পার্বতীপুরের সেরা পিকনিক স্পট স্বপ্নপুরী এবং আশুরার বিল ভ্রমণ
আসসালামুআলাইকুম। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও ভাল আছি।
আজ আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করব আপনাদের সাথে। বেশ কিছুদিন ধরেই স্বপ্নপুরী যাওয়ার কথা কিন্তু যাওয়া হচ্ছিল না। হঠাৎ করে আমার বড় আপু ঢাকা থেকে আসার পরে আমাকে ফোন দিয়ে বলল যে আমার সঙ্গে স্বপ্নপুরী ঘুরতে যাবি। আমি বললাম হ্যাঁ যাবো। তারপর আমি রওনা হলাম রংপুর থেকে পার্বতীপুর এর উদ্দেশ্যে। আমার বাবার বাসায়। আপু ওখানে আগে এসেছিল। আমি যাওয়ার পরে টুকটাক কেনাকাটা ও বাজার করলাম। আম্মু আপু আর আমি অনেক গল্প করলাম। এর পর রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ঘুমিয়ে গেলাম।
স্বপ্নপুরী ভ্রমণ
অনেক ভোরে উঠে আমরা দুই বোন মিলে বিরানি রান্না করি। সাথে নুডুল সিদ্ধ ডিম আর শুকনো অনেক কিছু খাবার সাথে নিয়ে নেই।এরপর সকালে ৭:৪৫ মিনিট আমাদের ট্রেন। কিন্তু আমরা ট্রেনটা মিস করি। আমাদের দেরি হয়ে যায়। বাসায় বাজে ৪:০০। এরপর অনেক তাড়াহুড়ো করে আমরা বেরিয়ে পড়ি। রেলস্টেশনে গিয়ে আমরা দাঁড়াই । একজনকে জিজ্ঞাসা করি বরেন্দ্র ট্রেন চলে গেছে? পরে তিনি আমাদেরকে জানালেন বরেন্দ্র ট্রেন এখনো প্লাটফর্মেই আছে। তখন আমরা ট্রেনে উঠে যাই। তখন বাজে ৮:৩৫। ট্রেন অনেক লেট ছিল। যাক বাবা বেঁচে গেলাম ট্রেনটা মিস হয়নি। আমি আর আপু অনেক গল্প করেছি।তার পরে আমাদের গন্তব্যে আমরা পৌঁছে গেলাম।। ফুলবাড়ি স্টেশনে নামলাম।
এরপরে ওখান থেকে অটো ঠিক করলাম স্বপ্নপুরী যাওয়ার উদ্দেশ্যে। স্বপ্নপুরী রংপুর বিভাগের দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জে অবস্থিত।স্বপ্নপুরী যাওয়ার রাস্তাটা অনেক সুন্দর। চারপাশে সবুজ আর সবুজ। আমরা স্বপ্নপুরীতে পৌঁছালাম। জন প্রতি ১০০ টাকা করে টিকিট করলাম। এরপর আমরা প্রবেশ করলাম। স্বপ্নপুরীর ভিতর রাস্তার দুপাশের গাছ গুলো কাটিং করা, দেখতে অনেক সুন্দর লাগতেছিল।
এরপর আমরা ঘুরতে লাগলাম। এক এক করে অনেক কিছু দেখছিলাম। সৌরজগত, কৃত্রিম প্রাণিজগৎ, কৃত্রিম মৎসজগৎ গুলোতে ঢোকা হয়নি আমাদের। কারণ এগুলোতে আমরা বেশ কয়েকবার ঢুকেছিলাম। এরপর বাগান বিলাসের বাগানে খুব সুন্দর করে ছবি তোলা হয়েছিল। সাথেই ছিল দুটো পুকুর তবে আমার এই পুকুর পাড়টা ভীষণ ভালো লাগে। মিস করেছি আমি কোন ছবি তুলিনি সেই পুকুর পাড়ে। এরপর এখানে বাচ্চারা অনেকগুলো রাইডস এ উঠছে তার মধ্যে অন্যতম যে রাইডস টা ছিল সেটা হচ্ছে স্পিডবোট।
আশুরার বিল ভ্রমণ
এরপর আমরা এখান থেকে ঘোরাঘুরি শেষ করে আশুরার বিলের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। ১২:১৫ বাজে তখন। আশুরার বিল বাংলাদেশের বিরামপুর উপজেলায় অবস্থিত। আমরা আশুরার বিলের জন্য অটো ঠিক করতে যাই কিন্তু সেখানে দুলাভাই বলে অটোতে না গিয়ে আমরা চল খোলা ভ্যানে যাই।
