Better Life With Steem || The Diary game || 04 June 2024 ||

in Incredible Indialast year
"সবাইকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি"

প্রতিদিনের মত আরো একটি দিনের ডায়েরি নিয়ে আপনাদের মাঝে চলে এলাম। আজকে শেয়ার করবো ৪ জুনের কাটানো দিনটি। তো কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক।

20240606_121640.jpg

কভার ফটো

সকাল বেলা ঘুম ভাঙতেই চাচ্ছিল না। আগের দিন রাতে বাসার নিচে ক্রিকেট ম্যাচের পর গভীর রাত অব্দি গান বাজনা বাজে। এত জোরে জোরে বক্স বাজছিল যে ঘুমানো কষ্টকর ছিল।

ঘড়িতে ৮ টার কাছাকাছি। তারাতারি বিছানা ছেড়ে ব্রাশ করে নিলাম। স্নান করবার মত সময় হাতে নেই। কি আর করার? জলদি হালকা নাস্তা করে অফিসের জন্যে বের হয়ে গেলাম। ঈদের আগে আমাদের অফিসে বাড়তি চাপ থাকে। পার্টি প্রমেন্ট, ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেয়া, মাসিক আয়-ব্যায় বিবরণী প্রস্তুত করা ছাড়াও অনেক ধরনের রিপোর্ট এর ঝামেলা তো আছে। অন্য সময় মাসের ১৫-১৮ তারিখ অব্দি সময় পাওয়া গেলেও এবার ঈদের ছুটি ১৪ তারিখে শুরু হবে। তাই সব কিছু শেষ করতে হবে আগামী ১৩ তারিখের মধ্যে। বুঝতেই পারছেন কি প্রেসারে আছি।

সকাল বেলা অফিসে গিয়ে সাপ্লায়ারের লেজার গুলো নিয়ে ভ্যাট ও ট্যাক্স কর্তন করা শুরু করলাম। বেশিরভাগ ই ৭.৫% অথবা ১৫% ভ্যাট জমা দেয় সরকারী কোষাগারে। আর এই টাকা গুলোই সরকারের আয়ের উৎস। এগুলো দিয়েই সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের বেতন বোনাস থেকে শুরু করে যাবতীয় খরচ বহন করা হয়। আগে একটা সময় অনেকেই এই ট্যাক্স ভ্যাট ঠিক ঠাক মতো জমা দিত না, তবে দিন যত বাড়ছে সরকার এই ব্যাপারে কঠোর হচ্ছে, পাশাপাশি কড়া নজরদারি তো আছেই।

এর জন্যেই মূলত উৎসে ভ্যাট ও ট্যাক্স কাটার শুরু। মানে আমাদের অফিসে কোন সাপ্লায়ার যে কোন প্রডাক্ট বা সার্ভিস দিলে তার যে বিল আসে তার সরকার নির্ধারিত একটি অংশ ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ কেটে নিয়ে পেমেন্ট করা হয়। আর সেই কর্তনকৃত অংশ ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে আমরা জমা করি, এবং প্রতি মাস শেষে কতটাকা জমা দেয়া হলো তার একটা রিপোর্ট এন বি আর এ জমা দিতে হয়। এন বি আর আবার মাঝে মাঝে এর সত্যতা যাচাই করার জন্য অভিযান চালায়। বুঝতেই পারছেন এখানে ফাকি দিলে কি অবস্থা হবে। বাংলাদেশের সব ছোট বড় কোম্পানিতেই এখন এই পদ্ধতি মানতে হয়।

20240604_122805.jpg

দুপুরের দিকে একটা কাজে সিটি ব্যাংকে গেলাম। সেখানে চোখে পড়লো সিটি ইসলামিক নামে আলাদা একটা স্কিমের। এদেশের ব্যাংক গুলো বুঝে গেছে ধর্ম কে পুজি করে ব্যবসা করতে হবে৷ সব ব্যংক গুলোতে এখন ইসলামি নাম দিয়ে আলাদা আলাদা স্কিম চালু করেছে।

ব্যাংক থেকে ফিরে লাঞ্চের পর আবারো অফিসের ডেস্কে বসে একটানা কাজ করে গেলাম। কোন দিকে নজর দেবার সুযোগ নেই। কাজে ডুব দিলে সময় যে কিভাবে ফুড়িয়ে যায় বুঝতেই পারবেন না।

অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে একটা বড় ব্যাগ কিনতে নতুন বাজারে গেলাম। যেমটা চেয়েছিলাম, পেলাম না। কি আর করার আফাতোত কাজ সারার জন্য একটা কিনলাম। ঈদে বাড়িতে যাবার সময় এই ব্যাগ কাজে দিবে।

