Incredible India monthly contest July| Three things that bring a smile to my face.

in Incredible Indialast year (edited)

আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি, মৃত্যুর সময় যেন আমার মুখে একটু মৃদু হাসি থাকে।

image.png

"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"

আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সৃষ্টিকর্তার রহমতে আপনারা সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও আল্লাহ তাআলার রহমতে বেশ ভালো আছি।

আমি Incredible India কমিউনিটিতে এই প্রথম কোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছি। আমি অনেক সৌভাগ্যবান প্রথম প্রতিযোগিতায় অনেক সুন্দর একটি বিষয় পেয়েছি।

শেয়ার করুন কোন তিনটি জিনিস আপনার মুখে হাসি নিয়ে আসে এবং কেন?

প্রত্যেকটি মানুষ কোনো না কোনো কাজ করতে আনন্দ পায় যেমন, আপন কারো সাথে সাক্ষাৎ করে আনন্দ পায় বা পছন্দের কিছু উপহার পেলে আনন্দ পায় বা খুশি হয়। আমিও যেহেতু একজন মানুষ আমার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম কিছু নয়।

আমি যে তিনটি কাজের সবথেকে বেশি খুশি হই।

  • আমি আমার প্রিয় বন্ধু সৈয়দ রেজওয়ান এর সাথে দেখা করে আনন্দ পাই।

  • আমি আমার মায়ের সাথে সময় কাটাতে খুব ভালোবাসি।

  • আমার স্ত্রী সন্তানদের কিছু কিনে দিতে পারলে আমি সব থেকে বেশি খুশি হই।

১) আমার বন্ধু সৈয়দ রেজওয়ানের সাথে দেখা হলে কেনো আনন্দ পাই:

image.png


আমার বন্ধু সৈয়দ রেজওয়ান এর সাথে আবার প্রথম পরিচয় হয় 2016 সালে ওমানে। সেখানে আমরা দুজন একই কোম্পানিতে কাজ করতাম। কিন্তু আমরা দুজনেই সারাদিন কাজে থাকতাম সন্ধ্যায় দেখা হতো তখন আমি খুব ভালো থাকতাম কারণ আমার বন্ধুটি আমাকে সবসময় আনন্দের মধ্যে রাখতেন সবসময় হাসিখুশির মধ্যে রাখত। আমার সারাটা ক্ষণ হাসিখুশিতেই কাটতো তার সাথে।তাই আমি তার সাথে থাকলে সব সময় হাসি খুশি থাকি।



২) মায়ের সাথে সময় কাটাতে কেনো ভালোবাসি:

আমি ক্লাস সেভেন থেকেই হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করতাম। বছরে তিনবার ছুটি পেতাম মাত্র এক সপ্তাহ করে। আমি যখনই ছুটিতে বাসায় আসতাম আবার মা আবার পছন্দের সকল খাবার তৈরি করে রাখতে। আমি তা মন ভরে খেতাম। আর হাসতে হাসতে বলতাম বা এই খাবারটা সব থেকে বেশি ভালো হয়েছে। তখন আমার মা মৃদু হেসে বলতো আচ্ছা এটা কালকেও বানিয়ে দিব। তখন আমার মায়ের সেই মৃদু হাসি দেখে আমার মনটা আনন্দে ভরে যেত। আমার মা কখনোই উচ্চস্বরে হাসতেন না।

৩) আমার স্ত্রী সন্তানদের কিছু কিনে দিতে পারলে আমি খুশি হই:

image.png

আমি দু-তিন বছর আগে একটি ব্যবসা করতে গিয়ে লস করে ফেলি এতে আবার আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পড়ে। তাই তখন আমি আমার স্ত্রী সন্তানদেরকে ভালো কোন কাপড়চোপড় বা কোন কিছুই কিনে দিতে পারিনি। এবং তারাও আমার এই পরিস্থিতি দেখে কখনোই আমার সাধ্যের বাইরে কিছুই চায়নি । তাই আমি তাদেরকে কখনো কোন কিছু কিনে দিতে পারলে তাদের পছন্দমতো তাদের থেকেও আমি বেশি খুশি হই।

আপনার হাসির পিছনে লুকিয়ে থাকা কোন আশ্চর্যজনক গল্প থাকলে আমাদের সাথে শেয়ার করুন।
image.png

একদিন আমিও আমার বন্ধু সৈয়দ রেজোয়ার একটি ইলেকট্রিক মার্কেটে ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমি একটি ল্যাপটপ পছন্দ করি, কিন্তু ওই সময়টায় আমার কাছে ল্যাপটপের সম্পূর্ণ দামটা ছিল না, কারণ সময়টা ছিল মাসের মাঝামাঝি। যেহেতু আমরা একটি কোম্পানিতে চাকরি করতাম, তাই আমাদের বেতন হতো মাসের শেষের দিকে আর সেই কারণেই আমার পকেটে তখন ওই পরিমাণ টাকা ছিল না তাই আর ল্যাপটপটি কিনতে পারিনি আমি।

