"ইচ্ছাপূরণের গল্প- ভালোলাগার ফসিলস"
"প্রথমবার ব্যান্ডের লাইফ পারফরম্যান্স দেখার অভিজ্ঞতা" |
---|
Hello,
Everyone,
সকলকে জানাই সুপ্রভাত।
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। আর সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কাটুক এই প্রার্থনা রইলো।
কাল রাতে আর পোস্ট করতে পারিনি লেখা শুরু করেছিলাম ঠিকই তবে শেষ করতে পারিনি তাই আজ সকালে উঠেই ফ্রেশ হয়ে বসলাম পোস্ট লিখতে।
আজও প্রচন্ড ঠান্ডা। রীতিমতো হাড় কাঁপানো ঠান্ডা বলা চলে। গতকালও এমন ঠান্ডা ছিলো। এমন ঠান্ডা আরও কয়েকদিন পড়লে আমি মোটামুটি জমেই যাবো, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ☺।
মজা করে কথাটা বললেও, সত্যি এটাই এতো ঠান্ডায় আমার সব কাজ করতে অনেক কষ্ট হয়, কারণ আমি বড্ড শীতকাতুরে। আর শীতকাল প্রতি বছরই আমার এইরকম কষ্টেই কাটে।
যাইহোক এইসব কিছু বাদ দিয়ে আসল কথায় আসি, আজ আমার পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে আমার একটা ইচ্ছা পূরনের গল্প শেয়ার করবো। আশাকরি আপনাদের পড়তে ভালো লাগবে।
কিন্তু কথায় আছে না সৎসঙ্গে স্বর্গ বাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। অর্থাৎ আপনি যার সাথে থাকবেন আপনিও তার মতোই হয়ে যাবেন। আমার ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছে। শুভর সাথে থেকে থেকে কখন যেন ওর মতোই আমিও রক ব্যান্ডের গান ভালোবাসতে শুরু করলাম।
বাড়িতে যখনই শুভ গান চালায়, তখনই বেশিরভাগ সময় রুপম ইসলামের গান চলে। তাও যথেষ্ট জোরে। যেগুলো শুনতে শুনতে প্রায় মুখস্থ হয়ে গেছে। ব্যক্তিগত ভাবে আমি সব ধরনের গান শুনতে পছন্দ করি। বাউল থেকে রবিন্দ্রসঙ্গীত, হিন্দি থেকে পল্লীগীতি সব আমার পছন্দ। তাই আমার মুডের উপর নির্ভর করে আমি কখন কি গান শুনবো।
কিন্তু শুভ আর ওর বন্ধুদের জন্য, আনন্দ হোক, কষ্ট হোক, সফলতা হোক বা পরাজয় সবক্ষেত্রেই একমাত্র সমাধান হলো রুমপ ইসলাম। ওরা যখন প্রথম প্রথম গান শুনতো, আমি সেই গানের ভাষাও বুঝতে পারতাম না, বিরক্ত লাগতো। এখন যদিও বুঝি। কিন্তু এখনও যারা ওর গান বুঝতে পারে না, তাদের বিরক্তি দেখলে নিজের কথা মনে পড়ে।
কল্যানীতে প্রতি বছর শীতকালে একটি বঙ্গ সাংস্কৃতিক মেলা হয়ে থাকে। আর সেখানেই গত ২০ বছর ধরে এই ব্যান্ডের অনুষ্ঠান করে। বিয়ের পর থেকে আমি বহুবার আসতে চেয়েছি কিন্তু কোনো না কোনোভাবেই এই অনুষ্ঠান দেখতে আসা হয়নি কিন্তু এই বছর হঠাৎ করে প্ল্যান হলো এবং গতকাল আমি আমার মামা শ্বশুরবাড়িতে এসেছি এই অনুষ্ঠান টা দেখার জন্য।
সে এক অনবদ্য অভিজ্ঞতা, যা আদেও আপনাদের সাথে ভাষায় কতটুকু প্রকাশ করতে পারবো জানা নেই। গতকাল সন্ধ্যার দিকে আমরা মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে, প্রথমে কিছুক্ষণ মেলায় ঘুরলাম। তারপর সেখান থেকে আমরা মুল মঞ্চের দিকে গেলাম, যেখানে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা।
সেখানে আগের থেকেই বহু মানুষের ভীর ছিলো। সকলের মধ্যে ফসিলস নিয়ে উত্তেজনা লক্ষ্য করলাম। যেগুলো এতোদিন আমি সোসাল মিডিয়ায় দেখছি। সেগুলো নিজের সামনে দেখে অদ্ভুত একটা ভালো লাগায় ভরে উঠলো মনটা।
আমরা যখন সেখানে গেলাম, তখন লালন তরীবলে অন্য একটা বাংলা ফোক ব্যান্ড পারফর্ম করছিল। তাদের গান গুলো বেশ ভালো ছিলো। তারা মূলত মাটির গান, পল্লীগীতি ও বাউল সংগীত পারফর্ম করলো। ব্যান্ডের সুন্দর মিউজিকের সাথে সেই গানগুলো শুনতেও বড্ড বেশি ভালো লাগছিলো।
এরপর তারা তাদের অনুষ্ঠান শেষ করার পর, স্টেজ গোছানোর জন্য যখন কিছুক্ষণ সময় কর্তৃপক্ষ চেয়ে নিচ্ছিলো, তখন জনতার মধ্যে ফসলিসের উচ্ছ্বাস যেন আরো বেশি চোখে পড়ছিলো। কারণ আর কিছুক্ষণের মধ্যেই স্টেজে পারফর্ম করতে চলেছে রুপম ইসলাম।
