বৃষ্টির দিনে

in Incredible India2 months ago

কেমন আছো সবাই ?আশা করি ভালো আছো। আমিও ভালো আছি ।এই প্রথমবার বৃষ্টির দিনে আমি শশুর বাড়ি ছিলাম। সেই বৃষ্টির দিনের গল্পই তোমাদের সাথে শেয়ার করব।

শহরে বৃষ্টির দিনে কি হয় তা তো দেখেছি ।কিন্তু এই প্রথমবার বৃষ্টির সময় আমি গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। মানে আমার শ্বশুরবাড়িতে। সেদিন সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে দেখলাম যে চারিদিকটা মেঘ করে রয়েছে। দেখতে বেশ ভালই লাগছিল। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে চা খেলাম। বাবা দোকান থেকে বিস্কুট এনে দিল খাবার জন্য। আমি বসে বিস্কুট খাচ্ছিলাম। তখন একটা বিড়াল এসে আমার সামনে বসে। তাকে বিস্কুট দেওয়া মাত্রই সেও বিস্কুট খাচ্ছিলো আমার সাথে।

IMG-20240520-WA0000.jpg

তারপরেই দেখলাম বাইরেটা পুরো অন্ধকার হয়ে গেছে। হঠাৎ করে ঝড় উঠলো। তারপরে বৃষ্টি শুরু হল। তখন বাজে সকাল নটা। প্রচন্ড জোরে বৃষ্টি যেমন হচ্ছিল। তেমনি বাইরে মেঘ ডাকছিল বাজও পড়ছিল। বেশ খানিকক্ষণ ধরে বৃষ্টি হলো । জোরে জোরে বাজ পড়ছিলো ।আমাদের কাছে পিঠেই একটা বাজ পড়েছিল ।আমাদের বাড়ি পুরো আলো হয়ে উঠেছিল ।ঠাকুমা তখন বাথরুমে ছিল। বাথরুম তো আলো হয়ে গিয়েছিল ।ঠাকুরমা ভয়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছিল।

IMG20240520100053.jpg

আমরা তো সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তখন আমি ঘরের ভিতর খেতে বসেছিলাম। কারণ সেদিন ছিল বাড়িতে জেঠুর শ্রাদ্ধ-শান্তির কাজ। তাই কাজে বসার আগে নাকি ভাত খেয়ে নিতে হয়। কাজ শেষ হলে সবাই আবার খেতে পাবো। তাই সকাল থেকে কাকিমারা রান্নার ব্যবস্থা করছিল। রান্না শেষ হবার পর খাওয়া দাওয়ার সময় শুরু হল প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি।

IMG20240520101410.jpg

এরকম বৃষ্টি হয়তো এই বছরে প্রথমবার হল। কিন্তু খানিকক্ষণ পর ঝড় বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর দেখলাম বাড়ির সবাই আম কুড়াতে ব্যস্ত। কেউ বস্তা নিয়ে কেউবা পুকুরে নেমেছে বালতি নিয়ে আম কুড়োতে। দেখতে বেশ ভালই লাগছে। রাস্তায় কত জল জমেছে। পাড়ার হাঁসগুলো বেশ মজাই পেয়েছে। জলে নেমে স্নান করছে। কেউ আবার রাস্তায় জলে গা ভিজাচ্ছে। আমাদের বাড়ির সামনে যে আমগাছটা রয়েছে তার সামনে পুকুর রয়েছে। তাই ঝড়ে আমগুলো বেশিরভাগ পুকুরেই পড়েছে। চারিদিকে বেশ কিছু গাছ ভেঙে পড়েছিল।

IMG20240520093949.jpg

সকাল বেলায় ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার জন্য মানুষ একটু গরমের হাত থেকে স্বস্তি পেল। কিন্তু ঝড় বৃষ্টি মাথায় যে বাজটা পড়েছিল সেটা আমাদের বাড়ির সামনের একটা মসজিদে পড়েছিল। মসজিদের পাশে ছিল নারকেল গাছ ।সেই নারকেল গাছের মাথায় পড়ে ছিল ।কিছু পাশের বাড়িগুলোতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। মসজিদে ও খতি হয়েছে।বেশকিছু মানুষ বৃষ্টি থামার পরে দেখতে যাচ্ছিল। আমিও গিয়েছিলাম গ্রামের সেই বৃষ্টিভেজা রাস্তা দিয়ে।