আবহাওয়া অনেক ভালো থাকায় আমাদের কোন সমস্যা হয়নি। তাই আমরা খোলা ভ্যানে গন্তব্য ঠিক করি আশুরার বিল। কিন্তু আশুরার বিল যাওয়ার আগে খুব সুন্দর একটা বিশাল বড় শালবন পরে। শালবনটা এত সুন্দর যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
তবে প্রকৃতি আমার প্রথম প্রেম।সেদিন আবারও সেই শালবন এর প্রেমে পড়ে যাই। দারুন নিস্তব্ধতা পাখির কোলাহল ঝিঁঝিপোকার শব্দ দারুন একটা পরিবেশ রাস্তাটাও জোস ছিল।
এরপর আমরা আশুরার বিলে পৌঁছা গেলাম। ওখানে নামলাম কিছুক্ষণ বিরতি দিলাম যেহেতু শুক্রবারের দিন ছিল। দুলাভাইয়ের নামাজ ছিল। ওখানে ছোট্ট করে টিনের একটা মসজিদ ছিল। সেখানে জামাতের সাথে দুলাভাই নামাজ আদায় করেন। এরপর আমরা আশুরার বিল গেলাম।যদিও বা তখন পদ্মগুলো ছিল না। চারপাশে সবুজ ধান ক্ষেত লাগিয়েছিল।
সেদিনের আবহাওয়াটা এত বেশি ভালো ছিল যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।এরপর সেখানেই আমাদের দুপুর ২টা বেজে যায়। আবার রওনা করি বিরামপুরে রেল স্টেশনর উদ্দেশ্যে। আমাদের আবারও দেরি হয়ে যায় অন্তিম মুহূর্তে আমরা সেখানে পৌঁছাই।
একটুর জন্য আমরা আবারো ট্রেন মিস করিনি তবে খুব মজার অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। যে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে আমরা ট্রেন ধরতে পারি।।সেদিন হয়তো ভাগ্য ভীষণ ভালো ছিল যার কারণে হচ্ছে আমরা একটা ট্রেনেও মিস করিনি।
এই হচ্ছে আমার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। ভীষণ ভালো একটা দিন ছিল আমার জন্য...
এচিভমেন্ট-১ লিংক
স্বপ্নপুরী জায়গাটি আসলে অনেক সুন্দর আমি অনেক আগে ছোট থাকতে এই স্বপ্নপুরী জায়গাটি তে ভ্রমন করতে গেছি ৷ আমার প্রতিটি জিনিস ভালো লেগেছিল ৷ এখন তো মনে হয় আর নতুন কিছু নিয়ে এসেছে দেখার মত কিছু জিনিস ৷ যাই হোক ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ৷
প্রিয় বন্ধু স্টিমিট আমিও দুবার করে স্বপ্নপুরী ভ্রমণ করতে গিয়েছিলাম সেখানের জায়গায় এবং সবকিছুই অসাধারণ। সেখানে চিরাখানা ও রয়েছে সেখানে অনেক ধরনের পশু পাখি রয়েছে। এছাড়াও আরো একটি জায়গা রয়েছে সেখানে আমার আরো অনেক ভালো লাগছে রঙিন মাছের পুকুর। স্বপ্নপুর জায়গা সম্পর্কে অনেক সুন্দরভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ।
আরে বাহ আপনারা তো দেখছি স্বপ্নপুরী তে গিয়ে অনেক বেশি মজা করেছেন। আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম। তার সাথে আপনি অসম্ভব কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন যেগুলো দেখে আরো বেশি ভালো লাগলো।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের পরিবারের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য। এবং আপনার মূল্যবান পোষ্ট আমাদের এখানে শেয়ার করার জন্য।আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন।