ওদের বাড়িতে এলাম।
এতোদিন ঘরে বসে গরমে কষ্ট পাচ্ছিলাম ঠিকই কিন্তু বাড়ির বাইরে বেড়োলে যে এতো কষ্ট সেটা আজ বুঝতে পারলাম। চেষ্টা করেছিলাম একটু সকাল সকাল বেড়োতে কিন্তু বাড়ির কাজ গুছিয়ে সেই দেরী হয়েই গেলো। স্টেশনে পৌঁছে দেখলাম ট্রেন তখনও আসেনি।
দিদিবাড়ি যাওয়ার সময় ট্রেনে তোলা ছবি |
---|
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর ট্রেন এলে আমি ট্রেনে উঠলাম। আর গরমে ট্রেনে চড়ার কষ্ট অনেক দিন বাদে অনুভব করলাম। যাইহোক, দিদির বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে রৌদ্রের তাপ আরো বাড়তে লাগলো। যখন আমি দিদির ফ্ল্যাটে পৌঁছালাম, তখন বুঝতে পারলাম দিদির ওখানে দুপুরে থাকাটা খুবই কষ্টকর হতে চলেছে।
কারণ ওরা একদমই উপরের তলায় থাকে এবং ওদের ওপরেই ছাদ, সুতরাং সারাদিন ছাদের উপর রৌদ্দুর থাকবে এবং সেই তাপ ওদের ঘরে সব থেকে বেশি অনুভূত হবে।যেমন ভেবেছিলাম ঠিক তেমনটাই হল, এতদিনের মধ্যে গরমে সব থেকে বেশি কষ্ট আজকে আমি অনুভব করলাম।
আসলে দিদিরা ওদের রুমে এখনো পর্যন্ত এ.সি.লাগায়নি যেই কারণে ওদের ফ্ল্যাটে থাকাটা সবথেকে বেশি কষ্টকর।তবে আজকে দাদা এ.সি.কিনেছে,আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে এসি বসাবেস, গরমে দুপুরবেলা বাচ্চা দুটোকে রাখা খুবই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে ওরা ঠিকমতো খেতে ও ঘুমাতে পারছে না গরমের কারণে।
লেবু খেতে ব্যস্ত তাতান বাবু |
---|
যাইহোক অনেকদিন বাদে তিতলি ও তাতানের সঙ্গে দেখা হলো এবং ওদের সাথে বেশ কিছুটা সময় কাটালাম। তাতান ও তিতলি প্রথমবার সমুদ্র দেখেছিল, তাই ওদের কাছ থেকে পুরীর সমুদ্র দেখার গল্প শুনছিলাম।
সমুদ্রের ঢেউয়ের ভয়ে দিদির কোলে উঠে যাচ্ছে 😊(দিদির ফোন থেকে নেওয়া ছবি) |
---|
জীবনের প্রথমবার কোনো কিছু দেখার অভিজ্ঞতা অনেক সুন্দর হয়, বিশেষ করে বাচ্চাদের কাছে। তাতান তো সারাদিন সমুদ্রের গল্প শুনে শোনালো আমাকে। দুপুরবেলায় লাঞ্চ করতে বসে দিদির মুখে শুনলাম, তাতান প্রথমে সমুদ্রে নামতে ভয় পাচ্ছিল এবং যখন সমুদ্রের ঢেউ আসছিল আবার চলে যাচ্ছিলো, তখন তাতান বারবার বলছিল, -"আমাকে নিয়ে যেও না,আমাকে নিয়ে যেও না, আমার নাম নিলাদ্রী, আমার নাম জল না,আমাকে নিয়ে যেও না।"
ওর মুখে কথাগুলো শুনতে ঠিক কতটা ভালো লাগতে পারে, সেটা আমি আন্দাজ করতে পেরেছি,কারণ আমি ওর সাথে কথা প্রায়শই শুনেই থাকি। কিন্তু যেহেতু আপনারা ওর কথা কখনো শোনেননি, তাই হয়তো আপনার আন্দাজ করতে পারছেন না যে,ওর মুখে এই কথাগুলো ঠিক কতখানি সুন্দর লাগতে পারে। এই নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ আমরা হাসাহাসি করলাম।
বিকালে দুজন ছাদে খেলা করতে ব্যস্ত |
---|
তারপর সকলে মিলে বিশ্রাম নিলাম, শুধু গরমটুকু বাদ দিলে আজকের সারাটা দিন বেশ ভালো কাটলো। আমি সবসময় তিতলি ও তাতানের সাথে থাকলে খুব ভালো থাকি। বিকেল বেলায় ওদের সাথে ছাদে গিয়ে একটু সময় কাটালাম।ওদের ছাদে অনেক হাওয়া থাকে, তাই বেশ ভালই লাগলো।এরপর সন্ধ্যা হয়ে গেলে আমি নিচে নেমে এসে ফ্রেশ হয়ে বাড়ি ফেরার জন্য রেডি হয়ে নিলাম।
এর মধ্যে সত্যি আর বাইরে বেরোনোর কোন প্ল্যান নেই, কারণ আজকে বেরোনোর পরে আমি বুঝতে পেরেছি, বাইরে বেরোনোটা আসলে কতটা কষ্টকর। যদি এর মধ্যে বৃষ্টি হয় তবেই হয়তো আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন হবে, না হলে হয়তো আরো কিছুদিন এইরকম গরম থাকবে।
ফেরার পথে ট্রেনে যথেষ্ট ভিড় ছিল সুতরাং দিনের বেলায় মতো সূর্যের তাপ না থাকলেও, মানুষের ভীড়ে যথেষ্ট কষ্ট হয়েছে। যাই হোক বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়ে আমি ডিনার করলাম।কারণ দুপুর বেলায় গরমের জন্য সত্যিই ভালো করে লাঞ্চ করা সম্ভব হয়নি।
গতকালের পোস্টে আমি আপনাদের সাথে গরম থেকে বাঁচার কিছু টিপস শেয়ার করেছিলাম, আজকে আমি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, খুব প্রয়োজন না হলে দয়া করে কেউ বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। সেটা আপনার নিজের জন্যই সব থেকে বেশি ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশেষ করে দিনের বেলায়। যদি কোন জরুরী কাজ থাকে তাহলে সেটা সন্ধ্যা বেলায় করার চেষ্টা করবেন।
সকলে ভালো থাকবেন, সাবধানে থাকবেন। শুভরাত্রি।
একদমই ঠিক বলেছেন,,, এই গরমে বের হওয়াটা আসলে খুবই কষ্টকর! আর বিশেষ করে যাদের বাড়ি একটু উপর তলায়! অর্থাৎ ফ্ল্যাট উপর তলায় নেয়া আছে,,,,, তারা কিন্তু বুঝতে পারে গরমের পরিমাণটা কতটুকু।
তবে আমি ধারণা করছি,,,, আজকে আপনি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন! এতদিনের গরমের প্রভাব কেমন ছিল।
তাতান বাবু দেখছি সমুদ্র দেখে একেবারে মায়ের কোলে উঠে বসেছে! আসলে প্রথমবার যে কোন কিছু দেখলে একটু ভয় লাগবে,,,, এটাই স্বাভাবিক আরও তারা হচ্ছে ছোট বাচ্চা।
বিকেলবেলা বেশ ভালোই খেলাধুলা করছিল তারা দুজন মিলে! ছাদের মধ্যে হাওয়া থাকায়,,,,, আপনিও অনেকটা বিকেলবেলা সৌন্দর্যটা উপভোগ করতে পেরেছেন।
ঠিকই বলেছেন,,,,,, প্রিয় মানুষের সাথে কাটানো সময়টা অনেক সুন্দর হয়! আর বিশেষ করে গরমটা না থাকলে হয়তোবা,,,,, আপনার আজকের দিনটা আরো বেশি ভালো হতো।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে গরমের সময় ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতাটা! আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য! আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল,,,,,,, ভালো থাকবেন।
#miwcc
কয়েকদিন থেকে খুবই গরম পরেছে বাইরে বের হওয়াই যাচ্ছে না যে রোদের তাপ ৷ তার উপর আপনি উপরের ছাদে নিচে আছেন অবশ্যই রোদের তাপ অনুভব করতেছেন ৷ তারপর আমি মনে করি আপনাদের উপর ছাদে বেলকনিতে একটু প্রাকৃতিক বাতাস আপনারা অনুভব করতে পারেন ৷ তারপর শেষ বিকেলে ছাদে উঠলে হালকা বাতাস অনুভব করতে পারেন ৷
যাই হোক দিদি আপনার পোস্ট টি পরে খুবই ভালো লাগলো ৷ গরমের মধ্যে এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ৷
#miwcc