Broken Heaven/ভাঙ্গা স্বর্গsteemCreated with Sketch.

in Incredible Indialast year

কাজের মাঝেই স্বর্গীয় সুখ
দূর হোক স্বর্গীয় উন্মাদনা।
সন্তান আমার স্বর্গের অংশ
কুঁড়েঘর আমার তরে স্বর্গীয় আস্তানা।।

Picsart_23-03-01_16-42-47-882.jpg

বন্ধুরা

সবাই কেমন আছেন? সংসার স্বর্গে সবাইকে নিয়ে ভালোভাবে সবাই সময় পার করুন, মহান আল্লাহর দরবারে এতোটুকু কামনা করছি।
আলহামদুলিল্লাহ
আমিও আমার সংসার স্বর্গ থেকেই আপনাদেরকে আজকের এই লেখা উপহার দেওয়ার চেষ্টা করছি।

Picsart_23-03-01_16-39-44-961.jpg

আমরা মুসলমান। ইসলাম ধর্মের অনুসারী। এ ধর্মের প্রবর্তক মহানবী হযরত মুহাম্মদ( সাঃ )।ধর্মীয় মহাগ্রন্থ *আল কুরআন"। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর বাণী, কর্ম ও নির্দেশনা গুলোকে হাদিস হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

বড় বড় ওলামায়ে কেরামদের ধর্মশাস্ত্র বিশ্লেষণকে "ফেকাহ" নামে অবহিত করা হয়। ইসলাম ধর্মের মূলমন্ত্র ইমান বা বিশ্বাস নামে খ্যাত। এই ঈমান বা বিশ্বাসের উপর ভর করেই মুসলিমদের যাবতীয় ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

বিশ্বাস করা হয় আল কোরআন মহান আল্লাহ তায়ালার বাণী এবং রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কর্মময় জীবনের সবকিছুই হাদিস হিসাবে পরিচিত।

হাদিস ও কোরআনের প্রতি বিশ্বাস রেখে জানা যায় যে, এক মহাসংকটময় সময়ে কেয়ামত হয়ে এ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে ।যাকে অন্যান্য ধর্ম মতে মহাপ্রলয় বলে বিশ্বাস করা হয়ে থাকে।

কেয়ামত বা মহাপ্রলয় দিনটি এমনই হবে যেখানে নিজে নিজেকে ছাড়া অন্য কাউকে চিনবেন না ।পরিচয়ও দেবেন না ।অথচ সবই দেখতে পাবেন। যাকে ধর্মীয় ভাষায় বলা হচ্ছে সবাই শুধু "ইয়া নাফসি ইয়া নাফসি" করবেন। বাংলা ভাষায় একথাটি বুঝতে গেলে বলা যায়, সবাই নিজ নিজ সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। সবার সমস্যা সবার চোখে পড়লেও কেউ কারো সাহায্যে এগিয়ে আসতে চাইবে না বা এগিয়েও আসবে না।

ইসলাম ধর্মের অ-দূরদর্শী ধর্মীয় বিশ্বাস মতে, কেয়ামত বা মহাপ্রলয়ের দিন কেউ কাহাকেও চিনবেন না। স্বামী চিনবেন না স্ত্রীকে, স্ত্রী চিনবেন না স্বামীকে, পিতা চিনবেন না তার সন্তানদেরকে ,সন্তান চিনবে না পিতা-মাতাকে। সবাই নিজে নিজেকে "বিশ্ব স্বার্থপর" হিসাবে এখানে নিজেকে উপস্থাপন করবেন।

তাহলে মায়াময় এই পৃথিবীতে, আমরা কেন এই মিথ্যে মায়ায় ডুবে নিজেকে জলাঞ্জলি দিচ্ছি। পিতা-মাতার আদর। সন্তানের ভালোবাসা ।স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসায জীবন সন্ধিক্ষণ। এসব শুধুই কি নিছক কথার কথা?

