বাতাসা দিয়ে গোবিন্দভোগ চালের পায়েস তৈরির রেসিপি / Rice Kheer Recipe
Image edited by Adobe |
---|
গতকাল অর্থাৎ রবিবার আমি লোকনাথ বাবার তিরোধান দিবস উপলক্ষে গোবিন্দভোগ চালের পায়েস বানিয়েছিলাম। তবে এবার আমি চিনি বা মিছরি ব্যবহার করিনি, তার বদলে আমি গুড়ের বাতাসা দিয়ে পায়েস তৈরি করেছিলাম। আজকে সেই পায়েসের রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আসুন প্রথমে দেখে নিই কি কি উপকরণ লাগবে পায়েস তৈরি করতে।
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
দুধ | ১ লিটার |
মিল্ক পাউডার | ৫০ গ্রাম |
গোবিন্দভোগ চাল | ৫০ গ্রাম |
বাতাসা | ২৫০ গ্রাম |
কাজু বাদাম | ২৫ গ্রাম |
কিশমিশ | ২৫ গ্রাম |
ঘি | ৫০ গ্রাম |
তেজপাতা | ২টি |
ছোট এলাচ | ৩টি |
“প্রথম ধাপ” |
---|
প্রথমে এক লিটার দুধ গরম করতে বসিয়ে দিলাম।
দুধ হালকা গরম হয়ে আসলে তিন চার হাতা দুধ আমি অন্য একটা পাত্রে তুলে রাখলাম। পাত্রে তুলে রাখা দুধের মধ্যে আমি ভালো করে মিল্ক পাউডার মিশিয়ে দিলাম। পায়েস তৈরিতে মিল্ক পাউডার ব্যবহার করলে সেই পায়েসের স্বাদ অনেক গুণ বেড়ে যায়।
“দ্বিতীয় ধাপ” |
---|
দুধ ভালো করে গরম হয়ে গেলে মিডিয়াম আঁচে রেখে আমি তার মধ্যে তেজপাতা আর এলাচ দিয়ে দিলাম। এই সময় মাঝেমধ্যে খুন্তি বা হাতা দিয়ে দুধটাকে নাড়তে হবে যাতে পাত্রের নিচে দুধ লেগে না যায়।
অন্যদিকে গোবিন্দভোগ চাল ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিয়ে ঘি দিয়ে মেখে রাখলাম। চালের সাথে ঘি মাখিয়ে রাখলে সেই পায়েসের স্বাদ বাড়ে আর পায়েসের চাল একটার সাথে আরেকটা কখনো লেগে যায় না।
“তৃতীয় ধাপ” |
---|
গরম করতে বসানো দুধ পরিমাণে বেশ কিছুটা কমে ঘন হয়ে এলে তার মধ্যে আমি ঘি মাখানো গোবিন্দভোগ চালগুলো দিয়ে দিলাম। পুরো পায়েসটা মিডিয়াম আঁচেই রান্না করতে হবে। মাঝেমধ্যে পায়েসের দুধ খুন্তি বা হাতা দিয়ে নেড়ে দিতে হবে যাতে দুধ বা চাল পাত্রের নিচে লেগে না যায়।
“চতুর্থ ধাপ” |
---|
চাল ভালো মতন সেদ্ধ হয়ে গেলে আমি পায়েসের মধ্যে বাতাসা দিয়ে দিলাম। সব সময় মনে রাখতে হবে যে চাল ভালো মতন সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত বাতাসা বা চিনি কিছু দেওয়া যাবে না। চাল সেদ্ধ হওয়ার পূর্বে চিনি বা বাতাসা দিয়ে দিলে সেই চাল আর সেদ্ধ হবে না। এরপর খুন্তি দিয়ে ভালোমতো পায়েসটাকে নাড়াতে লাগলাম যাতে বাতাসাগুলো ভালো করে পায়েসের মধ্যে মিশে যায়।
“পঞ্চম ধাপ” |
---|
বাতাসাগুলো পায়েসের মধ্যে ভালো মতন মিশে গেলে আমি একটা পাত্রে কাজু, কিশমিশ আর ঘি মিশিয়ে নিয়ে এক মিনিট গরম করে সেই মিশ্রণ পায়েসের ওপরে দিয়ে দিলাম। তারপর খুন্তি দিয়ে ভালো করে নেড়ে মিশ্রণটাকে আমি পায়েসের সাথে মিশিয়ে দিলাম।
“ষষ্ঠ এবং শেষ ধাপ” |
---|
মিডিয়াম বা কম আঁচে পাঁচ মিনিট রাখলেই হয়ে গেলো আমাদের বাতাসা দিয়ে গোবিন্দভোগ চালের পায়েস রেডি।
