শতবছরের পুরাতন বাসযোগ্য ভবন//সিমেন্টের ব্যবহার ছাড়া তৈরী।

in Incredible Indialast year (edited)
IMG20230226124624.jpg
DeviceName
AndroidRealme8
LocationBangladesh
Shot by@piya3

Hello Everyone,

প্রথমত, শুভ রাত্রি জানাই সকলকে। মধ্যরাতে শিখতে বসলাম। আমরা প্রত্যেকেই প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত থাকি। তবে এই লেখাটা যে কম গুরুত্বপূর্ণ এরকমটা ও ঠিক না।

কিন্তু একটা লেখা উপস্থাপন করার জন্য দরকার ঠান্ডা মস্তিষ্ক। যার জন্য সকাল সকাল লিখতে বসা হয়ে ওঠেনা। অন্যান্য দিনের মতো আজও চলে আসছি একটা নতুন বিষয় ভাগ করে নেওয়ার জন্য আপনাদের সাথে।

আমি আজ উপস্থাপন করতে চলে এসেছি আমার গ্রামেরই ঐতিহ্য বলা যায় এই বাড়িটিকে। যেটা শত বছরের ও অধিক বয়স প্রাপ্ত। কিন্তু এখনো সম্পূর্ণরূপে এটি পাসযোগ্য বাস গৃহ হিসেবেই রয়েছে।

সব থেকে আশ্চর্যজনক ব্যাপার এটাই যে, এই বাড়িটা তৈরি সময় কোনো সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়নি। আর এই বিষয়টা আমাদের বর্তমান প্রজন্মের কাছে কিছুটা হলেও বোকার মত মনে হয় বা এটা কিভাবে সম্ভব!

একটু হলেও কৌতুহল কাজ করে। কিন্তু কৌতূহলী হয়েও কোনো লাভ নেই কারণ এটাই সত্য। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যখন কোন ঐতিহাসিক স্থান পর্যবেক্ষণে যাই, সেখানে দেখতে পাই বিভিন্ন ঐতিহাসিক কারুকার্য।

এগুলো দেখে নিজেদের চোখকেও বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। তখন মাথায় কাজ করে যে এটা একটা মানুষ কিভাবে হাত দিয়ে করতে পারে। আসলে আমরা যন্ত্রের যোগে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি যন্ত্রের উপর।

তাই দেখা যাচ্ছে দিনদিন এই হস্তশিল্পের প্রচলন হারিয়ে যাচ্ছে। এখন আর যেমন নকশি কাঁথা দেখা যায় না, ঠিক তেমনি ঘরেও হস্তশিল্পের কাজ খচিত দরজা দেখা যায় না।

পুরাতন ভবন তৈরির সরঞ্জাম/উপাদান:

  • ইট
  • বালু
  • লোহাকাঠ
  • লোহার দন্ড
  • চুন ও সুরকী-এক প্রকার মিঠা

এই ভবনের বিশেষত্ব:

বাড়িতে আমাদের গ্রামে এবং আমাদের আত্মীয় এনারা। যার জন্য সচরাচর এই বাড়িতে আমার যাতায়াত রয়েছে। ভবনে কোন থাই গ্লাস নেই। কিন্তু আছে সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা।

এই বাড়ির কোনো কক্ষের মধ্যে থাকলে যত বেশি বৃষ্টি এই হোক না কেন বৃষ্টির কোন শব্দ পাওয়া যায় না। তারপর যদি বজ্রপাত হয় সেইটার শব্দ ও শোনা যায় না।

আবার ঝড়ের সময় বাতাসের শব্দ ও উপলব্ধি করা যায় না যদি জানালা দরজায় দেওয়া থাকে কক্ষের ভিতর থাকলে। আর এটার মূল কারণ হচ্ছে এটা এমন ভাবে তৈরি করা এবং দেয়ালের ব্রত এতটাই বেশি যে এটা ভেদ করে কোনো শব্দ বা কোনো কম্পন কক্ষে পৌঁছাতে পারেনা।

শীতের সময় কক্ষের মধ্যে শীতের পরিমাণটাও বেশ কম। আবার গরমের সময় গরমটাও অনেক কম। এখানে নেই কোন আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া কিন্তু তারপরেও প্রযুক্তির যত সুযোগ সুবিধা এই ভবনের মধ্যে বিদ্যমান।

এটাই হচ্ছে এই ভবনের বিশেষত্ব যেটা বর্তমান প্রযুক্তির ব্যবহার করে ও পাওয়া এখন কষ্টসাধ্য। কারণ এই বাড়িটা যখন করা হয়েছে তখন মানুষ এত বেশি শিক্ষিত ও ছিল না আবার মানুষের মধ্যে এত অতিরিক্ত বুদ্ধি বিবেচনা ও ছিল না।

তবে যেটা ছিল সেইটা হচ্ছে সততা ও পরিশ্রম। যার জন্য মানুষ পরিশ্রম করে টাকা রোজগার করত। অন্যদিকে টাকারও বেশ মূল্য ছিল।

আসলে পরিশ্রম ও সততার মূল্য আগেও যেমন ছিল এখনো ঠিক এরকমই আছে। শুধুমাত্র আমাদের কাজগুলোকে সহজ করে দিচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি। যার জন্য আমরা আমাদের হাতের সৃজনশীলতা হারিয়ে ফেলছি।

আমাদের ভেতরকার যে সৃষ্টিশীল মনোভাব এটাও অনেকাংশে কমে যাচ্ছে। আমার এরকমটা মনে হয় যে আমাদের উচিত প্রযুক্তির সুবিধার সাথে সাথে হস্তশিল্প বা হাতের কাজের মূল্যায়ন করা।

সেই সাথে নিজে থেকে উদ্যোগী হয়ে এই শিল্পের প্রতি জোর দেওয়া। হয়তো প্রযুক্তির জন্য যে কাজটি তিন বছর বসে মানুষ করত তা তিন মাসে সম্ভব। কিন্তু সেখানে একটা যান্ত্রিক ভাব দেখা যায়।

অবশ্যই সময়ের সদ্ব্যবহার করার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার অতীব জরুরী। আবার তার মানে এই না যে হস্তশিল্পকে বাদ দিতে হবে। কারণ এই হস্তশিল্প বা মানুষের নকশাখচিত কাজগুলো আমাদের ঐতিহ্য।

বাড়িটি সম্পর্কে যে তথ্যগুলো আমি আমার লেখাতে উপস্থাপন করেছি আপনাদের কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না।

Sort:  
Loading...
 last year 
  • আমাদের ভেতরকার যে সৃষ্টিশীল মনোভাব এটাও অনেকাংশে কমে যাচ্ছে। আমার এরকমটা মনে হয় যে আমাদের উচিত প্রযুক্তির সুবিধার সাথে সাথে হস্তশিল্প বা হাতের কাজের মূল্যায়ন করা।

  • এটারি বর্তমান অভাব আপু। হস্তশিল্প হারিয়ে গেছে এখন প্রযুক্তির যুগ। কিন্তু আমাদের ঐতিহ্য ধরতে হলে হস্তশিল্প বা মানুষের নকশা খচিত কাজগুলোতে ফিরে আসা উচিত। কিন্তু আধুনিকতার ছোয়া যেন সবকিছু পাল্টে দিছে।

  • পুরোনো ঐতিহ্য দালান কোঠার অনেক বৈশিষ্ট্য থাকে। যার এক টুকরোও বর্তমান নাই। অনেক ভালো লাগলো আপনি সেই পুরনো বাড়ির বিষয়ে আমাদের সামনে তুলে ধরেছে। এরকম পুরনো বাড়ির বিশেষত্ব জেনে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করা যায় না। কিন্তু পুরনো ঐতিহ্য গুলো দেখে বিশ্বাস করতেই হবে৷ যাইহোক খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে ভাল থাকবেন।

 last year 

আসলেই আপনি ঠিকই বলেছেন যদিও এই ভবনের তেমন কোন থাই গ্লাস নেই। কিন্তু তারপরেও রয়েছে বিশেষ সুযোগ সুবিধা। আমাদের গ্রামে এমন একটা ভবন রয়েছে। তবে আপনি যে ভবনটা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সেই ভবনের মত নয়। আমাদের গ্রামে যে ভবনটা রয়েছে। সেটা মাটির নিচে তৈরি, অর্থাৎ মাটির উপরে একতলা নিচে একতলা মাটির নিচে।

ভাবনটি যেহেতু আপনাদের আত্মীয়র সেজন্য আপনাদের ওখানে যাওয়া আসা অনেক বেশি। এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। তার সাথে আপনি ভবন সম্পর্কে বিস্তারিত অনেক কিছুই আলোচনা করেছেন। যেগুলো আসলে আমার জানা ছিল না। তবে আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। তার সাথে ফটোগ্রাফি ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

একেবারে ফাটাফাটি বাড়ি তারপর আবার আপনার ফাটাফাটি উপস্থাপনা দুই মিলিয়ে বেশ দারুণ একটা কম্বিনেশনের মাধ্যমে আপনি আপনার পোষ্টটি আমাদের উপহার দিয়েছেন।

সত্যিই শতবর্ষ এমন পুরোনো বাড়িতে এত সুযোগ সুবিধা থাকবে সেটা বাবতেও পারিনি। আর এটা সত্যিই অবাক করা ব্যাপার যে বাড়িটার ভেতরে বজ্রপাতের শব্দও প্রবেশ করতে পারেনা।

বাড়িটার ভিতরে শীতকালে শীত কম আর গরমকালে গরম কম সত্যিই মমে হচ্ছে যেন বাড়িটাতে এয়ারকন্ডিশনার লাগানো।

বেশ দারুন লাগলো আপনার পোষ্টটি পড়ে।আমাদের বাড়ির পাশেও ব্রিটিশদের একটা নীল কুঠি আছে যেটার ইট অনেক পুরু ও বড় আকৃতির। তাই আমার মনে হচ্ছে আপনার এলাকার বাড়িটাও ব্রিটিশ আমলের তৈরি।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 69183.52
ETH 3807.87
USDT 1.00
SBD 3.71