IMG20240520101501.jpg

বাজ পড়াতে সকাল থেকেই আমাদের এখানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। সকাল থেকে প্রায় দুপুর পর্যন্ত কারেন্ট ছিল না। বৃষ্টির পরে যখন রাস্তায় বেরোলাম। দেখলাম পাড়ার বাচ্চাগুলো ভিজে ভিজে আম কুড়িয়ে বেরিয়েছে। আর রাস্তার জমা জলগুলোতে খেলা করে বেড়াচ্ছে বেশ ভালই লাগলো দেখতে। আমাদের বাড়িতে জেঠুর শ্রাদ্ধ শান্তির কাজের জন্য আমাদের উঠানে প্যান্ডেল করেছে। কিন্তু বৃষ্টির জন্য প্রচন্ড জল জমে গিয়েছিল।

IMG20240520094502.jpg

প্যান্ডেলের ভিতরে এত পরিমানে জল জমে ছিল যে বাড়ির সকলে জল বের করার জন্য নালা কেটে দিয়েছিল ।সেখান দিয়ে জল বেরিয়ে গিয়েছিল। জল বেরোনোর পর ওখানে জেঠুর শ্রাদ্ধ-শান্তির কাজ সম্পন্ন হল। সকালবেলায় এরকম বৃষ্টির দৃশ্য দেখতে বেশ ভালই লাগে। কিন্তু বৃষ্টি হবার কিছুক্ষণ পর আবার পরিবেশটা শান্ত হয়ে গিয়েছিল। হালকা রোদ ও উঠেছিল। কিন্তু বাইরে হাঁস গুলো দেখলাম বৃষ্টির কারণে খুব মজা পেয়েছে। তাই জলে খেলা করে বেড়াচ্ছে। আর ব্যাঙ গুলি সকাল থেকেই ডাকছিল।

IMG20240520094803.jpg

এই রকম দৃশ্য দেখে আমি সত্যিই খুশি হয়েছি। আশা করি আপনাদের সবারই ভালো লাগবে। আজ এই পর্যন্তই থাক ।সবাই ভালো থাকবেন।

Sort:  
Loading...
 2 months ago 

আসলে বজ্রপাতের সময় আমাদের সকলের সতর্ক থাকা উচিত। আপনি যেভাবে বজ্রপাতের ব্যখ্যা দিয়েছেন পড়েই আমি ভয়ে শেষ।বজ্রপাতের সময় আমাদের সব সময় রুমে অবস্থান করা জরুরি আর মাঠে থাকলে যদি বজ্রপাত ঘটে তাহলে দুই বৃদ্ধা আঙুলের উপর ভর দিয়ে থাকতে হবে।এতে করে আমাদের শরীরের সাথে মাটির বেশি সংযোগ কম থাকায়
বিদ্যুতপৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।

 last month 

অবশ্যই বজ্রপাতের সময় আমাদের সকলকে সাবধানে থাকা উচিত। আমি তো বজ্রপাতে খুব ভয় পাই।

 2 months ago 

প্রথমেই আপনার জেঠুর আত্মার শান্তি কামনা করছি। ঈশ্বর তাকে স্বর্গের সুখ দিন ।

হ্যাঁ আমরা শহরে বসে বৃষ্টি ততটা অনুভব করতে পারি না কারণ বৃষ্টি পড়ার রিমঝিম শব্দ টিনের চালে বেশি ভালো লাগে ।ঝড় বৃষ্টিতে আম পড়ে সেই আম কুড়াতে আরো মজা।

আবার খুব ভয় লাগে বিদ্যুৎ চমকানো আবার ঝড় বাতাসে অনেক সময় গাছপালা ঘরের উপর এসে পড়ে। এই তো কিছুদিন আগে আমাদের দেশে ভয়াবহ ঝড় হল ‘রেমান’। যাতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং অনেকের জীবন চলে গেছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের টিনের বাড়িগুলো বেশি ক্ষতি হয়েছে। গ্রামের বাড়িতে একটু বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ চলে যায় ।
আপনার পোস্টটি পড়ে বুঝতে পারলাম গ্রামের বাড়িতে আপনি বৃষ্টির এই দিনটি খুব সুন্দর ভাবে উদযাপন করেছেন। আপনার জন্য রইল শুভকামনা।

 last month 

শহরে বসে বৃষ্টি কোন কিছুই অনুভব করা যায় না। গ্রামে এই প্রথমবার দেখলাম গ্রামের বৌ রা কিভাবে আম কোড়াতে ব্যস্ত থাকে। আপনি ঠিকই বলেছেন সেই বৃষ্টির দিনে আমি খুব মজা করেছিলাম ।ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ার জন্য।