সেই চিৎকার সেই উচ্ছ্বাস যেন এখনো আমার কানে ভাসছে। দেখতে দেখতে সেই সময় এসে গেলো, যখন রুপমের ব্যান্ড স্টেজে এসে প্রথম মিউজিক বাজাতে শুরু করল। সে এক অদ্ভুত ভালোলাগা। সত্যিই যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। কিছুক্ষণের মধ্যে মঞ্চে উঠলো রুপম, এবং শুরু করল আমার প্রথম পছন্দের গান- আরও একবার চলো ফিরে যাই।
এরপর এক এক করে ওর গান গুলো শুনলাম। আর তার সাথে ওর কথাগুলোও। এতো সুস্পষ্ট উচ্চারন আমি খুব কম গায়কের কথায় পেয়েছি। গানের পাশাপাশি ওর কথাগুলোও শুনতে দারুণ লাগলো। মিউজিক, লাইটিং, জনতার উচ্ছ্বাস, চিৎকার, রুপমের গান সবকিছু মিলিয়ে সেএক অনন্য অভিজ্ঞতা।
আর স্টেজে ওর পাগলামি, প্রথমবার চাক্ষুষ করার সুযোগ পেয়ে আমি সত্যিই মোহিত হয়ে গিয়েছিলাম। কিভাবে ওখানে ২ ঘন্টা সময় কাটালাম বুঝতেই পারিনি। মাঝে একবার পিছনে তাকিয়ে জনতার ভীর দেখে ভাবলাম, কি ভাবে এই ভীর ঠেলে বাড়িতে যাবো।
শুধু রুপমকে ভালোবেসে দুর দুরান্ত থেকে এতো মানুষ এসেছিলো যা সত্যিই অবিশ্বাস্য। আর আমার মনে হয় গায়ক হিসাবে এখানেই ওর জয়, ওর স্বার্থকতা। অনেক কষ্টে এই সফলতা ও অর্জন করেছে। কারণ সফলতা এমন একটা জিনিস, যা কেউ এগিয়ে এসে হাতে ধরিয়ে দেয় না। তা অর্জন করতে হয় অনেক কঠিন পথ পেড়িয়ে।
যাইহোক, অনুষ্ঠান শেষ করে প্রায় 12.20 নাগাদ আমরা ফিরলাম। ওতোক্ষন ঠান্ডার মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে পা ঠিক কতটা ব্যাথা হয়েছে, তা বুঝেছি বাড়িতে এসে। অল্প একটু ডিনার করে পোস্ট লিখতে বসেছিলাম। কিন্তু সেই পুজোর সময়ের মত গতকালও এখানে জ্যামার বসানো ছিলো, তাই নেটওয়ার্ক কাজ করছিলো না। তাই একটু বাদে আমি কখন যেন ঘুমিয়ে পড়লাম বুঝিনি।
তারপর সকালে উঠে, ফ্রেশ হয়ে, চা খেয়ে আমি এখন পোস্ট লেখা শেষ করে পোস্ট করবো। এরপর মামা বাড়িতে সারাদিন কি ভাবে কাটাই, সেই গল্প আপনাদের সাথে পরবর্তী পোস্টে শেয়ার করবো। সকলে ভালো থাকবেন।
ফসিলসের লাইভ পারফর্মেন্স দেখেছেন, খেলা কথা নাকি! রুপম ইসলাম খুবই ভালো একজন গায়ক, গীতিকার এবং সংগীত নির্দেশক। রূপমকে সামনে থেকে দেখা এবং ওর গান শোনার থ্রিলই আলাদা। অনবদ্য একটা দিন কাটিয়েছেন আপনি। এই দিনটা আপনার মনে সারা জীবন থেকে যাবে।
একদমই সারাজীবন মনে রাখার মতো একটি দিন। অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল, অবশেষে পূরন হলো। লাইফ পারফরম্যান্স দেখার অনুভূতিই আলাদা। অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।
রক ব্যান্ডের গান আমি নিজেও পছন্দ করি না। তবে আজকে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আপনার ভালো লাগার বিষয়গুলো জানতে পারি বেশ ভালো লাগলো। আসলে একটা মানুষের সাথে চলতে চলতে তার ভালোলাগা গুলো কখন যে নিজের আয়ত্ত করে ফেলি। সেটা বুঝতেও পারিনা।
আসলে একজন মানুষকে যখন কেউ ভালোবাসে তার গান ভালোবাসে। তখন তাকে দেখার জন্য অবশ্যই আসে। সেটা যত দূরেই হোক না কেন? আপনারা যখন ওখানে গিয়েছেন তখন দেখতে পেয়েছেন! রুপমকে দেখার জন্য হাজারো মানুষের ঢল সেখানে নেমেছে।
রুপমের গান মাঝে মাঝে সোনা হয়, যখন আবার হাসবেন্ড শুনে তখন। কিন্তু বর্তমান সময়ে তেমন নয় খুব কম আর শোনার মত সময়ও পাই না। কিন্তু আপনি খুব কাছ থেকে তাদের ব্যান্ডের গান উপভোগ করেছেন। এবং নিজের ইচ্ছাটা পূরণ করেছেন। প্রত্যেকটা ইচ্ছে পূরণ হোক এটাই কামনা করি সৃষ্টিকর্তার কাছে ভালো থাকবেন।
রূপমের সব গানই আমার ভীষন ভালো লাগে এমন নয়, তবে কিছু কিছু গান ভীষন রকম প্রিয়। মনে হয় গানের কথার সাথে আমার জীবনের মিল রয়েছে। আর এই কারনেই বোধহয় ওর লাইফ পারফরম্যান্স দেখার ইচ্ছাটা এতো প্রবল হয়েছিল। সত্যিই তৃপ্তি পেয়েছি। এই ভালোলাগার অনুভূতিটা আজীবন মনে থাকবে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।