এখানে ধর্ম বলেছে শ্রদ্ধা, স্নেহ, ভালোবাসা, সবকিছুর কথা। আর কেয়ামতের দিন সম্পূর্ণ তা উল্টা ভাবে বলা হয়েছে।

Picsart_23-03-01_18-11-01-769.jpg

তাই আমার কবি মন চিৎকার করে উঠে বলে

ধর্মে বলেছে ধর্মের বাণী
বিশ্বাস করি মোরা,
ধর্মে ধর্মে কাটিয়ে দিলাম
মোদের জীবন সারা।।

ভালোবাসায় ভরপুর পৃথিবী
ভালোবাসায় করি প্রভুর গান।
ভালোবাসায় ভালোবাসায় আগলিয়ে রাখি
মায়াময় পৃথিবীতে স্ত্রী ও সন্তান।।

মাটির ঘরে স্বর্গ সাজিয়ে,
ভালোবাসা নিয়ে করি বসবাস।
ভালোবাসায় ভালোবাসায় সময় ফুরালেও
তবুও মিটে না মনে ভালবাসার আশ।।

বিশ্বাসে বলে সবই সত্য
তাহলে বা কেন কেয়ামত?
বিশ্বাস যেথায় থাকবে না কারো
তাহলে কি পৃথিবী অসৎ?

আছে বিশ্বাস হোক কেয়ামত
স্বর্গ ,নরক কিছুই নাহি চাই।
পিতা মাতা স্ত্রী সন্তান
তাদেরকেই যেন শুধু কাছে পাই।

আত্মায় আত্মায় আত্মীয়ের বন্ধন
কেয়ামত যদি দেয় টুটে ।
ধর্মের চেয়ে আমার অধর্মই বড়
তবুও সন্তান থাক আমার কোলে পিঠে।।

Picsart_23-03-01_18-08-34-055.jpg

বন্ধুরা

ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন একটি ছোট্ট নিষ্পাপ মেয়ে একটি অটো ভ্যানগাড়িতে বসে মনের আনন্দে অপলোকে আমার দিকে বারবার চেয়ে চেয়ে দেখছে। মিষ্টি মিষ্টি করে নানান ধরনের প্রশ্ন করছে ।আমিও ক্যামেরা নিয়ে তার সামনেই বসে আছি।এই মিষ্টি হাসি মেয়েটি কে ?কি বা তার পরিচয় ?কেনই বা সে আমার সাথে?

নাম-"নিহার নাইমা নিশকাত"। আমার ছোট মেয়ে। আমরা ওকে "নিশকাত" বলেই ডেকে থাকি। সবার সন্তানের মত ,এও আমার আদরের। ছোটবেলা থেকেই সবার মত আদর দিয়ে, মহান আল্লাহর রহমতে আমিও তাকে বড় করার সকল প্রকার প্রয়াস চালিয়ে আসছি।

দেখতে দেখতে পাঁচ বছর পেরিয়ে এবার সবে ছয়ে পা রেখেছে। গত বছর স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলে শিশু শ্রেণীতে থাকলেও এবার সে প্রথম শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে।

Picsart_23-03-01_18-05-25-644.jpg

মহান আল্লাহ তা'আলা আমার এই দুষ্ট মাকে যতটুকু মেধা দিয়েছেন ,ততটুকুই সে আমার উপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে। এখনো বুঝতে শিখেনি ঠিকমত
তারপরেও অনেক আগে থেকে আমাকে আদরে, যত্নে সব সময় ভরিয়ে রাখার চেষ্টা করে।

কোন কাপড় পড়ে বের হব ,কোনটাতে ময়লা হয়েছে ?গোসল করছি কি করব না ? খাব কি খাব না ?কোথায় যাব ?তার কি আনবো ? আমার এতসব নিয়ে সে সব সময় ব্যস্ত থাকে

আমার কাপড় পড়া শুরু হলেই সে চিরুটা এগিয়ে দিয়ে মাথা আচড়াতে বলে, চুমু খায় ।কাপড় গায়ে দিতে বাধা দেয় ।আরো যে কত কি? মাথা আচড়ানোর সাথে সাথেই বলতে শুরু করে ,আতর লাগাবো, না সেন্ট লাগাবো? কালো টি লাগাবো নাকি সাদাটি লাগাবো?