 2 months ago 

বর্তমান সময়ে হঠাৎ করেই আকাশ কালো হয়ে মেঘ চলে আসে। আর হঠাৎ করেই বাজ পড়তে শুরু করে। আপনাদের ওখানেও ঠিক তাই হয়েছে। তবে সাবধানে থাকার চেষ্টা করবেন। এই বাজ একবার যদি গায়ে পড়ে, তাহলে বেঁচে থাকাটা একেবারেই অসম্ভব হয়ে যাবে। আসলে এখন তো আম পাকার সময়। তাই সবাই আম কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। গ্রামে থাকার কারণে বৃষ্টি হওয়ার পরে, গ্রামীণ দৃশ্যটা আপনি খুব সুন্দর ভাবে কাছ থেকে উপভোগ করতে পেরেছেন। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

 last month 

আপনি ঠিকই বলেছেন এখন হঠাৎ করেই যখন তখন বৃষ্টি চলে আসে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের এখানে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির দেখা নাই। ধন্যবাদ পোস্টটিতে কমেন্ট করার জন্য।

 2 months ago 

আপনার জেঠু যেখানেই থাকুন না কেন সৃষ্টিকর্তা তাকে শান্তিতে রাখু্ন।গ্রামে বৃষ্টির দিনে থাকতে আমার খুব ভালো লাগে কিন্তু বাজ পরলে গ্রাম কিংবা শহরে কোন জায়গাতেই ভালো লাগে না।
বাজ পরলে সাধারণত উচু উচু গাছ যেমন, তাল গাছ কিংবা নারিকেল গাছগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর এর পাশে কোন স্থাপনা থাকলে সেটাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গ্রামে ঝড় বৃষ্টির দিনে টিনের চালে ঝুম বৃষ্টির শব্দ আর আম কুড়ানোর মজাই আলাদা।
একদম ঠিক বলেছেন যে, বৃষ্টির দিনে সবচেয়ে আনন্দ বোধহয় হাসেরাই পেয়ে থাকে।
আপনার এই বৃষ্টির দিন নিয়ে লেখা পড়ে খুব ভালো লাগলো।
শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

 last month 

বৃষ্টি আমার খুব ভালো লাগে। কিন্তু বাজ পড়া আমি একেবারেই অপছন্দ করি। কারণ আমি একা থাকি তাই খুব ভয় লাগে। আমাদের বাড়ির আশেপাশে কয়েকটা নারকেল গাছ আছে। তাই আরো বেশি ভয় লাগে। এবারে গ্রামের বাড়িতে দেখলাম। আম কুড়ানোর মজা কাকে বলে।

 2 months ago 

প্রথমেই আমি আপনার জেঠুর আত্মার শান্তি পাক তাই সৃষ্টিকর্তা কাছে প্রার্থনা করছি।
আমার কাছে বৃষ্টি ভালো লাগে তবে এখনকার সময়ে হুটহাট করে বৃষ্টি আসে এবং তার সাথে শুরু হয় অনেক বেশি বজ্রপাত। যেটা আমার কাছে খুব ভয় লাগে।।
তবে বৃষ্টির দিনটা কিন্তু আপনি ভীষণ ভালো কাটিয়েছেন উপভোগ করেছেন শহর থেকে গিয়েছিলেন গ্রামে শ্বশুর বাড়ি তে এবং সেখানে গিয়ে অনেক সুন্দর একটি দিন উপভোগ করেছেন।। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।।

 last month 

বৃষ্টির দিন আমারও খুব পছন্দের ।আমি বর্ষাকাল ভীষণ পছন্দ করি। তবে বজ্রপাত একেবারে অপছন্দ করি। আমার ও ভীষণ ভয় লাগে। তবে সেই বৃষ্টির দিন টা খুব ভালোভাবে উপভোগ করেছিলাম। ধন্যবাদ পোস্টটিতে কমেন্ট করার জন্য।

 2 months ago 

তো তুমি আপনার জেঠুর আত্মার শান্তি কামনা করছি। সত্যি বৃষ্টি সবারই পছন্দ। তবে আপনি ঠিকই বলেছেন শহরের থেকে গ্রামের বৃষ্টি দেখতে বেশি ভালো লাগে। আমার তো বিশ্বাস করে বৃষ্টির সময় নদীর পাড়ে হাটতে বেশি ভালো লাগে। আর সর্বপ্রথম কথা হলো গ্রামের দৃশ্য মানেই অপরূপ সুন্দর।
এরকম বৃষ্টির দিনের সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last month 

শহরের কোন কিছুই ভালো লাগে না। আমার কাছে গ্রামের দৃশ্য অপূর্ব। ধন্যবাদ পোস্টটিতে কমেন্ট করার জন্য।

Veei good

 last month 

Thank you

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66740.62
ETH 3336.11
USDT 1.00
SBD 2.72