ছেলে নাকি মেয়ে, কী সন্তান?
কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে ভালোই আছি। আমাদের সমাজে কমন একটি সমস্যা নিয়ে আজ আমি আমার লিখা আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করছি। তাহলে শুরু করা যাকঃ-
গত কয়েকদিন ধরে আমি অনেকের কাছে একটি প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি। প্রশ্নটি হলো ছেলে নাকি মেয়ে, কী সন্তান। অর্থ্যাৎ আপনারা অনেকেই জানেন বিশেষ করে আমার কমিউনিটির বন্ধুরা জানেন আমার স্ত্রী অন্তসত্বা। বর্তমান আমার স্ত্রীর ৩১ সপ্তাহ চলছে।
আল্লাহ্ চাইলে আর দুমাসের মধ্যে হয়তো আমার পরিবারে একজন নতুন সদস্যের আগমন ঘটবে। সব কিছু ঠিকঠাকই ছিলো। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবৎ আমাকে আর আমার স্ত্রীকে অনেকেই একটি প্রশ্ন বারংবার করছে, তোমাদের কী সন্তান হবে। ছেলে নাকি মেয়ে।
হয়তো তারা প্রত্যেকেই কৌতুহল বশত এমন প্রশ্ন করে কিন্তু এতে করে আমি এবং আমার স্ত্রী বেশ বিব্রত বোধ করি। ছেলে মেয় দুটোই আল্লাহ্র দান। আল্লাহ্ যা দিবে তাই নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। এটা অনেককেই বোঝানোর পরেও তাদের এই প্রশ্ন যেন আমার পিছু ছাড়ছে না।
আজ আমার ফুফু আমাকে এই প্রশ্ন করলে আমি বলি আপনি কী চান, ছেলে নাকি মেয়ে। ফুফু এরপর হেসে দেয় এবং বলে একটা হলেই হবে। তারপর আমি বলি তাহলে জানতে চান কেন। আমি নিজেও তো জানিনা কী হবে।
তারপর তিনি আমাকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পরামর্শ দেয়। আমি বলি অযাথা আল্ট্রা করে টাকা নষ্ট করবো কেন। ডাক্তার যদি বলে যে করতে হবে, তাহলে করবো।
আমার একজন বড় ভাই আছেন যিনি একজন খুব ভালো ডাক্তার। এলাকায় বেশ ভালই নামডাক আছে তার। মূলত তার কাছেই আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে গিয়ে চেক আপ করাই। এছাড়াও আমার শহরে নগর মাতৃসেবা কেন্দ্র রয়েছে সেখানেও আজ নিয়ে দুবার দেখালাম।
আজ সেখানে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক কিছু সমস্যার কথা শুনে শুধুমাত্র একটি টেষ্ট দেয়। আমি চিকিৎসকের কাছে জানতে চাই যে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে হবে কীনা? তিনি বলেন যে আপাতত দরকার নেই।
আপনারা একবারে নয় মাসের সময় একবার এসে বাচ্চার পজিশন জানার জন্য আল্ট্রা করতে পারেন। এখন দরকার নেই।
তারপর ডাক্তার যে টেষ্টটি দিয়েছিলো সেটি সম্পন্ন করে রিপোর্ট দেখালাম। ডাক্তার বললো সব ঠিক আছে শুধু খাওয়া দাওয়া আরো বাড়াতে হবে। সকালে দুটো সেদ্ধ ডিম, রাতে ঘুমানোর আগে এক ক্লাস দুধ আর শাক-সবজি ফল-মূল বেশি খেতে হবে।
আর আগের যে ঔষধ গুলো ছিলো ভিটামিন ক্যলসিয়াম, আয়রণ সেগুলোই চলবে। সবকিছু শুনে ডাক্তারকে ধন্যবাদ দিয়ে বাসায় চলে আসি।
বাসায় আসলে আত্মীয়স্বজন আবারো ঐ একই প্রশ্ন। কী সন্তান। আমি বলেছি যে ডাক্তার বলেনি কিছু। শুধু বলেছে সন্তান ভালো আছে। আমাদের গ্রাম অঞ্চলে এখনো ছেলে সন্তান আর মেয়ে সন্তান নিয়ে বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। সবারই কম বেশি প্রত্যাশা থাকে ছেলে সন্তানের।
কারণ তাদের ধারণা ছেলে বড় হলে বিয়ে দিতে তেমন খরচ হবে না আর বৃদ্ধ বয়সে ছেলে আমাদের দেখে রাখবে। কিন্তু মেয়ের তো বিয়ে দিতে অনেক টাকা লাগবে আর মেয়ে তো শশুর বাড়ী চলে যাবে।
কিন্তু বর্তমানে ছেলেদের পাশাপাশি আমাদের সমাজে মেয়েরাও অনেক এগিয়ে গেছে। অনেকে সরকারী চাকুরি করছে। কেউ কেউ অনলাইনে বিভিন্ন বিজনেস করছে। আবার কেউ বেসরকারি চাকুরিও করছে।
ছেলেরা পারলে মেয়েরা পারবে না কেন, অবশ্যই পারবে। তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা গেলে তারাও একদিন আমাদের সংসারের অন্যতম হাতিয়ার হবে।