জানিনা মহান আল্লাহ এত বড় নিয়ামত আমাকে কোন সু কর্মের বিনিময়ে দান করেছেন!
গত দুদিন থেকে সারা দিনের বকবকানিতে প্রকাশ পায়, সে আমার সাথে শঠিবাড়ী'তে যাবে। যাবে ঔষধ নিয়ে আসবে !আরো কত কি।?

Picsart_23-03-01_17-51-47-837.jpg

বন্ধুরা

বলতে বেমালুম ভুলেই গেছি তার শঠিবাড়িতে যাওয়ার আবদারটি কেন এত বড়? তার বড় ভাই, আমার বড় ছেলে "ডাক্তার শাওন মোহাম্মদ নাঈম" এমবিবিএস। ফরিদপুর থেকে আমার জন্য ঔষধ ও বাড়ির সকলের জন্য কিছু কাপড় চোপড় ,করতোয়া কুরিয়ার সার্ভিস এ পাঠিয়েছে এবং মোবাইলে আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে।

গত দুদিন আগে এ কথাটি শোনার পর থেকে তার এমন বায়না। আরো যে কত কথা কথার ফুলঝুড়ি ।আর মাধুর্যে আমাদেরকে সব সময় ডুবিয়ে রাখার চেষ্টা করছে।

তারই অংশ হিসেবে , আজ আমি দুপুর ২ টার দিকে তাকে নিয়ে শঠিবাড়ির দিকে রওনা হই। আমার বাড়ি থেকে শঠিবাড়ী প্রায় ১৩-১৪ কিলোমিটার রাস্তা। অটো ভ্যানে যাইতে সময় লাগে প্রায় আধা ঘন্টা। আধা ঘন্টা সময় সে নানান গল্পে, নানান কথায়, সোনামুখের কথার ফুলঝুরিতে, আমাকে মাতিয়ে রাখে ।

একসময় শঠিবাড়িতে গিয়ে পৌঁছিলে ৫-৭ মিনিটের মধ্যেই কুরিয়ার সার্ভিস থেকে ঔষধের ব্যাগটি নিয়ে আবার একই ভ্যানে বাড়ির দিকে রওনা দেই। সে একটি হোটেলের সামনে ভ্যান দাঁড় করাইয়া, দুটি পিয়াজু ও দুটি সিঙ্গারা নিয়া আবার ভ্যানে ওঠে। ভ্যানে উঠি বসিয়েই তার খাওয়া শুরু হয়ে যায়। মিনিট পাঁচেক পরেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে পানি খাবে বলে আবার ভ্যানটি দাঁড় করায়। এবার পানি খাওয়া হলে আমাকে ভিডিও ও ছবি তোলার পরামর্শ দিয়ে থাকে।

যেমন খবরদার, তেমন কাজ ,মা বলেছে তাইতো করতেই হবে । ভিডিওর ফাঁকে ফাঁকে আমি তার এই ছবি কয়টি ধারণ করেছিলাম।

বাড়িতে এসেই আবার বায়না ধরেছে ,তার ছবিগুলো পোস্ট করা হয়েছে কিনা? আমি বললাম রাত্রে করব !তারই অংশ হিসেবে স্বর্গে সুখে সুখান্বিত হইয়া আমি রাত জেগে তার ছবিগুলো আপনাদেরকে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছি।

Picsart_23-03-01_17-49-08-042.jpg

তাহলে দেখতেই থাকুন আমার নিষ্পাপ মায়ের স্বর্গীয় চোখের চাহনিগুলো !তার জন্য সবাই দোয়া করবেন ! মহান আল্লাহ তাকে যেন সুস্থ রেখে বেড়ে ওঠার সুযোগ দান করেন, আমিন।