তার বেশ একমাস পর আমার জন্মদিন ছিল। সেদিন আমার বন্ধুটি আমার কাছে এসে বলে চলো বাইরে থেকে একটু চা খেয়ে আসি আর হেঁটে আসি। আমিও বললাম চলো, তার সাথে আমি হাঁটতে বেরিয়েছি। এবং হাঁটাহাঁটির পরে প্রায় সাড়ে এগারোটার দিকে আমরা বাসায় আসি। এবং বাসার সামনে বসে আরও কিছুক্ষণ গল্প গুজব করি, গল্প করতে করতে প্রায় 11:58pm এর মতো বেজে যায়।

তখন উনি আমাকে বলল চলো অনেক রাত হয়েছে এবার উঠি আমরা। আমি বললাম ঠিক আছে তাহলে আমি আমার বাসায় যাচ্ছি, তুমি তোমার বাসায় যাও। উনি আমাকে বলল না তুমি একটু আমার বাসায় আসো একটা জিনিস দেখাবো তোমাকে। আমি বললাম ওকে চলো, তখনও আমার মনেই ছিল না যে বারোটার পরে আমার জন্মদিন। তার বাসায় ঢুকতেই লাইট বন্ধ দেখলাম আর কে জেনো লাইফটি জ্বালিয়ে দিল এবং সবাই হ্যাপি বার্থডে বলে উইশ করতে লাগলো আমাকে।

FB_IMG_1647279297542.jpg
FB_IMG_1647279319161.jpg

তখন আমি ভয় পেয়ে লাভ দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলি, আর চোখ খুলতেই দেখি পুরা রুম বেলুন দিয়ে সাজানো আর সবাই আমাকে ফুল ছিটিয়ে মারছে। আর সামনে দেখি বিশাল একটি কেক। আর তখন তো আমি পুরাই অবাক আমি বললাম আমার তো মনেই নেই আজ আমার জন্মদিন।

FB_IMG_1647279345246.jpg
FB_IMG_1647279338799.jpg
FB_IMG_1647279391907.jpg

যাইহোক তারপরে কেক কেটে সবাই খেয়ে আনন্দ ফুর্তি করে আমি চলে আসছিলাম তখন আমার বন্ধু আমার পিছু পিছু বাইরে আসে। এবং আমাকে দাঁড়াতে বলে আমি দাঁড়ালাম তখন উনি আবার বলল তুমি একটু চোখটা বন্ধ কর, আমি বললাম কেন? উনি বললেন আরে বাবা করো না, আমি বললাম ওকে ঠিক আছে চোখ বন্ধ করলাম।

চোখ বন্ধ করার ৫-১০ সেকেন্ডের মধ্যেই বলল এবার চোখটা খুলো আমি চোখ খুলতেই তার হাতে দেখতে পেলাম সেই ল্যাপটপটি যেই ল্যাপটপটি আমি পছন্দ করে রেখেছিলাম ওই যে ইলেকট্রিক মার্কেটে। আমি তো সেটা দেখে অবাক এবং খুশিতে চোখের জল চলে আসছিল আর তখনই আমি তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করি এটা কষ্টের কান্না ছিল না এটা অতিমাত্রার খুশির কান্না ছিল।

আপনি কি কখনও অন্যদের মুখে হাসি আনার কারণ হয়েছেন?

প্রথমেই বলি আমার এই পোস্টটি পড়ে আমাকে সাধু বা খুব ভালো মানুষ ভাবার কোন কারণ নেই, আপনি যা ভাবছেন ততটা ভালো আমি নই।

আমি পথেঘাটে চলার সময় কোন বৃদ্ধ মানুষকে রিকশা, ঠেলাগাড়ি ,ভ্যান গাড়ি চালাতে দেখলে আমার খুব কষ্ট লাগে। আপনারা হয়তোবা অনেকেই জানেন চট্টগ্রাম একটি পাহাড়ি অঞ্চল এবং সেখানকার রোড-ঘাট ও বেশ উঁচু-নিচু। একদিন চট্টগ্রামের এক এলাকায় দেখতে পেলাম দুজন লোক ঠেলাগাড়িতে করে রোড নিয়ে যাচ্ছে। একজন মধ্যবয়সী আর একজন বৃদ্ধ লোক, এক পাহাড়ের রাস্তা দিয়ে উঠছে কিন্তু তাদের খুব কষ্ট হচ্ছিল গাড়িটা নিয়ে উঠতে।

image.png
ছবির উৎস:unsplash

আমি ঠিক তার সামনে দিয়ে আসতে ছিলাম, আমার কাঁধে ব্যাগ, প্যান্ট শার্ট ইন করা সেই অবস্থায় আমি সেই গাড়িটি ধাক্কা দেওয়া শুরু করি এবং আমার পাশে 10-12 বছরের একটি ছেলেকে দেখতে পাই, তাকেও আমি বলি একটু সাহায্য করো। সেও আমার সাথে সাহায্য করল ঠেলাগাড়িটি ধাক্কা দিতে। ধাক্কা দিতে দিতে আমরা যখন ঠেলাগাড়িটি উঁচু স্থানে নিয়ে পৌঁছায় তখন সেই বৃদ্ধ লোকটি আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বলে বাবা এবার আমার পারবো।

