পুজো উপলক্ষ্যে কাটানো কিছু মুহুর্তের কথা
নারায়ন দেবের পুজো চলাকালীন সময়ে তোলা ছবি |
---|
Hello,
Everyone,
আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন,সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে।
আমার দিনটিও মোটামুটি ভালো কাটলো। তবে আজকে আমি পুরো দিন অনেক বেশি ব্যস্ত ছিলাম, কারণ আজকে আমার ননদের বাড়িতে নারায়ন পুজো এবং বড়ো ঠাকুরের (শনি দেবতার) পূজো ছিল।
প্রতি বছর বৈশাখ মাসে কোনো এক শনিবার দিন আমার ননদের বাড়িতে এই পুজো হয়ে থাকে। ননদের সাথে সাথে আমরাও একই এই পুজোতে যোগদান করে থাকি। কিন্তু এ বছর শাশুড়ি মা বাড়িতে না থাকার কারণে ননদরা একাই পূজা করেছে।
এটা আসলে আমাদের বিশ্বাস, বছরের শুরুতে যদি শনিদেবতার পুজো করা করে তাকে সন্তুষ্ট রাখার যায়, তাহলে সারা বছর আমাদের সকলের উপরে তার সু-দৃষ্টি বজায় থাকে। সেইরকম বিশ্বাসের জায়গা থেকে প্রতিবছর বছরের শুরুতে আমরা এই পূজোটা করে থাকি। শুধুমাত্র আমরা বললে ভুল হবে বেশির ভাগ মানুষেরাই চেষ্টা করে বৈশাখ মাসে এই পূজাটা করার।
সকলে পুজোর সামনে বসেছে |
---|
শনি দেবতার পূজোর বেশ কিছু নিয়মাবলী সম্পর্কে আজকে আমি আপনাদের সাথে কিছু তথ্য শেয়ার করবো।
আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষেরা অন্যান্য যেকোনো দেবতার পূজা সব সময় পূর্ব দিকে মুখ করে করে থাকেন, কিন্তু শনিবারে শনি দেবতার পুজো সব সময় পশ্চিমদিকে মুখ করে করা হয়। কারণ কথিত আছে শনিদেবতা পশ্চিমদিকের অধিপতি। তাই তাকে সন্তুষ্ট রাখতেই এই নিয়ম প্রচলিত।
এছাড়াও কথিত আছে শনি দেবতার প্রিয় রং নীল এবং কালো। এই কারণে শনি দেবতার পূজোতে তামা বা পিতলের কোনো ঘট ব্যবহার করা হয় না। মাটির কালো রঙের ঘট ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও তার পুজোতে ব্যবহৃত মোমবাতি,তীর কাঠি বাধার সূতো নীল রঙের হয়ে থাকে।
অনেকেই আছেন যারা এই পুজোতে নীল রংয়ের বা কালো রঙের পোশাক পড়েন। লাল বা অন্যান্য রঙের পোশাক অনেকেই এই পূজার দিনে পড়েন না। যদিও এর মধ্যে সংস্কারের থেকে কুসংস্কার বেশি বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ পুজোটা সব সময় নিষ্ঠা সহকারে করা উচিত, তার মধ্যে পোশাকটা শুধু কুসংস্থানের অঙ্গ মাত্র।
- এই ঠাকুরের পুজো সাধারণত ঘরের বাইরে করা হয়ে থাকে। যদি এর পেছনে যে যুক্তিটি আছে, সেটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।সকলের বিশ্বাস শনি দেবতার পূজা যদি ঘরের ভিতরে হয় তাহলে তার দৃষ্টি আমাদের জীবনে সক্রিয়ভাবে পড়ে।
তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি বিশ্বাস করি যে কোনো দেবতা সব সময় পাপীদের জন্যেই শাস্তি লিখে রাখেন কিন্তু যারা ভক্তি সহকারে তার পুজো করেন তাদের তিনি সর্বদাই তাদের ভালো করেন।
ননদের ছাদে গিয়ে তোলা পিকলুর ছবি |
---|
ননদের ছোটো ছেলে আমাকে গাছ দেখাতে ব্যস্ত |
---|
আমি পিকলু এবং আমার শ্বশুরমশাই দুপুর নাগাদ ননদের বাড়িতে পৌঁছালাম এবং সেখানে গিয়ে দেখলাম ননদ বেশিরভাগ কাজে গেছে। এরপর আমি গিয়ে তাকে একটু সাহায্য করলাম।কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরোহিত মশাই চলে এলেন।
তিনি বাকি কাজগুলো গুছিয়ে নিয়ে পুজো শুরু করলেন। প্রথমেই তিনি নারায়ণ দেবের পুজো করলেন। তারপর তিনি পাঁচালী পড়লেন। আর সবশেষে আমার ননদ, ননদের বর এবং তার শাশুড়ি মা, যারা পূজো উপলক্ষে সারাদিন উপবাস করেছিলেন, তারা সকলে পুষ্পাঞ্জলি মঞ্চ উচ্চারণ করে অঞ্জলি দিলেন।
সবশেষে ঠাকুর মশাই পাঁচালী পড়ছেন |
---|
নারায়ণ দেবেন পুজো সমাপ্ত করে তারপর ঠাকুরমশাই শনি দেবতার পূজা শুরু করেন। দুঃখের বিষয় সেই সময় পিকলু আমাকে এতো বিরক্ত করছিল যে, আমি বাধ্য হয়ে ওকে নিয়ে ঘরে বসে ছিলাম। পুজোর সমাপ্ত হওয়ার পর সকলে মিলে প্রসাদ খেয়ে তারপর আমরা বাড়ি ফিরে আসি।