20240604_203707.jpg
20240604_203702.jpg

চাকার আবিষ্কার যে আমাদের জীবনকে কিভাবে বদলে দিয়েছে তা একটু গভীর ভাবে চিন্তা করলেই উত্তর পাওয়া যায়। মূলত চাকার কারণেই আমি এই ব্যাগ টি কিনেছি। এই ব্যাগে কাপড় ভর্তির পর চাকা ছাড়া নিতে গেলে যেখানে হিমশিম খেতে হতো, সেখানে চাকার কারণে অনায়াসে এটি নিয়ে মুভ করা যাবে।

ব্যাগ নিয়ে বাসায় ফেরার পথে সিড়িতে ঊঠার সময় দেখলাম মেয়ে দাড়িয়ে আছে। প্রতিদিন ই সে আমার জন্যে এভাবে অপেক্ষা করে। তবে আজকে সে অপেক্ষা করছে আমাকে সারপ্রাইজ দিবে বলে। ফ্রেশ হবার আগেই আমাকে ডেকে নিয়ে সে ডাইনিং এ রাখা পুডিং দেখালো, আর বললো সে মাকে সাহায্য করেছে এটি বানাতে। সে টিভিতে দেখেছে কিভাবে বানাতে হয়।

20240604_221736.jpg

বাড়িতে বানানো পুডিং

20240604_221742.jpg

মেয়ের রান্নার প্রতি আগ্রহ আছে দেখে ভালো লাগলো। রাতে ভাত খাবার পর এই মজাদার পুডিং এর অর্ধেক সাবাড় করলাম। দারুণ হয়েছিল খেতে।

তো এভাবেই আমার আরো একটি ব্যস্ত দিন পার হয়ে গেল। কেমন লাগলো আমার আজকের ডায়েরি জানাবেন। ভালো থাকবেন সবাই।

Sort:  
 last year 

অন্যান্য সময়ের থেকে, মাসের শেষ সময় এবং ঈদের আগে একটু কাজের বাড়তি চাপ থাকে। যেমনটা আপনার পোস্ট পরেও বুঝলাম আপনি অনেক চাপে আছেন। যাইহোক সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই তাড়াহুড়ো করে অফিসে গিয়েছেন। আসলে একবার কাজ শুরু করলে কোন দিক দিয়ে সময় চলে যায় বুঝতেই পারা যায় না।
বাসায় বাসায় এসে দেখতে পেলেন অনেক সুন্দর পুডিং বানিয়েছে। তবে আপনার মেয়ে আপনার গিন্নিকে সাহায্য করেছিল। পুডিং এর ছবি দেখেই মনে হচ্ছে খেতে খুব সুস্বাদু হয়েছে।

সারাদিনের মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

হ্যা, এটা ঠিক যে মাসের শেষে এবং শুরুতে কাজের প্রচুর চাপ থাকে। তার পরেও সব সময় চেষ্টা করি যতটুকু সম্ভব কাজ গুছিয়ে নেয়ার। এভাবেই চলছে আর কি।

বাড়িতে বানানো পুডিং সত্যি অনেক মজার হয়েছিল। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে, এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Loading...
 last year 

অনেক সময় পছন্দ না হলেও অনেক জিনিস কিনতে হয় যেমন আপনি আজ খুব বেশি পছন্দ না হলেও কিনেছিলেন। লাল কালার মনে হয় আপনার খুব পছন্দের। আমার ব্লু কালার সব থেকে প্রিয়। পুডিং টা নিশ্চয় খুব ভালো হয়েছিলো।।ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 last year 

এটা ঠিক বলেছেন যে এখন যে ট্যাক্স ফাকি দেওয়ার সুযোগ অনেক কমে গেছে। শুধু রয়ে গেছে সরকারি কর্মকর্তাদের টাকা খাওয়ার প্রতিযোগিতা।
আপনার ব্যাগটা বেশ ভালোই হয়েছে।চাকা লাগানো থাকায় আরও সুবিধা হবে।
পুডিংটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে খেতে কতটা সুস্বাদু হয়েছে। মেয়ে র বাবা- মা দুজনেরই রান্নার প্রতি ঝোক, যার কারনে তারও এদিকে আগ্রহ আছে।

সারাদিন এর কার্যক্রম আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 last year 

সরকারি চাকুরিজীবী দের টাকা খাওয়া কোন কালেই কেই কমাতে পারবে না। এটা চলতে থাকবে অনন্ত কাল।

এটা সত্য বলেছেন যে আমাদের কারণে আমাদের মেয়ের ও এখন রান্নায় আগ্রহ হচ্ছে, তবে কিতদিন থাকবে সেটা দেখার বিষয়।

