Historical place of Bagerhat Khan Jahan Ali Dighi.//Photography
![]() |
---|
Hello Friends,
বন্ধুরা, আশাকরি সকলেই ভালো আছেন। আজ আমি অন্যরকম একটি লেখা নিয়ে আপনাদের মাঝে চলে এসেছি । এই শীতের মধ্যে সরিষাভোরে বৃষ্টির দেখা মিলছে বিগত ৩/৪ দিন ধরে। যদিও শীতের প্রবণতা খানিকটা হ্রাস পেয়েছে কিন্তু আবহাওয়া যেন প্রাণীকুলের একদমই অনুকূলে নেই।
গতকাল একটি স্মরণীয় দিন ছিল আমার জন্য। সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ২য় ধাপের পরীক্ষা ছিল যেখানে আমিও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু আবহাওয়া যেমন অনুকূলে যাচ্ছিল না অন্যদিকে সময়টাও না। পরীক্ষার প্রশ্ন হাতে পেয়ে খুব ভালো লাগছিল।
কিন্তু ঐ যে কথায় আছে, "শেষ ভালো যার সব ভালো তাঁর।" প্রবাদ
এমনিতেই মানসিক প্রশান্তির ঘাটতি, তারপর যখন দেখলাম বেশ কয়েকটি প্রশ্ন সঠিক উত্তর জানা সত্ত্বেও ভুল বৃত্ত পূরণ করেছি তখন মনে হচ্ছিল পায়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছিল। আমার প্রশ্ন এতোটাই কমন পড়েছিল যে সোনার হরিণটা ছিল গতকাল আমার কলমের লিপে।
যাইহোক, এখন আমি মূল লেখাতে চলে যাবো। তাহলে চলুন আজ আমরা জানবো বাগেরহাটের সেই নামকরা খান জাহান আলী দিঘি সম্পর্কে। অনেকেরই হয়তো নামটি জানা তবে বাস্তবে দেখার সুযোগ হয়ে ওঠেনি।
![]() |
---|
![]() |
---|
➡️এটা দিঘির সদর ঘাট। দিঘির অন্য কোনো পাশে এরকম বাঁধানো ঘাট নেই। প্রায় ১০০.০০ একর বা ২০০.০০ বিঘা জমিতে এই দিঘিটি কোনো প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়াই খনন করা হয়েছিল। এই বিষয়টি ভাবতেই অবাক লাগে যেখানে শত শত কোটি টাকা বরাদ্দ এবং ব্যয় করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অথচ বছর ঘুরতে না ঘুরতেই নদী পুনরায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে।
➡️ সেখানে শত বছরের পুরনো এই খনন করা দিঘির গভীরতায় কোনো পরিবর্তন নেই। ঈশ্বর সহায় থাকলে অনেক কিছুই সম্ভব যেখানে প্রযুক্তিও টিকে থাকতে পারে না। এই দিঘিতে কয়েকবছর পূর্বে মাটি খননের কোদাল পাওয়া গিয়েছিল যেটা একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের পক্ষে উঁচু করে দীর্ঘ সময় ধরে রাখাটাও অসম্ভব। এটা কোনো গল্প নয় যেহেতু আমার বাড়ি এই বাগেরহাট জেলাতেই তাই এটা আমার পর্যবেক্ষণ করা একটি তথ্য।
![]() |
---|
![]() |
---|
![]() |
---|
![]() |
---|
![]() |
---|
![]() |
---|
➡️দিঘির পূর্বেই মাজারের অবস্থান। এখানেই খান জাহান আলীর মাজার এবং বাইরের পাশে আছে কালা পাড় ও ধলা পাড়ের অবস্থান। কালা পাড় ও ধলা পাড় কোনো মানুষ নয় তবে পোষ মানা কুমির। যাদেরকে আমিও ছোটবেলায় দেখেছি।
➡️আমি খুব ছোটবেলায় এই দিঘিতে গিয়েছি এবং এই কুমিরের শরীর ও স্পর্শ করেছি। এই দিঘির পাশেই এক আত্মীয়ের বাড়ি থাকার সুবিধার্থে মাঝেমধ্যেই যাওয়া হতো। এই দিঘি ও ষাট গম্বুজ মসজিদের জন্য বাগেরহাট পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত।
👉আমার মায়ের থেকে শোনা:- আমার জন্মের ও পূর্বে কোনো এক দম্পতি যাদের কোনো সন্তান ছিল না। এই দিঘিতে এসে মানসী করেন যে তাঁদের প্রথম সন্তান তাঁরা এই দিঘিতে বিসর্জন দিবে এক বছর বয়সের সময়। বছর শেষ হতে হতেই তাঁদের কোল আলো করে জন্ম নিয়েছে এক ফুটফুটে শিশু। কিন্তু তারপর একবছর পার হতেই দম্পতি তাঁদের মানসী রক্ষার্থে সন্তানকে দিঘিতে বিসর্জন দিয়েছিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে ঐ দুইটি কুমিরের একটি এসে ঐ শিশুকে মুখে করে মাঝ দিঘিতে নিয়ে গিয়েছিল। এবং কিছুক্ষণের মধ্যে আবারো দিঘির ঘাটে ফিরে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়া দম্পতিকে তাঁদের সন্তান ফিরিয়ে দিয়েছিল।
➡️এরকম আরো কিছু ঘটনা রয়েছে যে কারণে কালা পাড় ও ধলা পাড় বেঁচে না থাকলেও তাঁরা অমর। কিছু বিদেশী কুমির এখানে ছাড়া হয়েছিল যারা মানুষের ওপর অনেক বার আক্রমণ করেছে এরকমটা শুনেছিলাম। তবে এখন আদৌ কোনো কুমির আছে কিনা আমার সঠিক জানা নেই।