সত্যি কথা বলতে আজও আমাদের সমাজ যতই উন্নত হোক না কেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আজও আমরা সকলেই কুসংস্কারের বেড়াজালে আটকে রয়েছি এবং এই বেড়াজাল ভাঙ্গা হয়তো অতটা সহজ নয়।
কথায় আছে "বিশ্বাস মেলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর" আমি ব্যক্তিগতভাবে ঈশ্বর নিয়ে কোন তর্ক বিতর্ক করি না। কারণ এটা যার যার ব্যক্তিগত বিশ্বাস। আমি নিজেও বিশ্বাস করি, ঈশ্বর বলে নিশ্চিত কোনো এক শক্তি আছে, যিনি মানুষের কর্মের হিসাব রাখেন এবং কর্ম অনুসারে তিনি প্রত্যেকটি মানুষকে ফলাফল দিয়ে থাকেন, সেটা ভালো হোক বা খারাপ।
সুতরাং ঈশ্বরের বিশ্বাস করুন বা না করুন সব সময় নিজের কর্মে বিশ্বাস রাখবেন। সব সময় খেয়াল রাখবেন যাতে আপনার কর্ম অন্যের ক্ষতির কারণ না হয়।
যাইহোক এই পূজো উপলক্ষে বেশ অনেক দিন বাদে ননদের বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ হলো, একটা বেলা ভালো সময় কাটালাম। সাথে সাথে পুজোতে নিজে অংশ গ্রহণ করতে পেরেও মনটা ভালো হয়ে গেলো।
আজকে আপনাদের সাথে সেই ভালো স্মৃতি গুলোই শেয়ার করলাম। আশা করছি আপনাদের ভালো লেগেছে। আপনারা কারা কারা ঈশ্বর বিশ্বাস করেন অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। শুভরাত্রি।
প্রত্যেকটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান কেনো না কোনো বিষয় এর উপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠান করা হয়ে থাকে,,, তেমনি আপনাদের শনি দেবতার পুজা করলেন,,
আমাদের বাড়ি পাশে ও আমাদের গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাই গন ও এই পুজো গুলো করে থাকেন,,,আমাদের গ্রামে প্রায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক আছে ২০০০/২৫০০ অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাই বোন আমাদের গ্রামে বসবাস করি,,, তারা প্রায় কোনো না কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান করেন,,,,যেহতু একদম বাড়ির পাশে আপনাদের সব বিষয় টুকটাক ধারণা আছে,,,,
যাই হোক আপনাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান এর কিছু ফটোগ্রাফি এবং এই পুঁজো সম্পর্কে বেস আলোচনা করেছেন,,,,সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সব সময় ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
আসলে ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোও জায়গার মতো করেই পালন করে থাকে। আজকে আপনি আপনাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের একটা বিষয় আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন। আসলে আপনার পোস্ট পড়ার পর। আমি কি লিখব নিজেই বুঝতে পারছি না। কারণ আমি আপনাদের এই পুজো সম্পর্কে এতটা অবগত নয়।
যাইহোক তারপরেও আপনার পোস্ট পড়ার পর থেকে যেটা অনুধাবন করেছি। সেটাই আবারও আপনাকে রিপ্লাই করছি। আবার দেখলাম আপনার ননদের ছোট ছেলে আপনাকে তাদের গাছগুলো দেখাচ্ছে।
আসলে ছোট মানুষ আত্মীয়-স্বজন দেখলে। তাদের আশেপাশের জিনিস গুলো দেখানো নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। যেমনটা আমার বড় ছেলেও করে থাকে।
আপনাদের পুজোর দৃশ্যটা দেখে বেশ ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে সবসময় ভালো রাখুক সুস্থ রাখুক। এই কামনাটাই করছি ভালো থাকবেন।
আমিও এই বিষয়টির সাথে পূর্ব থেকেই পরিচিত। আমাদের বাড়িতেও বৈশাখ মাসের কৃষ্ণ পক্ষ অনুসরণ করে যেকোনো এক শনিবার এই শনিদেবের পূজা করা হয়। একদমই সঠিক বলেছেন যে শুধুমাত্র বৈশাখ মাসেই এই পূজ করা হয়।
আপনিসহ আপনার ননদের বাড়ির সকলেই দেখলাম পূজাতে অংশগ্রহণ করেছেন। উপস্থিত সকলেই পূজার মূহুর্তে ভালো কিছু সময় অতিবাহিত করেছেন।
নিঃসন্দেহে সঠিক বলেছেন যে শনিদেবের প্রিয় রং শাস্ত্রমতে নীল। তাই এই নীল রং ও নীল রংয়ের অপরাজিতা লাগবেই এই পূজাতে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দিদি, পূজার মূহুর্ত এবং সাথে পূজা সম্পর্কিত বিষয়গুলো আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।