Enjoy With Love 💕

Photo & Writeen@mrnazrul
CapturedHandset
CategoryPhotography
LocationBangladesh

Best Regards

Sort:  
Loading...
 last year 
  • ইসলাম ধর্মের অ-দূরদর্শী ধর্মীয় বিশ্বাস মতে, কেয়ামত বা মহাপ্রলয়ের দিন কেউ কাহাকেও চিনবেন না। স্বামী চিনবেন না স্ত্রীকে, স্ত্রী চিনবেন না স্বামীকে, পিতা চিনবেন না তার সন্তানদেরকে ,সন্তান চিনবে না পিতা-মাতাকে। সবাই নিজে নিজেকে "বিশ্ব স্বার্থপর" হিসাবে এখানে নিজেকে উপস্থাপন করবেন।

  • এগুলো বিশ্বাস করাই হলো মুসলমানদের ঈমান। আমরা আসলে অনেক বোকার মত কাজ করি, নিজের পরিবারের জন্য এত কঠিন কঠিন কাজ করি, যেন নামাজ পড়ার সময়ই পাইনা। তাহলে এখানে একটা কথা, যাদের জন্য আমরা কাজ করি নামাজ বাদ দিয়ে, তারা কি আমাকে হাসরের মাঠে সাহায্য করবে? আমাকে চিনবে? নাহ কেউই চিনবে না। একজন মা তার দুধের শিশুকে ফেলে দিয়ে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করবে, একজন মা তার সন্তানকে চিনবে না। কেউ কাউকে চিনবে না, সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে।

  • তাই বলে কি পরিবারের পাশে থাকতে হবে না?? হ্যাঁ, অবশ্যই থাকতে হবে, কেননা এটাও একটা আমাদের দায়িত্ব, কিন্তু সেটা আল্লাহর বিধিবিধান মেনে।

  • আমার একটা জিনিস দেখে খুবই খারাপ লাগে জানেন? সেটা হলো, একটা মানুষ তার কাজে অনেক পরিশ্রমী এবং কষ্টদায়ক হয়ে থাকে। কিন্তু তারা নামাজ পড়ে না, মদ গাঁজায় আসক্ত ,সর্বদা পাপ কাজে লিপ্ত থাকে। তাহলে তাদের দুনিয়াতেও কষ্ট আবার আখিরাতেও কষ্ট।

  • কেন ভাই?? দুনিয়াতে এতই কষ্ট করো তাহলে আখিরাতে কেন কষ্ট করবে? এত কষ্ট করার মাঝে কি নামাজ টা পড়া যায় না? খারাপ ভাষা, খারাপ কর্ম থেকে বেঁচে থাকা যায় না?? আলহামদুলিল্লাহ কিছু লোক আছে, যারা শত কষ্টের মাঝেও নিজেকে আল্লাহর দেয়া বিধানে লিপ্ত আছে। যারা পারছিনা, কেন পারছি না??

  • যাইহোক ভাই, অনেক কথাই বললাম। আসলে মনের এক অজান্তেই কথাগুলো বের হয়ে আসলো, ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

 last year 

ইসলাম ধর্মের প্রত্যেকটা কথা, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রত্যেকটা বাণী সত্য। একদিন কিয়ামত আসবে একদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে। যার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি ইসলাম মানেই শান্তির ধর্ম।

আপনার পোষ্টের কবিতাটা পড়ে খুবই ভালো লাগলো। অসম্ভব সুন্দর একটা কবিতা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন।

তার সাথে দেখছি আপনার ছোট্ট মেয়ে, আমাদের মেয়েও বলতে পারি। সে আপনাকে হাজারও প্রশ্ন করছে। সে আপনাকে বলছে পোস্টের কথা সেও পোস্টের বিষয়ে বুঝতে পারে। আর আপনি তাকে নিয়ে পোস্ট করে তার মনের ইচ্ছাটা পূরণ করে দিলেন। খুবই ভালো লাগলো আপনার লেখাটি পড়ে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57893.29
ETH 3130.56
USDT 1.00
SBD 2.44