গ্রীষ্মকালীন ফলের সাথে জড়িয়ে থাকা স্মৃতি।
Hello Friends,
গ্রীষ্মকালীন ফল কেমন খাচ্ছেন সবাই? আমি কিন্তু ভরপুর খাচ্ছি। তবে কাঁঠালকে একটু এড়িয়ে যাচ্ছি কারণ কাঁঠাল অনেকটা মিষ্টি আর গরমে কাঁঠাল খেলে যেন গরমটা আরো বেশিই লাগে।
এইবছর কাঁঠাল ও কালো জামের ফলন বেশ ভালোই মনে হচ্ছে। কিন্তু তুলনামূলক আমের ফসল অনেকটাই কম। যাইহোক, আজ যে কারণে হঠাৎ গ্রীষ্মকালীন ফল নিয়ে লেখা। আজ দুপুরের দিকে যখন হঠাৎ কারেন্ট চলে গিয়েছিল তখনই আর ঘরে থাকতে ইচ্ছে করছিল না।
অন্যদের সাথে যোগাযোগ করে আমি সকলকে বাজারে আসতে বলেছিলাম। কারণ একা একা তো আর বাজারে গিয়ে বসে থাকা যায় না। যাইহোক, বাজারে গিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে করতে দুই কাপ চা ও খেয়েছিলাম।
হঠাৎ বাপি বলল যে কাঁঠাল এসেছে। আমিসহ সকলেই দ্রুত কাঁঠালের ঘরে ছুটে গিয়েছিলাম। সেখানে পৌঁছে দেখলাম পাকা এবং কাঁচা উভয় রকমের কাঁঠালই আছে সেখানে। তবে যেহেতু আমাদের জন্ম গ্রামে এবং জন্মসূত্রে এটা আমাদের একটা বৈশিষ্ট্য যে এই কাঁঠাল, জাম এবং আমসহ কিছু ফল আছে যেটা দেখলেই আমরা বুঝতে পারি ভালো বা মন্দ।
পাশাপাশি এটা সত্য যে আবার সকলে বুঝতে পারে এরকমটাও না। এটা হওয়ার পেছনে কারণ আছে যেমন ধরুন গ্রামেই এই ফলের গাছ গুলো বেশি যে কারণে যাচাই বাছাই করে ক্রয়ের সুযোগ থাকে। অথচ শহরে সিজনের সময় এগুলোর সংখ্যাধিক্য বেশি হলেও জনসংখ্যার তুলনায় সেটা কম। যে কারণে এতোটা যাচাই বাছাই করে ক্রয় করাটাও হয়তো সম্ভব হয় না।
যাইহোক, এতো জোরে দৌড়ে গিয়ে ও কোনো ফায়দা হলো না। কারণ কাঁঠাল বিক্রেতা নিজেই বলল এগুলোতে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়েছে। যেহেতু ঐ ছেলেটা স্থানীয় এবং আমাদের সমবয়সী হয়তো মানবিকতার জন্য বিষয়টা আমাদেরকে অবগত করেছিল।
পাশাপাশি, আমি ঐ মুহুর্তে শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম। এখানে মজার একটা ঘটনা আছে। যখন আমার বয়স হয়তো দশ বা এগারো তখন আমি আমার ছোট মাসির বাড়িতে গিয়েছিলাম। আমার সাথে ছিল মামাতো ভাই ও মাসতুতো ভাইয়েরা।
সবমিলিয়ে আমিসহ আমরা আট ভাই-বোন গিয়েছিলাম। সকালে সকলে মিলে খাবার খাওয়া শেষ করে পাশেই আমার এক পিসির শশুর বাড়ি সেখানে গিয়ে আম ও কাঁঠাল খেয়েছিলাম কিন্তু আমের চাহিদাটা পূরণ হয়নি ঐদিন।
আবারো মাসির বাড়িতে আসতেই আমার মাসি বলল তাঁদের বাগান থেকে কাঁঠাল কেটে নিয়ে আসতে। বাহ! কি মজার বিষয়, সকলে মিলে গিয়েছিলাম কাঁঠাল কাটতে। যদিও পাকা কাঁঠালের মিষ্টি ঘ্রাণ পাচ্ছিলাম কিন্তু কাঁঠাল খুঁজে পাচ্ছিলাম না।
অবশেষে যদিও একটা কাঁঠাল গাছ থেকে কেটেছিলাম কিন্তু সেটা ছিল আবার মাসির এক প্রতিবেশীর গাছ। কাঁঠাল তো নিয়ে এসেছিলাম এবং যেহেতু আট ভাই-বোন তাই মিনিট বিশেকের মধ্যেই সেটা খেয়ে ফেলেছিলাম।