আপনি যান তার মুখে যে একটা হাসি ছিল সেই হাসিটা দেখে আমিও হেসে দিয়েছি এবং হাসতে ছিলাম আর আমার মনের ভিতর এমন একটি অনুভব হচ্ছিল যে আমি অনেক খুশি আজকে আর ভিতর থেকে আমি না চাই তেও আমার মুখে হাসিটি লেগে আছে। ততক্ষণে আমার এক ভাই আমার সামনে এসে দাঁড়ালো, কি ব্যাপার হাসছো কেন তুমি? আমি বললাম, ভাই এ হাসির কথা তোমাকে আমি বুঝিয়ে বলতে পারব না।

কোন অসহায় মানুষের উপকারে আসতে পারলে যে একটি আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায় সেটা কখনোই আসলে বুঝিয়ে বলা সম্ভব নোয়।

তো বন্ধুরা আজকে আমার পোস্টটি এখানেই সমাপ্ত করছি। আশা করি আপনারা আমার মনের ভাবটি বুঝতে পেরেছেন।

আমার লেখা বা বলার কোন কথায় আপনি যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন আমার কোন উদ্দেশ্য ছিল না আপনাকে কষ্ট দেওয়ার।

এই পোস্টটিতে কোথাও কোন ভুল হয়ে থাকলে সেটা যদি আপনি বুঝতে পারেন নির্দ্বিধায় আমাকে জানাবেন, আমরা কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নোই। আমি প্রতিদিন নতুন করে কিছু শেখার চেষ্টা করছি হোক না সেটা আপনার কাছ থেকে।

আমি আমার কিছু বন্ধুকে এই কনটেস্টে অংশগ্রহন করার জন্য ইনভাইট করছি।আমার মনে হয় তারা আমার থেকেও এই বিষয় ভালো লিখতে পারবেন। @jakaria121 , @rimirahman , @hafizur46n

ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ

Sort:  
 last year 
প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য এমন একটি সুন্দর প্রতিযোগিতায়। আমি পড়ে জানতে পারলাম আপনার মুখে হাসি ফুটিয়ে দেয় বা আনন্দ জাগ্রত করে দেয় সেই তিনটি বিষয়ে সত্যিই অনেক ভালোলাগার।

যখন কোন প্রিয়জন কিংবা বন্ধু যাকে অত্যন্ত বেশি ভালোবাসা হয় তার সাথে দেখা করার শক্তি অনেক আনন্দের ব্যাপার যা আপনি আপনার বন্ধুর সাথে দেখা করলে আপনার ভালো লাগে। এছাড়াও মায়ের সাথে সাক্ষাৎ কিংবা কথা বলায় অত্যন্ত ভালোলাগা বা শান্তি অনুভব কাজ করে। আমি যেহেতু এখনো অবিবাহিত তাই হয়তো বা অতটুকু অনুভব করতে পারিনা তবে যতটুকু পারি আমার ছোট ভাই বোনদের নিয়ে সাথে থাকতে তা আমার খুবই মুগ্ধ করে আনন্দময় মুহূর্তগুলো।

মানুষকে সহযোগিতা করা অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যদি সে মন থেকে চায়। যেমনটি হবে আপনি চেয়েছিলেন সেই গাড়িটি ধাক্কা দিয়ে তুলে দেওয়ার জন্য এবং বাকিদের কেউ ডেকে নিয়ে এসেছেন সহযোগিতা করার জন্য ভালো কাজ বলে সম্বোধন।

আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল এবং আপনার এই হাসির কারণ গুলো সত্যিই পছন্দনীয়।

 last year 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। সাধারণত আমার পোস্টটি একটু বড় হয়ে থাকে যার কারণে হয়তোবা অনেকে পড়েন না কিন্তু আজ আমি দেখলাম বা বুঝলাম না বড় পোস্ট অনেকেই পড়ে তাও মনোযোগ দিয়ে।

আপনার এই কমেন্ট ও মনোযোগ দিয়ে পড়ায় আমি আরো সুন্দর করে পোস্ট করার উৎসাহ পেলাম।

আবারো আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই প্রত্যেকটা পয়েন্ট নোট করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ

Loading...

ভাই আপনাকে দেওয়া বিষয় গুলো অনেক ভালো করে উপস্থাপন করেছেন। আর আপনার মা যেমন আপনার পছন্দের সব কিছু রান্না করে আপনাকে খাওয়ায় তেমনই এই পৃথিবীর সকল সন্তানকে তার মা
পছন্দের সব জিনিস খাওয়াতে পছন্দ করে। আর আপনার মত আমার ও একটা বন্ধু আছে তার সাথে থাকলে আমার মন খারাপ বা কোন ও সময় বোরিং ফিল হয় না । আর আমি মানুষ কে হাসাতে না পারলেও আমার ছোট ছোট কাজে আমার মা অনেক খুশি হন এবং একটি হাসি দিয়ে বলে বাবা তোমাকে যেন আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখে ।

We all deserve to remain happy and smile as long as we live, kudos to you for such a wonderful piece.

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.16
JST 0.028
BTC 67684.16
ETH 2412.87
USDT 1.00
SBD 2.33