➡️ এখানে এখনো মানুষ সেই বিশ্বাস করে যে এই দিঘির জলে স্নান করলে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অন্যথায় দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে স্নান করতো না।
➡️ দিনের বেলায় এখানে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা যায় বেশি। কারণ এখানে রাতে কিছু দুষ্কৃতকারীদের আগমন হয় যেহেতু নির্জন এলাকা তাই লোক সমাগম খুবই কম। সম্পূর্ণ দিঘির পাড় হেঁটে পরিদর্শন করা যেতে পারে তবে সেটা একদিনে মোটেও সম্ভব না।
➡️ তাছাড়া এখনো অন্যপাশে যাওয়ার পথে হাঁটার সময় মনে হয় যে ঘন জঙ্গলে যেন ক্রমশ প্রবেশ করছি। দিঘির পূর্ব পাশে ও একটি মসজিদ রয়েছে যেটা হয়তো অনেক দর্শনার্থীরা জানার ও সুযোগ পাননি।
![]() |
---|
➡️আমি মাজার ও দিঘির এলাকার মধ্যে প্রবেশ করার পর এই দৃশ্যটি মুঠোফোনে ক্যামেরা বন্দি করেছিলাম।
![]() |
---|
➡️অন্য সময় ভালো না লাগলেও আজ গরম তাই এগুলো দেখেই খেতে ইচ্ছা করছিল। কিন্তু পরীক্ষাটা খারাপ হওয়ার কারণে সেই খাওয়াটাও যেন বিরক্তিকর। তাই সেখান থেকে অন্য পাশে গিয়েছিলাম।
![]() |
---|
➡️ অনেক দিন হলো কোনো মেলায় যাওয়া হয়নি তাই এই ধরনের দোকান ও চোখে পড়েনি। কিন্তু দিঘির পাড়ে বারো মাস এই দোকান দেখা যায় যেটা ঐ দোকানির কাছ থেকে জানতে পেরেছিলাম।
![]() |
---|
➡️এই রঙ্গিন পোশাকের বাদাম বিক্রেতাকে দেখে অনেক সময় পর নিজের অজান্তেই হেসেছিলাম। তারপর আমি আমার দাদার মেয়েকে এই ব্যক্তির থেকে মাখানো বাদাম ক্রয় করে দিয়েছিলাম।
![]() |
---|
➡️ দর্শনার্থীদের বাইকের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে একটি সংরক্ষিত স্থান। এটা না করলে অনেকেই তাঁদের স্বপ্নের বাইকটি হারিয়ে ফেলতে পারেন।
![]() |
---|
➡️ফেরার পথে দেখলাম মাজারে মধ্যে কিছু মানুষ প্রবেশ করছেন। আমরা কেউই ইচ্ছে করেই যাইনি। কারণ এখানে গেলে বের হতে বেশ কিছু সময় প্রয়োজন। আর মন খারাপ থাকার কারণে ষাট গম্বুজ মসজিদে আমরা কেউ যাই নি।
আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
Your post has been successfully curated by @inspiracion at 35%.
Thanks for setting your post to 25% for @null.
We invite you to continue publishing quality content. In this way you could have the option of being selected in the weekly Top of our curation team.
@inspiracion,
Thank you so much for your encouraging support 🙏
জীবনে আমিও একবার এখানে গিয়েছিলাম। দিঘির জলে হাত মুখ ধুতে গিয়ে কুমিরের ভয় লেগেছিল। এখানে গেলে এক এক জন এক এক কথা বলে। কেউ ভয় দেখায়, কেউ সাহস জোগায়।
সব কিছুর সাথে বিজ্ঞানকে মেলানো ঠিক না, এখানে সবার ঊর্ধ্বে থাকে মানুষের বিশ্বাস।
আপনি চমৎকার ভাবে পুরো খান জাহান আলীর মাজার এর ছবি সহ ইতিহাস তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আপু, এত সুন্দর একটা ট্রাভেল পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
একদমই সঠিক বলেছেন ভাই। পাশাপাশি আমাদের এটা চিন্তা করা উচিত বলে আমার মনে হয় যে ঐশ্বরিক শক্তির একটা অস্তিত্ব আছে। তাই এখনো সূর্য পূর্বেই মতোই উদিত হয় এবং আবার সময়মতো অস্ত যায়।
দিদি, আপনার ফটোগ্রাফিগুলো সত্যিই মনোমুগ্ধকর। এই স্থানটি সরাসরি দেখার সুযোগ হয়নি তবে আজ আপনার পোস্টটির মাধ্যমে দেখার সুযোগ পেলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।।
বিশ্ব ঐতিহ্যের একটি ষাট গম্বুজ মসজিদ আর তারই একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এটি। সময় ও সুযোগ হলে অবশ্যই বাগেরহাট চলে আসবেন।
ভাগ্যে থাকলে অবশ্যই যাবো একদিন। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার প্রাথমিক সহকারী পরীক্ষা ছিল বিধায় আপনি পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন। এছাড়াও আপনি বাগেরহাটের খানজাহান আলী দিঘী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনাদের বাগেরহাট জেলায় এরকম সুন্দর দর্শনীয় স্থান আছে কখনো জানা ছিল না। যদি কখনো বাগেরহাটে যাওয়া হয় ইনশাআল্লাহ একবার ঘুরে আসার চেষ্টা করব।