নিজে তৈরি করেছি বলে বলছি না, পায়েসটা কিন্তু খেতে জাস্ট ফাটাফাটি হয়েছিল। বেশিরভাগ মানুষ পায়েস তৈরি করার সময় এক লিটার দুধের সাথে ১০০ গ্রাম চাল ব্যবহার করেন, কিন্তু আমি এখানে ৫০ গ্রাম চাল ব্যবহার করেছি পায়েসের গ্রেভির টেস্ট ভালো করে পাওয়ার জন্য। যারা কম মিষ্টি পছন্দ করেন তারা ২৫০ গ্রামের পরিবর্তে ১৫০ - ২০০ গ্রাম বাতাসা ব্যবহার করবেন।
এই নিয়মে একবার পায়েস তৈরি করে দেখুন। কথা দিচ্ছি এর স্বাদ আপনার জিভে বহুদিন লেগে থাকবে।
X share: https://x.com/PijushMitra/status/1797641787911369113
বাহ দাদা, আপনি প্রতিদিন রান্না করেন জানতাম তবে মজাদার রেসিপি করতেও যে বেশ পটু সেটা তো জানা ছিলো না। বেশ ভালো ভাবেই আপনার গোবিন্দভোগ চালের পায়েস তৈরি করেছেন সেটা দেখে মনে হচ্ছে খুব সুস্বাদু হয়েছিলো। যদি সম্ভব হতো তাহলে আপনার এখানে গিয়ে টেস্ট করে আসতাম😀। আপনার লেখা পড়ে যে কেউ আপনার মতোই পায়েস বানাতে পারবে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।
বহুকাল বাদে আমি পায়েস রান্না করলাম, তবে বাতাসা দিয়ে পায়েস আমি এই প্রথমবার রান্না করেছি। খেতে কিন্তু সত্যি দারুন হয়েছিল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার বাতাসা দিয়ে পায়েস তৈরির রেসিপি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
আমাদের পুজোর বাতাসা গুলো একটা কৌটো করে জমা করে রাখা হয়। যখন আমরা এরকম কোন মিষ্টি জিনিস তৈরি করি, সেই বাতাসা গুলো ব্যবহার করি। আজকে আপনার পোস্ট দেখে সেটাই প্রথমে মনে হল। খুব সুন্দর করে প্রতিটি ধাপে ধাপে রেসিপিটি শেয়ার করেছেন।
আমার মাও পুজোর বাতাসাগুলো কৌটোয় জমিয়ে রেখে তারপর তা দিয়ে নানারকম মিষ্টি জিনিস তৈরি করতো। আমি অবশ্য বাতাসা কিনে তা দিয়ে পায়েস রান্না করেছি। ধন্যবাদ আমার রেসিপিটা পড়ার জন্য।
পায়েসের মাঝে বাতাসা ব্যবহার করতে আমার আগে কখনো চোখে পরে নাই। ভালো একটা জিনিস জানা হলো আমার।
ঠিকই বলেছেন যে, পায়েসের মাঝে আগে মিষ্টি দিলে চাল সেদ্ধ হয় না।আমি একবার দিয়ে ধরা খেয়েছিলাম।
আপনি খুবই সুন্দর করে ধাপে ধাপে রেসেপিটা বর্ননা করেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর করে রেসিপিটা শেয়ার করার জন্য।
এইরকম ভুল প্রথম প্রথম আমাদের সকলেরই হয়। ভুল না করলে আমরা শিখবো কি করে? আমি এই প্রথমবার বাতাসা দিয়ে পায়েস রান্না করলাম। খেতে কিন্তু সুস্বাদু হয়েছিল। আপনি একবার রান্না করে দেখতে পারেন।
গোবিন্দভোগ চালের নাম শুনলেই কেন জানি লোভ লেগে যায়। সত্যিই আপনি বাতাসা দিয়ে যেভাবে পায়েস রান্না করেছেন ফটোগ্রাফি দেখেই মনে হচ্ছে খেতে খুব সুস্বাদু হয়েছে। তবে আপনি যে এত সুন্দর রান্না পারেন আগে জানতাম না। আপনার রান্না করার ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মধ্যে শেয়ার করেছেন।
সুন্দর রেসিপি নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আমি বাতাসা দিয়ে এই প্রথমবার গোবিন্দভোগ চালের পায়েস রান্না করলাম। খেতে কিন্তু সত্যিই দুর্দান্ত হয়েছিল। আমি নিজেও ভাবিনি যে এতটা ভালো খেতে হবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পায়েস রান্নার রেসিপি পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করার জন্য।