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 last year 

আসলে বর্তমান সময়ে ইসলাম এর নাম দিয়ে নানা ধরনের স্কাম করা হচ্ছে। যেটা আমরা কখনোই বিশ্বাস করতে পারি না। এমন ধরনের কথা তারা আমাদের সাথে বলে মনে হয়, ইসলামের প্রত্যেকটা পদক্ষেপ তারা মেনে চলে। এটা করা কতটুকু ঠিক সেটা আমার জানা নেই। তবে আমার মনে হয় এটা একেবারেই অন্যায়।

আসলে আমরা কখনোই আমাদের মনের মত করে জিনিস খুঁজে পাই না। তাই আপনি এখন আপাতত ব্যবহার করার জন্য একটা ব্যাগ কিনে নিয়েছেন। ব্যাগটা কিন্তু সুন্দর হয়েছে, আপনার গিন্নির তৈরি করা পুডিং দেখতে বেশ মজাদার দেখাচ্ছে এবং লোভনীয়। অসংখ্য ধন্যবাদ একটা দিনের কার্যক্রম উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 last year 

যে যার মত করে ধর্মের অপব্যাখ্যা করে তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিল করা নিয়ে ব্যস্ত। কোনটা যে আসলে সত্য কোনটা মিথ্যে এটা বুঝাই এখন মুশকিল হয়ে গিয়েছে।

ব্যাগ টা যে কতটা ভালো হয়েছে তা গতকাল বুঝেছি। চাকা থাকার কারণে পুরো কমলাপুর স্টেশনের এই মাথা থেকে ওমাথা মনে হচ্ছিল আমার মেয়েই টেনে নিতে পারবে। লাগেজের থেকে অন্তত ভালো হয়েছে।

ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।

 last year 

আপনি ডায়েরি লিখার পাশাপাশি বেশ কিছু বিষয়ে অনেক সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যেগুলি আসলেই বাস্তবমুখী।আসলে আপনি ঈদ উপলক্ষে অনেক চাপের মধ্যে আছেন।তবুও আমাদেরকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আসলেই একটা কথা খুবি মনে ধরেছে আমার।বর্তমানে মানুষ বুঝে গেছে কিভাবে আরেক মানুষকে ইমোশনালি ব্লাকমেইল করা যায়।তাইতো ধর্ম ব্যাবসা শুরু করেছে তারা।আর হ্যাঁ,আসলেই চাকা আবিষ্কার মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক দূরে নিয়ে এসেছে।ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

হ্যা, এখন এশিয়ার সব গুলো দেশে ধর্ম কে পুজি বানিয়ে ব্যবসা হচ্ছে। ইদানীং ব্যাংক গুলোতে গেলেই এটা বুঝা যায়। সব সময়ই চেষ্টা থাকে ডায়েরি লেখার সময় কিছু মেসেজ দেয়ার, কদ্দুর পারি জানি না।

ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

 last year 

মেহেক বোধহয় একদম বাবার মতনই হয়েছে। বাবারও রান্নায় বেশ আগ্ৰহ রয়েছে দেখে মেয়েও ছোটবেলা থেকে সেই দিকেই আগ্রহে দেখাতে শুরু করেছে। তবে যাইহোক আপনার স্ত্রী রান্নার হাত ভালোই, তার উপরে আবার মেহেক সাহায্য করেছে, তাই বোধহয় পুডিং টি দেখতে এত লোভনীয় এবং খেতে এত সুস্বাদু হয়েছিলো। খাওয়ার সুযোগ না হলেও, দেখে চোখ জুড়িয়ে গেলো। পোস্ট পড়ে বুঝলাম, গ্রামে যাওয়ার প্রস্তুতি বেশি ভালোই চলছে, তবে কর্মব্যস্ততাও বেশ ভালোই রয়েছে। অনেক ধন্যবাদ আপনার ব্যস্ততম দিনের কার্যাবলী আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 last year 

বাবা মায়ের রান্না দেখে দেখে মেয়েও এখন টুকটাক রান্নায় আগ্রহ দেখাচ্ছে, পাশাপাশি যাই রান্না হোক ও জানে বাবা এসে ফটোগ্রাফি করবে, আমি কোন কারণে কোনদিন ভূলে গেলেও মেয়ে এখন মনে করিয়ে দেয়। সে মনে হয় এটাকে এখন নিয়ম ভাবে।

গিন্নি স্পেশাল কিছু রান্না জানে, বাংলাদেশে এলে আশা করি আপনাদের সেগুলো খাওয়ানো আওম্ভব হবে।

ধন্যবাদ দিদি সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.12
TRX 0.34
JST 0.033
BTC 120574.37
ETH 4477.90
SBD 0.78