কিছুক্ষণ বাদেই আমার মেসো ঐ মাসির গাছ থেকেই কাঁঠাল কেটে নিয়ে এসেছিল। তখন আমার মাসি বলল কাঁঠাল তো একটাই পেকেছিল তাহলে ওরা একটা নিয়ে আসল আবার এটা কোত্থেকে এলো। তখন মেসো বলল ওরা কাঁঠাল কিভাবে খুঁজে পাবে এটাতো গাছের গোড়ায় মাটির ভিতরে ছিল।
এবার তো আমরা রীতিমতো একটু ভয়ই পেলাম। সবাই সবার মুখে তাকাতাকি চলছিল। একটু বাদেই পাশের বাড়ির দিদা সম্পর্কের একজন রীতিমতো গানের সুরে চেঁচামেচি শুরু করেছিল। মাসিমাকে বললাম মেসোর নিয়ে আসা কাঁঠালটা দিয়ে আসতে হবে।
লিচু ও আমাদের দেশি একটি ফল তবে আমাদের এলাকায় লিচু গাছই দেখা যায় না আর ফল তো দূরের কথা। শুধু মাত্র গ্রীষ্মকালে বাজারে পাওয়া যায়। এটা উত্তরবঙ্গের দিকে চাষ করা হয়। আজ লিচু খেতে বেশ মজাই লাগছিল আর বাবা বলল যে এবার নাকি বাজারেও লিচু বেশি পাওয়া যাচ্ছে।
যেহেতু, আমাদের এলাকায় পাওয়া যায় না তাই এটার সাথে আর কোনো মজার ঘটনা নেই। কিন্তু যে গুলো পাওয়া যায় সেখানে কোনো না কোনো ঘটনা থাকবেই। আমি আমার শৈশবটা খুব বেশিই উপভোগ করেছি যেটা হয়তো অনেকেই করতে পারেনি।
শৈশবে তো সব কিছুতেই ছাড় ঐ যে সবাই একটাই কথা বলে ও ছোট বুঝতে পারেনি। আপনাদের ও নিশ্চয়ই ঐইরকম ফল খাওয়ার অনেক ঘটনা স্মৃতির পাতায় লিপিবদ্ধ আছে।
যাইহোক, আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
গ্রীষ্মকালীন ফল খেতে আমার বরাবরই খুব ভালো লাগে ।এ বছর লিচু খেয়েছি প্রচুর। আমাদের এখানে বৃষ্টির কারণে লিচু গুলো বড় হতে পারেনি। তাই গাছ থেকে ছোট ছোট লিচু পেরে খেতে হয়েছে। কিন্তু আপনার কাঁঠাল গুলো দেখে আমার সত্যিই খুব লোভ লাগছে। আমি কাঁঠাল খেতে ভীষণ ভালোবাসি। আমাদের গাছের কাঁঠাল গুলো এখনো পাকেনি। এ বছরে মাত্র একবার আমার কাঁঠাল পাকা খাওয়া হয়েছে। জানিনা আপনাদের মত আমাদের গাছের কাঁঠাল গুলো কবে পাকবে।
বাংলাদেশ সব থেকে বেশি ফল পাওয়া যায় গ্রীষ্মকালে । আর গ্রীষ্মকালীন ফলগুলোর স্বাদ ও অনেক বেশি কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল আর এই ফলের মৌসুম হল গ্রীষ্মকাল। প্রায় প্রতিটি মানুষের গ্রীষ্মকালের ফলের সাথে কিছু স্মৃতি জড়িয়ে থাকে কেউ পছন্দ করে কাঁঠাল খেতে আবার কেউ পছন্দ করে লিচু খেতে আবার কারোর পছন্দ জামরুল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার কিছু স্মৃতি আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য।
সারা বছরের তুলনায় সব থেকে গ্রীষ্মকালে বেশি ফলমূল পাওয়া যায়। তবে হ্যাঁ! আপনি দেখে আমার মতোই কাঁঠালকে এড়িয়ে চলেন। আমিও কাঁঠাল খেতে আমার একটা পছন্দ করি না। আমাদের এদিকেও অনলাইনে বছরের তুলনায় এবার আমের ফলন অনেকটাই কম হয়েছে। তবে লিচুর পরিমাণ আবার ভালই হয়েছে। শহরের থেকে আমাদের গ্রাম অঞ্চলে বেশি ফলমূল হয়ে থাকে। তবে এবারের লিচুগুলোতে অনেক বেশি মিষ্টি হয়েছে।
সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।