সেদিন টেলিভিশন এ দেখলাম বাংলাদেশ সরকার একটি আইন প্রনয়ন করতে চলেছে, সেটি হলো প্রতিটি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও নগর স্বাস্থ্যসেবাগুলোতে গর্ভবতী কোন মায়ের আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পর সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে হবে সেটা বলা যাবে না। এমনকি রিপোর্টেও এ ব্যপারে কোন প্রকার ইঙ্গিত থাকবে না।
যদি কোন কর্তৃপক্ষ এমনটা করে অর্থ্যাৎ ছেলে নাকি মেয়ে সেটি বলে আর তার যদি প্রমান পাওয়া যায় তাহলে সরকারীভাবে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবে। আমি মনে করি এটি একটি ভালো উদ্যোগ হবে আমাদের সবার জন্যে।
আজ আর নয় বন্ধুরা, ভালো থাকবেন সবাই।
আপনার স্ত্রীর একত্রিশ সপ্তাহ চলছে প্রেগন্যান্সির ।
জেনে আমার বেশ ভালো লাগলো আপনার স্ত্রীর জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।
খুব সুস্থ এবং সুন্দরভাবে একটা সন্তান এই পৃথিবীতে আসুক।
এটা আমাদের সমাজে একটা কমন প্রশ্ন যদি কেউ গর্ভবতী থাকে । তবে ,,আমার মনে হয় কারো কাছে এমন প্রশ্ন করা উচিত নয় যেটার উত্তর তার কাছে থাকে না।
একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন তিনি কি কন্যা সন্তান দেবে নাকি পুত্র সন্তান দেবে। তবে হাদিসে কিন্তু কন্যা সন্তানের কথা এসেছে,, যাই হোক না কেন তাতেই খুশি হওয়া উচিত শিক্ষা কন্যা সন্তান বা পুত্র সন্তানই হোক।
আপনি সময় উপযোগি একটা পোস্ট করেছেন। ছেলে মেয়ে সমান অধিকার কিন্তু আমাদের সমাজে এর বিপরীত চিত্র লক্ষ্য করি। খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।।
সবাই ছেলে সন্তান পছন্দ করে আসলে এটা আমাদের সমাজের কিছু ভূল ধারনা ৷ আর এই ভূল ধারনা থেকে অনেক সংসারে অশান্তি লেগেই থাকে ৷ ছেলে হোক আর মেয়ে হোক সন্তান সৃষ্টিকর্তার দান আর এই দান নিয়ে আমাদের অনেক খুশি থাকতে হবে ৷
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷
আমি সরকারের নেয়া এই উদ্যোগের সাথে শতভাগ সহমত পোষণ করছি। কারণ এখনো গ্রামের দিকে প্রচুর পরিমাণে ছেলে এবং মেয়ের বৈষম্য দেখা যায়। যেখানে মেয়েদের থেকে ছেলেদের মূল্যায়নটা অনেক আছে বেশি করা হয়।
এমনকি গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে যদি মেয়ে সন্তান শনাক্ত হয় তাহলে সেই ক্ষেত্রে ওই গর্ভবতী নারীর যত্ন অনেকাংশে কমে যায়। এটা একদমই উচিত না কারণ পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যাবে যে কেন তারা উন্নত?
আমার এটা ভালোভাবেই মনে আছে যখন আমার বোন গর্ভবতী ছিল এই সমস্যা হয়েছিল। কিন্তু যখন আমার সামনে আমারই এক প্রতিবেশী এটা নিয়ে কথা বলেছিল আমি রীতিমতো তাকে ধমক দিয়েছিলাম।
আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছে যারা কিনা ছেলে মেয়ে নিয়ে দ্বন্দ্বে মধ্যে থাকে।এই ধারণা গুলো আমার কাছে মনে হয় একেবারে ঠিক না। আল্লাহ পাক আমাদের যা দেয় ছেলে হোক মেয়ে হোক অবশ্যই সন্তুষ্ট থাকা উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার বিষয় উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।
এটা একটা ব্যাধীতে পরিণত হয়েছে। আমার নিজের সাথেও এমন হয়েছে, মেয়ে হবে না ছেলে হবে এই নিয়ে অনেকের প্রশ্ন শুনতে হয়, যখন বলি আমরা জানি না, আল্লাহ জানেন, তখন অনেকেই বিলিভ করতো না, তারা ভাবতো আমরা জানি কিন্তু বলছিনা।
আমার মনে হয় প্রত্যেক জায়গায় এরকমটাই হয়ে থাকে কোন দাম্পত্তি সন্তান হওয়ার আগ মুহূর্তে সবার একই প্রশ্ন ছেলে নাকি মেয়ে??
আর এই ছেলে এবং মেয়ে নিয়ে অনেক পরিবারে অনেক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।। কারণ পরিবারের মানুষজন চায় ছেলে আর যদি মেয়ে হয়। তখন পরিবারের মানুষজন সেই স্ত্রীকে অনেক কথাই শোনায়।।
সন্তান সৃষ্টিকর্তার দেওয়া বড় একটি নেয়ামত। তাই ছেলে হোক কিংবা মেয়ে যেটাই হোক না কেন সেটা নিয়ে আমাদের খুশি থাকা উচিত।।
খুবই ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে ভাই।।